![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কর্মসূত্রে নানুরা তখন ময়মনসিংহে। শীত এলেই আমরা ময়মনসিংহের পথে। সেই ৪/৫ বছর বয়সেও আমি কল্পনার রাজ্যে বাস করি। চুন খসা দেয়ালের বিভিন্ন অবয়বের সাথে দিন রাত কথা বলি। বাসার উঠানের গাছগুলো আমার খেলার সাথী। ঘাসফড়িং ধরে আমি পোষ মানানোর চেষ্টা করি।
সেই আমার জন্য দিনাজপুর থেকে ময়মনসিংহের প্রায় ২০ ঘণ্টা ট্রেন জার্নি রীতিমত স্বপ্নরাজ্যে ভ্রমণ। মধুপুর-ভাওয়ালের পাশ দিয়ে ট্রেন যাবার সময় শীতকালের পাতাশূন্য গাছগুলো দেখে আমি আঁতকে উঠি।
মা গল্প শোনাতো আফ্রিকার মানুষখেকো গাছের। কল্পনায় মধুপুর-ভাওয়ালের পাতাশূন্য গাছগুলোই মনে হোত ভয়ংকর মানুষখেকো।
নানুর বিশাল সরকারি বাংলোর সামনে বড়সড় পানির ফোয়ারা। সেটাকে ঘিরে পাথরের গোলাকার পথ। আমাদের আসার খবরে বাসার ভেতরে ঘাসের লনের হলুদ দোলনাটাতে রং করা হোত বেশ করে। সারাদিন সেই দোলনায় দুলছি আর খালামণিদের প্রশ্নবাণে জেরবার করছি।
মামা কারাতে ক্লাস থেকে ফিরলে দুপুরে চুপিচুপি নানুর গাড়িতে করে আমার আর মামার আইসক্রিম খেতে শহরের ভেতরে চলে যাওয়া।
শান বাঁধানো পুকুরের পাড়ে বসে পাশের বাসার পাপড়ি বলেছিল ও বড় হলে আমাকে বিয়ে করবেই করবে। তারপর আমার গালদুটো ইচ্ছেমত কামড়ে দেবে। বড়রা নাকি বিয়ের পর গাল কামড়ে দেয়। ভয়ংকর এ মেয়েটির কাছ থেকে আমি পালিয়ে বাঁচি আর খালামণিরা হেসে খুন হয়।
আজ প্রায় ২২ বছর পর পাপড়ি হঠাৎ স্কাইপের পর্দায় হাজির হাজারো স্মৃতির ডালি নিয়ে। ময়মনসিংহ ছেড়ে মন্ট্রিলের নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। স্বামী মহাশয় নাকি বন্যপ্রাণী বিশারদ।
হাসিমুখে শুধাই পোষা প্রাণীর কামড়ে বন্যপ্রাণী বিশারদের গালদুটো অক্ষত আছে তো?
উত্তরে আমার কম্পিউটার মনিটরের পর্দায় ভেংচি কাটা স্মাইলির জোয়ার।
বর্ষার এ রাতে আমি ডুবে যাই স্মৃতির তোড়ে।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:১৮
হাইজেনবার্গ ০৬ বলেছেন: ঘাসফড়িং ধরে আমি পোষ মানানোর চেষ্টা করি কথাটা ডাবল ক্লিক করছে। পোস্টে প্লাস।