নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিদ্বেষ লক্ষ্য করা যায়। একজন মানুষের মধ্যে ভালো-মন্দ উভয় দিকই থাকে। সে হিসেবে ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথের সমালোচনা দিকও নিশ্চই রয়েছে, কিন্তু ভালোমতো পাঠ না করেই এমন একজন প্রতিভার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা মানে নিজেকেই বঞ্চিত করা। লক্ষ্য করলে দেখাযায় যারা রবীন্দ্র বিদ্বেষী, তারা স্কুল কলেজে পাঠ্যপুস্তকের বাহিরে রবীন্দ্রনাথকে তেমন পাঠই করেনি। তারা রবীন্দ্র সাহিত্যের খরিদ্দার হতে রাজি নয়, অথচ রবীন্দ্রনাথ যদি কাব্য আবিষ্কার না করে বৈদ্যুতিক পাখা আবিষ্কার করতেন, তবে কেউই কিন্তু তাঁর আবিষ্কার খরিদ করতে কুন্ঠা বোধ করতো না। অথচ বৈদ্যুতিক পাখা মানুষের শরীরকে যেমন প্রসান্তি দেয়, রবীন্দ্র সাহিত্যে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা হৃদয়ে গভীর উপলব্ধি বোধ জাগ্রত করে। প্রেম এবং সৌন্দর্য্যকে অনুধাবণ করে উপভোগের দ্বার খুলে দেয়।
হ্যা, রবীন্দ্রনাথ অবশ্যই সমালোচনার উর্ধ্বে নয়, কিন্তু তার জন্য তো রবীন্দ্রনাথকে পাঠ করতে হবে। পাঠ না করেই তাঁর সমালোচনা বা তাঁর প্রতি বিদ্বেষী হওয়টা শুধুমাত্র দুঃখজনকই নয়, অন্ধত্বের চরম পর্যায়ও বটে। একবার অফিসে লাঞ্চ করার সময় কথা প্রসঙ্গে অফিস একাউন্ট্যান্ট বলে বসলো, "নোবেল পাওয়ার কথা ছিল নজরুলের, রবীন্দ্রনাথ দুইনাম্বারি করে নিজেই সেটা নিয়ে নিয়েছে!"।
অথচ রবীন্দ্রনাথ নোবেল পায় ১৯১৩ সালে, আর নজরুলের প্রথম লেখা (গল্প) 'বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনী' মাসিক 'সওগাত' পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ১৯১৯ সালে। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেয়েছেন নজরুলের প্রথম লেখা প্রকাশেরও ৬ বছর আগে। রবীন্দ্রনাথ যখন নোবেল পায় নজরুল তখন চৌদ্দ বছরের কিশোর, এবং তখন নজরুলকে কেউ চিনতোও না।
অর্থাৎ যিনি বললো, "নোবেল পাওয়ার কথা ছিল নজরুলের, রবীন্দ্রনাথ দুইনাম্বারি করে নিজেই সেটা নিয়ে নিয়েছে!" তিনি আসলে এ বিষয়ে জানেই না। না জানাটা অবশ্য দোষের নয়, কিন্তু নিশ্চিত ভাবে না জেনেই কোন বিষয়ে দোষারোপ করাটা দোষের, এবং তা অন্ধত্বের বহিঃপ্রকাশও বটে। অনেক ডিগ্রিধারী ব্যক্তিও এই অন্ধত্বের মধ্যে বসবাস করে। আমাদের অফিসের এমবিএ ডিগ্রিধারী একাউন্ট্যান্টও তাদেরই একজন।
নোবেল নিয়ে যখন কথা উঠলোই, তখন বলা দরকার, রবীন্দ্রনাথ যে গ্রন্থের জন্য নোবেল পান, তা হলো 'সং অফারিংস'। উক্ত গ্রন্থের বেশিরভাগই গীতাঞ্জলির কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ। রবীন্দ্রনাথের 'গীতাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্থের নাম শোনেনাই এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু 'গীতাঞ্জলি' পাঠ করেছে এমন মানুষ কয়জন পাওয়া যাবে?
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজের লোক, অর্থাৎ এক ইশ্বরের উপাসক। গীতাঞ্জলির অনেক কাব্যই সে ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা সংগীত হিসেবে লেখা। এবং কিছুকিছু কাব্যের ভাষা এতোটাই মনোমুগ্ধকর ও শক্তিশালী যে, তিনি যদি ব্রাহ্ম সমাজের অনুসারি না হয়ে মুসলিম হতেন, তবে আজ যারা তাঁর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা মুনাজাতে গীতাঞ্জলির কবিতা পাঠ করতো। গীতাঞ্জলিতে তিনি যেভাবে নিজেকে সৃষ্টিকর্তার নিকট সঁপে দিয়েছেন, যেভাবে আকুতি করেছেন, তা হৃদয়কে ভিজিয়ে দেয়।
গীতাঞ্জলির প্রথম কাব্যের অংশবিশেষ, সেখানে রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টিকর্তাকে বলছেন:
আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার
চরণধুলার তলে।
সকল অহংকার হে আমার
ডুবাও চােখের জলে।
নিজেরে করিতে গৌরব দান
নিজেরে কেবলি করি অপমান,
আপনারে শুধু ঘেরিয়া ঘেরিয়া
ঘুরে মরি পলে পলে।
সকল অহংকার হে আমার
ডুবাও চােখের জলে।
অনেকেই আবার নজরুল রবীন্দ্রনাথ সাহিতে উঁচু নিচু কষতে বসে যায়, বিষয়টা দুঃখজনক। দুজনেই সাহিত্যই বাংলার সম্পদ। তবে হ্যা, দুজনের মধ্যো যে পার্থক্য ছিল তা হলো, একজন শাসক অন্যজন শোষিত। ফলে নজরুল শোষকের বিরুদ্ধে যেভাবে বলেছেন:
"বেতন দিয়াছ?-চুপ রও যত মিথ্যাবাদীর দল!
কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই কত ক্রোর পেলি বল?"
রবীন্দ্রনাথ তা বলতে পারেন নি। রবীন্দ্রনাথ সমাজের গোঁড়ামি তুলে ধরেছেন, নজরুল তুলে ধরেছেন ভণ্ডামি।
সবশেষে বলবো, সংকোচিত হৃদয়ে মানুষগুলো গীতাঞ্জলির ৫ নং কাব্যের মাধ্যেমে নিজের জন্য দোয়া করতে পারে।
অন্তর মম বিকাশিত করো
অন্তরতর হে।
নির্মল করো উজ্জ্বল করো,
সুন্দর করো হে।
০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৬
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
রবীন্দ্রনাথের বিপক্ষে মত যারা দেয় তারা রবীন্দ্রনাথ পড়েনাই এইটা খাঁটি কথা, এবং রবীন্দ্রনাথ না পড়া মানে রবীন্দ্রনাথ হতে নিজেকে বঞ্চিত করা।
২| ০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৫
রানার ব্লগ বলেছেন: যারা রবীন্দ্রনাথা ঠাকুর কে বিভিন্ন ভাবে অপবাদ দেয় তারা আসলে রবীন্দ্রনাথ কে অপবাদ দেয় না দেয় তার ধর্ম বিশ্বাস কে ।
০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:০৩
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
আমার কথা হলো সমালোচনার ঊর্ধ্বে তো কেউই নয়, তবে সেটা যৌক্তিক হতে হবে। আবার কারো প্রতিভা থাকলে তার মুল্যায়ন কেন করবো না? আহারে, রবীন্দ্রনাথ প্রতিভা থেকে যারা নিজেকে বঞ্চিত করে তারা বুঝতেও পারে না!
৩| ০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:০৩
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: রবীন্দ্র সাহিত্যে রয়েছে অসামান্য মুগ্ধতা।
০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:০৭
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
একদম সঠিক কথা।
৪| ০৮ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২১
কামাল১৮ বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের লেখার থেকে উত্তম একটা বই আমাদের আছে।
০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৫২
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
আপনার বিদ্বেষটা বিপরীত।
৫| ০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৫২
নূর আলম হিরণ বলেছেন: মম বিকাশিত করো
অন্তরতর হে।
নির্মল করো, উজ্জ্বল করো,
সুন্দর করো হে।
বিকশিত হবে
০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৫৩
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
প্রার্থনা তো করাই যায়।
৬| ০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:০৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব কবি হওয়ার মতই একজন কবি ছিলেন। তবে ওনার অনেক অনুসারী আছে যাদের মধ্যে উদারতার অভাব আছে।
০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:০২
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন:
তা আছে। রবীন্দ্রনাথের অন্ধ সমর্থক আছে, এদের আবার আল-মাহামুদ বিদ্বেষী। দেখুন রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু তাই বলে কারো প্রতিভা থাকলে সেটা স্পর্শ না করে তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতে হবে? আমি আস্তিক তাই বলে কি হুমাহুন আজাদের "লাল নীল দিপাবলি" পড়ব না?
৭| ০৮ ই মে, ২০২৩ রাত ১১:৪১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: অনেকে নজরুল কে বড় করতে গিয়ে রবিন্দ্রনাথ কে ছোট করে।
এরা দুজনেই বাংলা ভাষার সম্পদ সৃষ্টি করে গেছেন।
৮| ০৯ ই মে, ২০২৩ রাত ১২:৩৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন,
যারা সুন্দর মনের মানুষ তারাই কেবল " রবীন্দ্রনাথ" পড়েন, তার কবিতা - গানে মনপ্রান উদ্ভাসিত করে তোলেন প্রেমে ও সমর্পণে।
অন্য কোনও কারনে নয়, রবীন্দ্র বিদ্বেষ করা হয় শুধু ধর্মীয় কারনে। যেটা দুঃখজনক।
৯| ০৯ ই মে, ২০২৩ সকাল ১০:১১
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বিএনপির মত একটি রাজনৈতিক দলের ও কর্মী সমর্থকদের রবীন্দ্রনাথ কোন সমস্যা না। বিএনপি জাতীয় পার্টি বহুবার বৈশাখ উদযাপন করেছে। রবীন্দ্র উৎসব পালন করেছে।
বর্তমান সোচ্চার বিএনপি সমর্থকরা বাস্তবে বিএনপি নয়। জামাত সমর্থক বা জামাত কর্মী। সকল গান বাজনা বাদ্যযন্ত্র রবীন্দ্র ও হিন্দুরা এদের ঘোরতর শত্রু।
১০| ০৯ ই মে, ২০২৩ সকাল ১০:২১
অপু তানভীর বলেছেন: ব্যক্তি জীবনের রবীন্দ্রনাথ কী করেছে সেটা নিয়ে মানুষের আলোচনা থাকতে পারে । কিন্তু আমরা রবীন্দ্রনাথকে চিনি কি তার ব্যক্তি জীবন দিয়ে নাকি তার সাহিত্য দিয়ে ! একটা নির্দিষ্ট শ্রেণী এই বরীন্দ্রনাথকে অপছন্দ করে এবং এটা কিন্তু মোটেই তার সাহিত্য দিয়ে নয় বরং সে যে হিন্দু এই কারণে । এই বিদ্বেষটা ছড়িয়েছে মুলত জামাত এবং উগ্র মুসলিম । এটা থেকে অনলাইনে দিন দিন এই বিদ্বেষ ছড়িয়েছে ।
১১| ০৯ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: যারা রবীন্দ্রনাথের বিরোধিতা করে তাদের সমস্যা আছে। আসল সমস্যা সঠিক পারিবারিক শিক্ষা পায়নি।
আমাদের ভাগ্য যে রবীন্দ্রনাথ এই বাংলায় জন্মেছিলেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৯
নতুন বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের বিপক্ষে মত যারা দেয় তারা রবীন্দ্রনাথ পড়েনাই। এবং হিন্দু বলেই অপছন্দ করে।
রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্প বাংলা সাহিত্যে অনন্য অবদান। খুব কম লেখকই তার মতন ঐ লেভেলে যেতে পেরেছে।
রবীন্দ্র সংগীত মানুষের হৃদয়ের গভীরে ছুয়ে যায় । এটা ব্লগদিয়া ইন্টারনেট চালানো পোলাপাইন বুঝতে পারবেনা।