নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার অক্ষর, আমার স্বাধীনতা...

নামের অর্থ অনুযায়ী আমি ‘সত্যের ভিখারিনী’ ( আম্মা বলে 'সত্যের অনুসন্ধানকারী'...ওটা ক্যামন যেন লাগে!)

সায়েলাতুল হক (বাঁধন)

আমি...শুধুই আমি

সায়েলাতুল হক (বাঁধন) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভূবন দা কে...

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৬

প্রিয় ভূবন দা,



জানি আমার আর চিঠিগুলোর মতো এটাও তোমার কাছে পৌঁছবে না। তবু লিখছি। কি করব বল, আর তো কেউ নেই লেখার মতো। সেই এইটুকুন থেকে এক তোমাকে ছাড়া আর কাকেই বা লিখি।



এখন আমি ঘরের বাইরে একা যেতে পারি। আমাদের ওই যে বেল গাছটা, যে টা তুমি আর আমি মিলে লাগিয়েছিলাম, ওটা তে এবার কত্ত বেল হয়েছে! কমল, শ্যামল, রুমা, পিঙ্কি, বিনু, অন্তু, ওরা সব্বাই কি খুশি তেই না খাচ্ছিল। আমি নিজে ওদের পেড়ে দিয়েছি, আর বলে দিয়েছি, যেন মিঠুদের গাছে না যায়, সে বার কি মার টাই না খেল শ্যামল! এখন কেউ আমাকে গাছে চড়তে বারণ করে না। কিন্তু, আমি আর আগের মত বেল খেতে পারি না দাদা। অথচ কত প্রিয়ই না ছিল আমাদের! তোমার প্রিয় বেল!



দাদা, বৌদি এখন আর আমাকে অলক্ষ্মী বলে না। পরশু রাতে আমার ঘরে এসে সে কি কান্না! আমার বিশ্বাস করতেই ইচ্ছে করছিল না, এই আমার সেই বৌদি, যে কিনা তোমাকে আর আমাকে জড়িয়ে...!

আমার এখনো মনে পড়ে, তুমি বৌদির দিকে হাত টা তুলে আমাকে দেখে থমকে গেলে, তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে। কতদিন তোমাকে দেখি না...আজ সাত বছর হতে চলল প্রায়।



তুমি কেন চলে গেলে, দাদা? এই ছোট্ট ব্যাপারে কেউ এত অভিমান করে। নাহয় আমি অলক্ষ্মী ই হলাম! জন্মের সময় যে মেয়ের মা মারা যায়, যার বাবা কোন কারণ ছাড়াই মাঝরাতে প্রাণ ত্যাগ করে, তাকে অলক্ষ্মী বলবে না তো কাকে বলবে। রক্তের সম্পর্ক ছাপিয়ে যে দাদা তখন মেয়েটাকে, তার সংসার টাকে আগলে রাখল, তাকেও আমি ধরে রাখতে পারলাম কই! বৌদি ঠিক ই বলেছিল সেদিন; আমি আসলেই অলক্ষ্মী! কিন্তু তুমি তো আমার লক্ষ্মী দাদা ছিলে, তাই না! আমি না হয় বলেইছিলাম, আমার কেউ ছিল না কখনো, একাই ছিলাম আমি। তাতে এত অভিমান! কেন সেদিন রেললাইন এ গিয়েছিলে তুমি? কাঁদতে? আগেও যে কতবার গিয়েছিলে ওখানে, সব বার কি চোখের জল লুকাতেই গিয়েছিলে। কতবার বারণ করেছি তোমাকে; ট্রেন কি বিকট গতিতে আসে ওখানে।



জানো দাদা, তোমার মিনির বয়স এখন আট। ওকেও তুমি বঞ্চিত করেছ পিতৃস্নেহ থেকে; মেয়েটা জানতেও পেল না, তার বাবা জগতের শ্রেষ্ঠ মানুষ ছিল। ও যখন শ্যামলের পিছে দাদা... দাদা বলে ছোটে, আমি আমার ছেলেবেলায় চলে যাই, মনের ভেতরেই তোমাকে ডেকে উঠি... ভূবন দা... ভূবন দা... ভুবন দা...!



আমার সেকেন্ড ইয়ার ফাইনাল এর রেসাল্ট হয়েছে। পাস করেছি। এই আর দুটো বছর। তারপর আর কেউ আমাকে পাবে না। তোমার মতো আমিও চলে যাব।

আর, কোনদিন মিথ্যে বলব না। এখন আর হারানোর কিছু নেই আমার; তবু বলবনা... ঠাট্টা করেও না!

আর সব কথার মতো তোমাকে দেয়া শেষ কথাটাও রাখব। পড়াটা ঠিক শেষ করব, দেখো। কিন্তু এর পর আমার আর কাউকে দেয়া কোন প্রতিশ্রুতির দায় নেই। শুধু প্রায়শ্চিত্ত বাকি আছে একটা।

তুমি যেখানেই থাক। ভাল থাক। দুবছর পরই আসছি আমি।



ইতি

চৈতালি

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

তোমার গল্পের মৃত রাজকন্যা বলেছেন: শেষ করে... কেমন যেন লাগলো! দুঃখ বিষাদ সব যেন ছুঁয়ে গেলো...

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৪

সায়েলাতুল হক (বাঁধন) বলেছেন: ধন্যবাদ...শেষ করার জন্যে...ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে... :) :)

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩

ইনকগনিটো বলেছেন: সুন্দর।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৪

সায়েলাতুল হক (বাঁধন) বলেছেন: আপনি আমার লেখা পড়েছেন !!! :-B
অনেক খুশী লাগছে !!! :-)
ধন্যবাদ !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.