![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোনো এক শীতের জ্যোৎস্নাস্নাত রাতে শিশির ভেজা ঘাসের উপর খালি পায়ে তোমার হাতটি ধরে হাঁটবো। শিশিরের ফোঁটা গুলো আমার পায়ে শিশির নুপুর পড়িয়ে দিবে।আর তুমি ঘাস ফুল নিয়ে আমার খোঁপায় পড়িয়ে দিবে।তখনি জোনাকি পোকার দল এসে হাজির হবে রংবে রং এর প্রজাপতিদের নিয়ে।তারা আমাদের ঘিরে একটা বলয় সৃষ্টি করবে।সে বলয়ের মধ্যে জ্যোৎস্নার আলোতে ভিজব আমরা দুজন।আমার চোখের মায়ায় তুমি নিজেকে হারাবে অন্য একরাজ্যে।তখনই চন্দ্রসুধা এসে আমাদের আমন্ত্রণ করবে তার রাজ্যে যাওয়ার জন্য সাথে থাকবে চন্দ্রাবতীর প্রহরীরা।তার আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ফুলের ভেলা নিয়ে হাজির হবে।সে ফুলের ভেলায় বসে আমরা পৌঁছে যাবো চন্দ্রাবতীর দেশে।সেথায় আমায় পড়ানো হবে জ্যোৎস্নার তৈরি শাড়ি, মাথায় পড়ানো হবে হবে প্রজাপতির ক্রাওন আর পায়েতো আছে আমার শিশিরের তৈরি নুপুর।তুমি বরাবরের মতই আমার প্রেমে পড়বে।তুমি শুধু আমায় অপলক দেখবে আর ভাববে ইসস আমার নামটা যদি চন্দ্রাবতী হত তাহলে মন্দ হত না।
-আমিতো সিউর আজকে ব্রাজিল হারবে। (অরণি)
-চুপ করোতো তুমি।খেলা শুরু হওয়ার আগে এতো বকবক করবা না।খেলা না দেখে কেমনে বলো আজকে ব্রাজিল হেরে যাবে?তোমারে কি এসে বলে গেছে যে ব্রাজিল হারবে? (রাফি)
-হুহহহ যে একখানা ভাব নিয়া কথা বলতেছো মনে হচ্ছে যেন ব্রাজিল আজকে খেলায় জিতে তোমারে ট্রফি এনে দিবে?গত ৫ বছর ধরেই দেখতেছি ব্রাজিল কয়বার হারছে আর কয়বার জিতছে। (অরণি)
-আরেহ আর্জেন্টিনা সাপোর্টাররা খেলা বুঝে নাকি? এরা কিছু না বুঝে খালি চিল্লায়। (রাফি)
-তার মানে কি আমি খেলা বুঝি না?সব তোমরা ব্রাজিল সাপোর্টাররা বুঝো তাই না? (অরণি)
-হ্যাঁ বুঝি দেখি বলেই তো ঠিক দলটারে সাপোর্ট করি।শুনো ব্রাজিল ২০০২ সালের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন।
ব্রাজিল ২০০৪ সালের কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন।
ব্রাজিল ২০০৫ সালের কনফেডারেশন কাপ
চ্যাম্পিয়ন।
ব্রাজিল ২০০৭ সালের কোপা আমেরিকা
চ্যাম্পিয়ন।
ব্রাজিল ২০০৯ সালের কনফেডারেশন কাপ
চ্যাম্পিয়ন।
ব্রাজিল ২০১৩ কনফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন।
সব থেকে বড় কথা আমরা ৫বার বিশ্বকাপ পাইছি। (রাফি)
-ওই চুপ করো তোমারে কেউ এতো বকবক করতে বলে নাই।আজকে যদি ব্রাজিল হেরে যাই না তুমি আজকে রুমের বাইরে ঘুমাবা। না না শুধু আজকে না আগামী দুদিন রুমের বাইরে ঘুমাবা বলে দিলাম। (অরণী)
-তনু মা এদিকে আসোতো। (রাফি)
-হুম আব্বু বলো। (তনু)
-মা তুমি কোন দল সাপোর্ট করো?আর্জেন্টিনা নাকি ব্রাজিল? (রাফি)
-সে টা কি আব্বু? (তনু)
-আচ্ছা থাক ওটা তোমার বুঝার দরকার নাই তুমি শুধু বলো তুমি আমার পক্ষে নাকি তোমার আব্বুর পক্ষে? (অরণি)
-আমার কাছে কিন্তু ২টা কিটকাট আছে। (রাফি)
-আমার কাছে ৫টা কিটকাট আছে। (অরণি)
-আম্মু তুমি তো আমায় কিটকাট খেতে দাও না।(তনু)
-আজকে দিব সাথে তোমার পছন্দের চিকেন ফ্রাইড আর তোমার আর তোমার আব্বুর পছন্দের বেগুন ভর্তা ও করবো। (অরণি)
-তুমি কি ভাবো তুমি কেন বেগুন ভর্তা করবা আমি কিছু বুঝি না?তুমি আজকে বেগুন ভর্তা করবা না।যেদিন এ ব্রাজিলের খেলা হবে তুমি বেগুন ভর্তা করবা আর সেদিন এ ব্রাজিল হেরে যাবে।তোমার বেগুন ভর্তা একটা কুফা।তুমি আজকে বেগুন ভর্তা করবা না শেষ। (রাফি)
-আব্বু তুমি বললে হবে নাকি?আমি বেগুন ভর্তা খাবো।তুমি পঁচা আমি আম্মুর পক্ষে। (তনু)
-ইয়ে আমার দলটা ভারি আর তোমার দলে শুধু তুমি একা।এখনো সময় আছে আর্জেন্টিনা কে সাপোর্ট করো। (অরণি)
-মরে গেলেও না। (রাফি)
কিছুক্ষন পর,
-(রাগী কণ্ঠে) অরণি এই অরণি তুমি ফেসবুকে আমারে এটা কি ট্যাগ দিছো? (রাফি)
-কেন দেখো না কি ট্যাগ দিছি?এত্তক্ষন তো খুব চিল্লিছো ৫বার বিশ্বকাপ জিতছি জিতছি কইরা তাই পোস্টটাই তোমারে ট্যাগ দিলাম।তোমরাতো শুধু ওই ৫বার বিশ্বকাপ জিতছি জিতছি করেই চিল্লাতে পারো এর বেশি কিছুতো আর পারো না।(অরণি)
-এক মাঘে শীত যায় না মনে রাখিও তুমি। (রাফি)
সেদিন দুর্ভাগ্য বশত ব্রাজিল হেরে যায় কিন্তু রাফির পরবর্তী ২দিন ও রুমে ঘুমানোর জন্য যায়গা হয় নাই।তার কিছুদিন পর....
-তুমি এত্ত আইসক্রিম কেনো আনছো? (অরণি)
-তোমার জন্য আনছি জানু। (রাফি)
-তুমি কি ভাবছো আমি কিছু বুঝি না?আজকে আর্জেন্টিনার খেলা আছে এই জন্য এ তুমি আইসক্রিম আনছো। (অরণি)
-এইতো আমার জানুটা বুঝে গেছে।সেদিনতো ব্রাজিল হারছে দেখে খুব নাচানাচি করছো আজকে আমিও দেখতে চাই আর্জেন্টিনা কয়টা ডিম খায়। (রাফি)
-বাজে কথা বলবা না।আর্জেন্টিনা কোন দুঃখে হারতে যাবে?আমাদের এই টিমে রয়েছে ইতিহাসের সেরা ফুটবলার লিও মেসি। অামাদের এই টিমে রয়েছে অাগুয়েরোর মতো বিশ্ব মানের ফুটবলার। অামাদের এই টিমে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ডি মারিয়া। ডিফেন্সের দায়িত্বে রয়েছে ভরসার প্রতিক বুড়ো মাসচেরানো। রয়েছে অপ্রতিরোধ্য রোহো। গোল বারের দায়িত্বে রয়েছে অাস্তার প্রতিক রোমেরো। সর্বশেষ যোগ হওয়া তরুন প্রতিভাবান ফুটবলার পাউলো ডিবালা।
মেসি যখন বার্সায় হয়ে খেলে তখন মেসি একাই একশ, মেসি যেকোন মুহুর্তে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। মেসি তিন চারটা পাচঁটা ডিফেন্ডারকে ড্রিবলিং করে গোল করার ক্ষমতা রাখে। মেসি যেকোন পজিশন থেকে গোল করানোর ক্ষমতা রাখে। (অরণি)
-তোমার মেসিরে নিয়া ভাষণ দেয়া শেষ হইছে? (রাফি)
-নাহহ।মেসি কত্ত কিউট ওর চুল গুলো আমার থেকে সেই লাগে চেহারার মধ্যে কত্ত মায়া আহ। (অরণি)
-সাধে কি আর বলি আর্জেন্টিনার সাপোর্টরা খেলা না বুঝেই চিল্লায়।চেহারা দিয়ে কি যায় আসে খেলাটাই আসল বুঝচ্ছো?এইবারতো ব্রাজিল এ বিশ্বকাপ নিবে। (রাফি)
-তোমার না ডাক্তার দেখানো উচিত।মেসি কেমন করে খেলে তা কি তুমি চোখে দেখো না নাকি তখন রঙিন চশমা চোখে পরে থাকো?? ব্রাজিল যে বিশ্বকাপ নিবে তা কি তোমারে বলে গেছে?(অরণি)
-উফফ কোন দুঃখে যে তোমারে বিয়ে করতে গেছিলাম।বিয়ের আগে যদি জানতাম তুমি আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করো ভুলেও আমি তোমারে বিয়ে করতাম না। (রাফি)
-তুমি কি ভাবো আমি যদি বিয়ের আগে জানতাম তুমি ব্রাজিল সাপোর্ট করো তাহলে কি আমি দৌড়ে দৌড়ে আসতাম তোমারে বিয়ে করার জন্য?আমার ভাগ্য খারাপ তোমার কাছে এসে আমি পরছি।আজকে যদি আর্জেন্টিনা সাপোর্টার কাউকে বিয়ে করতাম তাহলে অন্তত ব্রাজিল ৫বার বিশ্বকাপ জিতছে নিয়া কোনো কথা শুনতে হইতো না। (অরণি)
-আচ্ছা তাই না?দেখা যাবেতো আজকের রাতের খেলাই আমি দেখবো আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে উঠতে পারে কিনা। (রাফি)
-আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে উঠতে পারুক আর না পারুক আমি আর্জেন্টিনারেই সাপোর্ট করে যামু। (অরণি)
রাতের ৩:৪৫ মিনিট,
-আর্জেন্টিনা Vs জার্মানি স্কোর = ১-২ গোল। খেলার আর মাত্র ৫মিনিট আছে।অরণির চোখ থেকে শুধু পানি যাচ্ছে আর আমি একটার পর একটা টিস্যু ওকে দিয়ে যাচ্ছি। ওর কান্না দেখে আমার খুব মজা হচ্ছে।আল্লাহ প্লিজ আজকে আর্জেন্টিনা যেন হেরে যাই।সেদিন ব্রাজিল হারাতে খুব নাচানাচি করছে উনি। শুধু আর ৫মিনিট তারপর যদি আমি লুঙ্গি ডান্স না দিছি তাহলে আমার নাম ও রাফি না।
-শুনো আমি খেলা দেখবো না টিভি বন্ধ করো। (অরণি)
-কেনো দেখবা না?তোমারে দেখতেই হবে।সেদিন তো খুব নাচানাচি করছো আজকে আমিও দেখতে চাই আর্জেন্টিনা কি করে।(রাফি)
-তুমি আজকে রুমে ঘুমাবা না। আমি ঘুমাবো তুমি ভুলেও রুমে ডুকতে পারবা না।(রেগে গিয়ে বললাম) (অরণি)
-এহ তুমি বললেই হবে নাকি?ব্রাজিল জিতলেও আমারে বাইরে ঘুমাতে হবে ব্রাজিল হারলেও আমারে বাইরে ঘুমারে হবে এখন নতুন করে শুরু করছো আর্জেন্টিনা হারলেও আমারে বাইরে ঘুমারে হবে ইয়ার্কি হচ্ছে আমার সাথে?তুমি বসে তোমার মেসির খেলা দেখো আমি রুমে গেলাম। (রাফি)
-(রাফি উঠে যাওয়ার আগে আমি দৌড়ে রুমে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলাম) আমারে রাগানো না?এইবার ঘুমাও তুমি বাইরে। (অরণি)
***২০বছর পর ২৫তম marriage anniversary তে**
-দেখছো কিভাবে দেখতে দেখতে সময় গুলো চলে যায়।(রাফি)
-হুম আমাদের যে বিয়ের ২৫বছর হয়ে গেছে মনেই হয় না। আমার ভাগ্য তোমার মত একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি। (অরণি)
-আমিও অনেক ভাগ্য করে তোমার মত একটা লক্ষ্মী বউ পেয়েছি।তুমি আমার জীবনটারে সব দিক দিয়েই পরিপূর্ণ করে দিয়েছো।কি ভাবছো এতো? (রাফি)
-জানো আমার এইবার মনে হচ্ছে এইবারের বিশ্বকাপ কিন্তু আর্জেন্টিনা এ নিবে তুমি দেখিও। (অরণি)
-আজাইরা কথা বলবা নাতো।ব্রাজিল যেভাবে খেলছে এইবারের বিশ্বকাপতো ব্রাজিলেই নিবে। (রাফি)
-তোমরা আবার শুরু করছো ঝগড়া এই বিশ্বকাপ নিয়া?আহারে বিশ্বকাপ! আচ্ছা আমারে একটা কথা তোমরা বুঝাওতো ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা যে টিমেই বিশ্বকাপ জিতুক না কেন ট্রফি টা কি তোমাদের এনে দিয়ে যাবে?নাকি এতো বছর পযান্ত যত গুলো ট্রফি নিছে ওরা সেখান থেকে তোমাদের একটা এনে দিয়ে যাবে? কেনো খামোখা এই আর্জেন্টিনা ব্রাজিল নিয়া এতো ঝগড়া, পিড়াপীড়ি করো??সে ছোট থেকেই তোমাদের এইসব দেখে আসছি তখনো আমি কিছু বুঝতাম না খেলার এখনো কিছু বুঝি না।তোমরাও কখনো খেলা নিয়া আমারে কিছু বুঝাও নাই শুধু আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল নিয়া মরছো।আমার মাথায় কখনোই ডুকে না একটা ফুটবল নিয়া ৯০মিনিট ধরে এতো গুলা মানুষ মাঠের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পযান্ত দৌড়ায়।আমারতো মাঝে মাঝে মনে হয় যত আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল বাংলাদেশী সাপোর্টারস আছে এরা কেউ খেলা বুঝে না। না বুঝেই শুধু অতিত নিয়া চিল্লায়।এই ট্রিম বলবে আমরা এটা করছি ওইট্রিম বলবে আমরা এটা করছি আমরাই বেস্ট।আমারতো মনে হয় এদের মাথায় গোবর ছাড়া আর কিছুই নাই।সব ট্রিম নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে এতো দূর আসে। যোগ্যতা না থাকলে ইন্টারনাশানাল পযায়ে খেলার সুযোগ পেত না এরা কেউ।আমাদের উচিত সব ট্রিমকেই সম্মান দেয়া।লাস্ট বারের তোমাদের বলতেছি তোমরা আর এই ফুটবল নিয়ে আর কোনো কথায় আমার সামনে তুলবা না। (তনু)
তনু কথা গুলো রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো,
-ইসস আমরা কত্ত বড় একটা ভুল করলাম। (রাফি)
-কি ভুল? (অরণি)
-কেন যে শুধু একটা বেবিয়ে নিতে গেলাম যদি দুটা বেবি নিতাম আর আমাদের একটা ছেলে হতো তাহলে সে আমাদের মেয়ের মত এতো বোকা হতো না।সে নিশ্চয় ব্রাজিলেই সাপোর্ট করতো। (রাফি)
-এই যে প্রুব পাইছো ব্রাজিল সাপোর্টারস রা ঠিক ডিসিশান নিতে পারে না এইজন্য ভুলভাল ট্রিম সাপোর্ট করে।তখনতো খুব লোভ করে নিছো একটা ভাবছো মেয়ে তোমার ট্রিম সাপোর্ট করবে আর আমি একা হয়ে যাবো।একদম ভালো হইছে তনু কোনো ট্রিম সাপোর্ট করে না। (অরণি)
-যত যাই এ বলো না কে আর্জেন্টিনা কখনো ব্রাজিলের সমান হতে পারবে না। আর এইবার ব্রাজিলেই বিশ্বকাপ নিবে। (রাফি)
-তোমার মাথা এইবার আর্জেন্টিনা এ বিশ্বকাপ নিবে। (অরণি)
-আবার তোমরা শুরু করছো?!আসলে তোমাদের বুঝানো আর না বুঝানো একি কথা।এই ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা সাপোর্টরদের কিছু বুঝানোর পরেও তারা যে লাউ সে কদু এ থেকে যাবে।যতই বুঝানো হোক না কেন এদের মাথায় কিছুই ডুকবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪১
সনেট কবি বলেছেন: বেশ