নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাঈদ শিহাব

সাঈদ শিহাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাঁঠাল চুরি

০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১:০৫

ডালটা রহমান সাহেবের বাড়ির ভিতরে পড়েছিল। তাতে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু সেই ডালেই ধরেছে সবচেয়ে বড় কাঁঠালটা। ধরার আর জায়গা পেল না! ভাবেন অর্জুন ধর। দাঁত কিড়মিড় করে উঠে তার। আর গতকালই ঘটে গেল দুর্ঘটনাটা।

তার আগে কিছু কথা , কিছু ঘটনা জেনে রাখা প্রয়োজন বৈকি। পাশাপাশি প্রকান্ড দুই অট্টালিকা, মাঝে বেশ হৃষ্টপুষ্ট দেয়াল। একটি জাফর রহমানের, অন্যটি অর্জুন ধরের। হিন্দু-মুসলমানের বাড়ি পাশাপাশি আর দুজনেই গোড়া বকধার্মিক। তাই তাদের সম্পর্ক সহজেই অনুমেয়। ঝগড়া তো লেগেই আছে, সাথে আছে সম্পদ প্রদর্শনের নিত্য প্রচেষ্টা। রহমান সাহেবের ১৫ লাখ টাকার গাড়ি কিনে গ্যারেজে ঢুকানোর আগেই ধর সাহেব ২০ লাখের গাড়িটি কিনে আনলেন। ধরসাহেবের ছেলে যখন পূজা উপলক্ষ্যে সিঙ্গাপুর থেকে কেনাকাটা করে পাঠালো, রহমান সাহেবের পুরো পরিবার তখন আমেরিকা ভ্রমণের গোছগাছ করছে।

এই সুন্দর যুদ্ধময় সম্পর্কটা সতেজ করে তুলল একটি কাঁঠাল। প্রকৃতির কোন খেয়ালে ধর সাহেবের সবচেয়ে ফলনশীল কাঠাল গাছটি সীমানা দেয়ালের উপর দিয়ে রহমান সাহেবের বাড়িতে উকি দিচ্ছে তা আমরা কখনোই জানতে পারবো না। মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত বেশ বড়সড় এক কাঠাল ধরল সেই ডালটিতে যার কথা আমরা পূর্বেই জেনেছি। এই কাঠাল নিয়ে এরই মধ্যে দুদন্ড গালিগালাজ হয়ে গেছে। ধরসাহেব তো শুধু হুমকি দিয়ে বসে থাকেন নি, আগে থেকেই দারোগাকে তার কাঠাল চুরির সন্দেহের কথা জানিয়েও এসেছেন। আর অবশেষে ঘটলো মহাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি।

ঘটানার প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী ধরসাহেবের মালী। সকালে উঠে কাঠালটি দেখতে না পেয়ে "গেল গেল" রব তুলে সে মালিককে ডাকল। হৈ হৈ করে ছুটে আসলেন ধর সাহেব, পুরো পরিবার। চেঁচামেচি শুনে বের হন রহমান সাহেব, সাথে তার পরিবার। আকাশ ভেঙে পড়লো নাকি! কেয়ামত কি চলে এসেছে এই সাত সকালে?

কি হয়েছে? রহমান সাহেব চেঁচিয়ে উঠলেন। তার মুখ আর বন্ধ হল না। কাঁঠালটি যে তার সীমানা দেয়ালের কাছে পড়ে আছে!

কি হয়েছে!খেকিয়ে উঠেন ধর সাহেব। আমার কাঁঠাল চুরি হয়েছে।

রহমান সাহেব একটু বিব্রত হন। কিন্তু পরমূহুর্তেই সরব হয়ে উঠেন। চুরি হয়েছে কোথায়? এই তো এখানে পড়ে আছে। যদিও একটু ফেটে গেছে।

পড়ে আছে নাকি ইচ্ছা করে ফাটিয়ে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে তা আমি বুঝি না? ধর সাহেবের গলা সপ্তমে চড়ে।পিছনে ধর পরিবার হায় হায় করে উঠে, এই কাঁঠাল তো আর খাওয়া যাবে না।

এই কাঁঠাল নিজে নিজেই পড়ে গেছে। হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠেন রহমান সাহেব।

কিন্তু ধর সাহেবের বিলাপ কমে না। রহমান সাহেব হিংসুটে। নিজে এই কাঠাল খেতে পারবেন না। তাই ধর সাহেব যাতে খেতে না পারেন সে জন্যই তিনি এই কাজ করেছেন।

ধর সাহেবের মা-মরা আর্তনাদে লোকজন জমে গেল। মূহুর্তেই তারা দুই ভাগ হয়ে গেল। এক ভাগ ধর সাহেবের পক্ষে স্লোগান দিতে লাগলো, আরেক ভাগ রহমান সাহেবের পক্ষে মিছিল বে করল। দুই দলে হাতাহাতি শুরু হয়ে মারামারির পর্যায়ে গেল। আহত হল অনেকে। আসলো দারোগা তার দল নিয়ে। ততক্ষণে জনতা উধাও। দুই পরিবার তখনো ঝগড়া চালিয়ে যাচ্ছে, এমন কি ছোট্ট রিয়াদ আর বিশ্বাসও বসে নেই।

দারোগা কোনমতে দুই পরিবারকে থামাল। এরপর সকল ঘটনা শুনে বিজ্ঞের ন্যায় কিছুক্ষণ মাথা দুলিয়ে সবকিছুর মূল সেই কাঁঠালটি দেখতে চাইল।

কিন্তু কাঁঠালটির হদিস আর পাওয়া গেল না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৪ ভোর ৬:৫৪

ভিটামিন সি বলেছেন: ভাই, কাঠাঁল কই গেলো? গুম হইছে নাকি?

০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১২:১৩

সাঈদ শিহাব বলেছেন: হুমমম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.