![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পূন্য সেদিন আমার বাসায় এসেছিল। ওর মা’কে নিয়ে, ফুল তুলতে।
তখন শরৎ কাল। আমার বাসায় শিউলি ফুলের গাছ আছে। ভোর সকালে ঝরা শিউলিতে সবুজ ঘাস গুলো সাদা হয়ে থাকে। বিন্দু-বিন্দু শিশির কনায় জড়ানো ফুল গুলো দেখতে খুব সুন্দরই লাগে।
মূলত ফুল নিতে আর দিন পূন্যর মা’ই আসে। কিন্তু সেদিন মা’য়ের সাথে সেও এসেছিল। আর ও যে আসবে সেটা আমিও জানতাম। তাই ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে বাড়ির উঠোনে হাটা-হাটি করছিলাম। আমার মা কিছুটা অবাক হয়েছিল। কিন্তু কিছু জিজ্ঞাসা করেনি।
পূন্য যখন আসে তখন আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছিলাম। ও ফুল তুলছিল, আর আমি আড় চোখে মাঝে-মাঝে দেখছিলাম। বলা হয়ে থাকে – ‘শৈশবে ভালোবাসা না চাইতে পাওয়া যায়, আর যৌবনে না-কি তা চুরি করতে হয়’। সেই হিসেবে আমি তেমন দক্ষ চোর নই, তবে চেষ্টা করছিলাম আর কি।
আমার মুঠোফোন আমার হাতেই ছিল। শ্রীকান্তর একটি গান বার্তা লিখে পাঠালাম –
‘শিউলি ঝরা সকালে,
উদাসী কোনো বিকেলে,
একা-একা কানে-কানে
তোমাকে বলার ছিল- ‘ভালোবাসি’।
বার্তা পাঠানোর পর খেয়াল করছি ফোনটা ওর হাতে কি-না। কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না। অধৈর্য হয়ে গেলাম আমি। এদিকে আমার মা’ও চলে এসেছেন – ফুল তুলতে। পূন্যর দিকে চোখে পড়তেই আমার দিকে ফিরে চাইলেন, কিন্তু কিছু বললেন না। বুঝলাম –আমার মা বুদ্ধিমতী মেয়ে।
পূন্য চলে গেল। আমিও ঘরে ঢুকলাম। খানিকটা ফ্রেশ হয়ে সোজা ফিরে এলাম বিছানায় – দ্বিতীয় প্রস্থ ঘুমানোর জন্য। চোখে যখন খানিকটা তন্দ্রা এসেছিল তখনই মুঠোফোনে পূন্য উত্তর পাঠালো –
‘আমার পুজার ফুল,
ভালোবাসা হয়ে গেছে,
তুমি যেন ভুল বুঝোনা’।
ভাবছি কি উত্তর দেয়া যায়। রবী ঠাকুরের গীতবিতানকে কাছে টেনে নিলাম। ঠাকুরের ১৯২৯ সালের ৭ লাইনের ছোট্ট গানটি লিখে পাঠালাম-
‘ফুল তুলিতে ভুল করেছি প্রেমের সাধনে
বঁধু, তোমায় বাঁধব কিসে মধুর বাঁধনে'।
বার্তা পেয়ে পূন্য ফোন করল। জিজ্ঞাসা করল – জেগে আছ?
©somewhere in net ltd.