নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগের স্বত্বাধিকারী সামিয়া

সামিয়া

Every breath is a blessing of Allah.

সামিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

তার সাথে দেখা হবে কবে (৮ম পর্ব)

২৬ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫৯


পরেরদিন সকালে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বুলবুল ভাই ও এক্সিকিউটিভ হাসনাতকে তিতিরের সিচুয়েশন জানিয়ে তাদেরকে রিকোয়েস্ট করে; সাথে করে নিয়ে তিতির সিও স্যারের রুমে ঢুকে শান্ত গলায় সালাম দিয়ে বললো
- স্যার, আমরা রিপোর্টটা তৈরি করে এনেছি। সিও স্যার তিতিরের সাথে হাসনাত ও বুলবুলকে দেখে কিছু মনে করলেন না বরং খুশিই হলেন, এক সাথে কাজ করে সাথে আসতেই পারে।

স্যার পাতা উল্টে উল্টে রিপোর্টটা ভালো করে দেখলেন; দেখা শেষ করে তাকালেন তিতির সহ বাকি সবার দিকে।
- এই সিসিটিভি ফুটেজটা তোমরা কোথা থেকে পেলে?
- স্যার, ওটা হাউজ হোল্ডের পেছনের করিডোরে নতুন লাগানো ক্যামেরা থেকে নেওয়া। আমাদের IT টিম রেকর্ড রেখেছিল; বুলবুল ভাই জানালেন কথাটা।

সিও স্যার আরো কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন,
- ভালো কাজ করেছো। ফুটেজে রাতুলকে দেখা যাচ্ছে রুম থেকে কিছু মাল ট্রলি করে নিচ্ছে, আর বাইরের গেট দিয়ে যাচ্ছে ও। রাতে ডিউটি থাকা গার্ডের কাছ থেকে কি চাবি নিয়েছিল?
তিতির কাঁধ সোজা করে বলল,
- স্যার, গার্ডের সাথেও কথা বলেছি। ও জানায়, রাতুল প্রায়ই এমন করে স্টাফদের মাল আনা-নেওয়া করতো, তাই আর সন্দেহ করেনি চাবি যখন চাইতো দিয়ে দেয়া হতো।
চেকলিস্টে যেসব মাল অন স্ট্যান্ডবাই হিসেবে দেখানো হয়েছে, তার সাথে মিলেনি বলেই সন্দেহ হয় আমার বললো হাসনাত,

স্যার এবার একটু হাসলেন,
- গুড গুড; তোমাদের এই ফুটেজ ও বিশ্লেষণ প্রমাণ করে দিচ্ছে কেউ দায়িত্বে অবহেলা করোনি, অবশ্য এটা তোমাদের কারো একার দায়িত্ব না,
ম্যানেজার আছেন ফ্লোরের বাকী সবাই আছেন সবকিছু দেখার জন্য; তারপরও কেউ একজন তোমার নামেই কমপ্লেইনটা করল তিতির।
তাই আমি চাচ্ছিলাম তুমি নিজেকে নির্ভুল প্রমাণ করো, এইজন্যই শুধু তোমাকেই ডেকে কথাগুলো বলেছিলাম দায়িত্ব ও তোমাকেই দিয়েছিলাম। থ্যাংক ইউ তিতির আই অ্যাপ্রিসিয়েট ইউ এন্ড অল।

তিতিরের বুকটা হালকা হয়ে গেল, আনন্দে পিঠে যেন দুটো অদৃশ্য পাখা গজিয়ে গেল কয়েক মুহূর্তের জন্য রিন রিন করে সুর তুলে সেই পাখা দিয়ে যেন উড়ছে ও।
হাসনাত বললো
- তিতিরের নামে যে কমপ্লেইন করেছে সেই কেউ একজন কে জানতে পারি স্যার?
কথার এই পর্যায়ে গার্ড এসে খবর দিল,
- স্যার, রাতুল বাইরের গেটের সামনে এসেছে।মালগুলো ফেরত দিতে চায়।
- ওকে ভেতরে নিয়ে এসো। বললেন সিও স্যার

কিছুক্ষণ পর রাতুল মাথা নিচু করে রুমে ঢুকে হাতজোড় করে দাঁড়ালো তার চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে কোন সময় কেঁদে দিবে।

সিও স্যার জিজ্ঞেস করলেন,
- তারপর রাতুল? কেন করলে এমন? অফিস কি তোমাকে ঠিকমতো বেতন দেয় না? কি এমন কারণ ছিল যে তোমাকে চুরি করতে হবে? এত নিচে নিজেকে নামাতে তোমার বিবেকে বাঁধলো না?

রাতুল হঠাৎই স্যারের পায়ে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
- স্যার, আমি ভুল করেছি। অনেক সমস্যায় ছিলাম। টাকার দরকার ছিল… ভাবছিলাম পরে ফেরত দিয়ে দেবো, তখন মাথা কাজ করছিল না স্যার, আমি সব মাল ফেরত নিয়ে এসেছি। প্লিজ, আমাকে ক্ষমা করে দিন স্যার এমন আর কখনো হবে না।

এরমধ্যে রুমে একে একে রাখা হলো সব জিনিস:
৩টি রাইস কুকার, ১ সেট মাল্টিপারপাস কুকিং সেট, ১টি ইলেকট্রিক কেটলি, ৬টি হটপ্লেট এবং বেশ কয়েকটি ফ্রাইং প্যান।

স্যার কঠিন গলায় বললেন,
- তুমি আইনত চুরি করেছো। মাল ফেরত দেওয়ায় আপাতত পুলিশ ডাকা হচ্ছে না। তবে চাকরি থাকবে না তোমার আর।

রাতুল আবার স্যারের পায়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
- স্যার, আমাকে চাকরি থেকে বের করবেন না। আমি দুই দিন হয় বিয়ে করেছি স্যার এখন চাকরি চলে গেলে খুব খুব বিপদে পড়ে যাব।
স্যার অবাক,
- বিয়ে করেছো, সে ভালো কথা কিন্তু সেজন্য চুরি করবে?
রাতুল মাথা নিচু করে বলল,
- স্যার, আমি আমার বাবা-মাকে না জানিয়ে বিয়ে করেছি এই এখানেরই কসমেটিকস কর্নারের স্নিগ্ধাকে। ওর বাবা-মা জেনে গেছেন… ওকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন।
- তুমি আমাদের জানাতে পারতে। তুমি আমাদের অফিসের স্টাফ। তোমার দায়িত্ব, আমার দায়িত্ব, আমাদের দায়িত্ব, আমরা এখানে একটা পরিবারের মতন। তোমার বাবা-মার ফোন নাম্বার দাও, দেখি ওদের সাথে কথা বলে কিছু করা যায় কিনা। তবে চাকরির ব্যাপারে কিছু করা যাবে না।

রাতুল হাউমাউ করে কেঁদে উঠল,
- স্যার, আমাদের সংসারটা শুরুতেই ভেঙে যাবে। প্লিজ স্যার, একটা সুযোগ দিন।

ঠিক তখনই কৌতূহল দমন করতে না পেরে নুরিয়া আপা রুমে উঁকি দিলেন।
সিও স্যার নুরিয়াকে দেখে গর্জে উঠলেন,
- নুরিয়া! এই মুহূর্তে রুমের বাইরে যাও!
নুরিয়া চমকে উঠে বেরিয়ে গেল। (চলবে)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৪৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এ পর্ব চমৎকার লেগেছে,সময় করে আগের গুলোও পড়তে হবে।
শুভকামনা সামিয়া।

২৬ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৯:৪৭

সামিয়া বলেছেন: থ্যাংক ইউ থ্যাঙ্ক ইউ আপনার মতো গুণী লেখকের কাছ থেকে এত ভালো মন্তব্য পেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.