![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তেমন কেউ নই। শুধু বুকের মাঝে আমার বাংলাদেশকে ধারন করি।
বাঙ্গালী প্রেমিক কুলের সবচেয়ে রোম্যান্টিক অসুখ হচ্ছে গায়ে জ্বর আসা। কিন্তু আমার কাছে জ্বর আসাটা মোটেও সুখকর নয়। প্রথমত বেশ কয়েকমাস আগে প্রচণ্ড জ্বরের কবলে পড়ে বৃষ্টি বৃষ্টি চেঁচাচ্ছিলাম। একটুও বুঝতে পারিনি। পরে জ্বরের ঘোর কাটার পড় আম্মা বলেছিল আহারে আমার ছেলেটা কত ঈমানদার। বৃষ্টি বৃষ্টি চেঁচাচ্ছিল আর অমনি আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামল। কিন্তু তলে তলে যে আমি হরতালে টেম্পু চালাইসিলাম সেটা আর আমার আম্মাকে কে বুঝাবে!!! দ্বিতীয়ত, অপ্রকাশিত ভালবাসার মানুষের অপ্রকাশিত ভালবাসা গ্রহন করা এক প্রকার “হাত বাড়িয়েও ছুঁইতে না পারা আবার মন বাড়িয়েও ছুঁইতে না পারার মত”।
সেই দুদল্যমান অবস্থা নিয়ে গত তিন দিন ধরে ১০৪ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে আমি শুয়ে আছি বিছানায়। প্রতি বিকেলে ঠিকই বৃষ্টির টেক্সট আসে “আজকাল ছাদে কাক কোকিলের বড়ই অভাব”। কিন্তু আমিও প্রয়োজন বোধ করছি না উত্তর দেয়ার। ভাবছি দেখিনা কিছুদিন কাক কোকিলদের ছাদে দেখা না গেলে ময়না পাখিদের কি অবস্থা হয়!!! মাঝে মাঝে পছন্দের মানুষদের এরকম পরীক্ষা নেয়ার মজায় আলাদা।বৃষ্টিই আমাকে শিখিয়েছে। তাই ভাবলাম আমিও নাহয় এরকম দুয়েকটা পরীক্ষা নিলাম।
কলিং বেল বেজে উঠল ঘরের। আম্মা দরজা খুলে দিয়েছে। আওয়াজ শুনে বুঝতে পারলাম বৃষ্টির দাদী এসেছে। কানে খাট হওয়ায় বৃষ্টির দাদী সবাইকে উনার মত মনে করে তাই চেঁচিয়ে কথা বলে। উনি মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসেন পান খাওয়ার জন্য। আমার আব্বা আবার পানের পাগল। ঘরে ভাত খাওয়ার জন্য চাল না থাকতে পারে কিন্তু পান আমাদের ঘরে থাকবেই। কিন্তু দাদীর আওয়াজের সাথে সাথে খুব পরিচিত একটা আওয়াজ শুনা যাচ্ছে। বুঝতে পারলাম খানিক পরীক্ষার ছটা লেগেছে। বৃষ্টি মনে হয় দ্বিতীয় বারের মত আমাদের ঘরে এসেছে। ছোট বেলায় আমার এক মামা এরকম বোকার মত উনার এক খালার বাসায় চলে যেতেন। গিয়ে বোকা বোকা সব কজ দেখাতেন। আর উনার কাজিন মানে খালার মেয়েটা খালি হাসত। অবশ্য উনার এখন দুই বাচ্চার বাবা মা হয়ে সুখে আছেন। ভাবছি বৃষ্টি কি কজ দেখাবে আসার। না, বৃষ্টি খুব স্ত্রেইট ফরওয়ার্ড মেয়ে আমি জানি কিন্তু হুট করে যে আম্মাকে আমার কথা জিজ্ঞেস করে ফেলবে বুঝতে পারিনি। আম্মা আমার রুম দেখিয়ে দিয়ে বলল তিন দিন ধরে জ্বরে পড়ে আছে। বৃষ্টি দাদী সহ আমার রুমে আসতেই দাদীকে
জিজ্ঞেস করলাম-
-দাদী কেমন আছেন?
-কি বলসস তুই? ওহ দাদী লাগি তাই মস্করা করস না!!!
দাদীর এহেন উত্তরে আমি আসলেই ঘাবড়ে যায়। ঠিক কিছু বুঝে উঠার আগেই বৃষ্টি দাদীকে বুঝিয়ে বলে যে আমি বলছি দাদী কেমন নাচেন? মানে বুঝতে বাকি রইল না দাদীকে আছেন বললে নাচেন শুনেন আর নাচেন বললে আছেন শুনেন। এই প্রবলেম সুধু টিভি নাটকে দেখেছি। বাস্তবে দেখতে পারায় জ্বরের ঘোরেও খুশি খুশি লাগছিল।
-ওহ এই অবস্থা আপনার, আর একটা টেক্সট করে জানানোর ও প্রয়োজন মনে করেননি??
দাদীর কম শুনতে পারার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিড়বিড় করে বৃষ্টি স্বভাবসুলভ বকা শুরু করেছে।
-বললে তো এরকম আসতেন না। খালি ফোনে ফোনে খবরদারী করতেন।
এক চোট আমিও দিলাম। কিন্তু বৃষ্টি কি দমবার পাত্রী যে শুধু সুযোগ পেলেই ঝগড়া করে!!
-চুরি করে দাদীর সব পান ফেলে দিসি। দাদী আমাকে বার বার জিজ্ঞেস করছিল আমার পান কৈ আমার পান কৈ!!! শেষ পর্যন্ত আপনি আমাকে দিয়ে পাপ করালেন!!!
বৃষ্টির বকা শুনতে খারাপ লাগছিল না। এরকম ভালবাসার মানুষদের বকা জ্বরের ঘোরেও স্বর্গের ছোঁয়ার মত মনে হয়।
বৃষ্টির দাদীকে ইতোমধ্যে চা খেতে বল্লেও উনি পান ছাড়া কিছুই খাবে না বলে দিলেন। ১০ মিনিটের মধ্যেই দাদী চলে যাওয়ার তাড়া দিয়ে সামনের রুমে চলে গেলেন।
বৃষ্টি আমার কপালে হাত রেখেছে। হাত রেখেছেও গলাতেও। সেই হাত আবার ঘুরতে ঘুরতে কপালে গিয়ে ঠেকেছে। তার চোখের কোনা চিকচিক করা শুরু করেছে। ঠোঁট কাঁপতে শুরু করেছে। না এর চেয়ে বেশি কিছুর জন্য আমি প্রস্তুত না। আমার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির চোখ বেয়ে এক ফোটা জল আমার বুকে এসে পড়েছে। ফিসফিস করে একটি লাইন বেড়িয়ে আসল বৃষ্টির মুখ থেকে “অনেক মিস করেছি”।
স্বর্গ সুখের অনুভূতি বুঝার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু লাগেনা।
২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
খায়রুল বাশার বলেছেন: স্বর্গ সুখের অনুভূতি বুঝার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু লাগেনা।......সহমত
৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বাঙালিরা মেয়েরা খুব বেশিই কাঁদে, কারণের চেয়ে অকারণে বেশি
২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০
এস কাজী বলেছেন: হা তা তো একটু কাঁদেই
৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনি সুন্দর লিখেনতো !
২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আপনারা মাথায় হাত রাখলে ইনশাআল্লাহ আরো ভাল লিখব
৫| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২৯
শামছুল ইসলাম বলেছেন: শেষের লাইনটা ভাল লেগেছে, মন্তব্যে এসে দেখি খায়রুল ভাইয়েরও তাই।
অদ্ভুত মিল !!!!
২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪০
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৬| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৩১
রোদেলা বলেছেন: বৃষ্টি আমার কপালে হাত রেখেছে। হাত রেখেছেও গলাতেও। সেই হাত আবার ঘুরতে ঘুরতে কপালে গিয়ে ঠেকেছে। তার চোখের কোনা চিকচিক করা শুরু করেছে। ঠোঁট কাঁপতে শুরু করেছে। না এর চেয়ে বেশি কিছুর জন্য আমি প্রস্তুত না। আমার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির চোখ বেয়ে এক ফোটা জল আমার বুকে এসে পড়েছে। ফিসফিস করে একটি লাইন বেড়িয়ে আসল বৃষ্টির মুখ থেকে “অনেক মিস করেছি”-এই জন্যেই প্রেমিক দের এতো জ্বর আসে।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪১
এস কাজী বলেছেন: হুম জ্বর কেন আসে সে তো আপনাদের বুঝতে হবে। হেহেহেহে। ধন্যবাদ
৭| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:০৭
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: প্রেমের জ্বরের অব্যর্থ ঔষধ!!!!!!
২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বীথি আপু। ভাইয়ার জন্য কখনো কান্নাকাটি হইছে নাকি হয়নি?
৮| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০
কাবিল বলেছেন: দারুন স্বর্গ সুখের অনুভূতি।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২
এস কাজী বলেছেন: ধন্যবাদ
৯| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: গোপন কথা, থাক না গোপনে!!!!!
২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯
এস কাজী বলেছেন: অকে অকে বুঝে নিলাম সিস্টার
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
খায়রুল বাশার বলেছেন: স্বর্গ সুখের অনুভূতি বুঝার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু লাগেনা।......সহমত