নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাঈদ শিহাব

সাঈদ শিহাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগন্তুক

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৫

অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে অয়নের আগ্রহের শেষ নেই। বিশেষ করে ব্ল্যাকহোল হলে তো কথাই নেই। একদিন বিকেলে পকেটে কিছু টাকা নিয়ে নীলক্ষেতে চলে গেল সে। এ জায়গাটা ওর খুব প্রিয়। মাঝে মাঝে এখানেই থেকে যেতে ইচ্ছে করে ওর। বই বাছাবাছি করতে করতে হাতে এসে পড়ল একটি ইংলিশ বই যার প্রচ্ছদে ফ্লাইং সসার আকা। এই সসার জিনিসটা নিয়েও অয়নের চিন্তার শেষ নাই। আসলেই কি অন্য গ্রহে কোন প্রাণি আছে? কেমন তারা আর তাদের জীবনধারাই বা কেমন? অয়নের হাতের বইটিতে বিভিন্ন সময় পৃথিবীতে ফ্লাইং সসার দেখা যাওয়ার ঘটনা গুলো বর্ণনা করা হয়েছে। হাত থেকে বইটি আর রাখতে ইচ্ছে হল না অয়নের। বাসায় এসেই পড়া শুরু করে দিল। এই পড়ন্ত বিকেলে একটু বাইরে হাটাহাটি না করে ঘরে বসে বই পড়ার জন্য অয়নের মা এসে ওকে কিছুক্ষণ বকাবকি করে গেলেন। কিন্তু অয়নের সেইদিকে কোন খেয়াল নেই। ও তখন পুরোপুরি বইয়ের ভিতর ঢুকে পড়েছে। ও সবচেয়ে বেশি অবাক হল প্রাচীন বিভিন্ন সভ্যতার সাথে এলিয়েনদের যোগাযোগের বিষয়টি পড়ে। সাথে সাথেই ইন্টারনেট থেকে মায়া সভ্যতা সম্পর্কে আরো বেশ কিছু তথ্য জেনে নিল। ওর চোখে ভাসতে লাগলো মায়া সভ্যতার সময় দেয়ালে আকা অদ্ভুত কিছু মানুষ জাতীয় প্রাণিদের ছবি। অয়নের মা এসে দেখেন অয়ন চেয়ারে বসেই ঘুমিয়ে গেছে। কম্পিউটারটা বন্ধ করে তিনি চলে গেলেন।

******
অয়নের ঘুম ভাঙ্গে চোখের উপর কড়া আলো পড়ায়। চোখ খুলতে কষ্ট হয় ওর। একটু পাশে সরে যায় ও। কিছুক্ষণ পর চোখে আলো সয়ে আসে । আর তখনই ও হতভম্ব হয়ে যায়।
এটা কোন জায়গা? ভাবে অয়ন। ভীষণ ভয় পায় সে। চারপাশ এত অন্ধকার কেন? ওর চোখের উপর পড়া আলোর উৎস খুজতে গিয়ে উপরে তাকায় সে। আর তখনই ওটাকে দেখতে পায় সে। হ্যা, কোন ভুল হচ্ছে না তার। ওটা একটা ফ্লাইং সসারই। বেশ উপরে ভেসে আছে ওটা আর চারপাশে নীল আলো ছড়াচ্ছে। ওখান থেকেই তার চোখে আলো এসে পড়ছিল যদিও সেই আলোটা এখন নেই। ভয়ে দিশেহারা অয়ন লুকানোর জন্য চারপাশ দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুই চোখে পড়ে না। ও উল্টা ঘুরে দৌড়ানের চেষ্টা করে কিন্তু পা দুটো নড়তে চায় না। ওর থেকে বেশ দূরে সসারটি নেমে আসে। ভয়ে জমে গিয়ে চুপচাপ সব কিছু দেখা ছাড়া অয়নের আর কিছুই করার থাকল না। নিঃশব্দে সসারটি নেমে আসে আর এর গায়ের বেশ বড় একটি অংশ খুলে যায়। সেই খোলা অংশ দিয়ে শুধু আলোই বের আসছে। অয়নের মনে হতে থাকে আলোর ভিতর কিছু নড়ছে। অয়নের দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়। সেই আলোর ভিতর থেকে অবয়ব দেখা যাচ্ছে, মানুষেরই অবয়ব। অবয়বটা নিচে নামতে থাকে আর অয়নের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আর তখনই অয়ন ওটাকে দেখতে পায়। আরে, ওটাতো একটা মানুষ। অয়নের ভয় বেশ কমে যায়। মানুষটাকে দেখে অয়নের তার সমবয়সীই মনে হচ্ছে। ছেলেটা অয়নের সামনে এসে দাঁড়ায় আর অয়ন পরিষ্কারভাবে ছেলেটার চেহারা দেখতে পায়। চেহারাটা দেখেই অয়নের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। মাথা ঘুরতে থাকে আর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। চোখ বন্ধ হওয়ার আগে অয়ন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা তার নিজের চেহারাটা দেখতে পায় ।

*****
অয়নের যখন হুঁশ ফিরে আসে তখন সে নিজেকে একটা চারকোণা টেবিলের উপর আবিষ্কার করে। মাথা তুলতে গিয়ে খুব ব্যথা অনুভব করে। হাত দিয়ে মাথার ডান পাশ স্পর্শ করলে ভেজা মনে হয় ওর কাছে। হাতটা চোখের সামনে আনতেই ও দেখে ওর হাতে রক্ত লেগে আছে। শুয়ে থেকেই সে চারপাশটা দেখার চেষ্টা করে। একটা সাদা রুমে শুয়ে আছে সে। চারপাশের সবকিছুই সাদা। এছাড়া আর তেমন কিছুই নাই দেখার মত।
ইচ্ছে হলে উঠে বসতে পারো। অয়নের মাথার পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলো। রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আর কথা গুলো শুনেই অয়নের ভয়টা ফিরে এল।
আর দয়া করে অজ্ঞান হয়ো না। কন্ঠটা আবার বলে উঠলো। এবার অয়নের ভয়ের চেয়ে কেন জানি লজ্জা লাগলো। সে উঠে বসে পিছনে তাকাল। ওর বয়সী একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এর চেহারাটা অন্য রকম, ওর মত না।
নিজের মত অন্য কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে ভয় তো পাবোই। ভীতু অয়নের মুখ দিয়ে কথাটা কিভাবে যেন বের হয়ে গেল। ভয়ে ভয়ে অয়ন চারপাশে তাকিয়ে ওর জমজটাকে খুজতে লাগলো। কাউকে না দেখতে পেয়ে মনে মনে শান্তি পেল। যাক বাবা, তখন নিশ্চয় আমি ভুল দেখেছি। ভাবে অয়ন।
কিছু খুজছো? ছেলেটা জিজ্ঞেস করে।
নাহ। অয়ন দায়সারা ভাবে উত্তর দেয়।
পৃথিবীতে কোথাও ফ্লাইং সসার তৈরি হয়েছে বলে তো শুনি নি। ভাবে অয়ন। তবে ছেলেটা আসলো কোথা থেকে? শুনেছিলাম আমেরিকায় এরিয়া-৫১ নামে একটা জায়গা আছে যেখানে মাঝে মাঝে সসার দেখা যায়। কিন্তু অন্য দেশের বিজ্ঞানীরা সেগুলোকে আমেরিকার তৈরি গোপন যুদ্ধযান বলেই মনে করে। এটা কি সেরকম কিছু? কিন্তু তাহলে এই ছোট ছেলেটা কি করছে?
তোমার জানতে ইচ্ছে করছে না আমি কে? ছেলেটা প্রশ্ন করে।
তা তো ইচ্ছে করছেই। অয়ন বলে। সেই সাথে তুমি কোথা এসেছ তাও জানতে ইচ্ছে করছে।
ঠিক আছে, বলছি। ছেলেটা উত্তর দেয়। আমি সেপ্রা।
কি?অয়ন মুখ কুচকে বলে। এটা আবার কোন দেশি নাম?
এটা আসলে কোন নাম না। সেপ্রা বলে। এটা আমার জাতির নাম। তোমার জাতির নাম যেমন মানুষ, আমার জাতির নাম তেমন সেপ্রা। আমার কোন নাম নেই, আছে কোড। তবে তুমি আমাকে সেপ্রা বলেই ডাকতে পার।
সেপ্রা জাতি? অয়ন এবার অবাক হয়ে বলে। এরকম কোন জাতি তো পৃথিবীতে থাকে বলে তো শুনি নি।
আসলে আমি তো পৃথিবীতে থাকি না। বলতে গেলে আমি তোমাদের গ্যালাক্সিতেই থাকি না। আমি তোমাদের পাশের ছায়াপথ সেরানা, যেটাকে তোমরা এন্ড্রোমিডা বলো, সেটাতে থাকি।
ছেলেটা নিশ্চয় আমাকে বোকা বানাতে চাইছে। একটু পরই হেসে বলবে, কেমন বুদ্ধু বানালাম?
হয়েছে। অয়ন বলে। আর বোকা বানাতে পারবে না। এবার সত্যি করে বলতো তুমি কে আর কোথা থেকেই বা আসলে?
তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি? ছেলেটা বলে। ঠিক আছে। তোমাকে প্রমাণ দেখাচ্ছি। ভয় পেয়ো না আবার।
ছেলেটার কথা শেষ হওয়ার আগেই অয়ন দেখতে পেল ওর সামনে আরেকটা অয়ন দাঁড়িয়ে আছে।

************
অয়ন চিৎকার করতে চাইছিল কিন্তু তার গলা দিয়ে কোন শব্দ বের হল না। অয়ন ভয় পাচ্ছে দেখে সেপ্রা ওর আগের রুপে ফিরে এল।
এজন্যই আগে বলে রেখেছিলাম ভয় পেয়ো না। সেপ্রা বলল।
তুমি নিশ্চয় জাদুকর। অয়ন ভয়ে ভয়ে বলল।
জাদুকর? সেপ্রা একটু অবজ্ঞার স্বরে বলল। জাদু বলে কিছু নেই। তোমরা মানুষেরা যা তোমাদের চিরায়ত নিয়মের বাইরে দেখ তাই জাদু বা অবাস্তব বা চোখের ভুল বলে ধরে নাও। তোমাদের আয়ত্বের বাইরেও যে অনেক কিছু থাকতে পারে তা মানতে চাও না।
অয়ন কিছুক্ষণ চুপ থাকল। ওটাকে বিশ্বাস করবে নাকি করবে না এই দ্বিধায় ভুগছে সে। সেপ্রাটা যে স্বাভাবিক কিছু না সেটা তো ও নিজের চোখেই দেখেছে। কিন্তু ওটাতো তার কোন ক্ষতিও করে নি।
আচ্ছা, বিশ্বাস করলাম তোমার কথা। অয়ন বলল। কিন্তু তুমি পৃথিবীতে কেন এসেছ?
আমি আমার বন্ধুদের সাথে ওয়ার্মহোল দিয়ে ভ্রমণ প্রাকটিস করছিলাম। সেপ্রা বলতে থাকে। ওয়ার্মহোল গুলো স্বল্প মাত্রার হওয়ার কথা ছিল যার ভিতর দিয়ে আমরা গ্রহের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারব। কিন্তু আমার ওয়ার্মহোলটা কিভাবে এত শক্তিশালী হয়ে গেল বুঝলাম না। একেবারে অন্য ছায়াপথে চলে এলাম। ও, ওয়ার্মহোল কি তা জানো তো?
হ্যাঁ, তা জানি। অয়ন মাথা ঝাকিয়ে বলে। স্বল্প সময়ে দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করার কাল্পনিক পথ।
যা বলেছিলাম। সেপ্রা মাথা নাড়িয়ে বলে। মানুষ এখনও আবিষ্কার করতে পারেনি বলে এটা এখনো তোমাদের কাছে কাল্পনিক।
আচ্ছা, বুঝলাম তোমরা অনেক উন্নত জাতি। অয়ন একটু রেগে যায়। সেপ্রাটা বার বার মানুষকে অপমান করছে। কিন্তু চেহারা পাল্টানোও কি তোমাদের আবিষ্কৃত প্রযুক্তি?
আসলে আমার কোন চেহারাই নেই। সেপ্রাটা হাসে। তোমাদের কাছে নাম, চেহারা, জাতি-এসব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের কাছে এসব আপেক্ষিক। আমাদের সবার চেহারা একই। আমাদের জাতি একটাই।
অয়ন কিছুটা বিষম খেল। তা আবার হয় নাকি?
আমি তোমাকে আমার আসল চেহারা দেখাতে পারতাম। সেপ্রা বলে। কিন্তু সেটা তোমার পছন্দ হবে না। তাই তোমাদের মানুষের মত চেহারা নিয়ে আছি।
অয়ন কি বলবে ভেবে পায় না। সত্যি যদি ও ভিনগ্রহের প্রাণি হয় তাহলেতো অনেক কিছু জানার আছে।
আচ্ছে, তুমি ফেরত যাবে কিভাবে? অয়ন জানতে চায়।
আমি আমার গ্রহে বিপদ সংকেত পাঠিয়ে দিয়েছি। একটু পরেই আমাকে নিতে আরেকটা সসার আসবে।
হঠাৎ অয়নের মনে হল ও যদি ভিনগ্রহের কেউ হয় তাহলে আমার ভাষায় কথা বলছে কিভাবে? সেপ্রাকে সেটা বলতেই ও বলল, আমার গলায় একটা যন্ত্র আছে যেটা আমার কথা তোমার ভাষায় পরিবর্তন করে দিচ্ছে। বলেই সেপ্রা ওর গলার সাথে লেগে থাকা ক্ষুদ্র, দেখাই যায় না এমন একটা কাল বস্তুর দিকে আঙ্গুল তুলল। তোমাকে একটা জিনিস দেখাই। বলেই সেপ্রা একটা ছোট্ট বোতামের মত যন্ত্র নিয়ে অয়নের দিকে এগিয়ে এল।
কি এটা? অয়ন জানতে চাইল।
এখুনি বুঝতে পারবে। বলতে বলতে সেপ্রা বোতামটা অয়নের কপালে লাগিয়ে দিল।
সাথে সাথে অয়নের মনে হল ও কোন অন্ধকার গর্তের ভিতর পড়ে যাচ্ছে। পড়তে পড়তে ওর মনে হল ওর শরীর অনেক হালকা হয়ে গেছে। ও ভাসছে! ডানে তাকাতেই ও অনেক গুলো গোল বস্তু দেখতে পেল। ওগুলো গ্রহ বুঝতে পেরে অয়ন বুঝতে পারলো ও এখন মহাকাশে আছে। সেপ্রা মনে হয় ওকে মহাকাশ ভ্রমণে পাঠিয়েছে। বেশ দূরে অয়ন কমলা রং এর একটি গ্রহ দেখতে পেল। গ্রহটির চারপাশে অনেক বড় বড় যন্ত্রপাতি ভেসে আছে। এটাই মনে হয় সেপ্রার গ্রহ। ভাবল অয়ন। আর তখনই ওর মনে হল ও আবার গর্তের ভিতর দিয়ে পড়তে শুরু করেছে। মুহূর্তেই ও সাদা রুমটিতে ফিরে এল। ও রুমটিতেই দাঁড়িয়ে আছে। ওর কপাল থেকে সেপ্রা বোতামটা খুলে নিচ্ছে।
কেমন দেখলে আমার গ্রহ? সেপ্রা জিজ্ঞেস করল।
আমি তাহলে এখানে দাঁড়িয়েই সব দেখছিলাম। ভাবে অয়ন। অনেকটা ভিডিও এর মত।
তেমন আর কি দেখলাম। অয়ন একটু আফসোসের স্বরে বলল অয়ন।
আসলে তোমাকে গ্রহের ভিতরটা দেখানো সম্ভব না। সেপ্রা একটু দুঃখ প্রকাশ করলো যেন। তুমি ঠিক বুঝে উঠতে পারবে না।
এমন সময় রুমের ভিতর কেমন অদ্ভুত সুর বেজে উঠল। সেপ্রা দৌড়ে রুমের এক কোণায় চলে কি জানি করতে লাগলো আর তার গলা থেকে অদ্ভুত কিছু শব্দ বের হতে থাকলো। কিছুক্ষণ পর সেপ্রা অয়নের কাছে চলে এল।
আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এখানে একটা ওয়ার্মহোল তৈরি হবে যেটার মধ্য দিয়ে আমি আমার গ্রহে চলে যেতে পারবো। তোমাকে এখনই এই সসার থেকে বের হয়ে দূরে চলে হবে। না হলে তুমিও ওয়ার্মহোলের ভিতর দিয়ে অন্য কোন গ্রহে চলে পারো যেটা অবশ্যই ভাল কিছু হবে না।
আমি এতক্ষণ সংসারের ভিতর ছিলাম! অয়ন অবাক হয়। কিন্ত সেপ্রা চলে যাবে শুনে হঠাৎ অয়নের কেন জনি খারাপ লাগলো। ওর মনে হচ্ছে ওর কোন বন্ধু ওকে ছেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সময় নেই। সেপ্রা ওকে সংসারের বাইরে নিয়ে এল। এরি মধ্যে সংসারের উপর বেগুনি রং এর ছোট একটা গর্ত তৈরি হয়েছে। আস্তে আস্তে ওটা বড় হচ্ছে।
শোন অয়ন। সেপ্রা দ্রুত বলতে থাকে। তুমি দৌড়াতে থাকো। যত দূরে পারো চলে যাও। আর আমাকে এখনই সংসারে যেতে হবে। বিদায়। বলেই সেপ্রা উল্টো ঘুড়ে দৌড় দিল। অয়নও দৌড়াতে লাগলো।
দৌড়। দৌড়। দৌড়াতে দৌড়াতে অয়ন মাথা ঘুড়িয়ে দেখতে পেল সংসারটা সেই বেগুনি গর্তের ভিতর ঢুকে যাচ্ছে। অয়ন আরও জোরে দৌড়াতে লাগলো। ওর চারপাশে প্রচন্ড জোরে বাতাস বইছে। ওকে বাতাস টেনে নিতে চাচ্ছে সেই গর্তের ভিতর। কিন্তু অয়ন হার মানবে না। সে দৌড়াচ্ছে। হঠাৎ পাথরের সাথে পা লেগে সে পড়ে গেল। তার মাথা শক্ত কোন কিছুর সাথে বাড়ি খেল। জ্ঞান হারাল অয়ন।

*****
অয়নের মনে হল প্রচন্ড বাতাসে তার শরীর ঝাঁকি খাচ্ছে। চোখ খুলল সে। অবাক হয়ে দেখল ও ওর টেবিলে মাথা রেখে শুয়ে আছে আর ওর ছোট বোন ওকে ঝাঁকাচ্ছে। লাফ দিয়ে ও চেয়ার থেকে উঠে দাড়াল। ভাইকে এভাবে লাফিয়ে উঠতে দেখে রুমি ভয় পেয়ে গেল। দৌড় দিয়ে মাকে ডাকতে চলে গেল সে। অয়নের মা এসে দেখলেন তার ছেলে পাগলের মত দেয়াল, চেয়ার, খাট ছুঁয়ে দেখছে।
অয়ন, কি হয়েছে তোর? এরকম করছিস কেন?
কিছু না। অয়ন একটু হতভম্ব। স্বপ্ন দেখছিলাম মনে হয়। বলেই অয়ন খাটের উপর বসে পড়ল।
কতবার বলি যে সন্ধ্যা বেলায় ঘুমাতে নেই। অয়নের মা বিরক্তিকর স্বরে বললেন।
মা দেখ। রুমি বলে উঠল। ভাইয়ার মাথায় রক্ত।
অয়ন তাড়াতাড়ি ওর মাথার ডানপাশে হাত দিল। কেমন ভেজা লাগছে। হাতটা চোখের সামনে আনতেই অয়ন দেখল তার হাতে রক্ত লেগে আছে।
অবাক দৃষ্টিতে অয়ন ওর মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: সুন্দর গল্প । +++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.