নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উল্টো পথিক

সয়ূজ

আমি কী তাই যা আমি হতে চেয়েছি? আমি কী তাই যা আমি হতে পেরেছি?

সয়ূজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুধু মানুষগুলোই...

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩২

'যেখানে মৃত্যু নেই, সেখানে মৃত্যুর ছায়া আছে।'
সুলেমানজীর চোখে আমি কখনোই ভাবলেশের কোন ছায়া দেখিনি। দুটো চোখ-ই যেন পাথরের। তাই হঠাৎ এ কথা কেন- তার উত্তর চোখের দিকে তাকিয়ে পাবার উপায় নেই।
- কারণ খুঁজছো তো?
ঠোঁটে হাসির সূক্ষরেখা। তাই দেখে শুধু মাথা ঝাঁকালাম।
- আশেপাশে কোন কবরস্থান আছে?
- খুব কাছেই। যাবেন?
- অবশ্যই। তোমাকে উত্তর দেখাতে হবেনা?... তবে তোমাদের ঐ রিকশায় চাপতে হবে, হাঁটার অবস্থায় আমার পা দুটো নেই।
রিকশাওয়ালা বিশ দর হাঁকলে, আমায় পাঁচ কমিয়ে পনেরো বলতে হবে। নিয়ম এটাই। আজিমপুর গোরস্থান শুনে প্রথম রিকশাওয়ালাই 'পনরোটা টাকা দিয়েন' বলেই প্যাডেলে পা দিয়ে তৈরি।
সুলেমানজীর চেহারায় বিদেশি বিদেশি কোন চিহ্ন নেই। বিশেষত্বহীন একটা মুখায়ব। বয়স কম করে হলেও সত্তরের কোঠায়। ইংরেজি সরগর হলেও কেমন একটা মঙ্গোলিয় টান।
টানা ছয়দিন তার সাথে ঢাকা শহরে হাঁটছি, অথচ তার সম্পর্কে কিছুই জানা হয়নি। দেশের কথা বলতেই তার একঘেয়ে উত্তর- 'কবির কোন দেশ থাকতে নেই। কবিরা হবেন সর্বদেশীয়। আর আমার মত নির্বাসিত কবির আবার দেশ-বিদেশ কী?'
আজিমপুর গোরস্থানে আমার অবাধ প্রবেশ। পাবলিক লাইব্রেরিতে কোন একটা বইয়ে পড়েছিলাম, 'মানুষ পাথরের গা কেটে যেদিন এপিটাফ লিখলো, সেদিন থেকে সে পাথরকেও মিথ্যে বলা শেখালো।'
আর সেই থেকে আমারও চেপে বসে এপিটাফ খোঁজার নেশা। ভার্সিটির ক্লাস শেষে প্রায়ই আমার গন্তব্য এই গোরস্থান।
- গেটের লোকদুটোর হাসিমুখ দেখেই বুঝেছি এখানে তোমার যাতায়াত আছে।
- হুমম।
কবরস্থানের বাতাসে সব কথাই কেমন যেন ফিসফিস আওয়াজ তোলে। আমার 'হুমম' টাকে শোনালো পাখির শিষের মত।
- এখানে মৃত্যুর কোন ছায়া দেখতে পাচ্ছো? মৃত্যুভয় তোমাকে আঁকড়ে ধরছে? না, মৃত্যুটাকেই মনে হচ্ছে আকাঙ্খিত?
মন্ত্রমুগ্ধের মত ফিসফিসানি শুনছি। সুলেমান দারায়েভ আমাকে মৃতদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর ছায়া খুঁজতে বলছেন। অথচ, চারপাশ হাতড়েও তার কোন আঁকিবুকি নেই।
***সেদিন ফিরেছিলাম সন্ধ্যের অনেক পর। আজিমপুর গোরস্থানে অসংখ্য কবরের প্লট/জায়গা নানা মানুষের নামে কেনা। সেগুলোতে আবার 'এই জমির মালিক...' টাইপ সাইনবোর্ড ঝোলানো। এপিটাফ ভেবে ভ্রম হতে পারে তাই সুলেমানজীকে বুঝিয়ে বলতেই বললেন,
"চারপাশে পাখি মরছে, কুকুর মরছে, পাখি মরছে, হনুমান মরছে।
আফসোস, শুধু মানুষগুলোই লটকে থাকলো বাঁচা আর মরার জালে।"***

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:০৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: সুলেমান দারায়েভ মৃত্যুর ছায়া দেখাতে কবর স্থানে না গিয়ে সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ তে কিংবা সেটা সম্ভব না হলে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে যেতে পারতেন।মৃত্যুর ছায়া পরিষ্কার দেখতে পেতেন।

২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:১৮

সয়ূজ বলেছেন: হয়তো...

২| ২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: পাখি, কুকুর, হনুমান এর সাথে মানুষও মরছে।

৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:১৮

সয়ূজ বলেছেন: খামোকা খামোকাই মরছে

৩| ৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১:৩৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সব মৃত্যু কষ্টের ।আরটিতে একটা রিপোর্ট করতে রিপোর্টারও কাঁদে

৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১:৫১

সয়ূজ বলেছেন:

৪| ৩০ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:৪৫

আজাদ প্রোডাক্টস বলেছেন: কি কান্ড!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.