নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতি মূহূর্তেই পরিচিত হচ্ছি নিজের সাথে।

সাদেকীন হায়দার

আমি প্রচন্ড জীবনবাদী একজন মানুষ।

সাদেকীন হায়দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বের সেরা পাঁচটি প্রোডাকশন হাউজ

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৩২

আধুনিক যুগে আমরা সিনেমা ছাড়া পৃথিবীটাকে কল্পনাই করতে পারি না।সিনেমা কিংবা মুভি আমাদের অনুভূতিগুলো তা হোক হাসি-কান্না,ভালবাসা,রাগ,অভিমানক,ভয়কে যেমন আরও ভালভাবে বুঝতে শিখিয়েছে তেমন আমাদের সবার কল্পনার জগৎ এর হাজারো অদ্ভুত,অলৌকিক,চোখ ধাধানো ব্যাপারগুলোকেও নিয়ে এসেছে একেবারে চোখের সামনে।এক একটি সিনেমা যে আমাদের প্রতিদিনকার জীবনটাকে এত মজার করে তুলছে তা কিন্তু সম্ভব হত না যদি তাদের বানানোর জন্য প্রোডাকশন হাউজগুলো না থাকত।এসবকিছু কিন্তু সম্ভব হয়েছে কেবলমাত্র প্রোডাকশন হাউজগুলোর জন্য।একটা প্রোডাকশন হাউজই একটি সিনেমা তৈরীতে যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস,স্টুডিও,অর্থ এবং লোকোবল প্রদান করে যা ছাড়া একটি সিনেমা নির্মাণ অসম্ভব।আড্ডা বসলেই সেখানে আমরা আমাদের প্রিয় সিনেমা,নায়ক,নায়িকা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলি আর বিচার করি কারা সেরা।কত কিছু জানি আমরা তাদের ব্যাপারে তাহলে প্রোডাকশন হাউজগুলো কেনো বাদ যাবে?তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক পৃথিবী বিখ্যাত সেরা পাঁচটি প্রোডাকশন হাউজের কথা।

১.ওয়ার্নার ব্রোস. পিকচারস
ওয়ার্নার ব্রোস. পিকচারস ওয়ার্নার ব্রোস. এন্টারটেইনমেন্ট নেটওয়ার্ক অধীনস্থ একটি প্রোডাকশন হাউজ চলচিত্র প্রযোজনার জন্য।এটি আমেরিকার বৃহৎ মাল্টিন্যাশনাল মিডিয়া কর্পোরেশন “টাইম ওয়ার্নার” এর আওতাভুক্ত।ওয়ার্নার ব্রোস. তাদের প্রায় ১০০ বছরের পথচলায় বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছে অসাধারণ কিছু সিনেমা যা পাল্টে দিয়েছে সিনেমা তৈরীর গতানুগতিক সব চিন্তাধারা।১০০ বছরের ইতিহাসে এই বিখ্যাত ব্যানারে নির্মিত হয়েছে প্রায় ৬,৮০০ চলচিত্র যা নিঃসন্দেহেই একটি রেকর্ড।ওয়ার্নার ব্রোস. নানা ঘরানার সিনেমা বানানোর সাথে সাথে আমাদের উপহার দিয়েছে ইতিহাস কাঁপানো সব মুভি ফ্রেঞ্চাইজ যার মধ্যে হ্যারী পটার,দ্যা ম্যাট্রিক্স এবং ব্যাটম্যান উল্লেখযোগ্য।বক্সঅফিসে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তথা সবচেয়ে বেশি লাভজনক সিনেমার প্রথম ৫০ টি সিনেমার মধ্যে ১৩ টি সিনেমাই ওয়ার্নার ব্রোস. ব্যানারে নির্মিত।যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমা হলো হ্যারী পটার ফ্রেঞ্চাইজের সবগুলো চলচিত্র,দ্যা ডার্ক নাইট,দ্যা ডার্ক নাইট রাইজেস,দ্যা হবিট-এন্ড আনএক্সপেক্টেড জার্নি,ইনসেপশন ইত্যাদি।ওয়ার্নার ব্রোস. এর আরও ৫টি সক্রীয় অঙ্গ প্রযোজনা সংস্থা আছে যারা বিশ্বব্যাপী সিনেমা বাদেও,এনিমেশন,টিভি সিরিজ,কার্টুন এবং সঙ্গীত নিয়ে কাজ করে।



২.সনি পিকচারস এন্টারটেইনমেন্ট
সনি পিকচারস এন্টারটেইনমেন্ট আমেরিকাভিত্তিক বৃহত্তর সনি কম্পানীর একটি অঙ্গসংস্থা যারা বিশ্বব্যাপী সিনেমা,টিভি প্রোডাকশন এবং ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করে।সনি পিকচারস স্বাধীন প্রযোজকদের এবং ভিনদেশী সিনেমা তৈরীর জন্য “সনি ক্লাসিকস” বিভাগ বানিয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে সব জায়গায়।পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্টুডিও যার নাম “সনি স্টুডিওজ” এই কম্পানীর আওতাভুক্ত যা সনিকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী প্রোডাকশন হাউজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।সনি পিকচারস যেমন অসাধারণ কিছু সিনেমা তৈরী করেছে তেমনি নিজেদের প্রায় ২৯ বছরের ইতিহাসে নির্মাণ করেছে কিছু রেকর্ডভাঙ্গানো মুভি ফ্রেঞ্চাইজ।যেমনঃস্পাইডার ম্যান,ম্যান ইন ব্ল্যাক এবং রেসিডেন্ট ইভিল।মজার তথ্য হচ্ছে সনি পিকচারস এন্টারটেইনমেন্টের আত্নপ্রকাশ ১৯৮৭ সালে হলেও এর অঙ্গসংস্থান কলাম্বিয়া পিকচারস ১৯২৪ সাল থেকেই সক্রীয়ভাবে চলচিত্র নির্মাণ করে আসছে এর কারণ হলো,পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত সিনেমা ব্যানার “কলাম্বিয়া পিকচারস”তারা ১৯৮৯ সালেই দ্যা কোকাকোলা কম্পানীর কাছ থেকে কিনে নেয়।সফলতার সিড়ি কীভাবে তাড়াতাড়ি চড়তে হয় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সনি এর জন্মলগ্ন থেকেই দিয়ে আসছে।বক্সঅফিসে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তথা সবচেয়ে বেশি লাভজনক সিনেমার প্রথম ৫০ টি সিনেমার মধ্যে মাত্র ৫টি সিনেমা সনি পিকচারস কর্তৃক নির্মিত।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু চলচিত্র হচ্ছে-স্পাইডারম্যান ফ্রেঞ্চাইজের সবগুলো সিনেমা,স্কাইফল এবং ২০১২।






৩.ওয়াল্ট ডিজনি পিকচারস
১৯২৩ সালে আত্নপ্রকাশ করা ওয়াল্ট ডিজনি পিকচারস আমেরিকাভিত্তিক সংস্থা “দ্যা ওয়াল্ট ডিজনি কম্পানী” এর অধীনস্থ একটি প্রোডাকশন হাউজ যারা মূলত এনিমেশন মুভি নির্মাণ করে থাকে।এর বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন হয় বিশ্বের সেরা ৬ টি স্টুডিওর একটি “দ্যা ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিও”এর ভেতর।ওয়াল্ট ডিজনি তাদের ৯২ বছরের সাফল্যের যাত্রায় এমন অনেক অসাধারণ সব সিনেমা নির্মাণ করেছে যা কোটি কোটি দর্শকের হৃদয় ছুয়ে গেছে।বিশেষত বাচ্চাদের কাছে ওয়াল্ট ডিজনি যেন এক উপহারের নাম।প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক কিছু স্টুডিও ওয়াল্ট ডিজনির আওতাভুক্ত যার ভেতরে নির্মিত হচ্ছে চোখ ধাধিয়ে যাওয়া কিছু সিনেমা।যার মধ্যে স্নোওয়াইট এন্ড দ্যা সেভেন ডোয়ার্ফস,পিটার প্যান এবং ফ্রোজেন উল্লেখযোগ্য।লুকাস ফিল্ম,মারভেলস স্টুডিও,পিক্সার এবং টাচস্টোন পিকচারস এর মত কিছু প্রভাবশালী প্রোডাকশন ব্যানার ডিজনির আওতাভুক্ত।অসাধারণ সব মুভির মত ডিজনি নির্মাণ করেছে অসাধারণ কিছু মুভি ফ্রেঞ্চাইজ যেমন-পাইরেটস অব দ্যা ক্যারিবিয়ান,দ্যা ক্রনিক্যালস অফ নার্নিয়া এবং লায়ন আসছে।বক্সঅফিসে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তথা সবচেয়ে বেশি লাভজনক সিনেমার প্রথম ৫০ টি সিনেমার মধ্যে মাত্র ৫টি সিনেমা ওয়াল্ট ডিজনির ব্যানারে নির্মিত।যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃমার্বেলস-দ্যা এভেঞ্জারস এসেম্বল,ফ্রোজেন,আয়রন ম্যান-থ্রি,এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড,ফাইন্ডিং নিমো,টর স্টোরি-থ্রি ইত্যাদি।





৪.ইউনিভার্সাল পিকচারস
ইউনিভার্সাল পিকচার্সও আমেরিকা ভিত্তিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান “এনবিসি ইউনিভার্সাল” এর অধীনস্থ একটা সিনেমা প্রযোজনাকারী সংস্থা।ইউনিভার্সাল পিকচার্স এর আওতাভুক্ত স্টুডিও “ইউনিভার্সাল স্টুডিও” বিশ্বের সেরা ৬ টি স্টুডিওর একটি হিসেবে স্বীকৃত।এই প্রোডাকশন হাউজের আওতাভুক্ত আরেকটি ব্যানার “ইউনিভার্সাল এনিমেশন স্টুডিও” বিশ্বব্যাপী এনিমেশন ফিচার ফিল্ম এবং টিভি সিরিজ নির্মাণ করে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃদ্যা ল্যান্ড বিফোর টাইম এবং এন আমেরিকান টেইল এন্ড বাল্টো।১৯২০সালে ইউনিভার্সাল পিকচারস আত্নপ্রকাশ এর পর থেকে এর অধীনে নির্মিত হয়েছে কিছু ক্লাসিক সিনেমা যা একই সাথে ভেঙ্গেছে বক্স অফিস রেকর্ডও।জুরাসিক পার্ক,জস এবং ইটি দ্যা এক্সট্রা টেরেস্ট্রিয়াল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।২০০৭ সালে ইউনিভার্সাল স্টুডিও এর আরেকটি স্টুডিও “ইলিউমিনেশন এন্টারটেইনমেন্ট” আত্নপ্রকাশ করে যা শুরুতেই ইউনিভার্সাল নেটওয়ার্ক এর জন্য এক বিশাল সাফল্য হিসেবে প্রমাণিত হয়।জনপ্রিয় মিনিয়ন মুভি ফ্রেঞ্চাইজের দুটি চলচিত্র ডেসপিকেবল মি এবং ডেসপিকেবল মি-টু এই স্টুডিওর অধীনে নির্মিত হয়েছে।মিনিয়ন ফ্রেঞ্চাইজ ছাড়াও ইউনিভার্সাল পিকচারস এর অধীনে নির্মিত হয়েছে দ্যা ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস,দ্যা বর্ন আইডেন্টিটি এবং হ্যানিবেল এর মত জনপ্রিয় সব মুভি আসছে।বক্সঅফিসে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তথা সবচেয়ে বেশি লাভজনক সিনেমার প্রথম ৫০ টি সিনেমার মধ্যে মাত্র ৪টি সিনেমা ইউনিভার্সাল পিকচারস এর ব্যানারে নির্মিত হয়েছে।





৫.টোয়েন্টিথ সেঞ্চুরী ফক্স
অন্যান্যবারের মত টোয়েন্টিথ সেঞ্চুরী ফক্সও আমেরিকাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান “টোয়েন্টফাস্ট সেঞ্চুরী ফক্স কম্পানী” এর অধীনস্থ একটি প্রোডাকশন হাউজ।১৯৩৫ সাল থেকেই সিনেমা প্রযোজনা করে আসা এই ব্যানারটি আত্নপ্রকাশের পর থেকেই সবরকম সফলতার চূড়ায় পৌছেছে এবং একই সাথে জয় করে নিয়েছে দর্শকদের মন।এই ব্যানারের আওতাভুক্ত “ফক্স স্টুডিও” বিশ্বের সেরা ৬টি স্টুডিওর একটি হিসেবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।রেকর্ড ভাঙ্গার ক্ষেত্রেও জুড়ি নেই ফক্স এর।২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই প্রোডাকশন ব্যানারে নির্মিত “এভাটার” মুভিটি সর্বকালের সেরা ৫০ টি সিনেমার তালিকায় বিশ্বব্যাপী ২ বিলিয়ন ডলার এর ব্যবসা করে সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রথম স্থান অধিকার করে নেয়।স্টার ওয়ার্স,আইস এজ এবং এক্সম্যান এর মত জনপ্রিয় কিছু মুভি ফ্রেঞ্চাইজ এই ব্যানারের অধীনে নির্মিত হয়েছে।১৯৯৪ সালে আত্নপ্রকাশ হওয়া ফক্সেরই এক শাখা স্টুডিও “ফক্স এনিমেশন স্টুডিওজ” ডিজনির সাথে প্রতিযোগীতায় নেমে খুব খারাপভাবে ব্যর্থ হয় যার জন্য ফক্সকে সম্মুখীন হতে হয় বিশাল আর্থিক ক্ষতির।২০০০ সালে ফক্স এনিমেশন স্টুডিওজ বন্ধ হয়ে যাবার পরে ফক্স নতুনভাবে সাফল্যের মুখ দেখে তাদের আরেক শাখা “ব্লু স্কাই স্টুডিওজ” এর মাধ্যমে যার অধীনে নির্মিত হয়েছে আইস এজ,রিও এবং রোবোটস এর মত অসাধারণ সব ছবি।বক্সঅফিসে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তথা সবচেয়ে বেশি লাভজনক সিনেমার প্রথম ৫০ টি সিনেমার মধ্যে ৭টি চলচিত্র এই ব্যানারে নির্মিত হয়েছে।




এত ধৈর্য্য নিয়ে আমার লিখা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের।আশা করি,সামহোয়্যার ইন ব্লগে আমার প্রথম প্রচেষ্টা আপনাদের একটু হলেও পড়ার আনন্দ যুগিয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.