![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ পরিচয় করিয়ে দেব এক বিস্মৃত লেখকের সাথে। এক পাল্প ফিকশন লেখকের সাথে যার টানটান উত্তেজনাকর লেখায় তিন-চার দশক ধরে শিহরিত হয়েছিল তৎকালীন কিশোর-কিশোরীরা; সমরেশ মজুমদার, সুচিত্রা ভট্টচার্যের মতো পাঠকনন্দিত লেখকরা। জমজমাট কাহিনির কারণে একসময় তিনি উঠেছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে।
পাল্প ফিকশন কী? এক কথায়, মিস্ট্রি-থ্রিলার-এডভেঞ্চার-হরর ভিত্তিক চটি বই যার কোন সাহিত্য কদর নেই, কিন্তু আছে রক্তে আলোড়ন তোলা আকর্ষণ। এবার একটা প্রশ্ন আপনাদের মনে জাগতেই পারে-এত জনপ্রিয়ই হবেন যদি, তবে বিস্মৃত হলেন কী করে? আসলে পাল্প ফিকশনের ধরণটাই এমন। জীবদ্দশায় লেখককে খ্যাতির শিখরে উঠিয়ে তারপর ছুড়ে ফেলে আস্তাকুড়ে। পাল্প ফিকশনকে কখনোই সাহিত্য হিসেবে গণ্য করেনি সাহিত্য বোদ্ধারা। অবশ্য এও ঠিক যে পাল্প ফিকশনগুলো লেখা হতো শুধুই মনোরঞ্জনের জন্য, পয়সার আশায়। সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছেন অনেক জনপ্রিয় পাল্প ফিকশন লেখক। এমনই একজন হলেন শ্রীস্বপন কুমার। বাংলা সাহিত্যে আর কজন পাল্প ফিকশন লিখেছেন জানা নেই, তবে এতটুকু নিশ্চিত করে বলা যায় যে স্বপন কুমারের মতো জনপ্রিয় হতে পারেনি কেউই।
স্বপন কুমার ডিটেকটিভ ধর্মী কাহিনি লিখতেন। তার সৃষ্ট রহস্যানুসন্ধী দীপক চ্যাটার্জী-রতনলাল সিরিজের গল্পগুলো চুম্বকের মতো আকর্ষণ করত পাঠকদের। একবার ধরলে শেষ করা ছাড়া উপায় ছিল না। স্বপন কুমার নিজেও বোধ হয় টের পেয়েছিলেন তার গল্পগুলোর এই জাদুকরী ক্ষমতা। একারণেই সম্ভবত বইগুলোর সাইজ বেশি বড় ছিল না, বড় জোর চল্লিশ-ষাট পৃষ্ঠা যাতে অল্পবয়সী পাঠকেরা বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে রেখে নিমিষেই পড়ে ফেলতে পারে। আর সেসব কী যা-তা গল্প? বুলেটের গতিতে এগুতো কাহিনি। এক পাতায় কেউ খুন হলো তো, পরের পাতায় আরেকজন অপহৃত হলো। দুম করে ভিলেনের হাতে নায়ক বন্দি হয়ে গেল, আবার ছাড়া পেতেও দেরি হলো না। এমনই টানা কাহিনি, দম ফেলবার জো থাকত না। আর এখানেই ছিল তার দুর্বলতা। গল্পের ভাষার প্রতি তার কোন নজর ছিল না। কোন রকমে কাহিনি বলে দিয়েই খালাস। আসলে অর্থসংকটে পড়ে কলম ধরেছিলেন তিনি। তাই তাড়ায় থাকতেন কত দ্রুত বই শেষ করা যায়, নতুন বইয়ে হাত দিতে পারেন। প্রায় বিশটার মতো সিরিজ লিখে গেছেন তিনি, একেকটা সিরিজে বইয়ের সংখ্যা আবার শয়ের কাছাকাছি।
স্বপন কুমারের লেখাগুলো হারিয়ে গেছে বললেই চলে। নতুন করে তার লেখাগুলো প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের লালমাটি প্রকাশন। প্রথম খন্ড বেরিয়েও গেছে। বলে রাখা ভালো, খুব বেশি আশা নিয়ে স্বপন কুমারের বই পড়তে না যাওয়াই ভালো। তার রহস্য গল্পগুলো কেমন অদ্ভুত, ঠিক পরিপূর্ণ গোয়েন্দা গল্প বলা যাবে না। কেউ যদি গল্পেও বিশ্বাসযোগ্যতা খুঁজে থাকেন, তাহলে স্বপন কুমারের লেখাগুলো আপনার জন্য নয়। অবসরে নিছক আনন্দের খোরাক হতে পারে স্বপন কুমারের বই।
শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় আনন্দবাজার পত্রিকায় স্বপন কুমারকে নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখেছিলেন। ইচ্ছে করলে ঘুরে আসতে পারেন। - Click This Link
২৭ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০৭
সাঈদ শিহাব বলেছেন: আসলে উনি কপিরাইট নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। তাছাড়া চটি বই হওয়াতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষ তার কাহিনি মেরে দিয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:১১
অশ্রুকারিগর বলেছেন: নাম আজকেই শুনলাম। পিডিএফ নিশ্চয়ই নেই নাহলে একবার পড়ে দেখা যেত।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে দেখলাম কুমিল্লায় নাকি উনার বই আছে, আবার স্বপন কুমার নামে না। ঘটনাটা ঠিক বুঝলাম না।