![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তেমন কেউ নই। শুধু বুকের মাঝে আমার বাংলাদেশকে ধারন করি।
রিকেশি পাতু খুব জোরে প্রতিপক্ষের মুখে তার নিতম্ব ঘষে দিচ্ছে। স্তিভ অস্টিন রিঙে টেনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছে। রক তার বিখ্যাত চোকস্লাম মেরে লুটিয়ে দিচ্ছে তার প্রতিপক্ষ রেসলারকে। অথবা আন্ডারটেকারের হারলি ডেভিসন বাইক নিয়ে আসার অ্যাকশান। এদিকে আমি উত্তেজনায় ছিঁড়ে ফেলছি বালিশ ছুঁড়ে মারছি হাত পা। কিন্তু যেদিন জানলাম এবং বুঝলাম WWF, WWE পুরোটাই পাতানো সেদিন আমিও বুঝেছিলাম সমাপ্তি ঘটেছে আমার শৈশবের
একবার কোন এক বন্যায় আমার জ্যাঠা নদীতে জাল মেরে বিশাল একটা মাছ পেয়েছিলেন। বিশাল বলতে একবারে বিশাল। সেই মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে না কেটে পুরোপুরি রেখে কড়াই তে ভেজে পুরো বাড়িতে খাইয়েছিলেন তিনি।যেদিন জানলাম সেই মাছের সাইজের কড়াই আমাদের বাড়িতে তো দূরে থাক আমাদের গ্রামেও ছিল না সেদিন বুঝলাম আমার শৈশব শেষ
আমার মামা একবার আমাদের বাড়িতে আসার সময় ইয়া বিশাল এক ভূত দেখেছিলেন। যার বিশাল বড় দাঁত আর দাঁড়িয়েছিল যার এক পা কর্ণফুলীর এই পাড়ে তো আরেক পা ওই পাড়ে। সেদিনই আমার শৈশব শেষ হয়ে গিয়েছিল যেদিন জানলাম এরকম ভূতের কোন অস্তিত্বই নেই
নবান্নের নতুন ধানের খড়ের স্তূপের উপর বসে প্রতি সন্ধ্যায় চাচাতো জেঠাতো ভাই বোনেরা চাচা জ্যাঠাদের কাছ থেকে ‘কিসসা’ শুনতাম। ইয়া বড় মুচ ওয়ালা এক দৈত্য। যে পুরো দুনিয়া ডাকাতি করে বেড়াত। মেরে ফেলত ভাল মানুষদের। যারা বাঁধা দিত কেটে দিত তাঁদের হাত পা। একদিন ধরাধামে আসলেন দুই মাসিহা। এসেই একদিন কুপোকাত করলেন সেই দৈত্যকে। যেদিন জানলাম সেই দৈত্য আর কেউ নয় ‘শোলে’র গাব্বার আর সেই মাসিহা বচ্চন আর ধরমেন্দ্র সেদিনিই বিদায় নিয়েছিল আমার শৈশব।
সিনেমার গান আসলে আম্মা আমার চোখে হাত দিয়ে রাখত। আমিও সরাতাম না। যেদিন সরানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম সেদিন বুঝে নিলাম রঙ্গিন শৈশব শেষ আমার
২-৪ জন লাইনে দাঁড়িয়ে প্যান্টের ফাঁক দিয়ে সুসু দূরে নেয়ার প্রতিযোগিতা যেদিন বুঝলাম লজ্জার, সেদিনই আমার শৈশব শেষ
আপুর বান্ধবীরা গাল ধরে টেনে টেনে আদর করলে রাগে ছিল্লাতাম। মাঝে মাঝে মেজাজ করে তাদের দেখিয়ে গাল ও ধুয়ে ফেলতাম। কিন্তু যেদিন থেকে গাল ধরে আদর করার পর লজ্জা পেতে শুরু করলাম বুঝলাম ‘আমি নেই শৈশবের সেই আমি’
এক টাকা দিয়ে বেলুন কিনতাম দোকান থেকে। কিন্তু বেলুনগুলো ছিল তেল ছোপছোপ আর পিচ্ছিল। সেই বেলুনগুলো ভাল করে ধুয়ে ফুলাতাম। অনেক সময় প্রতিযোগিতা দিতাম কারটা ফুলে বেশি বড় হয়। বড় করতে গিয়ে মাঝে মাঝে ঠাস করে ফেটে যেত সেই বেলুন। আবার অনেক সময় সেই বেলুনে পানি ভরে আঙ্গুর বানাতাম। যেদিন জানলাম এই বেলুন পৃথিবীতে মনুষ্য জাতি আগমনের পথ রুদ্ধ করার বেলুন সেদিন সেই ফুলা বেলুন ঠাস করে ফেটে যাওয়ার মতই বুঝতে পেরেছিলাম শৈশব শেষ।
যেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিচের দিকে তাকিয়ে বুঝেছিলাম ’শ্রীমতী ঐশ্বরিয়া রায়’ রাতের বেলা স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন সেদিন সম্পূর্ণ ভাবে বুঝে গিয়েছিলাম ফেলে এসেছি সোনার শৈশব
আহ শৈশব, সোনার শৈশব!!! না জেনে করা ভুলের সেই দিনগুলো। আমি বার বার ফিরে পেতে চাই। যদি কখনো সুযোগ পায় আমি একশো বার চাব আমার শৈশবে ফিরে যেতে!!!!
১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৩
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আহা রে কি মর্মান্তিক ভাবে বুঝিয়ে দিল
বাস্তব বড়ই নিষ্ঠুর ।
চমৎকার উপস্থাপন
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৩:৫১
এস কাজী বলেছেন: হেহেহেহে। ধন্যবাদ মনিরা আপু।
৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:০০
রিকি বলেছেন: আহা ভাই, ওহো ভাই--- শৈশব একেবারেই শেষ !!!!
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭
এস কাজী বলেছেন: কোন আওয়াজ না দিয়াই শৈশব টা গেল গা ভাই :'(
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: চমৎকার উপস্থাপনা!!!!
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:৩২
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বীথি আপু!
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬
লেখোয়াড়. বলেছেন:
মজা লাগল এভাবে উপস্থাপনায়।
+++++++++++++++++++
শৈশবস্মৃতি।