![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে সাধারাণ বলব না। বিধাতা যা বানিয়েছেন তাই। পড়তে লিখতে জানি কিছুটা তবে সেটা দিয়ে জ্ঞানী বলা যায় না কিন্তু শিক্ষিত নামে পরিচিত। আমি আমার মস্তিষ্ককে মানি, আর সে মানে তার ধারণ করা প্রথা সংস্কৃত এবং আপন মতামত। তার বিবেচনায় আমি চলি। উদাসী বলা চলে তবে দেবদাশের মত নয়।
প্রিয় বাবা,
আমার ভালবাসা নিও। জানিনা তোমার মন কেমন আছে শুধু এইটুকু জানি তুমি ভাল আছ। কিন্তু আমি চাইনা তুমি ভাল থাক কারণ আমি চাই তোমার মন ভাল থাকুক। মন ভাল না থাকলে তুমি সুস্থ থাকবেনা। তুমি সুস্থ না থাকলে আমিও যে ভাল থাকতে পারবনা।পৃথিবীর বুকে হয়তো মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারব কিন্তু তোমার রাজ্যে যে আমি মারা যাব। আর আমার মৃত দেহের জন্য তুমি হয়তো কবর রচনা করতে পারবেনা, আবার মমি ও বানিয়ে রাখবেনা পিরামিডের ভিতর যদি এ মরুভূমির উত্তপ্ত সূর্যের আলোয় অগ্নি শিকায় আমি জ্বলে পুরে চিৎকার করে মরি এই ভয়ে।
বাবা তোমার মনে আছে ছোট্ট একটি হাত যখন তোমার বিশাল হাতের ভিতর মুঠো বন্ধি করে রাজ্যের পথে ঘুরতে তখন বিড়ালের মত চোখ গুলো তারার মত মিটমিট করে সব কিছু অবাক হয়ে দেখত আর কথার ফুল ঝুড়ি হতে নানান রকম অক্ষরে সৃষ্ট শব্দের ফুলে গাঁথা বাক্যের মালা গুলো ছোরত তখন তুমি মেঘের আড়াল থেকে সূর্যের উঁকি মারার মত উত্তর গুলো দিতে। আমি সপ্ত আশ্চর্য দেখার মত তোমার পানে চেয়ে অবাক হয়ে অতি আগ্রহে শুনতাম। আর ডায়েড়ীতে লিখার মত মনের ভিতর খোদায় করে রাখতাম। তখন তুমি শুষ্ক হাসি দিতে। এ হাসি শীতের ঠোঁট ফাটা হাসি ছিলনা।
মনে আছে বাবা তোমার একটু হাত ছাড়লেয় আমি উল্টে পড়ে যেতাম আর তুমি কোলে তুলে নিয়ে বলতে,"তুই যে আমার রাজকন্যা। এই রাজ্যের উত্তরাধিকারি তুই। এতো নরম হলে চলবে।
"তুমি আরো বলতে,"কোন অস্ত্র হাতে নয়, তোকে যুদ্ধ করতে হবে বাতাসের সাথে, পারি দিতে হবে বিশাল হিমালয়। সাতরে ঢেউয়ের বিপক্ষে পার হতে হবে সমুদ্র .পৃথিবীর কোন কিছুই তোকে তোর স্থান থেকে নড়াতে পারবেনা".
আমি খুশি খুশি মুখে উঠে গায়ের ধূলো ঝারতাম। ভাবতাম হ্যাঁ আমাকে তায় করতে হবে, আমি করবয়। আবার যখন একা সামনে হেঁটে যেতে চাইতাম তখন তুমি হাত ধরে বলতে"আমি যতদিন আছি এ হাত ছাড়বনা। যতদিননা রাজপুত্র তোর হাত না ধরে।"
তুমি যখন রাতে চাঁদ মামা দেখে আমাকে ঘুম পাড়াতে,আমার ছোট্ট কুটিরের জানালা দিয়ে যখন চাঁদ মামা মুচকি হেসে জ্যোছনার ঝিলিক দিত আমি তখন স্বপ্ন দেখতাম তুমি ২টু পাখা এনে লাগিয়ে দিতে আর আমি উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াতাম। তুমি হাসি হাসি মুখে চেয়ে থাকতে আকাশের দিকে। তুমি চেয়ে থাকতে আমার উড়া নয়, আমি পরে গেলে ধরবে কে সে চিন্তায়।
আমি যখন ক্ষেতের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে লাল গোল গোল বলের মত জিনিস গুলোর দিকে চেয়ে এগুলো কী জিজ্ঞেস করতাম . তুমি তখন বলতে টমেটো। আমি তখন বলতাম আমি একটা নেয় আমার সেয় দিঘির জলে ভাসা রাজহাসের জন্য . তুমি বলতে কেন?. টমেটো খায়ে হাসের ঠোঁট লাল করাব বুদ্ধিটা শুনে তুমি শব্দ করে হাসতে।আর আমি বোকা বোকা হাসি দিয়ে টমেটো ছিড়ায় ব্যস্ত হয়ে যেতাম। তুমি কিছু বলতেনা। রাজ্যের কেউ যখন কিছু বলতে চাইত তুমি তাদের থামিয়ে দিয়ে বলতে ওকে ওর মত করে বড় হতে দাউ।
আজ তুমি কী সব ভুলে গেছ বাবা? যদি তায় না হয়ে থাকে কেন তুমি আজ অন্য মনা, কেন তুমি হতাশার দীর্ঘ শ্বাঃস ছাড়??কেন তুমি আমার হাত ছেড়ে দিচ্ছ??
বাবা আমি জানি এখনি সময় মুকুট পড়ার। কিন্তু বাবা আমার যে ভয় বেড়ে গেছে। আমি যে পারবনা এর সম্মান ধরে রাখতে। তোমার রাজ্যে যদি ভয়ঙ্কর ঝড় হয়। আমি কি পারব ঝড়কে থামিয়ে দিতে? হাত ছেড়ে দিয়ে আমার চুপিচুপি দীর্ঘশ্বাস কেন তুমি বন্ধ করে দিতে চাচ্ছ? বাবা এখন ও তো রাজপুত্র আসেনি। যদি আমায় ওয় দস্যু চিল এসে নিয়ে যায় তবে কী হবে?.
না বাবা আমার জন্য তোমাকে জেগে উঠতে হবে। আমার জন্য তোমাকে লাঠি ফেলতে হবে। বজ্র কন্ঠে আবার পথ চলার নির্দেশ দিতে। তলোয়ারকে আবার রক্তাত্ত করতে হবে দস্যু চিলের রক্তে।
তুমি আবার সিংহাসনে বসবে। আমি বর্ণহীন মুকুট আবার সাত রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দিব। তবু তোমায় হারাতে চাইনা।
ইতি
তোমার রাজকন্যা
©somewhere in net ltd.