![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভৈরবের ওপারে আশুগঞ্জ পড়তাম। আমাদের মাদরাসাটা ছিলো শহরতলী এলাকায়। শহরটা অবশ্য থানা কেন্দ্রিক। ওই এলাকার আশপাশ মিলিয়ে "জামিয়া" মাদরাসা ছিলো ছয়-সাতটা। শহরেও আরো ছিলো। আমাদের কিশোরগঞ্জ শহরে, আমার জানা মতে "জামিয়া" মাদরাসা আছে পনেরটার উপরে। আর প্রত্যেক থানা ভিত্তিক যদি আরো ছয়টা করে ধরি তাহলে, সদর মিলিয়ে তেরো থানায় মোট জামিয়া আছে ৮৭ টি।
এবার শুনেন,
কিছুদিন আগে আমাকে দাওরা(সরকার কর্তৃক মাস্টার্স স্বীকৃত) শেষ করা এক আপু কল দিয়েছিলো। মাদরাসায় সবার কাছে আমি, ইন্টারনেট সমন্ধে সবজান্তা লোক ছিলাম। উনি ইউরোপের কোন একটা দেশে যাবে, তাই ইন্টারন্যাশনাল ভ্যেক্সিন সার্টিফিকেট লাগবে।
আমাকে বললো, কিভাবে কী করতে পারি(?)
আমি গভঃ ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করার নিয়মকানুন বলে দিলাম। একটা ভিডিয়োও দিলাম সহজতর হওয়ার জন্য। ওখানে এডুকেশন ব্যকগ্রাউন্ড প্রমানের জন্য কিছু অপশন ছিলো। যেমন, কোন স্তর শেষ করা হয়েছে। উনি ভাবলেন যেহেতু দাওরা শেষ তার মানে মাস্টার্স স্তর শেষ করা হয়েছে, উনি দিলেন মাস্টার্স। তারপর অপশন আসলো কোন প্রতিষ্ঠান থেকে। ওখন থেকেই আসল ঘটনার শুরু হয়েছিলো। তন্নতন্ন করে "বিছ্রায়াও" মাদরাসার নাম বের করা গেলো না। হতাশ হলেন।
"জামিয়া" আরবি শব্দ, যার অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়। ইংলিশে যেটাকে ইউনিভার্সিটি বলে। বাংলাদেশে প্রচলিত জামিয়ার হিসাব টানলে আট নয় হাজারে দাঁড়াবে। টিনের চারটা বেড়া দিয়েই নাম তুলে জামিয়া। জামিয়াতে আবার প্রথম বর্ষ / ইয়াজদহমও আছে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জামিয়াতেই শিশু শ্রেণী আছে। আর একটা ঠুনকো মাস্টার্সের স্বীকৃতি আছে। অথচ জামিয়ার মান বজায় রেখে, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আলাদা অনুষদ অনুযায়ী পড়াশোনা হওয়ার কথা ছিলো। আল ফারাবির মতো সাহিত্যিক, ইবনে সীনার মতো ডাক্তার, উমর খৈয়াম, ইবনে বতুতা উপহার দেওয়ার কথা ছিলো। কে কথা বলবে এই জগাখিচুরি নিয়ে(?) নিজেরই খারাপ লাগে। প্রচলিত জামিয়ার ভীড়ে আসল জামিয়ার মান থাকলো কই?
-শবনম আয়েশা তাশফী
©somewhere in net ltd.