নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিধ্বনি

প্রজন্মের হাত ধরে জাগরণের পথে

সজল বস

স্বপ্নদেখি যা কিছু সত্য ও সত্যকে আলিঙ্গন করে, তার শেষপ্রান্তে যাব।

সজল বস › বিস্তারিত পোস্টঃ

পদার্থ নাকি স্রষ্টা?

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

“আমি কে? আমি কোথা হতে এসেছি? আর কোথায় যাব?”- যা মানুষের জীবনের সবচেয়ে মৌলিক প্রশ্ন। একজন চিন্তাশীল মানুষ স্বাভাবিকভাবে এই প্রশ্নের সমাধান চায়। সে মানবজাতি, জীবন ও মহাবিশ্ব নিয়ে চিন্তা করে এবং একটি সঠিক সমাধানে পৌছাতে চায়।



যুগ যুগ ধরে এই বিষয়গুলো উত্তর দিতে গিয়ে অনেক দর্শনের জন্ম হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি মতবাদ কার্ল মার্ক্সের দ্বান্ধিক বস্তুবাদ (Dialectical Materialism)। এই দর্শন আমাদের কাছে একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, তা হল-“মহাবিশ্বের চরম উৎস কোনটি, পদার্থ নাকি স্রষ্টা?”



এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পূর্বে আমাদের অবশ্যই পদার্থ সম্পর্কে জানতে হবে। আধুনিক বিজ্ঞান পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। যথা- মৌলিক পদার্থ (Simple matter) ও যৌগিক পদার্থ (Complex matter)।



মৌলিক পদার্থ হল পদার্থের সাধারন রূপ। যথা-অক্সিজেন (O2), হাইড্রোজেন (H2) ইত্যাদি।



যৌগিক পদার্থ হল দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থের সম্মিলিত রূপ। যথা-পানি (H2O), লবণ (NaCl) ইত্যাদি।



পদার্থের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম উপাদান হল পরমাণু (Atom)। সকল পরমাণু তিনটি মৌলিক কণিকার সমন্বয়ে গঠিত। যথা-ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন।



একটি পরমাণুর কেন্দ্রে থাকে নিউক্লিয়াস। এর চারপাশে কক্ষপথে যে পরিমা্ণ ইলেক্ট্রন থাকে তার কেন্দ্রেও সে পরিমাণ প্রোটন থাকে। মৌলের নিঊক্লিয়াসে যে পরিমাণ প্রোটন থাকে তাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে।



পদার্থ সকল কিছুর উৎস এই ধারণাটি গড়ে উঠেছে কার্ল মার্ক্সের দ্বান্ধিক বস্তুবাদ (Dialectical Materialism) দর্শন হতে। এই দর্শন মতে প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে দ্বন্ধ (Contradiction) বিদ্যমান ও দ্বন্ধ বস্তুর মধ্যকার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রত্যেক বিষয় হচ্ছে বস্তুর মধ্যকার এই দ্বন্ধের ফলাফল। এর মধ্য দিয়ে বস্তু এক রূপ হতে অন্য রূপে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই দর্শনের ভিত্তিতে মার্ক্স সমাজ, বিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।



নিম্নে দ্বান্ধিক বস্তুবাদের আলোকে পদার্থ সর্ম্পকে তার চিন্তাকে তুলে ধরা হল -



প্রকৃতিতে বিভিন্ন মৌলিক উপাদান বিদ্যমান যাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা পারমাণবিক সংখ্যা রয়েছে। প্রত্যেক পদার্থের সাধারণ উপাদানটি একই, তা হল পরমাণু। পর্যায় সারণির (Periodic Table) প্রথম মৌলিক পদার্থ হল হাইড্রোজেন ও সর্বশেষ হল ইউরেনিয়াম। এছাড়াও কৃত্রিমভাবেও কিছু পদার্থ সংশ্লেষিত করা হয়েছে।



পদার্থ এক স্তর হতে অন্য স্তরে তাদের অন্তর্নিহিত দ্বন্ধের কারণে উন্নীত হয়। এই উন্নয়নের প্রাথমিক বিন্দু হল হাইড্রোজেন যার মধ্যে ধনাত্মক ও ঋনাত্মক চার্জ। স্বাভাবিকভাবেই, এদের মধ্যে দ্বন্ধ তৈরী হয়। ফলে দ্বন্ধিক উন্নয়নের (Dialectical Development) মধ্য দিয়ে তা উচ্চতর পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট্য পরমাণুতে পরিণত হয়। যা হল হিলিয়াম এবং যার মধ্যেও অন্তর্নিহিত দ্বন্ধের (Internal Contradiction) ধারা বিদ্যমান থাকে। এভাবে পদার্থের বিবর্তন অব্যাহত থাকে। এ দর্শনের মাধ্যমে যা প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে তা হল সকল কিছুর উৎস হল পদার্থ এবং পদার্থের বিবর্তন মধ্য দিয়ে সব কিছু এসেছে।



দ্বান্দিক বস্তুবাদীদের এসকল ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। এর কারণ হচ্ছে যেহেতু, অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ হচ্ছে পদার্থের অত্যাবশ্যকীয় বৈশিষ্ট্য সেহেতু প্রকৃতির কোন একটি মৌলের সকল পরমাণুর বিবর্তন ঘটার কথা, কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। যেমন -হাইড্রোজেন আভ্যন্তরীণ দ্বন্ধের কারণে হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কিছু হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হল আর কিছু কিছু অবিকৃত রয়ে গেলো কেন? অর্থাৎ, কিছু মৌলের ক্ষেত্রে দ্বন্ধ হল আর কিছু মৌলের ক্ষেত্রে হল না কেন?



প্রকৃতপক্ষে মানুষ, জীবন ও মহাবিশ্বের কোন কিছুই বিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় নাই। বরং, এদের প্রকৃতি যা অপরিহার্য করে দিয়েছে তা হল এদের সৃষ্টিকর্তা রয়েছে। প্রতিটি জিনিসের পেছনে একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন এ সিদ্ধান্তে পৌছানোর কারণ হচ্ছে আমাদের অনুধাবনযোগ্য প্রতিটি বিষয় যেমন-মানুষ, জীবন ও মহাবিশ্ব ইত্যাদি সীমাবদ্ধ, দুর্বল, অসম্পূর্ণ ও তাদের অস্তিত্বের জন্য অপরের উপর নির্ভশীল। মানুষ সীমাবদ্ধ কারণ সকল ক্ষেত্রেই সে একটি নির্দিষ্ট সীমার মাঝে বেড়ে ওঠে এবং কখনই এই সীমাবদ্ধতার বাইরে যেতে পারে না। জীবন সীমাবদ্ধ, কারণ তা একটি স্বতন্ত্র প্রাণী সত্তার মাঝেই প্রকাশিত হয় এবং তার মাঝেই বিলুপ্ত হয়। মহাবিশ্ব সীমাবদ্ধ কারণ তা কিছু সীমাবদ্ধ মহাজাগতিক বস্তুর সমষ্টি মাত্র এবং দৃশ্যতই অনেকগুলো সীমাবদ্ধ বস্তুর সমষ্টিও সীমাবদ্ধ।



আমরা যখন সীমাবদ্ধ বস্তুগুলো নিয়ে চিন্তা করি, তখন দেখতে পাই এগুলো কোনটি চিরন্তন নয় নতুবা এরা সীমাবদ্ধ হত না। আর এ কারণেই এদের একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছে যিনি সকল কিছূর স্রষ্টা। এখন এই সৃষ্টিকর্তাকে হয় কেঊ সৃষ্টি করেছে, অথবা তিনি নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছেন অথবা তিনি চিরন্তন, আদি-অন্তহীন এবং যার অস্তিত্ব অপরিহার্য। তাকে কেউ সৃষ্টি করেছেন, এ ধারণাটি মিথ্যা কারণ তাহলে তিনি সীমাবদ্ধ হয়ে যান। এক্ষেত্রে তিনি আর স্রষ্টা থাকেন না বরং তাকে যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই স্রষ্টা। অন্যদিকে, তিনি নিজে নিজেকে সৃষ্টি করেছেন এটিও সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। আসল কারণ স্বাভাবিক যুক্তির বিচারে ইহা অসম্ভব। এর অর্থ হচ্ছে তিনি সৃষ্টি হবার সময় নিজেকে সৃষ্টি করেছেন।



কাজেই সৃষ্টিকর্তা এমন যাকে কেউ সৃষ্টি করে নাই। বরং, তা স্বয়ংসম্পূর্ণরূপে অনন্তকাল থেকে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আর তিনি হলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা।



“নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, দিবা-রাত্রির পরিবর্তনে নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল ব্যাক্তিদের জন্য” সূরা আল ইমরানঃ ১৯০



উৎসঃ Click This Link

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

মূসা আলকাজেম বলেছেন: ভালো।



কাজেই সৃষ্টিকর্তা এমন যাকে কেউ সৃষ্টি করে নাই। বরং, তা স্বয়ংসম্পূর্ণরূপে অনন্তকাল থেকে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আর তিনি হলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা।



কথা ঠিক আছে, তবে কথা হলো সৃষ্টিকর্তার উপর দিয়ে কোন সময় অতিবাহিত হয়না। তিনি সময়ের ঊর্ধ্বে। তার কাছে অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই। তিনি সময় সৃষ্টির আগেও ছিলেন। এই ব্যাপারটি আমি আমার নিম্নের পোষ্টে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছি। পড়ে দেখতে পারেন।



মহাবিশ্বের শুরু এবং স্রষ্টার অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ।

২| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫২

সজল বস বলেছেন: ভালোবেসে ফেললাম

৩| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৭

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ ভুল প্রমাণিত করলেন এবং এর মানে সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। এটা কোনো যুক্তি হলো??
সৃষ্টিকর্তার বিষয়টি বিশ্বাসের ব্যাপার।
বিজ্ঞান অনেক জায়গায় গিয়ে আটকে যায়। এর মানে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণিত হয় না। বিজ্ঞান আজ যেখানে আটকে গেছে, আগামির বিজ্ঞানীরা সেখান থেকে এগিয়ে নেবেন এবং নতুন করে আটকা পড়বেন। এটাই প্রগতি। বিগ ব্যাং কেন হলো বিজ্ঞানীরা এখনো ব্যাখ্যা দিতে পারছে না। এর মানে বিজ্ঞানীরা যদি বিশ্বাস করে নেন এখানে সৃষ্টিকর্তার হাত রয়েছে তাহলে বিজ্ঞান এখানেই থেমে যাবে। আর এ কারনে অবিশ্বাসই হলো প্রগতি।
মনে করুন, আপনি কোনো গুহার সামনে গিয়ে বিশ্বাস করে নিলেন সেখানে কোনো ভয়ঙ্কর প্রাণী রয়েছে।তাহলে গুহার মধ্যে টর্চ মেরে অনুসন্ধান করার প্রবনতা আপনার নষ্ট হয়ে যাবে। মানুষ যদি বন্যাকে সৃষ্টিকর্তার গজব হিসেবে দেখতো, তাহলে আর বাঁধ দেওয়ার চিন্তা করতো না। যারা অবিশ্বাস করেছে তারাই সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়েছে। বিজ্ঞান দিয়ে আপনি হাস্যকরভাবে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে চাইছেন। কারন বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল অন্য সব কিছুর মতোই।

আপনার মতো মানুষ দেখে একটা বিষয় পরিস্কার হয়,
সেটা হলো একজন ধার্মিকের মধ্যে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস দুই-ই বিদ্যমান। তাঁদের অবচেতন মনে অবিশ্বাসটাও কাজ করে সাঙ্ঘাতিকভাবে। যে কারনে অযৌক্তিক-যুক্তি খুঁজে সৃষ্টিকর্তাকে প্রমাণ করতে যান। তারা একটা বিষয় বোঝে না যে, সৃষ্টিকর্তাকে প্রমাণ করতে চাওয়া মানেই তাঁর মধ্যে অবিশ্বাস রয়েছে। কাজেই বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে না থেকে বিশ্বাসটা নিয়েই থাকুন। তা না হলে ভণ্ড হয়ে যাবেন।

১৩ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

সজল বস বলেছেন: অসাধারণ বিশ্লেষণ। ভালবেসে ফেললাম।
আপনি বলেছেনঃ
দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ ভুল প্রমাণিত করলেন এবং এর মানে সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। এটা কোনো যুক্তি হলো??
দ্বান্দিক বস্তুবাদের এই সংকট মেনে নিলেন, ধন্যবাদ। এর আগে মেনে নিতে দেখিনি কাওকে। তাই একটু অবাকও হলাম।

আমাকে নিয়ে আপনার মূল্যায়নের প্রশংসা করছি। কয়েক বছর আগেও আপনারই মত ছিলাম। আপনার যুক্তিগুলো মেনে নিতে আমার কোন সমস্যা নেই। আমিও একই প্রক্রিয়া অনুসরন করি।

আপনি বলেছেনঃ
বিজ্ঞান অনেক জায়গায় গিয়ে আটকে যায়। এর মানে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণিত হয় না। বিজ্ঞান আজ যেখানে আটকে গেছে, আগামির বিজ্ঞানীরা সেখান থেকে এগিয়ে নেবেন এবং নতুন করে আটকা পড়বেন। এটাই প্রগতি। বিগ ব্যাং কেন হলো বিজ্ঞানীরা এখনো ব্যাখ্যা দিতে পারছে না। এর মানে বিজ্ঞানীরা যদি বিশ্বাস করে নেন এখানে সৃষ্টিকর্তার হাত রয়েছে তাহলে বিজ্ঞান এখানেই থেমে যাবে। আর এ কারনে অবিশ্বাসই হলো প্রগতি।

অসাধারণ যুক্তি। এবং পুরোপুরি আপনার সাথে একমত না হলেও অনেকটা একমত। একমত না এই কারনে যে সন্দেহ, অবিশ্বাস এবং ধ্রুবক এক কথা নয়। অবিশ্বাস থেকে কিছু সৃষ্টি হয় না। সৃষ্টির সুচনা হয়ঃ
১. আকাংক্ষা, আগ্রহ, কৌতুহল থেকে
২. সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চাওয়া থেকে
৩. চিরন্তন সীমাবদ্ধতার বিকল্প পথের চিন্তা থেকে।

আপনি উদাহরণ দিয়েছেনঃ
মনে করুন, আপনি কোনো গুহার সামনে গিয়ে বিশ্বাস করে নিলেন সেখানে কোনো ভয়ঙ্কর প্রাণী রয়েছে।তাহলে গুহার মধ্যে টর্চ মেরে অনুসন্ধান করার প্রবনতা আপনার নষ্ট হয়ে যাবে।

এটা যদি আপনার ব্যক্তি চিন্তা বা আপনার সীমাবদ্ধতা হয় তা হলে আমি কি বলতে পারি? আমি কিন্তু টর্চ মেরে দেখতে চাইবো প্রাণীটি কতটা ভয়ংকর? এবং প্রাণীটি আমাদের কোন কাজে আসতে পারে কিনা?
অতএব, আমি দাবী করতেই পারি অবিশ্বাসই প্রগতি নয়। প্রগতি হলোঃ
১. আকাংক্ষা, আগ্রহ, কৌতুহল
২. সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চাওয়া
৩. চিরন্তন সীমাবদ্ধতার বিকল্প পথের চিন্তা।

এখন একটু চিন্তা করে দেখুন, আজকের বিজ্ঞান এই পর্যায়ে আসতে চিন্তাশীল শ্রেণী বা বিজ্ঞানীরা সবসময় একটা মানদন্ড দাড় করিড়ে নিয়েছে। যেটাকে আপনারাই থিউরী বলেন। এবং এই অপ্রমানিত থিউরী বিজ্ঞানীরা এবং বিজ্ঞানের অনুসরনকারীরা বিশ্বাস করতে শুরু করে কিছুটা সন্দেহের দৃষ্টি দিয়ে। উদাহরন হিসাবে বলতে পারিঃ
১ । মোঙ্গল গ্রহে পানি থাকার সম্ভাবনা
২। বানর থেকে মানুষ আসার সম্ভাবনা
৩। কোষের থেকে প্রাণের উৎপত্তির সম্ভাবনা
এখন বিজ্ঞানীরা যদি এগুলোর সম্ভাবনাকে অবিশ্বাস করতো, তাহলে গবেষণা গুলো এতদিনে থেমে যেত এবং বর্তমানে এগুলো নিয়ে গবেষনা করা হতনা। আবারও বলছি খেয়াল করুনঃ
"অবিশ্বাসী প্রগতি না, অবিশ্বাস হলো প্রগতির অন্তরায়। বরং সন্দেহ মিশ্রিত বিশ্বাসই হলো সৃষ্টির সূচনা।"
আপনার সাথে আমার পার্থক্য বোধহয় এতটুকুই।

এখন আপনি চিন্তা করে দেখুন আপনার এডাপ্শন গুলো কোন প্রক্রিয়ায় নেওয়া। আপনার ওয়ে ওফ থিংকিং এর বেস কি।

আপনি বলেছেনঃ
সৃষ্টিকর্তার বিষয়টি বিশ্বাসের ব্যাপার।
আপনি আরো বলেছেনঃ
আপনার মতো মানুষ দেখে একটা বিষয় পরিস্কার হয়,
সেটা হলো একজন ধার্মিকের মধ্যে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস দুই-ই বিদ্যমান। তাঁদের অবচেতন মনে অবিশ্বাসটাও কাজ করে সাঙ্ঘাতিকভাবে। যে কারনে অযৌক্তিক-যুক্তি খুঁজে সৃষ্টিকর্তাকে প্রমাণ করতে যান। তারা একটা বিষয় বোঝে না যে, সৃষ্টিকর্তাকে প্রমাণ করতে চাওয়া মানেই তাঁর মধ্যে অবিশ্বাস রয়েছে। কাজেই বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে না থেকে বিশ্বাসটা নিয়েই থাকুন। তা না হলে ভণ্ড হয়ে যাবেন।


অসাধারণ আপনার বিবেচনা বোধ। সত্যিই ভালবেসে ফেলেছি। তবে জানেন তো সৃষ্টিকর্তার বিষয়টি বিশ্বাসের ব্যাপার তাদের জন্য যারা ঘুম কাতুরে ইশ্বরের সন্ধান করেন। সৃষ্টিকর্তা আমার কাছে একটা সরলীকরন। সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানের ক্রম বিকাশের সরলীকরন।

আপনি বলেছেন "অবিশ্বাসই হলো প্রগতি" কিন্তু মজার বিষয় হলো একমাত্র স্রষ্টার অস্তিত্বের ব্যাপার ছাড়া সকল ক্ষেত্রে আপনি সংশয়ের সাথে বিশ্বাসী, অথবা অপ্রমানিত থিউরী কে মানদন্ড ধরেছেন। এটা কি খেয়াল করেছেন?

আপনার সাথে আমার পার্থক্য বোধহয় এতটুকুই যে আপনি দুই জায়গাতে পরস্পর বিরোধী দুই রকম। আমি একই রকম। কারনঃ
স্বপ্ন দেখি যা কিছু সত্য ও সত্যকে আলিঙ্গন করে, তার শেষপ্রান্তে যাব।

আপনার যুক্তিগুলো সত্যিই অসাধারণ। আপনার সান্নিধ্য পেলে খুশি হতাম। কে জানে হয়তো আপনি পূর্ব পরিচিত।



৪| ১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:০১

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: আপনি যেহেতু সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস (যদিও পরিপূর্ণভাবে নয়, সন্দেহ আছে আপনার মনে) করেন; সেহেতু সৃষ্টিকর্তার স্বরুপ কেমন?? তাঁর কি মানবিক অনুভূতি রয়েছে?
আমার একটি পোস্টে এ সম্পর্কিত একটা জিজ্ঞাসা রয়েছে। জবাব দেবেন আশা করি। লিঙ্ক দিলাম।
Click This Link

১৩ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

সজল বস বলেছেন: ভবিষ্যতের বিজ্ঞান যদি এটা প্রমান করে যে স্রষ্টা নেই। তাহলে আমার মেনে নিতে আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু সেটাতো প্রমানিত হওয়া লাগবে। অক্সিজেনের অস্তিত্ব যেমন আমার বিশ্বাস করতে হয় না। কারন সেটা আছে। একই ভাবে ড্রাকুলা বা ড্রাগনকে আমার কষ্ট করে অবিশ্বাস করতে হয়না কারন সেটা নেই।
আপনি জানতে চেয়েছেন সৃষ্টিকর্তার স্বরুপ কেমন। তাঁর কি মানবিক অনুভূতি আছে কিনা।
সৃষ্টিকর্তার মানবিক অনুভূতি থাকলে তিনি স্রষ্টা থাকেন কি করে?

আমরা কিছু মাত্রা দ্বারা বেষ্টিত। যেমন সময়, স্থান, দুরুত্ব। স্রষ্টার উপরে এই মাত্রা গুলো আরোপ না করলে একটা জয়গায় হয়তো আসা যেতে পারে। পরম গতি এবং গতি যেমন একটা আরেকটির আপেক্ষিকতা। তেমনি দয়া এবং পরম দয়া এক না।
শুধু মাত্র শব্দের মাঝে যদি আবদ্ধ থাকেন তাহলে আমি কি করতে পারি?

১৩ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

সজল বস বলেছেন: ভাই পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন শুধুমাত্র তর্কে জেতার জন্য যদি এ আলোচনা হয়ে থাকে তাহলে নতুন করে ভেবে দেখতে হবে।

৫| ১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৪

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: আপনি প্রগতি বলতে বুঝিয়েছেন
১. আকাংক্ষা, আগ্রহ, কৌতুহল
২. সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চাওয়া
৩. চিরন্তন সীমাবদ্ধতার বিকল্প পথের চিন্তা।

মানলাম। আপনি কি ভেবে দেখেছেন বিশ্বাস জিনিসটা আপনার ওই তিনটা পয়েন্টকেই বাধাগ্রস্ত করে। বা বিশ্বাস থাকলে ওই তিনটা জিনিস আসে না কখনোই।
বৈজ্ঞানিক প্রকল্প কিন্তু বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করেই নেওয়া হয়। বৈজ্ঞানিক প্রকল্প আর বিশ্বাস এক জিনিস নয়।

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৬

সজল বস বলেছেন: আমি বিশ্বাসী, কিন্তু আপনি বিশ্বাসীদের যেই ফর্মেটে রাখতে চাচ্ছেন সেই ফর্মেটের বিশ্বাসী বোধহয় আমি বা আমরা নই। মিডিয়ার মত আপনিও উপনিবেশিক স্টাইলে নির্দিষ্ট ফর্মেটে কোনঠাসা করতে চায়বেন, এটা আশা করা কঠিন। অন্তত আপনার যুক্তি দেওয়ার ধরণ দেখে তা মনে হয় না।
যাইহোক, আপনি ধরেই নিয়েছেন বিশ্বাসের সাথে আমার দেওয়া প্রগতির সংজ্ঞা যায় না। অর্থাৎ আপনি সম্ভবত আমার আগের উত্তর টা মনোযোগ দিয়ে পড়েননি। এরকম হলে দুঃখজনক।
ঐ পদ্ধতিগুলো ফলো করেই আমি বিশ্বাসী। সৃষ্টিকর্তা আমার কাছে একটা সরলীকরন। সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানের ক্রম বিকাশের সরলীকরন। চেতনার অস্তিত্ব স্বীকার করছেন না তাহলে?

সীমাবদ্ধ বিজ্ঞান দিয়ে আপনি যদি দর্শণকে মূল্যায়ন করেন, তাহলে সেটা আত্নহত্যা করা হয়ে যায়।

"অবিশ্বাসই প্রগতি না, অবিশ্বাস হলো প্রগতির অন্তরায়। বরং সন্দেহ মিশ্রিত বিশ্বাসই হলো সৃষ্টির সূচনা।" এইটা কে কিভাবে নিয়েছেন বলেননি। বরং এড়িয়ে গেছেন।
আগের আলোচনা থেকে ফলাফল আসার আগ পর্যন্ত পরের আলোচনাতে যাওয়া চিন্তাশীলদের কাজ না।

৬| ১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৫

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: দ্বান্দিক বস্তুবাদ ভুল তা আমি বলছি না। সময় করে আমি এ নিয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করবো।

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:০০

সজল বস বলেছেন: দ্বান্দিক বস্তুবাদ কে ভুল মনে না করলে প্রথম মন্তব্যটা পুরোপুরী উচিত হয়নি। আপনার সঙ্গে আলোচনা করে দ্বান্দিক বস্তুবাদ সম্পর্কে শেখার প্রত্যাশায় রইলাম।

৭| ১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৯

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: আপনাকে আমার এই লেখাটি পড়ার এবং মন্তব্য দেওয়ার আহবান জানাই।
Click This Link

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৩

সজল বস বলেছেন: আপনার লেখাটি আগেই পড়েছিলাম। আমার আগের উত্তরগুলো ঠিকমত পড়লে এই আলোচনার পূনরাবৃত্তি দরকার ছিল না। আমার ইশ্বর অবশ্যই মাত্রা বিবর্জিত। ইশ্বর সম্পর্কিত আমার ধারনা আপনার পাওয়ার সম্পর্কিত ধারনার কাছাকাছি। পার্থক্য হলো আপনার পাওয়ার বিচার বিশ্লেষন করার ক্ষমতা বিবর্জিত।

আপনার মামার বক্তব্যে শুভংকরের ফাকি আছে। ওখানে আপনার মামা নিজের অবস্থান পরিস্কার করার জন্য প্রতিকী স্রষ্টার বিচার সেট করে নিয়েছেন। যেমনটা বিজ্ঞানীরা করে থাকেন।

৮| ১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:২০

সজল বস বলেছেন: আমার চিন্তার পদ্ধতি জানতে চিন্তা ও চিন্তার পদ্ধতি পোষ্টটা পড়তে পারেন।
বাই দা ওয়ে আপনাকে কিন্তু ভালবেসেই ফেললাম। আপত্তি না থাকলে বন্ধু হতে পারি। ফেসবুকে আমি

৯| ১৫ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১০

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: খুব ভালো করে চিন্তা করে দেখুন।

বিশ্বাসের সঙ্গে সন্দেহ মিশ্রণ হলে সেটা কি আর বিশ্বাস থাকে??
সেটা অবিশ্বাস।

আর ধর্মীয় বিশ্বাস এবং বৈজ্ঞানিক প্রকল্প সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। আর মামার বক্তব্যে শুভঙ্করের ফাকি নেই।

তোর সমাজ পরিবার যদি বলতো আমি শয়তান, তাহলে তুই তো আমাকে সেভাবেই মানতিস?

এই বিশ্বাসের মূল্যটা কি??

১০| ১৫ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: বলুন তো ইতিহাস অনুযায়ী, পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অশান্তির মূল কি??

১১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫৯

বাংলাদেশী দালাল বলেছেন:
ভাই সজল, ভালোবেসে ফেললাম আপনার ধৈর্য্য, ব্যবহার আর প্রগতিশীল চিন্তাধারা কে।

চমৎকার লেখা আর মন্তব্য গুলোর উত্তরে +++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.