![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের ছোটবেলায় সপ্তাহের একেক দিনে গ্রাম কিংবা গঞ্জের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে ‘হাট’ বসতো। ‘হাট’গুলো ছিল গ্রাম্যবাজারের বৃহৎ সংস্করণ। কাঁচাবাজার, কাপড়-চোপড়, খাবার-দাবার, ওষুধ এবং ঘর-গেরস্থালির হেন জিনিস নেই যা এসব হাটে পাওয়া যেতনা।
এমনই এক হাটে বাবার হাত ধরে গেছে ছয়-সাত বছর বয়সী ছেলে। বাবার পায়ে পায়ে হাঁটছে আর হাপুস নয়নে চারপাশ দেখছে ছেলেটি।
- আব্বা, মুই নিম্ কী? ( বাবা, আমি কী নেব?)
আঙ্গুলে টান পড়তেই বাবা থেমে ছেলের দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বলেন, ব্যাটা, কী নিবু কহেক্ ? ( কী নিবি বল্?)
- আব্বা, মুই নিম্ কী?
- কহেক্ না কী নিবু? (বল্ না কী নিবি?)
ছেলের মুখে ঐ এক কথা- আব্বা, মুই নিম্ কী?
বাবার বিরক্তি বাড়তে থাকে। গলা কিছুটা চড়িয়ে বলেন, তুই কী নিবা চাঁহাছি, কহেক্ না। ( তুই কী নিতে চাচ্ছিস্, বল্ না?)
ছেলের নাকি সুরের ঘ্যানঘ্যান বাড়তেই থাকে।
দিশেহারা বাবা হঠাৎ ছেলের দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনের দিকে তাকাতেই রহস্যের সমাধান করে ফেললেন।
সামনের একটি হোটেলে ডালায় সাজানো নিমকির দিকে লোভী লোভী চোখে তাকিয়ে আছে ছেলেটি।
নিমকি দিয়ে পিতা তার পুত্রের নিম্ কী সমস্যার সমাধান করলেন।
আঞ্চলিক ভাষার এই বিভ্রাট মাঝে মাঝে এমন মধুর সমস্যার সৃষ্টি করে। মধুর এবং হাস্যকর। এবারের শিকার স্বয়ং আমি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের কথা। মেসে থাকি। বুয়ার রান্না করা অখাদ্য-কুখাদ্য খেয়ে চোয়ালের হাড় বেরিয়ে গেছে। তারওপর মাঝেমাঝেই বুয়া লাপাত্তা হয়ে যান।
এমনই এক রাত। বুয়া আসেননি। পাশের রুমের ছোটভাই এসে বলে, সয়জ বাই, খাবেননা? ( হাজারর চেষ্টাতেও সে আমার নাম ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারেনা। আমিও হাল ছেড়ে দিয়েছি)
- হুম। খালা তো আসেনি। বাইরে খেতে হবে।
- হ। চলেন। ভূতে যাই।
- ভূতে? এত রাতে। (ধানমণ্ডি র ‘ভূত’ রেস্টোর্যান্ট)। ১১টা বাজে।
- ভূত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে।
- ধুর মিঞা। কইছে তোমারে।
- হ বাই। ভূতে না গেলে খাওয়া হবেনা।
- ক্যান? বাড়ির পাশের রেস্টোর্যান্টে খাই।
- না বাই। খাইতে গেলে টাকা লাগতোনা? আমার কাছে টাকা নাই।
- ভূতে কি তোমারে ফ্রি খাওয়াবে? আমার কাছে টাকা আছে চলো। ভূতে যাওয়া লাগবেনা।
- না বাই। কাল গালফেন্ডের লগে দ্যাহা করুম। টাকা লাগবো।
মাথা বনবন করছে। ভূত, টাকা, গার্লফ্রেন্ড মিলাতে পারছিনা কিছুতেই। হতাশ হয়ে তার দিকে কাগজ কলম এগিয়ে দিলাম।
সাদা কাগজে কলমের কালো কালিতে যে লেখা বের হলো তা দেখে আমার মাথার ভূত ভয়েই পালিয়ে গেলো। সে লিখেছে- ‘বুথ’।
আমার হাসিমুখ দেখে সে বলে ওঠে, বাই তাড়াতাড়ি চলেন। দোয়া কইরেন। ভূতে আবার যেন কার্ড না গিইল্লা ফালায়।
সে রাতে তাকে ‘ব’ আর ‘ভ’ এর উচ্চারণ শেখাতে গিয়ে আমি একটা নতুন জিনিস শিখি। তারমতে বর্ণমালায় ‘ব’ বলে কিছু নেই। যা আছে তা হলো বড়-‘ভ’ আর ছোট-‘ভ’। সে আরেক ভয়াবহ গল্প। কিন্তু গল্পের চেয়ে ভীতিকর মনে হলো গতকাল অনেকদিন বাদে এফএম রেডিও শুনতে গিয়ে আরজেদের উচ্চারণ। কথাবন্ধুদের মাথায়ও সেই বড়-‘ভ’ আর ছোট-‘ভ’ এর ভূত। বাকি নিম্ কী আর নিমকির কথা না-ই বললাম।
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:১৮
তার আর পর নেই… বলেছেন: এইগুলা কি উত্তরবঙ্গের দিকের ভাষা?
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৫২
বিজন রয় বলেছেন: আঞ্চলিক ভাষার দারুন ব্যবহার।
++++
৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৯
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: বড়- 'ভ', ছোট- 'ভ'।
মজা পেলাম।
৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪৫
শাহাদাত হোসেন বলেছেন: ভাষা বিভ্রাট মজা পেলাম।
৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৩
সয়ূজ বলেছেন: ধানমন্ডি ভুত রেস্ট্যোরেন্ট
৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৪
সয়ূজ বলেছেন: দিনাজপুর
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:৫৯
কলাবাগান১ বলেছেন: বুথে খাওয়া মানে কি?