নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি প্রচলিত অর্থে কোন লেখক নই তবে লেখালেখিটাকে অন্তর থেকে ভালোবাসি। তাই ভালোবাসার টানেই মাঝে মাঝে সমাজ, সংস্কৃতি এবং প্রযু্ক্তি নিয়ে দু’এক লাইন লেখার চেষ্টা করি।

সানিম মাহবীর ফাহাদ

নিজেকে এখনও ঠিক মতো জানতে পারিনি।

সানিম মাহবীর ফাহাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সন্তান বিপথে গেলে জবাবদিহিতা দু’একজনের কাছে, কিন্তু শাসন করলে কথা শুনতে হবে দেশবাসীর!

০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪

ফেইসবুকে একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখলাম বাবা তাঁর নিজের ছেলেকে এমন মার মেরেছেন যে শরীরের কিছু জায়গা থেকে রক্ত ঝরছে। ভিডিওটির কমেন্টে আমাদের মতো হুজুগে বাঙ্গালী সেই বাপকে অমানুষ, জানোয়ার থেকে শুরু করে বাংলা ভাষার কোনো গালি নেই যে ব্যবহার করছে না। কেউ কেউ আবার একধাপ এগিয়ে বাপের পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার কথাও বলছে।

মানুষের সেন্স দেখে আমি অবাক এবং ব্যথিত হয়েছি। একজন বাবা তাঁর সন্তানকে কতোটা ভালোবাসে সেটা কি আমরা জানি না? সন্তানকে যদি বাবার কিছুটা শাসন করতে হয় সেই শাসন করতে বাবার কেমন লাগে সেটা কি বুঝি না আমরা? কিন্তু মায়ের চেয়ে মাসির দরদ যখন বেশি হয় তখন অভিভাবকেরা সন্তানকে শাসন করলে তার চেয়েও বেশি অপদস্থ হতে হয় তাঁদের।

আমি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। আদরই পেয়েছি বেশি, তবে বাবার হাতে যে কয়েকদিন মাইর খেয়েছি সেটা মরার আগে পর্যন্তও ভুলতে পারবো না হয়তো। একবার বাড়িতে আমার মামাতো ভাইয়েরা বেড়াতে এসেছে। তাদের সাথে আমি মারামারি শুরু করলে বাবা বন্যার পানিতে আমাকে যে পরিমাণ চুবাইছে আমার প্রায় মরে যাবার মতো অবস্থা হয়েছিলো!

তাছাড়া একদিন বাবাকে অশালীন কিছু গালি দিয়েছিলাম। বাবা আমাকে ধরে পরিণত সবুজ পাটগাছ দিয়ে যে পরিমাণ মেরেছিলো, সারা গা ফুলে উঠেছিলো! এগুলো ছাড়াও ক্লাস থ্রিতে পড়ার সময় আমার দুজন মেয়ে সহপাঠীকে খারাপ গালি দেওয়ার কারণে বাবার কাছ থেকে ভয়ঙ্কর শাস্তি পেয়েছিলাম। এরপর থেকে বড় ধরনের অপরাধ করার সাহস করতে পারিনি কোনোদিন।

বাবা আমাকে যেদিন মারতেন সেদিন রাতে আমার জন্য দারুণ কিছু কিনে আনতেন। নিজে অনেক আদর করতেন। কেন মেরেছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করতেন এবং ভালো কিছু করার উপদেশ দিতেন। আমি বাকি সময় তা পালন করার চেষ্টা করতাম। আজ এতদিন পরে মনে হয় শাসন যদি বাবা আরও কিছুটা বেশি করতেন তাহলে হয়তো আরও ভালো মানুষ হতে পারতাম।

বাবা-মা তাদের সন্তানকে প্রয়োজন অনুসারে শাসন করবে। শরীর থেকে রক্ত ঝরালেও তাতে কিছু যায় আসে না। দু-একদিন বেদম মার খেলে কেউ মরে যায় না। কিন্তু অতিরিক্ত আদরের কারণে সন্তান যখন বিপথে চলে যায় তখন সেই সন্তানের কারণেই বাবা মাকে একদিন মার খেতে হয়। বাবা তার সন্তানকে যতোই মারুক দিনশেষে সন্তান বাবার কাছেই যাবে। একটা কথা প্রচলিত আছে, কুসন্তান যদিও হয় কুবাবা কখনও নয়।

সন্তান খারাপ হতে পারে। মানুষ খারাপ হতে পারে। কিন্তু একজন বাবা সন্তানের বাবা হিসাবে কখনও খারাপ হতে পারে না। সুতরাং হুজুগের বশে আমরা যেন কখনই কোন বাবাকে গালি না দেই। একই সাথে শিক্ষকেরা যখন তাঁর ছাত্রদের শাসন করে। অতিরিক্ত বেত্রাঘাত করে তার জন্য আমরা যেন শিক্ষকদেরও গালি না দেই। প্রাইমারিতে পড়ার সময় আমার একজন শিক্ষক পড়া না শেখার কারণে এমন মাইর দিয়েছিলেন যে বাকি জীবন আর পড়া না শিখে ক্লাসে যাইনি। আজও সেই শিক্ষককে দেখলে আমি কাঁচুমাচু করে তার কাছে ছুটে যাই।

জীবনে ভালো কিছু করতে হলে, ভালো মানুষ হতে গেলে গুরুজনদের শাসনের প্রয়োজন আছে। সরকার অনেক ক্ষেত্রেই শাসনকে নিরুৎসাহিত করছে তবুও পারিবারিক ভাবে যদি কখনও কেউ অতিরিক্ত কিছু করেও ফেলে তার জন্য আমরা যেন তাদের মাত্রাতিরিক্ত হেয় না করি। কারণ বাবা বা শিক্ষকেরা অতিরিক্ত শাসন করলেও তাদের ভালোবাসা পরিমাপ করার সাধ্য আমাদের নেই।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এই আমলে দৈহিক শাস্তি দেয়া পিতামাতার ব্যর্থতা বলে মনে করি।

০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০

সানিম মাহবীর ফাহাদ বলেছেন: আমি এমন মনে করি না। কারণ সব সময় বুঝিয়ে কাজ হয় না। সব বাবা সন্তানকে ভালো মতো বুঝাতে পারবে বিষয়টা এমনও না। সব সময় না মারলেও মারের উপর কোন ওষুধ নাই।

২| ০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: শাস্তি দিয়ে ছেলে পেলে ভালো বানানো যায় না।
খুব রাগ হলে দুই একটা চড় থাপ্পড় দেয়া যেতে পারে। কিন্তু রক্তাত করা ঠিক না।

০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২

সানিম মাহবীর ফাহাদ বলেছেন: সব সময় শাস্তির পক্ষে আমিও না। তবে এক্সট্রিম লেভেলে গেলে বা দুএকদিন যদি অতিরিক্ত শাস্তি দিয়েও ফেলে তার মানে এই না যে বাবাকে সবাই হেয় করবে।

৩| ০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

জাতির বোঝা বলেছেন: দৈহিক শাস্তি কোন ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। নিজের ব্যর্থতা সন্তানকে দৈহিক শাস্তি দিয়ে এড়ানো যাবে না।

০৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

সানিম মাহবীর ফাহাদ বলেছেন: সব সময় সন্তানের অপরাধে কি বাবার দায়ভার থাকে? সন্তান যদি বারংবার ভুল করে তাহলে একজন বাবা হিসাবে তাকে কি দৈহিক শাস্তি দিতে পারে না?

৪| ০৮ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮

রেযা খান বলেছেন: ভালো লাগলো। সন্তানকে যদি বাবা দৈহিক শাস্তি দেয়া অপরাধ হয়, তাহলে আসামীকে কেন রিমান্ডে নিতে হবে?? তাদেরকেও কেন শাস্তি দিতে হবে। বুঝিয়ে বললে তো হয়। হয়তো উদহারণ দেয়া যেতে পারে, শিশু বলে তা করা যাবে না। আমি বলতে চাই, ছোট থেকে যে গাছকে সোজা করে গড়ে তুলা যায় না, বড় হলে সে গাছ আর সোজা হয় না। বরং সোজা করতে গিয়ে ভেঙ্গে যায়।

০৮ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪

সানিম মাহবীর ফাহাদ বলেছেন: চমৎকার একটা উদাহরণ দিয়েছেন। একজন বাবা তাঁর সন্তানকে প্রয়োজন অনুযায়ী মাঝে মাঝে শাসন করতে অবশ্যই পারেন। কারণ কোন বাবা একান্ত বাধ্য না হয়ে তার সন্তানকে শাস্তি দিতে চান না। সব বাবার কাছেই তাদের সন্তান পৃথিবীর যেকোন কিছুর চাইতে মূল্যবান।

৫| ০৮ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাবার চেয়ে বা মা'য়ের চেয়ে যে সন্তানকে বেশী ভালো বাসতে যায়
বুঝতে হবে সে শয়তান বা ডাইনী। কোন পিতা-মাতাই সন্তানকে
কষ্ট দিতে চায় বলে আমার মনে হয়না। (যদিও ব্যতিক্রম আছে)
তবে যেমন কর্ম তেমন কর্মফল ভোগ করতেই হয়। আজকাল
শাস্তির কথা উঠলেই আইনের ভয় দেখানো হয়, তাইতো
আদব লেহাজ উঠে গেছে। আমাদের সময়ে আমরা
পিতার অবাধ্য হওয়া কল্পনাই করতে পারতাম না।
বর্তমানে ছেলে মেয়েদের তোয়াজ করে চলতে হয়।
আখেরী জামানায় এটা হবার ইঙ্গিত আছে !

০৮ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০

সানিম মাহবীর ফাহাদ বলেছেন: আমরা মায়ের কথা না শুনলে মা বলতো, তোর বাবাকে বলবো যে এমন কাজ করেছিস। অমনি আমরা সোজা হয়ে যেতাম। বেদম মাইর জীবনে তো অল্পই খাইছি তবুও বাবাকে একটু ভয় করতাম। যে আদর করে সে শাসন করার অধিকারও রাখে। বাবার শাসনটুকুই সন্তানকে প্রকৃত মানুষ হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রাখে।

৬| ০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:১৭

মামুনুর রহমান খাঁন বলেছেন: পরিবার ও সমাজ থেকে শাসন উঠে গেছে বলেই ঐশীদের জন্ম হয়। সহিষ্ঞুতা ও শ্রদ্ধাবোধ এখন কেবল বইয়ের পাতায় শোভা পায়। আজকালকার ছেলে-মেয়েদের আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও ব্যবহার দেখলে খুব কষ্ট হয়। আমরা শাসনকে আইন করে বন্ধ করে দিয়েছি কিন্তু যখন কোন ছেলে বা মেয়ে বেয়াদবী কিংবা ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করে তখন কিন্তু আমরাই বলি “বাপ-মা কিছু শিখায় নাই?”

০৮ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:১৯

সানিম মাহবীর ফাহাদ বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। অনেক ভালো বলেছেন ভাই। আপনার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।

৭| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:১৬

মাআইপা বলেছেন: শাসন আর ভালবাসার সমন্বয়েই সম্ভব একটি সন্তানকে প্রকৃত মানুষ হিসাবে তৈরি করা।
শুভ কামনা রইল

৮| ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১২:৪৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: যুগ বদলাইছে। এই আমলে বেশী শাসন করলে বড় হয়ে বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯৯%। এখনকার প্রজন্ম অনেক আবেগী...

৯| ০৯ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



শাসনের প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু তা হতে হবে সময়োপযোগী এবং পরিমিত। শাসনের নামে নৃশংসতায় বাচ্চাদের জীবন বিপন্ন হয়, এমনটা কাম্য নয়।

১০| ০৯ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: সব সময় শাস্তির পক্ষে আমিও না। তবে এক্সট্রিম লেভেলে গেলে বা দুএকদিন যদি অতিরিক্ত শাস্তি দিয়েও ফেলে তার মানে এই না যে বাবাকে সবাই হেয় করবে।

আপনার মন্তব্যের সাথে আমি সম্পূর্ণ সহমত।
বাবা মার সব টূকু ভালোবাসাই থাকে সন্তানের জন্য।

১১| ০৯ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৪২

কানিজ রিনা বলেছেন: মামুনুর রহমান খানের সাথে একমত।
পারিবারীক নিয়ম শৃংখলাই পারে ছেলে
মেয়ের ন্যায়নীতি শিক্ষার স্থান। সেই সাথে
স্কুল কলেজের অভিভাবক শিক্ষক।
পরিবারই হোল সুষ্ঠ সমাজের অবকাঠামো।
সুষ্ঠ সমাজ সুষ্ট রাস্ট্র। অসংখ্য ধন্যবাদ।

১২| ০৯ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:৫১

জাতির বোঝা বলেছেন:
মেরে তক্তা বানিয়ে দিলে কেমন হয়। বুঝবে মজা।

১৩| ০৯ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:১২

টারজান০০০০৭ বলেছেন: শাসনের প্রয়োজন আছে। টিউমার অপসারণ করিলে সন্তান ব্যাথা পাইবে বলিয়া কেহ অপারেশন বন্ধ রাখে না, আবার টিউমার কাটিতে গিয়া অন্য অঙ্গের ক্ষতি হইয়া যাক বা মৃর্ত্যু হইয়া যাক ইহাও কেহ চাহে না !

আমাদের আকাবেরিনদের মধ্যে আশরাফ আলী থানভী র. বাচ্চাদের মারা পছন্দ করিতেন না , বরং শিক্ষকদের সতর্ক করিতেন। আমার ইস্কুলের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বলিতেন, তাহাদের পিটিআই ট্রেনিয়ের সময় নাকি বলা হইত, একটা ছাত্রকে শাসন না করা মানে তাহার ভবিষ্যৎ নষ্ট করা ! ইহা সত্যি হইতে দেখিয়াছি। তবে তাহার মাত্রা থাকা উচিত। মাস্টার / অভিভাবকের হাতে কান/ অঙ্গ হারানোর উদাহরণ প্রচুর। ইহা কাম্য নহে।

এক রিসার্স আর্টিকেলে পড়িয়াছিলাম, ইংল্যান্ডে ভালো ছাত্ররা শিক্ষকতায় আসিতেছে না ! কারণ অনুসন্ধানে তাহারা পাইয়াছেন, শিক্ষার্থীরা এই পরিমান বেয়াদবি করে যে ভালো ছাত্ররা শিক্ষকতা পেশায় আসিতে চায় না ! বান্দরগুলোরে মানুষ করার জন্য মাঝে মাঝে পিটুনি জরুরি হইলেও শিশুদের শরীর এতো নাজুক যে পিটুনি দিতে হইলে খুবই সতর্কতার সাথেই দেওয়া উচিত !

আমাদের এক শিক্ষক বলিতেন , এমন জায়গায় মারিব যে শুধু নিজে দেখিতে পারিবি !

সত্যিই ! মার্ খাইয়া লজ্জায় কেহ অন্যরে দেখাইতে পারিত না ! পিটুনি দেওয়ার উহাই নিরাপদ জায়গা বলিয়া মনে হয় ! তবে পুলিশের মৃদু বা বিকট লাঠিচার্জ পরিহার্য ! পিতা হইলেও পশু হওয়ার অধিকার কাহারো নাই।

১৪| ০৯ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

প্রামানিক বলেছেন: মারলেই ছেলেপেলে মানুষ হয় না মানুষ হতে পরিবেশ লাগে। আমার বাবা আমাদেরকে কোনদিনই মারতো না কিন্তু তার রাম ধমকে তিন ভাই পেসাব করে দিতাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.