নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সবসময় সত্য,আমি সত্যেরই সারথী।লেখালেখির অভ্যাস পুরানো,ফেলতে পারি না;সময় অসময়ে জেগে ওঠে।ব্লগ কিংবা ফেবুতে আমি একজনই..\"শাহেদ শাহরিয়ার\'\',জয়\' নামটা বন্ধুদের দেয়া।ওটা\'ও তাই রেখেই দিয়েছি।লিখছি,যতকাল পারা যায় লিখব;ব্যস এতটুকুই!

শাহেদ শাহরিয়ার জয়

আমি শাহেদ শাহরিয়ার,একটু আবেগি আর খানিকটা যৌক্তিক।

শাহেদ শাহরিয়ার জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

কান্নার রঙ

০১ লা জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

জমিদার সাহেবের বড় মেয়েটা কাঁদছে,কান্নার কারণটা আমার জানতে খানিক সময় লেগেছে বই কি!ওরা সাধারণত কাঁদেনা,কাঁদার কারণ হিসাবে হয়তো তেমন কিছু পায়না।ওদের না আছে ক্ষুধার জ্বালা,না আছে ভবিষ্যত অনিশ্চয়তা।তাই ওদের কান্নাটা অবশ্য সিরিয়াস কোন বিষয় নিয়া হবে,এটাই স্বাভাবিক।রহস্যবেদ করতে আমাকে অবশ্য বেগ পেতে হয়নি,জমিদার সাহেবই রহস্যের জট ভাঙ্গালেন।ওনার বড় মেয়ে এবার এস এস সি তে ৪.১১ পেয়েছে,জিপিএ ৫ না পাওয়ায় নাকি কাঁদছে!
ভাবলাম,ব্যপারটাতো সত্যিই সিরিয়াস!পরীক্ষার আগের রাত্রে প্রশ্ন পাবার পরও যদি রেজাল্ট এমন হয় মনটা আসলেই মানার কথা না!সত্যিই মেয়টার ভাগ্যটা খারাপ!জেএসসি পরীক্ষায়ও বেচারির একই অবস্থা!ভাগ্যিস এক্সামিনার ব্যটা ফেইল করায় দেয়নি।সময়ের ব্যবধানে মানুষের আবেগ- অনুভূতি পরিবর্তনের কথা বইপত্রে পাওয়া যায়,সেটা এখন মানুষ প্রত্যক্ষ করছে।কারো কারো হয়তো মনে আছে,সময়টা ২০০৩ইং; বাংলাদেশের সর্বকালের জনপ্রিয় টিভি,বিটিভিতে রাতে একটা বিনোদন অনুষ্টান প্রচারিত হতো,নাম ছিল 'ইচ্ছাপূরণ'। সেবার এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক শাখা হতে একজন জিপিএ ৫ পেয়েছিল আর দুর্ভাগ্যক্রমে সে আবার অন্তজ শ্রেনির ছেলে ছিল।বাবা শ্রমিক,দিন আনে দিন খায় অবস্থা।তাকে ইচ্ছাপূরণ অনুষ্টানে অতিথি করা হয়েছিল,যেখানে তার কয়েকটা ইচ্ছাপূরণ করা হয়েছিল,সে যখন রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করার সুযোগ পেল কিংবা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ পেল তখন খুশিতে তার চোখে দু' এক ফোটা জল আসা স্বাভাবিক।কিন্তু টিভি সেটের সামনে বসা একটা আধা- বৃদ্ধা মহিলার হাউমাউ কান্নার শব্দ এখনো আমার কানে বাজে,ওনার ছেলে ক্লাসের সেকেন্ড বয়,মহিলার স্বামী একজন প্রান্তিক কৃষক,ওনার হয়তো আশা ছিল ইচ্ছাপূরণ অনুষ্টানে ওনার ছেলেই অতিথি হিসাবে যাবে।তা আর হয়নি,ছেলেটি সেবার এক বিষয়ে খারাপ করে।কর্ণফুলির পাশ থেকে রাত দশটায় তাকে ধরে আনা হয়েছিল,ততক্ষণে কর্ণফুলিতে জোয়ার এসে গেছে ওর চোখের নোনতা জলে!
সেই দিন আর এ দিনের মধ্যে কত্ত ফারাক!তখন হাতে গুনা কয়েকজন ভাল নম্বর পেত,পাশ করার খুশির চাইতে ফেইল করা পার্টির কান্নার আওয়াজটা বাতাসে ভাসত বেশ ক' দিন।ফেইল করার হতাশায় ডুবে যাওয়া অনেক আত্নাই মুক্তি চাইত,পাশ-ফেইলের জগৎ হতে।আর এখন চেয়ার- টেবিলগুলাও নাকি কান্না করে,কেন তারা জিপিএ ৫ বঞ্চিত!এত্তকিছু চেন্জ হল,কান্নার রঙতো চেন্জ হতে দেখলাম না,২০০৩ সালের সেই জিপিএ৫ পাওয়া ছেলেটির কান্না,কিংবা পাশ না করা ছেলেটির আর তার মায়ের কান্না নতোবা ২০১৫ তে এসে দেখা জড় পদার্থের কান্না!মানুষ আসলেই দ্বিধান্বিত এই কান্না হাসির দোটানায়।আমি নিজেও,কারণ যে মহিলা ২০০৩ সালে ছেলের অকৃতকার্যে কান্না করেছেন কিংবা এখনো কাঁদছেন ছেলেটা যেন ৩৪ বিসিএস ভাইভায় পাশ করে একটা ক্যাডার পায় বা ঐ মেয়েটার কথাই বলি যে জিপিএ৫ না পাবার দুঃখে কাঁদছে তাদের কান্নার প্রত্যক্ষকারী আমিই,যেহেতু আমি সে আধা- বৃদ্ধা মহিলার অকালকুষ্মান্ড সন্তান আর জমিদার দুলালীর একমাত্র গৃহপালিত শিক্ষক!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.