নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সবসময় সত্য,আমি সত্যেরই সারথী।লেখালেখির অভ্যাস পুরানো,ফেলতে পারি না;সময় অসময়ে জেগে ওঠে।ব্লগ কিংবা ফেবুতে আমি একজনই..\"শাহেদ শাহরিয়ার\'\',জয়\' নামটা বন্ধুদের দেয়া।ওটা\'ও তাই রেখেই দিয়েছি।লিখছি,যতকাল পারা যায় লিখব;ব্যস এতটুকুই!

শাহেদ শাহরিয়ার জয়

আমি শাহেদ শাহরিয়ার,একটু আবেগি আর খানিকটা যৌক্তিক।

শাহেদ শাহরিয়ার জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিমুর প্রেম! (হুমায়ূন স্যারের স্মরণে)

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫৪



রাতে ঘুমানোর আগেই ক্লীন শেভড হয় হিমু,এমনিতে ওর খোঁচা- খোঁচা দাঁড়ি পছন্দ কিন্তু রূপার ওটাতে আপত্তি। কিছু কথা ইচ্ছে না হলেও রাখতে হয়,নাহয় সম্পর্ক বাঁচেনা।তাছাড়া রূপার বেশি কোন আবদারও নেই,হয়তো জানে হিমু চেষ্টা করলেও পূরণ করতে পারবে না।হিমুও কিন্তু খুব একটা কিছু চায় না,রূপাই যা দেবার দেয়: হলুদ পাঞ্জাবী,দু'লেইসের স্যান্ডেল আর পারফিউমের একটা বোতল!কোথাও বেরোলে,রূপার পছন্দেই হিমুর দেহ সাজে,এতে হিমুর আপত্তি নেই,দেখার মানুষতো ও একজনই; ভাল লাগার ব্যাপারটা তাই ওর- ই।রূপা অবশ্য জিজ্ঞেস করে,ও নিজে কোনটা পরবে,হিমুর কোন রঙ এর প্রতি আসক্তি কিংবা ভালোবাসা কোনটাই নেই,হলুদ রূপার পছন্দ আর রূপাকে হিমুর,তাই হলুদই ওর পছন্দের রং!
পরিধানের ব্যাপারে তাই পুরোটাই স্বাধীন রূপা,ও প্রায়শই নীলরঙা শাড়ি পরে।কাল ও কি সে' ওই রঙের পরবে!?...হিমু ভাবনায় ওর ছবি আঁকতে আঁকতে চোখ বুজে।
...... সকালটা বেশ সুন্দর,ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হিমুর বিরক্তি হয়;নয়টায় বের হবার কথা,এখন নয়টা বেজে দশ!আজও রূপার কাছে তাকে হারতে হবে,হারতে ওর একদমই ভাল লাগে না,তবুও হারতে হয়।তড়িগড়ি করে ওঠে পরে হিমু,রাস্তার মোড়ে টং দোকানদার ওকে দুর থেকেই দেখেই চা বানিয়ে রাখে,হিমু ঠান্ডা না হলে খেতে পারে না।এটা নিয়ে বিষয় ক্ষ্যাপায় রূপা-" সরবত খাও,না চা!?"
-" দু' টোই,একটার দামে দুইটা, ভাল না!!?"
চায়ে চুমুক দিয়ে আনমনে হাসে হিমু।ওর চা শেষ হতে হতে লেগুনার শব্দে ও ওঠে দাঁড়ায়।এ প্রথম ও রূপার সাথে দেখা করতে লেগুনায় চেপেছে,লেগুনায় বসলে পাঞ্জাবী কুঁচকে যায়,আজ সেটার ভয় নেই।লেগুনা অবশ্য রিকশার তুলনায় অনেক আগেই নামিয়ে দিয়েছে।রূপার একটা প্রিয় জায়গা আছে,ওটা হিমুরও এখন প্রিয়।লেগুনা থেকে থেমে,কিছুটা হাটতে হয়,একা হাটতে ভাল লাগে না,রূপা সাথে থাকলে ভাল হত।অন্য সময় রূপা লেগুনা যেখানে দাঁড়ায় তার এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকত: হিমু আসলে ভ্রু ওপরে তুলে,বড় একটা নিঃশ্বাস ছাড়ত, কিন্তু রূপা আজ দাঁড়িয়ে নেই,তার মানে 'ও' সে জায়গাটায়ই আছে।
জায়গাটা নদীর মোহনা আর সমুদ্রের শুরু,সারি সারি বটগাছ লাগানো হয়েছে বছর তিনেক আগে,ওগুলা এখন হাজারো কপোত কপোতিদের আড্ডা খানা।একদম শেষ গাছটার আগেরটার নিচে রূপা জলের ডেউ দেখছে। ' ও ' আজ নীল রঙা শাড়িই পরে এসেছে,হিমু সামনে এসে দাঁড়ায়,রূপা ওর দিকে এক পলক তাকিয়েই আবার জলের দিকে তাকায়!
হিমু কি বলবে ভেবে পায় না,'সরি' কথাটা সে কখনোই বলেনি,আজও না।
-" কখন এলে?"
-" কিছুক্ষণ"
-" আজ হঠাৎ,পাঞ্জাবী পাল্টে শার্ট পরলে!?আমার বিদায়ে তুমি খুশি!??"
-"কালো শার্ট পরে মানুষ খুশি হয়?"
রূপা আর কিছু বলে না..ওর ডানহাতে একটা মেরুন বেল্টের ঘড়ি আছে,ওটার দিকেই তাকিয়ে থাকে।তিন বছরেও ওটার রং পাল্টায় নি,ওটাই হিমুর দেয়া একমাত্র জিনিস! হিমুও পাল্টায় নি,তিন বছরেও ভাল একটা চাকুরি জুটেনি,টিউশনগুলাতেও প্রতিমাসে টাকা আটকে থাকে।ভালবাসা টাকা খুঁজে না,কিন্তু জীবন চালাতে গেলে টাকা ছাড়া চলে না।রূপার বাবা সেটাই রূপাকে বারংবার বুঝিয়েছে।
তিনবছর দীর্ঘ সময়,রিদোয়ান কে রূপা নিজের স্বপ্নের হিমু বানাতেই রিদোয়ান বাদ দিয়ে 'হিমু' নাম দিয়েছিল,' ও' কখনোই পুরোপুরি রূপার হিমু হয়ে ওঠতে পারেনি। এখন যাবার সময় : হিমু ওর শেষ হলুদ পাঞ্জাবীটা প্যাকেট করে নিয়ে এসেছে,সে কথা রাখতে পারে নি।হিমু হয়ে রূপার স্বপ্নে এসে ধরা দিয়েছে,কিন্তু সে নায়ক হতে পারেনি,হয়েছে অন্যকেউ।রূপার অনামিকায় ডায়মন্ডের রিংটা রোদের চিটকেয় চকচক করছে,সাথে ওর চোখের কোণায় জলও।
হিমু ওর চোখের দিকে তাকাতে পারে না,ওর গলা দিয়ে কিছু বেরও হয় না।

পরাজিতদের কোন অজুহাত মানায় না,রূপার হাতে পাঞ্জাবীর প্যাকেটা আত্নসমর্পণের তরবারীর মত গুজে দিয়ে হাটা শুরু করে সে.....।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.