![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তেমন কেউ নই। শুধু বুকের মাঝে আমার বাংলাদেশকে ধারন করি।
মোবাইলের রিংটোনের আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠলাম। কিন্তু ফোন টা রিসিভ করার আগেই কেটে গেল। দেখলাম মোবাইলে ২০ টা মত মিসকল আর একটা ম্যাসেজ। কল লিস্ট খুলে দেখলাম সব গুলো কলই বৃষ্টির। মেসেজবক্স খুলে দেখি বৃষ্টির ম্যাসেজ ‘রাতে কি কোথাও চুরি করতে গেসিলেন যে এভাবে কুম্ভকর্ণের মত ঘুমান?’ ভয়ে ভয়ে কল করতেই ওপাশ থেকে হরহর করে বৃষ্টি বলল “আজ আপনার ইম্পরট্যান্ট কোন ক্লাস নেই আমি জানি, ভার্সিটি যেতে হবে না। ১১ টার সময় আবাসিকের বাইরে গেইটে আমার জন্য অপেক্ষা করবেন। ও হ্যাঁ সাদা টাইপের ড্রেস পরবেন” কোন পজ না দিয়ে কথাগুলো বলেই ঠাস করে ফোন রেখে দিল বৃষ্টি। কিন্তু কি এমন কাজ হতে পারে? তার উপর ওর সাথে কখনো এভাবে বের হওয়া হয়নি আমার। ভয় শঙ্কা লজ্জা সব এক সাথে কাজ করতে লাগল। না সব ফেলে রেডি হয়ে গেলাম। প্রথমে সাদা শার্ট পরার কথা ভাবলেও কলেজ স্টুডেন্ট ফিল আসার কথা মনে উঠতেই বাদ দিলাম। পাঞ্জাবীই পরলাম।
আবাসিকের বাইরের গেইটে ১১ টা থেকেই পায়চারী করছি কিন্তু বৃষ্টির কোন দেখা নাই।এদিকে নিজেকে কেমন যেন ‘রোড সাইড রোমিও’ মনে হতে লাগলো তখন। ঠিক পৌনে ১২ টার সময় বৃষ্টি আসলো। সাদা ধবধবে একটা ড্রেস পরেছে আজ বৃষ্টি। সাদা পরি নামে কিছু আছে কিনা জানা নেই আমার। কিন্তু বৃষ্টিকে দেখে এক মুহূর্তেই ভেবে নিলাম হ্যাঁ সাদা পরি বলে কিছু থাকতে পারে।
-কি এভাবে প্রশ্নাতুর চোখে তাকাচ্ছেন কেন? দেরি কেন হল জানতে চাচ্ছেন?
-না মানে হুম!!
-দেরি কই হল? আমি আপনাকে ১১ টার সময় এখানে অপেক্ষা করতে বলেছি। কিন্তু আমি কি বলেছিলাম যে ১১ টার সময় আমি আসবো?
তার কথায় যুক্তি আছে। তাই লাগতে না যাওয়াই ভাল। তাড়াতাড়ি একটা রিক্সা দেখার নির্দেশ দিল। কোথায় যাব জানতে চাইলে এক সাথে লাঞ্চ করব বলে এম আজিজ স্টাডিয়াম যাওয়ার কথা বলল। রিক্সায় উঠলাম। তবে রিক্সাতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বসলাম।
-খাওয়ার জন্য “রোদেলা বিকেলে” যাব সেটা আপনি কিভাবে জানলেন?
‘রোদেলা বিকেল’ এম এ আজিজ স্টাডিয়াম এর পাশেই একটা নাম করা রেস্টুরেন্ট। রিকশাওয়ালাকে ডিরেক্ট ‘রোদেলা বিকেল’ বলায় বৃষ্টির মনে প্রশ্ন জেগেছে কিভাবে জানলাম। গত এক বছর ফেসবুকে রোদেলা বিকেলে বৃষ্টি যে পরিমান ‘চেকড ইন’ দিসে তাতে যে কারোই স্বাভাবিক বুঝে নিতে সমস্যা হওয়ার কথা না।
-সাদা ড্রেস কেন পরতে বললাম জানেন?
রিক্সায় উঠে ভেবেছিলাম বৃষ্টি রোম্যান্টিক টাইপের কোন কথা বলা শুরু করবে। কিন্তু এই তো সেই মেয়ে যে আমাকে দেখলেই প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে।
-না।
-ওহ আপনার তো একটাই উত্তর। এ জন্যই আপনাকে সাদা পরতে বললাম। আপনাকে দেখলে না রাগে আমার গা গিজগিজ করে। ভাবলাম সাদা ড্রেস পরা দেখলে শান্তি লাগবে। জানেন তো সাদা শান্তির প্রতীক!!
এই বলেই বৃষ্টি ঠোঁট চেপে মুখ লুকিয়ে হাঁসতে লাগলো। মেয়েদের চোরা হাঁসি দেখেছেন কখনো? উফফ দেখতে যাবেন না। নির্ঘাত হার্টফেল হতে পারে। অপলক শুধু চেয়ে রইলাম। রিকসা পৌঁছতেই ভাড়া চুকিয়ে ডুকে পড়লাম রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্ট মানেই ল্যভিশ ফুড। আর আমার এসব খেতে আজকাল কেন জানি ভাল লাগেনা। এর আরেকটা কারন হতে পারে আইসক্রিম আমার অনেক পছন্দের। আর পাশেই আমার অনেক পছন্দের আইসক্রিম শপ ‘সাব জিরো’।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিল দিতে যাব অমনি বৃষ্টির অগ্নি চোখ-
-সাহস করে তো নিয়ে আসতে পারেননি তাই বিল আমি দিচ্ছি। আর সামনে টিউশনির বিল পাওয়ার পর এসে ইচ্ছেমত বিল দিয়েন।
টিউশনির টাকা হাতে আসেনি এখুনো। বৃষ্টি তা জানে। বুঝলাম সে অনেক কিছুই জানে। মেয়েরা মনে হয় এরকমই হয়। ভাল লাগার মানুষের সব খবর নখদর্পণে রাখে।
-চলেন ‘সাব জিরোতে’। আর ওখানে গিয়ে ‘ক্লাউড নাইন’ খাব।
এবার আর অবাক হলাম না। আইসক্রিম আমার পছন্দ তাও আবার সাব জিরোর ‘ক্লাউড নাইন’ সব বৃষ্টির জানা।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৩টা। বাসায় ফিরে আসার তাড়া দিল বৃষ্টি। বাইরে বের হয়ে রিক্সা ঠিক করে ও উঠার পর আমি উঠতে যাব এমন সময়-
-আরেকটা রিকসা নিয়ে পিছে পিছে আসেন। এবার সাথে যাওয়ার আর অনুমতি নেই আপনার।
মন টা হালকা খারাপ করতে যাব এমন সময় খেয়াল করলাম ব্যাগ থেকে গিফট পেপারে মোড়ানো একটা ছোট্ট বক্স বৃষ্টি আমার হাতে দিল।
-আমার সামনে না।বাসায় গিয়ে একা একা খুলে দেখবেন। বাই।
গিফট বক্স? প্রেমিক প্রেমিকারা একে অপরকে কারনে অকারনে গিফট করে জানা ছিল। কিন্তু আমরা কেউ এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছইনি। তাহলে?? আজ নিউ ইয়ার না, না পহেলা বৈশাখ, না ভালেন্তাইন্স ডে, না আমার বার্থডে, না তার। উত্তেজনায় কাঁপতে কাঁপতে রিক্সায় বসেই খুলে ফেললাম বক্স টা। বক্সের ভিতর ছোট্ট একটা তুলতুলে তুলার দিয়ে তৈরি বিড়াল ছানা আর একটা চিরকুট। চিরকুটের দিন শেষ হয়েছে কবে আমার জানা নেই। তবে এই যুগে চিরকুট পেয়ে কিছুটা আশ্চর্য হলাম। আরও আশ্চর্য হলাম চিরকুটটি পড়ে।
না, মেয়েরা সব পারে। মায়ার বাধনে জড়িয়ে আপনাকে পৌঁছে দিবে সুখের স্বর্গে। মায়া নামটা সেই জন্যই হয়তো ‘ম’ দিয়ে শুরু হয়েছে।এই মায়া আমি হারাতে চাইনা। চলুক যেভাবেই হোক। সেই স্বর্গ রাজ্যে আমি সারাজীবন থাকতে চাই।
ওহ আচ্ছা চিরকুটে যা লিখা ছিল-
“আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে শরতের মন খারাপের প্রথম দিনে কেউ একজন আমাদের ঘরের দরজায় এসে কড়া নেড়েছিল। দরজা খুলে চোখে চোখ পড়তেই দেখলাম এক যুবক। কিন্তু হঠাৎ করেই সে যুবক ভুলে গিয়েছিল কি জন্য এসেছিল। হয়তো আমাকে দেখেই হয়তোবা আনমনে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ঠাণ্ডার মধ্যেও যুবক ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে কিছু না বলেই চলে গেল। আজকে সেই যুবকের চোখ চোখ রাখার এক বছর পূর্ণ হল। যুবক এখনো কালেভাদ্রে চোখে চোখ রাখে, দরজায় কড়া নাড়ে মাঝেমাঝে। কিন্তু হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ার বেলায় যুবক এখনো বিড়াল হয়ে আছে। তাই যুবককে একটা বিড়ালছানা উপহার দিলাম। দেখি এই বিড়ালছানা কবে বড় হয়!!!”
সবাইকে সরতের শুভেচ্ছা!!!
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:০৬
এস কাজী বলেছেন: রাখাল ভাইয়া এত অবাক কেন? এইবার কিন্তু বলে ফেলব
২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার লেখা
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:০৭
এস কাজী বলেছেন: মনিরা আপু, ধন্যবাদ। অনেকদিন পর আমার বাড়ির দিকে দেখলাম আপনাকে
৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৪২
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৬
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই
৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:২০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমি নিজেই অনেক দিন ব্লগ ছাড়া রে তাই আসা হয়নী
আশা করছি বাকি গুলো পড়ে ফেলব।
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৮
এস কাজী বলেছেন: আপু বাম পাশে সবুজ অনলাইন দেখলেও ভাল লাগে। একদম ডুব দিবেন না। থাকবেন আমাদের সাথে
৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৩৭
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: চমৎকার !!!!
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৯
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বীথি আপু। ফুল নিশ্চয় আপনার বাগানের নয়। লাইভ বাগানের ফুল চাই
৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৩৪
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন ভ্রাতা !
১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩০
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ভায়া। আপনার মন্তব্য অনুপ্রেরনা সমান
৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: আমার বাগানের ফুল দিয়ে গেলাম!!
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:৩২
এস কাজী বলেছেন: আপনার ফুলের জন্য ধন্যবাদ
৮| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩
ডাঃ মারজান বলেছেন: ভাই! মাইন্ড বব্লিং!!! লিখছেন। সত্যিই হুমায়ুন স্যারের পর এতো সহজে লেখার ভঙ্গি অনেক দিন দেখিনি। শুধু পড়তে ঈচ্ছা করে!!! ভাই আপনার সিলিং ফ্যান হয়ে গেলাম। বাতাস খাইতে থাকুন।
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এস কাজী বলেছেন: ডাক্তার ভাই, এইটা কি বললেন ভাই। খারান স্ক্রীনশট নিয়া এখনি বাঁধাই করে রাখব। এত্তবড় কমপ্লিমেন্ট। চোখে পানি আসার অবস্থা। কিন্তু মাফ করবেন ভাই, হুমায়ুন স্যারের সাথে কাছাকাছি টাইপের তুলনা নিতে পারতাছি না। হাহাহাহা। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।
৯| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪২
ডাঃ মারজান বলেছেন: বেশি করে লিখুন ভাই! নতুন লেখার অপেক্ষায় আছি। ভালো থাকুন।
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮
এস কাজী বলেছেন: উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ। চেস্টা থাকবে। আপনিও কিন্তু দাঁত নিয়ে নিয়মিত লিখবেন। আমার পোস্ট হয়তো মজা দেয়। কিন্তু আপনার পোস্ট উপকারে দেয়।
১০| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪১
ডাঃ মারজান বলেছেন: ধন্যবাদ,ভাই। চেষ্টা থাকবে সব্সময়। ভালো থাকুন
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আরেব্বাস