![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার সম্পর্কে বলার কিছুই নাই তবে কলমের বিদ্রোহ তখনি কাজে আসে যখন শত্রুপক্ষ বা যাদের উদ্দেশ্যে লেখা তারা প্রকৃত শিক্ষিত হবে।আমাদের দেশ ধীরে ধীরে শিক্ষিত হয়ে উঠছে প্রকৃত শিক্ষায়।তবে আরো কিছুটা পথ পাড়ি দিতে হবে।
বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কজন লেখক বিভিন্ন আঙ্গিকে সাহিত্য রচনা করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সৈয়দ শামসুল হক(১৯৩৫-২০১৬)।সাহিত্যিক অঙ্গনের বিভিন্ন দিকে পদচারণার জন্য তাকে সব্যসাচী লেখক বলা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে উপজীব্য করে যে উপন্যাস গুলো রচিত হয়েছে তার মধ্যে সৈয়দ শামসুল হকের "নিষিদ্ধ লোবান" উপন্যাসটি অন্যতম।এই উপন্যাসটি বিস্তৃত হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে স্বজন হারানো এক নারীর আর্তিনাদ,আত্মপলব্ধি,সাহসিকতা,সংগ্রাম,বিচক্ষণতা কে আশ্রয় করে।এই উপন্যাসটিতে বিবৃত হয়েছে দুই-তিনদিনের কাহিনী এবং উপন্যাসটির মহিমান্বিত সম্মোহনে আমাদের আবদ্ধ করে রেখেছেন লেখক।উপন্যাসটির বিস্তার ও দৈর্ঘ খুব বেশী না হলেও উপন্যাসটির পরিধি অবশ্যই ক্ষুদ্র নয়।পুরো স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাসের ভয়াবহতা এববগ বাঙ্গালীদের অদম্য মানসিকতা ও সংগ্রাম চেতনা যেন পরিস্ফুটিত হয়েছে বিলকিস চরিত্রের ঢাকা,ঢাকা-জলেশ্বরী যাত্রা এবং জলেশ্বরীতে তার প্রবাহিত সময়ের মাধ্যমে।
এই উপন্যাসের একদিকে যেমন স্বজন হারানো চরিত্রদের আত্মস্পৃহায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠে দাড়ানো দেখানো হয়েছে তেমনি দেখানো হয়েছে পাক হানাদার বাহিনীর গণ অত্যাচার,হত্যা,ধর্ষণ আবার অন্যদিকে দেখানো হয়েছে পাকিস্থানের সরকার আমাদের বাঙ্গালীদের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে কিভাবে ধুলিষ্যাৎ করতে তৎপর হয়েছিল।এ উপন্যাসে আরো দেখানো হয়েছে কিভাবে পাকিস্থান তাদের মিলিটারি বাহিনী ও বিহারী লুটতরাজ দিয়ে ধর্মকে ঢাল হিসেবে এবং একই সাথে ধর্মকে মানুষের উর্ধ্বে নিয়ে গিয়ে পক্ষ বিপক্ষ দ্বৈরথ সৃষ্টি করে অরাজকতা সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছিল।
এ উপন্যাসে ইতিহাস এসেছে পরোক্ষ ভাবে।কোন দিন-ক্ষণ বা উল্লেখযোগ্য ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটিয়ে "নিষিদ্ধ লোবান" উপন্যাসকে কোন দলিল সম্পৃক্ত করার প্রয়াস দেখাননি লেখক বরং সেই ভয়াবহতা ও সংগ্রামী জাগরণ এর সময়কার পুরো বাংলাদেশের তথা বাঙ্গালীদের অবস্থা ও অবস্থানের হৃদয় স্পন্দন অঙ্কন করেছেন লেখক নির্দিষ্ট স্থান ও চরিত্রের মাধ্যমে।
শুধু মাত্র হত্যা,ধর্ষণ ও লুটপাটের মধ্যেই যে পাকিস্থানি বর্বরতা সীমাবদ্ধ ছিল না সেই চিত্র আমরা দেখতে পাই এ উপন্যাসে।বাঙ্গালীদের শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন এবং ব্যঙ্গাত্মকভাবে লাঞ্চিত করার বিষয়টি আমরা দেখতে পাই এ উপন্যাসে বিহারী ছোকরাদের আলেফ মোক্তারের মত বৃদ্ধকে কোমড়ে দড়ি বেধে এলাকাময় ঘোরানো বা বিলকিসের ছোড় ভাই খোকাকে হত্যার পরে তার মৃতদেহের উপর মূত্রত্যাগের মতো পৈশাচিক ঘটনায়।দেখা যায় ওইদিন জলেশ্বরীর অন্যান্য যুবক যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের মৃত দেহের উপর লাঞ্চনা মূলক কার্যকলাপ না করলেও খোকার মৃতদেহের উপরে করেছিল কারন খোকা গান গাইতে ভালোবাসত।সে রংপুর বেতারে গান গেয়েছে এবং জলেশ্বরীর এলাকাবাসীকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শিখিয়েছে।স্বাধীনতা আন্দোলনে জলেশ্বরীতে প্রথমদিকের মিছিল মিটিং এ ছিল খোকার সরব উপস্থিতি।আর এই ধরনের সংস্কৃতি সচেতন প্রানচ্ছল তরুনেরা ছিল পাকিস্থানী বাহিনীর ক্রোধের কেন্দ্রবিন্দু।পাকিস্থানীরা বাঙালীদের ঐতিহ্য ও চেতনার মেরুদন্ড ভেঙে দিতে চেয়েছিল।অপরদিকে এই ভীতিজনক পরিস্থিতিকে প্রদীপ ওরফে সিরাজ এবং বিলকিস এর আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব দেশ তথা দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসায় উদ্ভাসিত সাহসী পদক্ষেপ।মিলিটারি বাহিনী কতৃক হত্যা করা গ্রামবাসীদের কবর দেয়ার জন্য ঝুকি নিয়ে পলায়ন,ধরা পড়ার পরও হার না মানার মানসিকতা এবং বিলকিসের শেষ মুহুর্তে সেনা প্রধান মেজরকে সাথে নিয়ে প্রদীপের চিতার আগুনে ঝাপিয়ে পড়ার মধ্যে যেন বাঙালী জাতির আত্মপ্রত্যয়ী এবং দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবার পর ও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার মানসিকতা ফুটে উঠেছে।
পরিশেষে বলা যায়, "নিষদ্ধ লোবান" মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অবস্থার প্রতিচ্ছবি।এই উপন্যাসটি পাঠ করলে পাঠকের মনে ৭১ সালের গ্রামবাংলা ও নগর উভয় স্থানের সাধারণ মানুষের ভয়ানক পরিস্থিতি,আত্মপ্রত্যয়,সাহসীকতা ও সংযমের চিত্র অঙ্কিত হয়ে যাবে।
২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৪৪
টেকনিক্যাল এনালিসিস বলেছেন: রাজিব নুর বলেছেন ঃঃ শুধু বলুন, এই লেখক কি আমার মত ল্যাদাতে পারেন?
৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:১০
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: সৈয়দ শামসুল হক গুণী লেখক। তার প্রতি শ্রদ্ধা রইলো। আর তাকে তুলে ধরার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
৪| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:৪১
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
যুদ্ধে সবাইকে বন্দুকনিয়ে দৌড়াদৌড়ি করার দরকার পরে না।
একজন কবিকে হাতে লাঠি বা বন্দুক নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করার প্রয়োজন নেই,
তাদের অগ্নিঝরা কবিতার ছন্দ আর মানবতার প্রবাদবাক্য গুলি বন্দুকের গুলির চেয়েও অনেক অনেক বেশি ক্ষমতাবান।
৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪১
কলাবাগান১ বলেছেন: কবি নজরুল ইসলাম কোনদিন লাথি মেরে বন্দিশালা ভেংগেছিলেন বলবেন কি রাজীব নুর সাহেব?
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু বলুন এই লেখক কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন?