![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নির্ভেজাল প্রকৃতি প্রেমী । সার্টিফিকেটের জোরে শিক্ষিত আসলে গবেট। মনে যা আসে লিখি। সাহিত্যের বিচারে না, মনের ইচ্ছায়, পরিবর্তনের মানসে...
পাখি তথ্যঃ- হাকালুকি হাওড়ে অতিথি পাখি সহ প্রায় ৪১৭ প্রজাতির পাখির সন্ধান পাওয়া গিয়াছে। তম্মধ্যে দেশী প্রজাতি পাখির সংখ্যা ৩০৫ এবং পরিযায়ী(মাইগ্রেটরী) পাখির প্রজাতি ১১২। পাখী শুমারীর তথ্য অনুযায়ী ফেব্রুয়ারী ২০০৭-এ ৪২ প্রজাতির ৫১,৫২৮টি জলচর পাখি গণণা করিয়া পাওয়া গিয়াছিল, ডিসেম্বর ২০০৭-এ ৪০ প্রজাতির ১,২৬,৮৫১টি জলচর পাখি গণণা করিয়া পাওয়া গিয়াছিল, ফেব্রুয়ারী ২০০৮-এ ৪০ প্রজাতির ১,১৪,৪১৭টি জলচর পাখি গণণা করিয়া পাওয়া গিয়াছিল, ফেব্রুয়ারী ২০০৯-এ ৫৩ প্রজাতির ৮৫,৩৩৫টি জলচর পাখি গণণা করিয়া পাওয়া গিয়াছিল। ফেব্রুয়ারী ২০১০-এর শুমারীর তথ্য এখনো প্রকাশিত হয় নাই, তবে ধারণা করা হইতেছে ৫৪ প্রজাতির ৪৮,০০০ এর চেয়ে বেশী সংখ্যক জলচর পাখি গণণা করিয়া পাওয়া গিয়াছে। অতিথি পাখীর মধ্যে বালিহাঁস, লেঞ্জাহাঁস, খোপাডুবুরী, জলকবুতর, চখাচখি, কমন্টিল, নর্দান সোভেলার, ম্যালার্ড, গার্জেনী, গেডওয়াল, বিয়ার্স পচার্ড, কমন পচার্ড, ফেরুজিনিয়াস পচার্ড, রেড ক্রিস্টেড পচার্ড, টাস্টেড ডাক, লিটিল রিংড্ পচার্ড, লেজার সেন্ড প্লোভার, প্যাসিফিক গোল্ডেন প্লোভার, ব্রাউড হেডেড গাল এবং দেশী পাখীর মধ্যে কালেম, সরালী, বউ কথা কও, মাছরাঙ্গা, চিল, ঈগল, পানকৌড়ি, ডাহুক, শালিক, সাঁদা-বঁক, গো-বক, নিশি-বক, দোয়েল, প্যাঁচা উল্লেখযোগ্য। কিছু লোভী পাখী শিকারীদের নিত্য নতুন কৌশল ব্যবহার করিয়া অতিথি পাখি সহ দেশীয় পাখি নির্বিচারে হত্যা করার কারণে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষন আইন, ১৯৯৫ এর আওতায় ১৯৯৯ সালে হাকালুকি হাওড়কে প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তারপরও কিছু অসাধু পাখী শিকারীরা পাখী বিচরণের অভয়ারণ্য খ্যাত হাকালুকি হাওড়ে অতিথি পাখি নিধন করছেই। ২০০৪ সালে প্রথম মুড়ি ও ধানের সংগে বিষ মিশাইয়া অতিথি পাখিকে কৌশলে খাওয়াইয়া হত্যা করা শুরু হয়। ঐ বৎসর বিষয়টি লোক চক্ষুর গোচর হয়। শুরু হয় পাখী হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রচারণা। দুই পাখি শিকারীকে ভুকশিমইল এলাকা থেকে ৮৩টি মৃত পাখি সহ স্থানীয় জনগন আটক করে কুলাউড়া থানায় সোপর্দ করে। এ বিষয়ে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয় যাহা বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। আটক দুই পাখী শিকারীর নিকট থেকে পাওয়া যায় লোম হর্ষক কাহিনী। জানা যায় তাহারা বাজার থেকে বিষ সংগ্রহ করিয়া মুড়ি, খৈ, ধানের সংগে মিশাইয়া বিষ টোপ তৈরী করে। রাত অনুমান ৩টার দিকে যেখানে অতিথি পাখি থাকে সেখানে ধানের মধ্যে(শুকনা স্থানে) বিষটোপ ছড়িয়ে রাখে। ভোর বেলা পাখি সমূহ ধান ক্ষেতের মধ্যে আসিয়া ঐ বিষটোপ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিছু অসুস্থ পাখি ধান ক্ষেতের মধ্যেই মারা যায়। আবার কিছু অসুস্থ পাখি পানিতে গিয়ে পরে মারা যায়। পাখি শিকারীরা শুধু মাত্র যে পাখি গুলো ধান ক্ষেতের মধ্যে মারা যায় সেগুলো সংগ্রহ করে জবাই করে বিক্রি করে। ঐ পাখি খেয়ে অনেকে অসুস্থও হয়। আর যে পাখি গুলো পানিতে মারা যায় সেগুলো পঁচে পানিতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
ঘুড়ে আসুন হাকালুকি হাওড়
ঘিলাছড়া যুধিষ্ঠিপুর। হাকালুকি হাওরের কোলঘেঁষা গ্রাম এটি। স্টেশন থেকে ঘিলাছড়া মাত্র তিন কিলোমিটার। সবুজে ঘেরা ছোট ছোট পাহাড় ও টিলা, সেই সঙ্গে সবুজ ধানখেত এবং টিলার ফাঁকে আঁকাবাঁকা সুন্দর সব পথঘাট যেন ক্ষণিকের মধ্যেই হারিয়ে গেল অবিরাম বাদলধারায়। এমন বৈচিত্র্যময় খেলা না দেখে বিশ্বাসের উপায় কী! এখানে পাখির কিচিরমিচির ক্রমেই বেড়ে চলেছে। লিচুর ডালে কয়েকটা কাক ভিজে জবুথবু বসে ঝিমুচছে। শালিকের হাঁকডাকও শোনা যাচ্ছে বেশ। সিলেটের ভূমধ্যসাগর
সিলেটের ভূমধ্যসাগর
এ যেন সত্যি এক সাগর। চারদিকে ভূবেষ্টিত বিশাল এক জলরাশি। টিলার ওপর থেকে যেদিকে চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি। পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অনেক দূরে বড়লেখা ও জুড়ীর পাহাড়গুলো মনে হয় পানির মধ্যে মাথা জাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ব দিকে আরও দূরে আসামের পাহাড় চোখে পড়ে। মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও আসামের পাহাড় থেকে আসা ঢলে এই অঞ্চলের সব খালবিল ও হাওর রূপ নেয় যেন এক সাগরের। বৃহত্তর সিলেটের পূর্বাঞ্চলে এর অবস্থান। পাশে ভারতের আসাম সীমান্ত। সিলেটের গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা এবং জুড়ী উপজেলার প্রায় অধিকাংশ এলাকাজুড়ে এর বিস্তৃতি। সাগরের মতো ঢেউ ও গর্জন হয়তো হাওরে নেই; তবে যা আছে, তা-ই বা কম কিসের! কত টিলাই না হাওরগর্ভে হারিয়ে গেছে এর ঢেউয়ের তোড়ে। ফেঞ্চুগঞ্জের যুধিষ্ঠিপুরে টিলার ওপর পর্যটনকেন্দ্র গোছের কিছু একটা করার তাঁর ইচ্ছা থাকলেও সে আশা ভেস্তে গেছে। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা এই মৌসুমের আবাদ করতে পারেননি। তার পরও এখানে বৃষ্টির মৌসুম আসে অনেকের কাছে ভিন্ন মাত্রা নিয়ে। বিশেষত, জেলেপাড়াগুলো জেগে ওঠে নতুন প্রাণের উদ্দীপনায়। তাদের ঘরে ঘরে শুরু হয় যেন জীবনের নতুন আয়োজন। এভাবে প্রতিদিন তাঁদের ধরা মাছ স্থানীয় বাজার হয়ে চলে যায় সিলেটে। তারপর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
কীভাবে যাবেন কোথায় থাকবেন
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে গ্রিনলাইন ও সোহাগ পরিবহনের ভলভোসহ সিলেটগামী যেকোনো বাস ধরতে পারেন। সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এ ছাড়া কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন তিনটি ট্রেন পারাবত, জয়ন্তিকা ও উপবন সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সময় লাগে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। থাকবেন সিলেট শহরের যেকোনো হোটেল বা গেস্টহাউসে। কেননা, ফেঞ্চুগঞ্জে তেমন ভালো মানের হোটেল নেই। সিলেট থেকে সরাসরি বাস অথবা সিএনজি অটোরিকশাযোগে ফেঞ্চুগঞ্জে যাওয়া যায়। সেখান থেকে ঘিলাছড়া যেতে হবে শুধু সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। তবে সিলেট থেকে রিজার্ভ অটোরিকশায় সরাসরি ঘিলাছড়া যাওয়াই ভালো। দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। সময় লvগে ৪০ থেকে ৬০ মিনিট। যেতে হবে দুপুরের পর যেকোনো সময়। সকালবেলায় নৌকা ভাড়া পাওয়া কঠিন। প্রয়োজনে যোগাযোগ করে যাওয়া ভালো। নৌকাভাড়া পড়বে ঘণ্টাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
প্রয়োজনীয় তথ্য
সঙ্গে নিতে পারেন পানিরোধী ব্যাকপ্যাক, ছাতা, রেইনকোট, টর্চ, ক্যামেরা
ইত্যাদি। সঙ্গে একজন সিলেটি বন্ধু বা সহযোগী থাকলে ভালো। এই সময়ে কিনতে পারবেন হাওরের তাজা মাছ। তা ছাড়া খেতে পারবেন কাঁঠাল, আনারস, লটকন, পেয়ারাসহ নানা জাতের ফল।
জীব বৈচিত্রের সমাহার আর মিষ্টি পানির মৎস্য প্রাপ্তির এক অভূতপূর্ব স্থান হাকালুকি হাওড়। অতিথি পাখির কলরবে হাওড় এলাকায় নৈশব্দের সৃষ্টি করে। এটি বাংলাদেশে অবস্থিত হলেও এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম হাওড়। দু’টি পাতা একটি কুড়ির এলাকা সিলেট বিভাগে এটির অবস্থান। অনেকে হাওড়টির নাম শুনলেও বিস্তারিত জানে না। এমনকি অনেকে এই হাওড়ের নাম শুনলেই মনে করে এটা অন্য কোন দেশের হাওড়ের নাম। চাকুরীর খোজে ইন্টারভিউ নামক বিড়ম্বনার সম্মূখীন হতে হয় অনেকেরই। ইন্টারভিউ বোর্ডের এক সদস্য প্রশ্ন করে বসলেন, আচ্ছা বলোতো এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওড়ের নাম কি? বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে যদি এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাওড়ের নাম না বলতে পারি এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে। উত্তরটি হয়তো অনেকেরই জানা। সহজ উত্তর “হাকালুকি হাওড়”। আসুন জেনে নেই হাকালুকি হাওড় সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
তথ্যসূত্র
1. ↑ হাকালুকি হাওর, নিক্সন তালুকদার, বাংলাপিডিয়া, সিডি ভার্ষণ (2.0), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত। পরিদর্শনের তারিখ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।
2. ↑ ২.০ ২.১ ২.২ ২.৩ কাজী রোজানা আখতার (২০০০). "হাকালুকি হাওর". In কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম (in বাংলা) (প্রিন্ট). বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ ed.). ঢাকা: বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড. p. ১৭৯-১৯২.
3. ↑ ৩.০ ৩.১ ফওজুল করিম (তারা) (২০০০). "বড়লেখা সম্পর্কে একটি প্রামাণ্যচিত্র". In কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম (in বাংলা) (প্রিন্ট). বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ ed.). ঢাকা: বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড. p. ৩৮-৩৯.
4. ↑ ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, স্বরোচিষ সরকার, ed. "হ" (in বাংলা) (প্রিন্ট). বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (জানুয়ারি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ ed.). ঢাকা: বাংলা একাডেমী.. ১২২৪. আইএসবিএন 984-07-4222-1.
]
(সংগৃহিত)
©somewhere in net ltd.