নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এবং আমরা

বই পড়তে ভালোবাসি।

ছেলেমানুষ_

বই পড়তে ও স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি । পেশায় ছাত্র শিক্ষক দুটোই। মাস্টার্স করছি এবং একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে আছি ৮-৯ মাস হল। অনেক অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে হয়। কত-শত মানুষ, কত হাসি, কত গান, কত দুঃখ! কিন্তু হায়, লেখক হিসেবে আমার ক্ষমতা খুবই সীমিত! সাহিত্যের কিছু বুঝি না। যা ভালো লাগে তাই পড়ি। অনুগ্রহ করে ভুল গুলো ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

ছেলেমানুষ_ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি দীপু (গল্প)

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৫

যশোর জিলা স্কুল। ক্লাস ফোর এর ক্লাসরুম। ছুটি হয়ে গেছে। সবাই চলে গেছে শুধু একটা ছেলে এখনও আছে। বয়স নয়-দশ বছর হবে।



ছেলেটি বারবার তার ব্যাগের চেইন দেখছে। মাঝে মাঝে চেইনের লাইন বরাবর হাত বুলিয়ে দেখছে। যেন বুঝতে চাইছে, আসলেই চেইনটা আটকানো কি না, কোন ফাঁক থেকে গেল কি না। পাশে একটা খোলা নোটবুক। খোলা পৃষ্ঠাটায় একটা লিস্ট করা। গুটি গুটি অক্ষরে তাতে লেখা,

১। কলম, পেন্সিল

২। জ্যামিতি বক্স

৩। বই

৪। খাতা

৫। পানির পট

৬। ষ্টীলের স্কেল

৭। ব্যাগের চেইন



ছেলেটির নাম দীপু। সব কিছুই ঠিক আছে শুধু একটা ছোট্ট সমস্যা। ছেলেটা একই সাথে একটার বেশি বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে না। আধুনিক মোবাইল গুলোতে যাকে আমরা মাল্টিটাস্কিং বলি। ব্যাপারটা অনেকটা এমন একটা কম্পিউটারের মত যেটায় যখন গান শোনা হবে তখন ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাবে না। এ কারনে দীপু ক্রমাগত ছোট ছোট ব্যাপারে ভুল করে। আর সেখান থেকে তৈরি হয়েছে নিজের কাজের ব্যাপারে তীব্র সন্দেহ। আসলেই চেইনটা লাগানো হয়েছে তো, জ্যামিতি বক্সটা কি নিয়েছি, পেন্সিলটা? সাইকোলজিসটরা এ সমস্যাটা একটা খটোমটো নাম দিয়ে বোঝান।



এ মুহূর্তে দীপু গত তিন মিনিট ধরে ব্যাগের চেইন পরীক্ষা করছে। আজ একটু বেশি সময় লাগছে। কিছু কারণে মনটা খুব বিক্ষিপ্ত। কিছুতেই ব্যাগের চেইনে মনোযোগ দিতে পারছে না। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে। এটাই শেষ স্টেপ ওর লিস্টের।



করিডর দিয়ে ক্লাস ফোরের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলেটাকে দেখে শফিক দাঁড়াল। সে মিনিট পাঁচেক আগেও এদিক দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলেটাকে ক্লাসরুমে দেখেছে। শফিক যশোর জিলা স্কুলে গনিতের নতুন শিক্ষক। ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে গনিতে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। গত বি সি এস টা দিয়েছিল। লিখিত পরীক্ষায় যেয়ে আটকে গেছে। সামনেরটাও দেওয়ার ইচ্ছে।



'কোন সমস্যা?' শফিক কোমল গলায় জিজ্ঞেস করে।

'ন-না স্যার', দীপু লজ্জায় কুঁকড়ে যায়। স্যার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে যে সে তিন মিনিট ধরে ব্যাগের চেইন লাগাচ্ছে। কী লজ্জা, কী লজ্জা!

'একা একা ক্লাসে আছ তাই জিজ্ঞেস করলাম' শফিক একটু সহজ করার চেষ্টা করে।

'এই তো স্যার যাচ্ছি', বলে তাড়াহুড়া করে, কোনরকমে স্যারকে সালাম জানিয়ে দীপু রীতিমতো পালিয়ে আসে ওখান থেকে। চোখের কোণে বাষ্প জমে। ওই ছোট্ট বুকে পৃথিবীর উপর অনেক অভিমান জমে আছে। কেন এমন হয় তার? আর কারো তো এমন হয় না।



(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.