নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগে ঘুরতে আসায় আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি । আশা করছি আমার লেখালেখি, ফটোগ্রাফি আপনার ভালো লাগবে । ফেসবুকে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেন— https://www.facebook.com/SA.Sabbir666

সাব্বির আহমেদ সাকিল

আমাকে যাচাই করার পূর্বে নিজেকে যাচাই করুন ।

সাব্বির আহমেদ সাকিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুর্গাপূজা ও আমার শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো

১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১:১৬

দুর্গাপূজার দিন অর্থ্যাৎ দশমীর দিনে ও পরেরদিনে সুলতানগঞ্জ-বনানী হাটে ও মাদলাতে মেলা বসে । একটাসময় বিশাল মেলা বসতো‚ সময়ের পরিক্রমায় এখন ছোট হয়ে গেছে । দহপাড়া দিয়ে লিচুতলার সেই পুরোনো রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে ছোটবেলায় দলবেঁধে মেলায় যেতাম । কত বাহারি রকমের খাবার‚ মিঠাই‚ মাছ‚ খেলনা‚ চুড়িফিতা‚ গাছ‚ তৈজসপত্র‚ পান-সুপারি আরও কত কি । মানুষের কত ভীড় হতো । মেলার জন্য টিফিনের টাকা জমাতাম । সব বন্ধুবান্ধব একত্রে আড্ডা‚ খাইদাই হতো । মেলা থেকে মাটির ব্যাংক কিনে আনতাম মা’র জন্য ।

আশেপাশের প্রতিমাগুলোকে করতোয়াতেই বিসর্জন দেয়া হয় । মাদলা‚ দহপাড়া‚ বেজোড়াঘাট । যেহেতু আমাদের পাশের পাড়াতেই হিন্দু ধর্মের মানুষদের বাস । স্কুল-কলেজ জীবনেও হিন্দু সহপাঠীরা ছিলো । হিন্দু স্যার ছিলো । সৌহার্দ্যের কোনো কমতি ছিলোনা । দাওয়াত দিতো অনেকেই‚ যেতাম । নানারকম নাড়ুর সমাহার‚ ফলমূল থাকতো‚ মিষ্টান্নের আয়োজন থাকতো ।

যেগুলো আমাদের খেতে দেয়া হতো সেগুলো বাড়িতে বানানো হতো । দেবতাদের উদ্দেশ্যে যেগুলো উৎসর্গ করা হতো সেগুলো কখনোই আমাদের খেতে দেওয়া হতোনা । মূলত পূজাকালীন সময়ে যে প্রসাদ দেওয়া হয় সেগুলো তখনই বিলিয়ে দেওয়া হয়‚ আর সেটা হাতে নিয়ে তখনই খেয়ে ফেলেন সেখানকার পূজা পালনকারীরা । কোনো হিন্দুকে দাওয়াত করলে আমরাও কিন্তু বাজার থেকে খাসি কিংবা মুরগি কিনে আনি । গরুর গোশত কিন্তু তাঁর পাতে দিইনা । কারণ আমরা তাঁর ধর্মকে সম্মান করি‚ তাঁরাও সম্মান করেই বাড়িতে বানানো খাবারগুলোই পরিবেশন করেন; দেবতার নামে উৎসর্গ করা খাবার পাতে দেননা । কারণ তাঁরাও সম্মান দিতে জানে ।

দেখতাম যখন প্রতিমাগুলোকে বিসর্জনের জন্য ট্রাকে তোলা হতো বা নিয়ে যাওয়া হতো তখন কত মধ্যবয়স্ক‚ বৃদ্ধা নারীরা কান্নাকাটি করতেন । মুখে নানারকম প্রলাপ করতেন । ক্ষণিক একটা সময়ের জন্য প্রতিমাগুলো এসে মানুষের হৃদয়কে কতটা নাড়িয়ে দিয়ে যায়‚ যাঁর কারণে মানুষ অশ্রু ঝরায় । কতটা মায়ায় কতটা ভালোবাসে বলে আবেগাপ্লুত হয়ে যায় । আবার পৃথিবীর সকল মানুষের শান্তি কামনায় বুঁদ হয়ে পড়ে থাকতেন ঠাকুরের পায়ের নিচে । কেউ তো ঠাকুরকে অশান্তি‚ হানাহানি বাঁধানোর জন্য আর্জি জানায়না । সবাই শান্তির জন্যই ভক্তি করে ।

শুধু আমার সাথেই নয় এখানে প্রায় সকলের সাথে অন্য ধর্মের মানুষদের সাথে মেলাবন্ধন আছে । শিক্ষাজীবনে আছে‚ স্থানীয় সূত্রে আছে‚ চাকরিসূত্রে আছে‚ বাজার-হাটসূত্রে আছে । জীবনের কোনো না কোনো অংশে অন্য ধর্মের মানুষের সাথে সম্পর্ক আছেই ।

ফ্রেন্ডলিস্টের অনেকেই আছে যাঁরা ব্লাড ডোনেট করে । কোন জাত-ধর্ম বিবেচনা করে ব্লাড ডোনেট করতে অপারগতা দেখায়না । আমিও করিনা‚ আমার ছোটভাইও করেনা । রাস্তায় কেউ এক্সিডেন্ট করলে তাঁর প্যান্ট খুলে চেক করার প্রয়োজন মনে করিনা যে সে হিন্দু নাকি মুসলমান । মুসলমান হলে হসপিটালে নিয়ে যাবো আর হিন্দু হলে নিয়ে যাবোনা । এরকম ধারণা কখনোই আমার মনে আসেনা ।

এই যে জীবনের একটা বড় সময় কেটে গেছে আমরা কি কখনও ধর্ম নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছি বা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করেছি? কোনো সহপাঠী কোনো বন্ধু বলতে পারবে? পারবেনা । সম্প্রীতি ছিলো বলেই তা সম্ভব হয়েছে । বা এরকম কখনও ঘটেনি যে সে অন্য ধর্মের তাই ওঁর সাথে কথা বলবোনা এরকম ঈর্ষাকাতরতাও কখনও কাজ করেনি ।

প্রাইমারী জীবনে একজন হিন্দু ম্যাম ছিলেন । হাইস্কুলে ছিলেন দু’জন হিন্দু স্যার । আমি তাঁদের সাথে মিশেছি । দেখেছি তাঁদের সততা‚ উদারতা‚ বন্ধুসুলভ আচরণ । যাঁরা ছিলেন নীতিবান মানুষ । তাঁরাও পাপ পূণ্য বোঝেন‚ মানেন । কই কখনও তো ধর্ম নিয়ে তাঁদের সাথে বিবাদে জড়াইনি আমরা । তাকে‚ তাঁর ধর্মকে গালি দেইনি । অন্য চোখে দেখিনি ।

বংশ পরম্পরায় ধর্ম পেলাম । এটি পরম সৌভাগ্য যে ইসলাম ধর্মের পরিবারে জন্মেছি‚ আল্লাহ চেয়েছেন তাই জন্মাতে পেরেছি । যদি আল্লাহ না চাইতেন তবে তো অন্য ধর্মের ঘরেও পাঠাতে পারতেন । তখন সেই ধর্মের মতাদর্শেই সারাটাজীবন কাটিয়ে দিতে হতো । কোন ধর্ম বিশ্বাসযোগ্য‚ খাঁটি‚ টেকসই সে সম্পর্কেওতো কখনও পড়াশোনা করা হয়নি । কখনও জাস্টিফাই করিনি আমরা‚ না মুসলিমরা না হিন্দুরা ।

অথচ পরম্পরায় পাওয়া এই ধর্মকে নিয়ে কত দ্বন্দ্ব কত বিভেদ । দু দিনে কয়েকজন তো মারাও গেলো । মন্দির ভাঙ্গা হলো‚ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়া হলো । কিন্তু তাতে করে কি পেলাম আমরা? কুমিল্লার সেই ঘটনায় হয়তোবা একজন দোষী কিংবা দুইজন দোষী । কিন্তু সেই দু-একজনকে দোষী সাব্যস্ত না করে পুরো একটা সম্প্রদায়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়তে হলো কেন আমাদের? আসল অপরাধীকে চিহ্নিত করে তাকে আইনের হাতে তুলে দিলেইতো হতো । কিংবা দেশের শাসনব্যবস্থাকে বলতেন যেন তাঁদের অন্ডকোষের সাথে ইট ঝুলিয়ে দেয়া হোক বা প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হোক । শাসনব্যবস্থা তো আর্জিগুলো শুনতো‚ মানতো ।

যাঁরা উগ্র তাঁরা মূলত জন্ম থেকেই উগ্র । অন্য ধর্মের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ । আর মনেপ্রাণে তীব্র ঘৃণা লালন করে থাকে । সেটা হিন্দু এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যেই এরকম অনেক আছে । সৃষ্টিকর্তা সম্প্রীতির পৃথিবী দিয়েছে আমাদের । ধর্মগ্রন্থ এসেছে মানুষের শান্তির জন্য । আর আমরা আজ অশান্তির বীজ বপন করছি । ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে জোরপূর্বক ‘জয় শ্রীরাম’ পড়ানো হয়েছে আবার এদেশে হিন্দু পরিবারের উপর হামলা চালানো হচ্ছে । ধর্মের উদ্দেশ্য কি আদৌ এসব? ধর্মগ্রন্থ কখনও কি এগুলো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে বলেছে? বলেনি ।

জানিনা কবে আমরা মানুষ হতে পারবো । সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে থাকতে জানবো । কবে সভ্য হতে জানবো...কবে বলবো‚ “সবার উপরে মানুষ সত্য‚ তাঁহার উপরে নাই ।”



সাব্বির আহমেদ সাকিল
৩১ আশ্বিন ১৪২৮ বঙ্গাব্দ‚ শরতকাল | ০৮ রবিউল আওয়াল ১৪৪৩ হিজরী | ১৬ অক্টোবর ২০২১ ইং | শনিবার | রাত্রি ১১ টা ১৪ মিনিট | ময়মনসিংহ

#সাব্বিরসাকিল #ধর্ম #দুর্গাপূজা #ধর্মীয়সংঘাত #মৃত্যু #দাঙ্গাহাঙ্গামা #ময়মনসিংহ

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



ব্লগারেরা প্রতিমা ভাংগে টাংগে?

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫৭

সাব্বির আহমেদ সাকিল বলেছেন: কখনও শুনিনিতো ।

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৩১

বিটপি বলেছেন: জেনে খুবই খুশি হলাম যে আপনারা প্রতিমার উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য দেয়া খাবার খেতেন না। এটা আমার সেক্যুলার বন্ধুদেরকে বুঝাতেই পারিনা। তারা সেই নাড়ু খাবার জন্য নানা ধরণের যুক্তি দেয়, কোন যুক্তি যখন ধোপে টেকেনা, তখন ধর্মীয় বিধি বিধানকেই অস্বীকার করে। ধর্মের দরকার নেই - সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দরকার। আর সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতিষ্ঠার জন্য তাদেকে প্রতিমা দর্শন করতে হয়, অর্ঘ্য দেয়া নাড়ু খেতে হয়! সেকুলারদের এই স্টুপিডিটিই মূলত ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের রাগিয়ে দেয়।

আমিও ছোটবেলায় মূর্তি দেখতে যেতাম - উৎসবে শরীক হতে যেতাম। কিন্তু আমার চাচা যখন বুঝিয়েছে সেখানে ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে অন্যায় কাজটি হয়, তাই সেখানে যাওয়া হারাম - আমি আর কখনও যাইনি। কিন্তু হিন্দুদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ছিল। ভার্সিটিতে পড়ার সময় জনন্নাথ হলের কয়েকটি গ্রুপকে স্পন্সর জোগার করে দিয়েছিলাম - কিন্তু তাদের হাজারো অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের প্রতিমা দর্শন করতে যাইনি। কিন্তু এইসব উজবুকদেরকে কিছুতেই বুঝানো যায়না। কোথাও ডীজে মিউজিক শুনলেই নাচতে যায় এই ছাগলের দল।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫৮

সাব্বির আহমেদ সাকিল বলেছেন: ভালোবাসা জানবেন । ❤️

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:০৩

এ আর ১৫ বলেছেন: বিটপি -- কিন্তু আমার চাচা যখন বুঝিয়েছে সেখানে ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে অন্যায় কাজটি হয়, তাই সেখানে যাওয়া হারাম - আমি আর কখনও যাইনি
আপনি নীচের কথোপথনটা একটু পড়ুন ------

হুজুর :: এই যে আতাহার সাহেব আপনি মুসলমান হয়ে পুজা মন্ডপে কেন গেছেন , জানেন না পুজা মন্ডপে যাওয়া শিরিক করা এবং কবিরা গুণা !!
আতাহার হোসেন :: আপনার কথাটা মানলাম না , আমি তো পুজা করিনি ওখানে শুধু দেখেছি এবং ওদের মন্ডপের পাশে যে মন্চ বানিয়েছে সেখানকার সংস্বকৃতি অনুষ্ঠান মুলত দেখেছি । বড় বড় পুজা মন্ডপে একদিকে পুজার বেদি থাকে যেখানে পুজা হয় এবং অন্য দিকে সংস্বকৃতিক মন্চে নাচ গান কির্তন শ্যামা সংগিত ইত্যাদি হয় । প্রথমে ঢুকে দেখলাম হিন্দুরা পুজা করছে মুর্তির সামনে সেই সাথে ঢোল বাজানো হচ্ছে , দুই তিন মিনিট পুজা দেখে সংস্বকৃতিক মন্চের সামনে বসে অনুষ্ঠান দেখেছি , তার পর নৃপেনদা এসে লাড্ডু সিঙ্গারা দিল এবং সেই সাথে ভেজিটেল খিচুরি খেয়ে চলে এলাম ।
হুজুর ::: তোবা তোবা আপনি পুজার প্রশাদ খাইছেন , আপনি জানেন না পুজার প্রশাদ খাওয়া হারাম
আতাহার ::: ইসলামের নামে উল্টা পাল্টা কথা মিথ্যা কথা বন্ধ করেন দয়া করে , প্রশাধ টা তো কোন মাংস ছিল না , মাংস হোলে হামার বলা যেত , লাড্ডু সিঙ্গারা কি করে হারাম হয় ।
হুজুর ::: পুজার প্রশাধ হারাম , এর প্রমাণ কি আপনি দেখতে চান
আতহার ::::: মাংস ব্যথিত পুজার প্রশাধ যে হারাম না সেটা কি আপনি দেখতে চান ??
হুজুর :::: খালি খালি আজাইড়া পেচাল পাড়েন কেন
আতাহার :::: শুনুন কোরানে আল্লাহ তালা বলেছেন শুধু --- আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কারো নামে জবাই করা পশু পাখির মাংস হারাম এবং এই বিষয়টি শুধু মাংসের ক্ষেত্রে প্রজোয্য ,এবার আপনাকে একটা প্রশ্ন করি জীবনে কি কখনো পুজার মন্ডপে গেছেন ।
হুজুর :::: তোবা তোবা প্রশ্নই আসে না ।

আতাহার :::: শুনুন পুজার বেদির উপরে মুর্তির সামনে পুজার সময়ে যে খাবারটা থাকে তাকে প্রশাধ বলে , এবং বাহিরে প্যান্ডেলের পাশে বড় বড় হাড়ি ডেকচিতে সারা দিন যে রান্না হয় ঐ খাবার গুলোকে বলে ভোগ , ঐ মন মন হাড়ি ডেকচি ভরা ভোগ পুজার বেদির সামনে আনা হয় না এবং আলাদা ভাবে বিতরন করা হয় । যদি আপনার প্রশাধ খাওয়াকে হারাম মনে হয় তাহোলে ভোগটা খেতে পারেন ।

হুজুর :::: আমার মাথা খারাপ হয় নি যে ভোগ খাবো যাহা প্রশাধ তাহাই ভোগ এবং তাহাই হারাম

আতাহার ::: কোরানের আয়াত থেকে উদাহরন দিতে পারবেন একটাও , যেখানে কোরানে শুধু আল্লাহর নামে জবাই ছাড়া পশু পাখির মাংসকে হারাম করেছেন অন্য কোন খাবারকে নহে । প্রশাধ হোল যে খাবার দেবতার মুর্তির সামনে থাকে এবং দেবতার উদ্দেশ্য উৎসর্গ করা হয় এবং ভোগ হোল উৎসর্গকৃত খাবার গুলো নহে ।

শুনুন মাওলানা সাহেব পুজা দেখা মানে তাদের বিশ্বাষ গ্রহন করা নহে , যদি বিশ্বাষ গ্রহন করা হোত যদি আমি পুজা করতাম । আপনার লেকচার মারেন পুজা দেখলেই নাকি শিরিকি করা হয়ে যায় তাদের বিশ্বাষের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করা হয়ে যায় , আমি জীবণে বহু পুজা দেখেছি কিন্তু কখনো তাদের বিশ্বাষ গ্রহন করি নি । যাদের ঈমাণ দুর্বল তাদের পুজা না দেখাই ভালো কারন দেখলেই মুর্তির প্রতি তাদের ঈমাণ এসে যাবে ।
এবার হুজুর আপনাকে একটা প্রশ্ন করি - আমি একজন মুসলমান এবং আমার সামনে কয়েক জন মুসুল্লি নামাজ পড়ছে এবং আমি সেই নামাজ পড়া দেখছি কিন্তু পড়ছি না তাহোলে কি দেখার জন্য আমার নামাজ পড়া হবে ???

হুজুর :::: কি পাগলের মত কথা বলেন অন্যের নামাজ পড়া দেখলে কি কোন দিন নামাজ পড়া হয় !!!!!!

আতাহার :::: ও হয় না বুঝি কিন্তু মুসল্লিদের ঈমাণ আর আমার ঈমাণ এক তাহোলে ও নামাজ পড়া দেখার জন্য নামাজ হবে না !!!
হুজুর :::::: নিয়ত করে ওজু করে নামাজ নিজে না পোড়লে অন্যের নামাজ পড়াতে নিজের নামাজ কোন দিন হবে না যতই নামাজ পড়া দেখেন না কেন ।
আতাহার ::: ও মুসলমান হয়ে অন্য মুসলমানের নামাজ পড়া দেখলে নামাজ হবে না কিন্তু মুসলমান হয়ে অন্য বিশ্বাষের মানুষের পুজা করা দেখলে আমার পুজা করা হয়ে যাবে শিরিক করা হয়ে যাবে এবং হিন্দুদের বিশ্বাষ গ্রহন না করলেও আমার পুজা করা হয়ে যাবে ।
হুজুর ::: বড় বড় চোখ করে তাকায়
আতাহার :::: শুনুন হুজুর আপনি মাঠে বা টিবিতে যদি কোন খেলা দেখেন তখন আপনি দর্শক খেলোয়ার নহেন , আমি যদি অন্যের নামাজ পড়া দেখি আমি দর্শক নামাজি নহি এবং আমি যদি অন্যের পুজা করা দেখি তাহোলে আমি দর্শক পুজারি নহি । পুজা মন্ডপে যাই পুজা করতে না দেখতে এবং সেটা অল্প কিছুক্ষণ , বেশি ভাগ সময় কাটে মন্চের সামনে কালচারাল অনুষ্ঠান দেখে । আমি হিন্দুদের বা অন্য ধর্মের মানুষের সাথে এত মিশি এবং আমি তাদের ধর্ম গ্রন্থ ও পড়ি কিন্তু কখনো তাদের বিশ্বাষ গ্রহন করি নি , আমার ঈমাণ অত দুর্বল নহে ।
হুজুর ::::: থামেন খুব বেশি প্যাচাল পাড়েন , শুনুন কোরানে আট দশটা আয়াত আছে যেখানে আল্লাহ মুর্তি বা অন্য কোন কিছুকে পুজা করতে শক্ত ভাবে নিষেধ করেছেন, তাহোলে আল্লাহর আদেশ অমান্য কোরে মোনাফেকদের ফতুয়া শুনতে আমরা রাজি নই

আতাহার ::::: শুনুন হুজুর কোরানের ঐ সকল আয়াত আমার পড়া আছে ওখানে পুজা করতে মানা করেছে এবং আপনাকে এতো বার বলার পর কেন বার বার একই কথা বোলছেন কোন কিছু দেখা মানে সেই কাজটা করা নহে , নামাজ দেখা মানে নামাজ পড়া নহে , খেলা দেখা মানি খেলা করা নহে , নাটক দেখা মানি নাটকে অভিনয় করা নহে , পুজা দেখা মানি পুজা করা নহে ।

হুজুর :::: "তোমরা মুশরিকদের উপাসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করো না। কারণ সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হতে থাকে।" ' - 'উমার ফারুক (রা) (তথ্যসূত্রঃ ইবনুল ক্বাইয়্যিম(রাহিঃ), আহকামুল জিম্মাহ ১/৭২৩- ----- এর পরে ও কি আপনার কোন প্রশ্ন আছে ???
আতাহার ::::: এটা কোন কোরানের আয়াত নহে এবং হাদিস নহে এবং হযরত ওমর ফারুক (রা: ) নামে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেটা কোরানের নিচের আয়াতের সাথে সাংঘর্ষিক .
---- আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য এবাদতের নিয়ম কানুন নির্ধারন করে দিয়েছি যা ওরা পালন করে , তুমি ওদের তোমার প্রতিপালকের দিকে ডাক.. ওরা যদি তোমার সাথে তর্ক করে বল, তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ ভাল করেই জানেন। তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছ আল্লাহ কিয়ামতের দিন সে সে বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন , সুরা হজ ৬৭-৬৯ ।

তার মানি হিন্দুদের স হ অন্য সব ধর্মের ইবাদতের নিয়ম কানুন আল্লাহ ঠিক করে দিয়েছেন ।যদি আল্লাহ নিজে অন্য ধর্মের রিচুয়াল নিয়ম কানুন ঠিক করে দেন তাহোলে গজব নাজিল হবে কেন ??? যদি তাদের উপর গজব নাজিল হয় যারা পুজা করছে, তাহোলে যারা পুজা করছে না দেখছে তাদের উপর কেন নাজিল হবে ??? আল্লাহ যদি ইবাদতের নিয়ম কানুন ঠিক করে দেন তাহোলে কেন গজব দিবেন ।
হযরত ওমর ফারুক (রা: ) এর নামে যে কথা বলা হয়েছে সেটা কোরান বা হাদিস নহে এবং সুরা হজ ৬৭-৬৯ এর সাথে সাংঘর্ষিক ।
ধর্মীয় উৎসব নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি কবে বন্ধ হবে

৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৮:৪৫

বিটপি বলেছেন:
মদ না খেলেও মদের আসরে যাওয়া যেমন অন্যায়, তেমনি পূজা না করলেও হারাম কাজের আসরে ভিজিট করাও হারাম।

প্রত্যেক সম্প্রদায় বলতে ইব্রাহীমের সম্প্রদায়, মুসার সম্প্রদায়, ঈসার সম্প্রদায়, ইদ্রীসের সম্প্রদায়, নূহের সম্প্রদায় - এরকম বলা হয়েছে। প্রত্যেকের ধর্মীয় বিধিবিধান আলাদা ছিল, কিন্তু ধর্ম ছিল একটাই। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান - এরা সম্প্রদায় নয়, ধর্মাবলম্বী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.