নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাওর

আমার চুল আেছ

সাওর

আিম আম খাই

সাওর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাওবাহ ও তার বিধান

১৬ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:০৬

তাওবাহ্ শব্দের অর্থ ঃ



অনুশোচনা করা, ফিরে আসা, মা প্রার্থনা করা। মু’জামুল ওয়াফী, রিয়াদ প্রকাশনী, ২৭৮ পৃঃ ।



বর্জন করা, আল্লাহমুখী হওয়া, অনুতপ্ত হওয়া, অনুশোচনা করা।-মিসবাহুল লুগাত, থানবী লাইব্রেরী, ৭০ পৃঃ।



তাওবাহ্’র সংজ্ঞা ঃ



রসূলুল্লাহ (দ.) বলেছেন,

“অনুশোচনাই হচ্ছে তাওবাহ......”। ইবনে মাজাহ, সহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৭, কিতাবুয যুহুদ, অনুচ্ছেদ ঃ ৩০, যিকরুত তাওবাহ, হাদিস # আরবী মিশর ৪২৫২।



মহান আল্লাহ এবং তাঁর রসূল (দ.) মানুষদেরকে তাওবাহ্ করতে বলেছেন ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ’র নিকট তাওবাহ কর। যাতে করে তোমরা সফলকাম হতে পারো।” –সূরা নুর-২৪/৩১



আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত,



“......রসুলুল্লাহ (দ.) বলেছেন, হে লোক সকল, তোমরা আল্লাহ’র নিকট তাওবাহ্ কর.......”। - মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৪৯, যিকর, দু’আ, তাওবাহ্ ও মা প্রার্থনা, অনুচ্ছেদ ঃ ১২, বেশি বেশি মা প্রার্থনা বা ইসতিগফার করা মুস্তাহাব, হাদিস # আ.হা.লা.-৬৭৫২, ই.ফা. ৬৬১৩, ই.সে. ৬৬৬৭।



যে গুনাহগার তাওবাহ্ করে সে গুনাহ্গারদের মাঝে উত্তম ব্যক্তি ঃ



আনাস (রা.) হতে বর্ণিত,



“রসূলুল্লাহ (দ.) বলেছেন, সকল আদম সন্তান-ই-ভূল করে থাকে, আর ভূলকারীদের মাঝে যে তাওবাহ্ করে, সেই উত্তম।” –তিরমিযী, হাসান, অধ্যায় ঃ ৩৫, ক্বিয়ামাহ ও মর্মস্পর্শী বিষয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৪৯, হাদিস # আরবী রিয়াদ ২৪৯৯, ইবনে মাজাহ, হাসান, অধ্যায় ঃ ৩৭, কিতাবুয যুহুদ, অনুচ্ছেদ ঃ ৩০, যিকরুত তাওবাহ্, হাদিস # আরবী মিশর-৪২৫১।



যারা তাওবাহ্ করে না তাদেরকে আল্লাহ্ যালিম বলেছেন ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,



“.....আর যারা তাওবাহ্ করে না তারাই যালিম।” সূরা হুজরাত-৪৯/১১।





তাওবাহ্ করতে হবে খাঁটিভাবে। তাহলে গুনাহ্ মা করা হবে এবং জান্নাত পাওয়া যাবে ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ’র নিকট খাঁটিভাবে তাওবাহ্ কর। তাহলে তোমরা আশা করতে পারো তোমাদের রব তোমাদের পাপ মা করবেন এবং তোমাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। যাহার নিচে নদী প্রবাহিত......।” সূরা তাহরীম-৬৬/৮



যেভাবে তাওবাহ্ করতে হবে ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,



“.......এবং তোমরা স্বীয় রবের নিকট মা প্রার্থনা কর। তারপর, আল্লাহ’র কাছে তাওবাহ্ কর।”-সূরা হুদ-১১/৩



গুনাহগার ব্যক্তিদের হতাশ হওয়া যাবে না। কারণ, তাওবাহ্ করলেই আল্লাহ্ গুনাহ মা করে দিবেন ঃ



মহান আল্লাহ্ বলেন,



“তুমি বলো (আল্লাহ বলেছেন) হে আমার বান্দাগণ; তোমরা যারা নিজেদের উপর (পাপ কার্যে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে) যুলুম করেছ, আল্লাহর রহমত (অনুগ্রহ) হতে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল গুনাহ্ মা করে দিবেন। তিনি তো মাশীল ও পরম দয়ালু।” সূরা যুমার-৩৯/৫৩



গুনাহ্গার ব্যক্তি তাওবাহ্ করলে তার আর কোনো গুনাহ্ থাকে না ঃ



ওবায়দা বিন আব্দুল্লাহ্ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন,



“রসূলুল্লাহ (দ.) বলেছেন, গুনাহ্গার ব্যক্তি তাওবাহ্ করলে তার কোনই গুনাহ থাকে না।” ইবনে মাজাহ, হাসান, অধ্যায় ঃ ৩৭, কিতাবুয যুহুদ, অনুচ্ছেদ ঃ ৩০, যিকরুত তাওবাহ্, হাদিস # আরবী মিশর ৪২৫০।





বান্দা তাওবাহ্ করলে আল্লাহ্ যেরূপ খুশি হন ঃ



আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত,



“.......নাবী (দ.) বলেছেন, মনে করো কোনো এক ব্যক্তি (সফরে) এক স্থানে অবতরণ করল, সেখানে প্রাণেরও ভয় ছিল। তার সঙ্গে তার সফরের বাহনও ছিল। যার উপর তার খাদ্য, পানীয় ছিল। সে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো এবং জেগে উঠে দেখল তার বাহন চলে গেছে। তখন সে গরম ও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহ যা চাইলেন তা হলো। তখন সে বলল যে, আমি যেস্থানে ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই। অতঃপর সে নিজ স্থানে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়ল। তারপর জেগে উঠে দেখল যে, তার বাহনটি তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে ব্যক্তি যতটা খুশি হল নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তায়াল তার বান্দার তাওবাহ্ করার কারণে এর চেয়েও অনেক বেশি খুশি হন।” বুখারী, অধ্যায় ঃ ৮০, দু’আসমূহ, অনুচ্ছেদ ঃ ৪, তাওবাহ্ করা, হাদিস # আরবী মিশর, ৬৩০৮, ৬৩০৯, ই.ফা. ৫৭৫৬, ৫৭৫৭, আ.প্র.-৫৮৬৩, ৫৮৬৮, তিরমিযি, সহীহ, অধ্যায় ঃ ৩৫, ক্বিয়ামাহ ও মর্মস্পর্শী বিষয়, অনুচ্ছেদ ঃ ৪৯, হাদিস # আরবী রিয়াদ - ২৪৯৮।







রসূলুল্লাহ (দ.) এর তাওবাহ্ ঃ



আবু বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,



“তিনি বলেন, আমি নাবী (দ.) সাহাবা আগার (রাঃ) থেকে শুনেছি, তিনি ইবনে ওমার (রাঃ) এর নিকট হাদিস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ (দ.) বলেছেন, হে লোক সকল, তোমরা আল্লাহ’র নিকট তাওবাহ্ কর। কেননা আমি প্রতিদিন আল্লাহ’র নিকট ১০০ বার তাওবাহ্ করে থাকি। -সহীহ মুসলিম, অধ্যায় ঃ ৪৯, যিকর, দু’আ, তাওবাহ্ ও মা প্রার্থনা, অনুচ্ছেদ ঃ ১২, বেশি বেশি মা প্রার্থনা বা ইসতিগফার করা মুস্তাহাব, হাদিস # আ.হা.লা. ৬৭৫২, ই.ফা. ৬৬১৯, ই.সে. ৬৬৬৭।



রসূলুল্লাহ (দ.) যদি প্রতিদিন ১০০ বার তাওবাহ করে থাকেন, তাহলে ভেবে দেখুন আমাদের কিভাবে তাওবাহ্ করা উচিত। অতএব, আমাদেরকেও প্রতিদিন অনেকবার তাওবাহ করতে হবে।



যেসময় তাওবাহ্ ক্ববুল হয় না ঃ



মহান আল্লাহ বলেন,



“তাওবাহ্ তাহাদের জন্য নহে, যাহারা খারাপ কাজ সবসময় করতেই থাকে, অবশেষে তাহাদের কাহারো মৃত্যু উপস্থিত হলে সে বলে আমি এখন তাওবাহ করছি (এ সকল লোকদের তাওবা গ্রহণযোগ্য নয়)। এবং তাহাদের জন্য (তাওবাহ্) নয় যাহারা কাফির অবস্থায় মারা যায়.......”। সূরা নিসা-৪/১৮।



এই আয়াতে মহান আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা তিন ধরণের ব্যক্তিদের তাওবাহ্ গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন-

১। যারা খারাপ কাজ করতেই থাকে অর্থ্যাঃ যারা খারাপ কাজ থেকে বিরত হয় নি। এদের তাওহাব্ গ্রহণযোগ্য নয়।

২। যারা মৃত্যুর সময় তাওবাহ্ করে। এদের তাওবাহও গ্রহণযোগ্য নয়।

৩। যারা কাফির অবস্থায় মারা যাবে তাদের তাওবাহ্ও ক্ববুল করা হবে না।



রসূলুল্লাহ (দ.) বলেন,



“যে ব্যক্তি পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে তাওবাহ করবে, আল্লাহ তার তাওবাহ্ গ্রহণ করবেন। -মুসলিশ, হাদিস #



ক্বিয়ামতের বড় নিদর্শনের মাঝে একটি নিদর্শন হচ্ছে পশ্চিম দিক থেকে সূর্য ওঠা। আর এই পশ্চিম দিক থেকে সূর্য ওঠার আগেই যারা তাওবাহ করতে পারবে তাদের তাওবাহ্ ক্ববুল হবে। অর্থ্যাঃ পশ্চিম দিক থেকে সূর্য ওঠার পরে যদি কেউ তাওবাহ্ করে তাহলে তার তাওবাহ্ গ্রহণযোগ্য হবে না।



আল্লাহ আমাদের তাওবাহ ও নেক আমল কবুল করুন আমীন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.