নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাওর

আমার চুল আেছ

সাওর

আিম আম খাই

সাওর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি বলে আমি ইউনুস ইবনে মাত্তা’র থেকে উত্তম সে অবশ্যই মিথ্যা বলেছে।” -বুখারী তা.পা.হা. ৪৬০৪, ৪৮০৫, আ.প্র. হা. ৪২৪৩, ৪৪৪১, ই.ফা. হা. ৪২৪৬, ৪৪৪২

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৬





নাবীদের মধ্যে কাউকে

শ্রেষ্ঠ বলা যাবে না




রাসূল (দ.) বলেন,

“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



এই হাদীসটি স্পষ্ট ঘোষণা করছে যে, নাবীদের মাঝে কাউকে কারোর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া নিষেধ।



এই বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে জনৈক আনসার সাহাবী এবং এক ইয়াহুদীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ঘটনাটি হলো আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত-



“তিনি বলেন একবার রাসূলুল্লাহ্ (দ.) উপবিষ্ট ছিলেন এমন সময় এক ইয়াহুদি এসে বলল, হে আবুল ক্বাসেম! আপনার এক সাহাবী আমার মুখে আঘাত করেছে। তিনি (দ.) জিজ্ঞেস করলেন কে? সে বলল একজন আনসার। তিনি (দ.) বললেন তাকে ডাকো। তিনি (দ.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি ওকে মেরেছ? তিনি (রা.) বললেন আমি তাকে বাজারে শপথ করে বলতে শুনেছি, যিনি মুসা (আ.)-কে সকল মানুষের উপর মর্যাদা দিয়েছেন। আমি বললাম হে খাবীস্ মুহাম্মাদ (স.) এর উপরেও কি? এতে আমার রাগ এসে গিয়েছিল তাই আমি তার মুখের উপর আঘাত করি। নাবী (স.) বললেন “তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না...” (বুখারী তা.পা. হা. ২৪১১, ২৪১২, ৬৯১৭, আ.প্র. ২২৩৪, ২২৩৫, ই.ফা. ২২৫১, ২২৫২, মুসলিম আহলে হাদীস লাইব্রেরী, ২৩৭৩, ২৩৭৪।



এই হাদীসটি স্পষ্ট বলছে যে, রাসূল (স.) এর একজন সাহাবী রাসূল (দ.) কে মুসা (আ.) এর উপর মর্যাদা দিয়েছিলো। আর রাসূল (দ.) জনৈক ঐ আনসার সাহাবীর বিশ্বাস ঠিক নয় তা প্রমাণ করলেন খুব সুন্দরভাবে। তিনি বুঝালেন শুধু মুসা নয় কোন নাবীকেই কোন নাবীর উপর মর্যাদা দেয়া যাবে না।



রাসূল (স.) সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী নন যা তিনি (দ.)

নিজেই বুঝিয়ে গিয়েছেন[/sb



রাসূল (দ.) বলেন,



“তোমাদের কেউ যেন না বলে আমি (মুহাম্মাদ (দ.) ইউনুস (আ.) থেকে শ্রেষ্ঠ।” (বুখারী তা.পা. হা. ৩৩৯৫, ৩৪১২, ৩৪১৩, ৩৪১৫, ৩৪১৬, ৪৬০৩, ৪৬৩০, ৪৬৩১, ৪৮০৪, আ.প্র. হা. ৩১৬১, ৩১৬২, ৩১৬৪, ৪২৪২, ৪৪৪০, ৪২৬৯, ৪২৭০ ই.ফা. হা. ৩১৭০, ৩১৭১, ৩১৭৩, ৪২৪৫, ৪২৭২, ৪২৭৩, ৪৪৪১ মুসলিম, আহলে হাদীস লাইব্রেরী, হা. ২৩৭৬, ৬০৫৪, ই.ফা.বা. ৫৯৪৫, ই.সে. ৫৯৮৪, আবু দাউদ, সহীহ, হু.মা. ৪৬৭১।



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“যে ব্যক্তি বলে আমি ইউনুস ইবনে মাত্তার থেকে উত্তম সে অবশ্যই মিথ্যা বলেছে।” (বুখারী তা.পা.হা. ৪৬০৪, ৪৮০৫, আ.প্র. হা. ৪২৪৩, ৪৪৪১, ই.ফা. হা. ৪২৪৬, ৪৪৪২)



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেন,



“আমাকে তোমরা মুসা (আ.) এর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিও না...।” (বুখারী তা.পা. হা. ২৪১১, আ.প্র. ২২৩৪, ই.ফা. ২২৫১, মুসলিম, আহলে হাদীস লাইব্রেরী হা. ২৩৭৩, ৬০৪৭, ই.ফা.বা. ৫৯৩৮, ই.সে. ৫৯৭৭)



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,

“আল্লাহ্ তাবারকা ওয়াতায়ালা বলেছেন,

“আমার কোনো বান্দার ক্ষেত্রে একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনে মাত্তার থেকে উত্তম।” মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫৩, ই.ফা.বা. ৫৯৪৪, ই.সে. ৫৯৮৩।



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,

“তোমরা আমাকে কোনো নাবীর থেকে উত্তম বলোনা।” (বুখারী, তা.পা. ৪৬৩৮, ই.ফা.বা. ৪২৮০, আ.প্র. ৪২৭৭)



রাসূল (দ.) যদি সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী হতেন তাহলে তিনি কেন বললেন যে, “আমাকে ইউনুস (আ.) ও মুসা (আ.) এর উপর মর্যাদা দিও না। তবে আমরা একথাও বলিনা যে, মুহাম্মাদ (দ.) তাদের বা অন্য সকল নাবী এবং রাসূলদের থেকে তিনি (দ.) কম উত্তম। বরং আমরা বলি প্রত্যেক নাবী এবং রাসূল সমান মর্যাদার অধিকারী, যা রাসূল (দ.) তিনি নিজেই আমাদেরকে শিখিয়েছেন।



কোনো নাবীর-ই নিজেকে ইউনুস (আ.) এর

উপরে মর্যাদা দেয়া জায়েয নয়




রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“কোনো নাবীর-ই একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনে মাত্তার চেয়ে উত্তম।” (আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৭২)।





সংশয়মূলক প্রশ্নোত্তর




প্রশ্ন (১) ঃ



আল্লাহ্ তায়ালা বলেন-



“এ রাসূলগণ এরূপ যে, তাদের মাঝে কাউকে কারোর উপর ফযীলত দিয়েছি” সূরা বাক্বারাহ্, ২/২৫৩।



“অবশ্যই আমি নাবীদের মাঝে কাউকে কারোর উপর মর্যাদা দিয়েছি।” সূরা বানী ইসরাঈল, ১৭/৫৫



এ দুটি আয়াত প্রমাণ করে কোনো-কোনো রাসূলের উপর কোনো-কোনো রাসূলকে আল্লাহ্ মর্যাদা দিয়েছেন। তাহলে কেন নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠ বলা যাবে না ?



উত্তর ঃ

আয়াতের দাবীটি অবশ্যই সঠিক। তবে তাতে কিছু ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। আয়াত দুটি লক্ষ্য করুন, আল্লাহ্ বলেছেন,



“এই রসূলগণ-আমি তাদের কাউকে কারো উপর মর্যাদা দিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ তো হলো তারা যার সাথে আল্লাহ্ কথা বলেন, আর কারও মর্যাদা উচ্চতর করেছেন এবং আমি মারইয়াম তলয় ঈসাকে সত্য-মিথ্যা পার্থক্যকারী দান করেছি এবং তাকে শক্তি দান করেছি ও রহুল কুদুস্ অর্থাৎ জিবরাঈলের মাধ্যমে।” সূরা বাক্বারাহ, ২/২৫৩



“আপনার রব তাদের সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞাত আছেন, যারা আকাশসমূহে ও ভূপৃষ্ঠে রয়েছে। আমি তো কতক নাবীকে কতক নাবীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি এবং দাউদকে যাবুর দান করেছি।” সুরা বাণী ইসরাঈল, ১৭/৫৫



উপরোক্ত আয়াতটি বলছে যে, আমি কতক রসূলকে কতক রসূললের উপর মর্যাদা দিয়েছি এবং আয়াতের পরের অংশ বলছে যে, এই মর্যাদাটি কি কি বিষয়ে তা হলো-



(১) কতক রসূলের সাথে আল্লাহ্ কথা বলেছেন এই কথা বলার মাধ্যমে তিনি মর্যাদা দিয়েছেন।



(২) ঈসা (আ.) কে আল্লাহ্ সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বিষয় দান করার মাধ্যমে মর্যাদা দান করেছেন এবং রুহুল কুদুস্ দ্বারা শক্তি প্রদান করার মাধ্যমে মর্যাদা দান করেছেন।



এই দু’টি বিষয় দ্বারা প্রমাণ হয় যে, আল্লাহ্ এই আয়াতে কোনো রসূলকে কোনো রসূলের উপর মর্যাদা দিয়েছেন কোনো-কোনো বিষয়ে, সার্বিক বিষয়ে নয়। কোনো-কোনো বিষয়ে অন্যন্য নাবীগণ মুহাম্মাদ (দ.) এর উপরেও মর্যাদা পেয়েছেন। এসম্পর্কে রাসূল (দ.) বলেন-



“নিশ্চয় আমাদেরকে হাশরের ময়দানে খালি পা, বস্ত্রহীন এবং খতনাবিহীন অবস্থায় উপস্থিত করা হবে। অতপরঃ তিনি কুরআনের আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন- “যেভাবে আমি সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম, সেভাইবে পুনরায় সৃষ্টি করবো। এটি আমার প্রতিশ্র“তি এর বাস্তবায়ন আমি করবোই।” সূরা আম্বিয়া, ২১/১০৪। আর কেয়মাতের দিন সবার আগে যাকে কাপড় পড়ানো হবে তিনি হবেন ইবরাহীম (আ.)...।” (বুখারী তা.পা. হা. ৩৩৪৯, ৪৭৪০, ৬৫২৬, আ.প্র. হা. ৩১০১, ই.ফা. হা. ৩১০৯)



এই হাদীসে ইবরাহীম (আ.)কে হাশরের ময়দানে সবার আগে কাপড় পরিধান করিয়ে আল্লাহ্ তায়ালা মর্যাদা দিয়েছেন। অন্যকোন নাবীকে এই মর্যাদা দেননি ! স্বয়ং মুহাম্মাদ (দ.) কেও না !



সাহাবাগণ রাসূল (দ.) এর কাছে প্রশ্ন করলেন,



“হে আল্লাহর রাসূল (দ.) মানুষের মাঝে সবচেয়ে সম্মানীত ব্যক্তি কে ? তিনি (দ.) বললেন- “যে তোমাদের মাঝে সবচেয়ে তাক্বওয়াবান। তখন তাঁরা বলল আমরাতো আপনাকে এব্যপারে জিজ্ঞেস করিনি। তিনি (দ.) বললেন- “আল্লাহর নাবী ইউসূফ (আ.) যিনি নাবীর পুত্র এবং আল্লাহর নাবীর পৌত্র, আল্লাহর খালীলের প্রপৌত্র...। (বুখারী, তা.পা. ৩৩৫৩, ৩৩৭৫, ৩৩৮৩, ৩৪৯০, আ.প্র. হা. ৩১০৫, ই.ফা. হা. ৩১১৩।



এ হাদীস স্পষ্ট ঘোষণা করছে যে, তাক্বওয়ার দিক থেকে রাসূল (দ.) ইউসুফ (আ.) কে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন অন্য নাবীদের নাম বলেননি। স্বয়ং মুহাম্মাদ (দ.) এর নামও উল্লেখ করেনে নি।



মহান আল্লাহ্ বলেন-



“আমি তোমাকে (মুহাম্মাদ) সমস্ত বিশ্বের জন্য রহমাত স্বরূপ পাঠিয়েছি।” সূরা আম্বিয়া, ২১/১০৭।



এই আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা সমগ্র বিশ্ববাসীর উপর মুহাম্মাদ (দ.) কে রহমাত স্বরূপ পাঠিয়ে মর্যাদা দিয়েছেন। যা অন্যকোন নাবীদেরকে দান করেন নি।



সার্বিকভাবে কোনো রসূলকে কোনো রসূলের উপরে মর্যাদা দেয়ার ব্যপারে কুরআনেও নিষেধ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ্ বলেন,



“আমরা রসূলদের মাঝে কোনো পার্থক্য করিনা।” -সূরা বাক্বারাহ্, ২/২৮৫

এই আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে, সার্বিক বিষয়ে কোনো রসূলকে কোনো রসূলের উপরে মর্যাদা দেওয়া নিষিদ্ধ। কোনো-কোনো বিষয়ে কোনো নাবী কারো-কারো উপরে মর্যাদা পেতে পারেন। কিন্তু তা সার্বিক বিষয়ে হবে না। এ কারণেই রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



প্রশ্ন (২) ঃ



কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম সুপারিশ করার অনুমতি পাবেন। তাহলে এতেই প্রমাণ হয় না, মুহাম্মাদ (দ.) সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী এবং রাসূল (দ.) ?



উত্তর ঃ

আমরা পূর্বেই প্রমাণ করেছি যে, কোন কোন বিষয়ে কোন কোন নাবী এবং রাসূল (আ.)গণকে অন্য নাবী এবং রাসূল (আ.) গণের উপর মর্যাদা দিয়েছেন। সার্বিকভাবে নয়। কেয়ামতের দিন সুপারিশ করার দিক দিয়ে মুহাম্মাদ (দ.) কে মর্যাদা দিয়েছেন। এতেই যদি প্রমাণ হয়ে যায় যে, তিনি (দ.) সর্বশ্রেষ্ঠ তাহলে ইবরাহীম (আ.) কে যে, আল্লাহ্ সর্বপ্রথম কাপড় পরিধান করাবেন তার উত্তর কি হবে ?



“নিশ্চয় আমাদেরকে হাশরের ময়দানে খালি পা, বস্ত্রহীন এবং খতনাবিহীন অবস্থায় উপস্থিত করা হবে। অতপরঃ তিনি কুরআনের আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন- “যেভাবে আমি সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম, সেভাইবে পুনরায় সৃষ্টি করবো। এটি আমার প্রতিশ্র“তি এর বাস্তবায়ন আমি করবোই।” সূরা আম্বিয়া, ২১/১০৪। আর কেয়মাতের দিন সবার আগে যাকে কাপড় পড়ানো হবে তিনি হবেন ইবরাহীম (আ.)...।” (বুখারী তা.পা. হা. ৩৩৪৯, ৪৭৪০, ৬৫২৬, আ.প্র. হা. ৩১০১, ই.ফা. হা. ৩১০৯)



এই হাদিস দিয়ে এখন কেউ যদি বলেন ইবরাহীম (আ.) কে যেহেতু সর্বপ্রথম কাপড় পরিধান করাবেন তাই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ তাহলে তার কথা বা বিশ্বাস কি সঠিক হবে ? নিশ্চয়ই না। কারণ, রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন-



“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



তাছাড়া সুলাইমান (আ.) সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন,





“সুলাইমান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। (সুলাইমান) বলেছিলেন, ওহে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব।” -সূরা নামল, ২৭/১৬



এই আয়াতা থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, সুলাইমান (আ.) কে আল্লাহ্ পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা এবং সবকিছু পাওয়ার দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছেন। এখন কেউ যদি এই আয়াত দিয়ে সুলাইমান (আ.)-কে সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী বলে তা’কি সঠিক হবে ? নিশ্চয়ই না। কারণ, রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



প্রশ্ন (৩) ঃ



আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন, যে দিন লোকদেরকে উঠানো হবে (কবর হতে কিয়ামাতের মাঠে) সে দিন আমিই সর্ব প্রথম আত্ম প্রকাশকারী হব। যখন সকল মানুষ আল্লাহ্ তায়ালার আদালতে একত্র হবে। তখন আমি তাদের ব্যাপারে বক্তব্য উপস্থাপন করব। তারা যন নিরাশ ও হতাশাগ্রস্থ হবে তখন আমিই তাদের সুখবর প্রদানকারী হব। সেদিন প্রশসংসার পতাকা আমার হাতেই থাকবে। আমার “রব” এর নিকট আদম সন্তানদের মধ্যে আমিই সবারচাইতে সম্মানীত, তাতে গর্বের কিছু নেই। (আত-তিরমিযী, দ্বিতীয় খণ্ড, হু.মা. ৩৬১০)



এই হাদিস বলছে যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) সবারচাইতে আল্লাহ্’র কাছে সম্মানীত। একথাটি দ্বারা কি বুঝা যায় না যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল ?



উত্তর ঃ



এই হাদিসটি “যঈফ” তাই এই হাদিসটি দালিলের ক্ষেত্রে একেবারেই অযোগ্য। দেখুন- যঈফ, আত-তিরমিযী, দ্বিতীয় খণ্ড, হু.মা. ৩৬১০। অপরদিকে সহীহ্ হাদিস বলছে যে,



“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



সহীহ্ এই হাদিস অনুযায়ী নাবীদের মাঝে কাউকে সার্বিক দিকদিয়ে মর্যাদা দেয়া নিষেধ।



প্রশ্ন (৪) ঃ



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“আমি নাবীগণের উপরে মর্যাদা পেয়েছি।” (সহীহ্, তিরমিযী, হু.মা. ১৫৫৩)



এই হাদিস থেকে বুঝা যায় সমস্ত নাবীদের থেকে মুহাম্মাদ (দ.) সর্বশ্রেষ্ঠ।



উত্তর ঃ



হাদিসটি সহীহ। তবে হাদিস প্রশ্নকারী ব্যক্তি অর্ধেক দিয়েছেন। পুরো হাদিসটি হচ্ছে,



“রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



আমি অন্যান্য নাবীদের উপরে মর্যাদা পেয়েছি অথবা বলেছেন আমার উম্মাত অন্যান্য উম্মাতের উপরে মর্যাদা পেয়েছে (সেই মর্যাদাটি হচ্ছে) গানীমাতের মাল আমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। (সহীহ্ লি-গইরিহী, তিরমিযী, হু.মা. ১৫৫৩)



এই পুরো হাদিসটি থেকে বুঝা যায় যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) সার্বিকভাবে মর্যাদা পাননি। বরং গাণীমাতের মাল হালাল হওয়ার দিক থেকে মর্যাদা পেয়েছেন। আর এরকম বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন নাবীগণও মুহাম্মাদ (দ.) এর উপরে মর্যাদা পেয়েছেন। যা পূর্বে আলোচিত হয়েছে। সার্বিকভাবে কোনো নাবীকে কোনো নাবীর উপরে মর্যাদা দিতে রসূলুল্লাহ্ (দ.) নিষেধ করেছেন। এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেন,



“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



প্রশ্ন (৫) ঃ



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“তোমরা নাবীদের মাঝে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দিও না।” (বুখারী তা.পা. হা. ৬৯১৬, আ.প্র. হা. ৬৪৩৬, ই.ফা. হা. ৬৪৪৮, মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫০, ই.ফা.বা. ৫৯৪১, ই.সে. ৫৯৮০, আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৬৮)



এই হাদিসে রসূলুল্লাহ্ (দ.) ভদ্রতার কারণে কোনো নাবীকে কোনো নাবীর উপরে মর্যাদা দিতে নিষেধ করেছেন। আসলে তিনি (দ.) সর্বশ্রেষ্ঠ।



উত্তর ঃ



এই কথাটি রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর উপর একটি মিথ্যা অপবাদ ! কারণ, রসূলুল্লাহ্ (দ.) ভদ্রতা করে ধর্মীয় শিক্ষা উল্টাভাবে দিবেন না। আপনারা কি বলতে চান রসূলুল্লাহ্ (দ.) ভদ্রতা করে আমাদেরকে উল্টা শিক্ষা দিয়েছেন ! আপনাদের কাছে কি কোনো প্রমাণ আছে যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) ভদ্রতা করে এরকম শিক্ষা দিয়েছেন আসলে এরকম শিক্ষা নয় ?! এসম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন, “আল্লাহ্ তাবারকা ওয়াতায়ালা বলেছেন,



“আমার কোনো বান্দার ক্ষেত্রে একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনে মাত্তার থেকে উত্তম।” (মুসলিম, আ.হা.লা. ৬০৫৩, ই.ফা.বা. ৫৯৪৪, ই.সে. ৫৯৮৩।



এই হাদিসটি বলছে যে, স্বয়ং আল্লাহ্ বলেছেন যে, “আমার কোনো বান্দার ক্ষেত্রে একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনে মাত্তার থেকে উত্তম।”



বান্দা কথাটি সার্বিকভাবে এসেছে যার মাঝে নাবীগণও উদ্দেশ্য। যেমন- রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,



“কোনো নাবীর-ই একথা বলা উচিৎ নয় যে, আমি ইউনুস ইবনে মাত্তার চেয়ে উত্তম।” (আবু দাউদ, সহীহ্, হু.মা. ৪৬৭২)।



অর্থাৎ কোনো নাবীর-ই এই কথা বলা উচিৎ নয় যে, তিনি নিজেকে ইউনুস (আ.) এর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিবেন। এই কথার দ্বারা বুঝা যায় যে, কোনো নাবী-ই সর্বশ্রেষ্ঠ নয়। এই কথাটিতো আল্লাহ্ বলেছেন, এখন আপনারা কি বলবেন যে, আল্লাহ্ ভদ্রতার খাতিরে একথা বলেছেন ? আসলে মুহাম্মাদ (দ.)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ ? আশাকরি এই ধরণের কুফরি বিশ্বাস ও কথা বলা থেকে বিরত থাকবেন !



প্রশ্ন (৬) ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,



“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ এবং মালাইকাহ্রা নাবী’র উপরে স্বল্লু (দরুদ) পাঠান।” -সূরা আহযাব, ৩৩/৫৬ এই আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালা এবং মালাইকাগণ আমাদের নাবীর উপরে স্বল্লু (দরুদ) পাঠায় তাই বুঝাই যায় যে, আমাদের নাবী মুহাম্মাদ (দ.)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী।



উত্তর ঃ



এই ব্যাখ্যাটি সঠিক নয়। কারণ, মহান আল্লাহ্ বলেন,



“তিনি (আল্লাহ্) তোমাদের (মু’মিনদের) উপর স্বল্লু (দুরুদ) পাঠান এবং মালাইকাহ্গণও। -সূরা আহযাব, ৩৩/৪৩



এই আয়াতটি বলছে যে, সমস্ত মু’মিনদের প্রতি আল্লাহ্ এবং ফেরেশতাগণ স্বল্লু (দুরুদ) পাঠিয়ে থাকেন।

এই আয়াত দ্বারা কি এটা বুঝা যায় যে, মু’মিনগণ অন্যান্য নাবীগণদের থেকে শ্রেষ্ঠ ? নিশ্চয়ই এই ধরনের বাতিল বিশ্বাস আপনাদের মধ্যে নেই। তাহলে বুঝা যায় যে, শুধুমাত্র মুহাম্মাদ (দ.)এর-ই উপর আল্লাহ্ এবং মালাইকাহ্গণ স্বল্লু (দুরুদ) পাঠায় এই কথাটি সঠিক নয়। বরং সকল নাবী এবং সাধারণ মু’মিনগণের উপরেও স্বল্লু (দুরুদ) পাঠানো হয়।



অতএব, প্রশ্নকারীর উল্লেখিত সূরা আহযাব, ৩৩/৫৬নং আয়াত দিয়ে কোনোভাবেই মুহাম্মাদ (দ.) কে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণ করা সম্ভব নয়।



প্রশ্ন (৭) ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,



“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাহ্।” -সূরা আলি ইমরান, ৩/১১০



এই আয়াত দ্বারা মুহাম্মাদ (দ.) এর উম্মাহ্কে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মাহ্ বলা হয়েছে। তাহলে যে নাবী’র উম্মাহ্ সর্বশ্রেষ্ট সেই নাবী কি সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী হবে না ?



উত্তর ঃ



এই আয়াতের ব্যাখ্যাটি সঠিক নয়। কারণ, তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাহ্ বলে আল্লাহ্ মুহাম্মাদ (দ.) এর উম্মাহ্কে বুঝান নি। বরং গোটা মুসলিম উম্মাহ্কেই বুঝিয়েছেন। আর সকল নাবীগণ এবং তাঁদের অনুসারীগণ মুসলিম ছিলেন। যেমন মহান আল্লাহ্ বলেন,



“নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং আ’মালে স্বালিহা করেছে তারাই হচ্ছে সৃষ্টির সেরা।” -সূরা বায়্যিনাহ্, ৯৮/৭



এই আয়াতটি বলছে যে, যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে তারাই হচ্ছে সৃষ্টির সেরা। আর পূর্ববর্তী সকল নাবীগণ এবং তাঁদের অনুসারীগণ সকলেই ঈমান এনেছিলেন এবং সৎকর্ম করেছিলেন। তাই এই আয়াত অনুযায়ী তারাও সৃষ্টির সেরা।



অতএব, প্রশ্নকারীর উল্লেখিত সূরা আলি ইমরানের ১১০নং আয়াতের অনুবাদ হবে,



“তোমরাই (মুসলিম উম্মাহ্-ই) সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মাহ্।” -সূরা আলি ইমরানের ৩/১১০



অতএব, এই আয়াতটি দ্বারা কোনোভাবেই প্রমাণ হয় না যে, মুহাম্মাদ (দ.) এর উম্মাহ্ অন্যান্য নাবীদের উম্মাহ্ থেকে শ্রেষ্ঠ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.