নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার আছে অনেক কিছু, শিক্ষা নিবে কতজন?

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition)

সবার জন্যে শিক্ষা। আমার জন্যে তো বটেই। নিজে আগে শিক্ষা নিয়ে আরেকজনের মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়া...এটাই থাকবে আমার লেখাগুলোর উদ্দেশ্য।

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ শালবনে ভীনগ্রহী তরুণী

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৩



১৬ মার্চ,২০১৭, রাত ৮.৩০

‘নাহ, মাইরা মজা পাইলাম না। এতো কচি একটা মাইয়্যা। আরো বড় দেইখ্যা কারোরে আনতে পারলি না!’

ঘরঘর স্বরে বললো মাতুল। এভাবেই কথা বলে সে। তার গলার স্বরে শ্রোতার মনে কেমন যেন কাঁপন ধরে যায়। মাটিতে পড়ে থাকা ১২-১৩ বছরের বাচ্চা একটা মেয়ের শরীরের দিকে তাকিয়ে আছে সে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেয়েটার দেহ। একটু আগেই মজিদ নিজ হাতে জবাই করেছে অভাগা মেয়েটিকে। মারার আগে তিন সাগরেদসহ ধর্ষণ করেছে।

পাশেই দাঁড়িয়ে আছে মাতুলের ডান হাত সগির। আরেক ঠান্ডা মাথার খুনী। মাতুলের সাথে থেকে থেকে মানুষ খুন করায় হাত পাকিয়েছে সে। গত নয় বছর ধরে সগির তার সহচর। তাই জানে কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে কথা বলতে হয় ওস্তাদের সাথে। তবুও, গলা কেঁপে যায় তার মাতুলের সাথে কথা বলতে গিয়ে। আজ তাদের দলপতি খুব রেগে আছে।

তোতলাতে তোতলাতে সগির বলে, ‘ওস্তাদ, আপনিই না কইলেন স্কুলের এই মাইয়াটারেও ধইরা নিয়া আনতে অন্যগুলার সাথে।‘
খেঁকিয়ে উঠে মাতুল, ‘বলছি তো বলছি। এখন বলতাছি চয়েস খারাপ অইছে। জবাই দেওনের সময়ও মাইয়াডা বেকুবের মতো চাইয়া ছিলো। কুনু নাড়া-চাড়া করে নাই।। এমনে করলে কি ভালা লাগে?’

এই ব্যাপারটা স্বীকার করলো সগির। আসলেই মেয়েটা একদম নড়াচড়া করে নাই। কেমন যেন বিহ্বল চোখে তাকিয়ে ছিলো। এমনকি তারা যখন একে একে মেয়েটিকে ধর্ষণ করছিলো, তখনো মেয়েটা চুপ করেছিলো। শুধু ব্যথায় কয়েকবার কাতরে উঠে। ব্যস ঐটুকুই!
‘এখন কি ক্রুম, বস? বাকিগুলারে আপনার ঘরে চালান দিমু?’ আরো তিনটি মেয়েকে ধরে নিয়ে এসেছে তারা। তার মাঝে রয়েছে রূপগঞ্জ গ্রামের নতুন চেয়ারম্যান সাদিক সাহেবের মেঝো মেয়ে।

গাজীপুর থেকে অনেক দূরের একটি জেলার প্রত্ত্যন্ত গ্রাম। নাম তার সুখের বাজার, রূপগঞ্জ থেকে প্রায় দশ মাইল দূরে গ্রামটি। সেই গ্রাম থেকে কিছু দূরেই একটা জঙ্গল ঘেরা জায়গা আছে। জায়গাটা এতোটাই দুর্গম যে দিনে-দুপুরেও সাধারণ মানুষের পা পড়েনা এদিকে। সেখানেই তাদের ডেরা।

আজ সকালেই মেয়েগুলোকে তুলে আনা হয়েছে। কলেজ থেকে বাসায় ফিরছিলো সামিয়া। বেশ অনেক দূর হেটে আসতে হয় তাকে প্রতিদিন। সাথে বান্ধবীরা থাকে বলে তেমন একটা গায়ে লাগে না হাঁটাটা, বরং ভালোই লাগে তাদের সাথে গল্প করতে করতে ঘরে ফেরাটা। আজও হেঁটে আসছিলো। সাথে কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে রাইসাও ছিলো। গল্প করায় তারা এতোটাই মশগুল ছিলো যে কখন থেকে একটি কালো মাইক্রোবাস তাদের পিছু নিয়েছে খেয়াল করেনি। বাজারটা পেরিয়েই এক জনমানবহীন জায়গা আছে। ঐখানে আসতেই মাইক্রোবাসটা তাদের পাশে এসে থামে। গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে সামিয়া আর দুই বান্ধবীকে তুলে নেয় সগির, সাথে সাথে রাইসাকেও।

ডেরায় পৌঁছে প্রথমেই রাইসাকে পাঠায় মাতুলের ঘরে। এরপর তার ডাক পড়ে। মুখ মুছতে মুছতে ঘর থকে বেরিয়ে মাতুল ইশারা করে সগিরকে যেতে। ঘরে ঢুকেই বিছানায় পড়ে থাকা মেয়েটিকে মাটিতে টেনে-হিচড়ে নামিয়ে আবারো ধর্ষণ করে সগির। এরপর সঙ্গী দুজনকে ডেকে তাদের হাতে ছেড়ে দেয় প্রায় নির্জীব হয়ে আসা রাইসাকে।

খুনটা পরে করলেও চলতো। কিন্তু, বসের নির্দেশ, বাকি মেয়েগুলার কাছে যাওয়ার আগে গা একটু গরম করা দরকার। তাই, হতভাগী মেয়েটাকে জবাই করেছে তারা।

মাতুলের পাশে দাঁড়িয়ে এইসবই ভাবছিলো সগির। হঠাৎ, পাশের বনে কি যেন একটা শব্দ করে উঠে। চমকে উঠে মাতুল আর সগির। কিসের আওয়াজ ওটা? কেমন যেন ভয়ংকর ফ্যাসফ্যাসে গলায় কে যেন তাদের নাম ধরে ডাকছে।


১৬ মার্চ,২০১৭, রাত ৮.৩৫

গাজীপুর শালবন। এখানে-সেখানে কয়েকটা তাবু ফেলা। চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। আকাশভরা হাজারো তারার আলোও সেই অন্ধকারকে দূর করতে পারছে না। তাবুর ফাঁক গলে সেই তারার দিকেই চেয়ে ছিলো শেরান। অপরূপ এক মায়াবী পরিবেশ চারদিকে।

আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়েছিলো প্রায়। হঠাৎ করেই বনের একপাশ আলোকিত হয়ে উঠলো। আলোটা বেশ দূরে হলেও চোখ ধাধিয়ে দিচ্ছে। কৌতুহলী হয়ে উঠে শেরান। সিদ্ধান্ত নিলো গিয়ে দেখে আসার। বাকি তাবুগুলোর সবাই মনে হয় নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছে। রওনা দেবার আগে তাই কাঊকে না ডাকার সিদ্ধান্ত নিলো সে।

আলোর উৎসের দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছে বুকের মাঝে কেমন একটা ঢিপঢিপে অনুভূতি চেপে বসা শুরু করলো। মনে হলো ফিরে যায়। শেষে কৌতূহলেরই জয় হলো। সাহস সঞ্চয় করে এগিয়ে চললো শেরান।

আর মাত্র কয়েক গজ। তারপরই পৌঁছে যাওয়া যাবে সেই আলোর উৎসের কাছে। উত্তেজনায় খেয়াল ছিলো না। কিসে যেন পায়ে বেঁধে পড়ে গেলো সে। বেশ শব্দ হয়েছিলো মনে হয়। মুহূর্তে চারপাশ কয়েকটি রুপালী আলোর তীর আলোকিত করে তুললো। ভয় পেয়ে পিছু ফিরে পালাতে যাবে, আচমকা কাঁধে একটি হাতের চাপ অনুভব করলো শেরান।

ভয়ে ভয়ে ফিরে তাকিয়ে দেখে, ওমা! অপরুপ সুন্দরী এক তরুণী তার দিকে ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে! টানা টানা চোখ। মুখের তুলনায় চোখগুলো বেশ বড় বড়। চিবুকটা কিছুটা ছুচালো আর চাপা। চুলগুলো ছোট ছোট করে বয়কাট করা।

হঠাৎ মেয়েটার চোখের সাদা অংশটি নীল আর চোখের মণিটি টকটকে লাল বর্ণ ধারণ করলো। ওরে বাপরে! ভূত নাকি! একটা হার্টবিট মিস করে শেরান। একটা ঢোক গেললো।

মেয়েটি এতক্ষণ সামনের দিকে ঝুকে ছিলো। এবার সোজা হয়ে দাঁড়ালো। কপালের প্রান্তসীমা ছোয়া ভুরু দুটো নাচিয়ে ঠোঁট দুটো নাড়লো। কিছু মনে হয় বলতে চাইছে। কিছু বুঝতে পারলো না শেরান। আবারো কিছু একটা বললো বা বলার চেষ্টা করলো মেয়েটি। এবারো তার কানে কিছু পোঁছা্লো না।

মেয়েটি এবারে শিস দেবার মত করে ঠোট দুটো ছুচালো করলো। কোন শব্দ শুনতে পেলো না সে এবারেও। পড়ে যাওয়ায় কানে কি কোন সমস্যা হয়েছে? মনে তো হচ্ছে না! কারণ, ঝিঝি পোকাগুলোর শব্দগুলো তো শুনতে পাচ্ছে ঠিকই।

এরই মাঝে বেশ কিছুটা ধাতস্থ হয়ে উঠেছে শেরান। মেয়েটির দিকে তাকালো। সচ্ছ সাদা কাপড় ভেদ করে ছিপছিপে দেহের প্রায় সবকিছুই দেখা যাচ্ছে। লজ্জা পেয়ে চোখ নিচু করে ফেললো সে।

আবার কি তাকানো উচিৎ হবে? এমনিতেই মানুষ না পেত্নী বুঝতে পারছে না!
শেষ পর্যন্ত কৌতূহলেরই জয় হলো।

চোখের কোণ দিয়ে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করলো মেয়েটি কি করছে। দীর্ঘাঙ্গী মেয়েটি হাতে লাগানো যন্ত্রে কি যেন টিপছে।
‘নাম! রেটিনা! নাম্বার!’

চমকে উঠলো শেরান। কে যেন তার মাথায় কথা বলে উঠলো।
‘নাম! রেটিনা! নাম্বার!’

এবারে কথাগুলোর সাথে সাথে মেয়েটির ঠোঁট দু’টো নড়ে উঠতে দেখলো সে। মেয়েটি কি ঐ যন্ত্রের সাহায্যে তার মাথার ভিতর কথা বলছে!

তার বিচলিত ভাব দেখে হাতের যন্ত্রে আবার কি যেন নাড়লো মেয়েটি। এবারে স্পষ্ট শুনতে পেলো সে কে যেন তাঁর মাথায় বলে উঠছে-
‘ভয় পেয়ো না। আমি এই যন্ত্রের সাহায্যে তোমার সাথে কথা বলছি। তোমাদের গ্রহের বায়ুমন্ডল আমাদের জন্যে সহায়ক নয়। তাই আমাদের কথা তোমাদের কাছে পৌছাতে পারছে না।‘

মেয়েটি কি ভীনগ্রহ থেকে এসেছে! নাহলে ‘তোমাদের গ্রহ’ বলছে কেন!
‘তুমি ঠিকই ভেবেছো। আমরা এসেছি দুই হাইপার ড্রাইভ দূরের ক্রিমেন গ্রহাণুপুঞ্জ থেকে।‘

মাথার ভিতর আবারো কথা শুনতে পেলো শেরান। সব কিছু কেমন যেন অপার্থিব মনে হতে থাকে তার। সে এবারে কি বলবে? নাকি ভাববে? সে মনের মাঝে কথা বললেই কি মেয়েটি সব বুঝে যাবে?

এবারে মাথায় রিনিঝিনি স্বরে হাসার মত শব্দ পেলো সে।
‘তুমি ভাবলেই আমরা শুনতে পাবো। আমি হিরিয়া। রেটিনা নাম্বার ৭৩৯। আমার সাথে সাম্রা, জাইফা আর জখনা। রেটিনা নাম্বার ২০৯, ৩২১, ৭৭২।‘

ওরা চারজন! এদিক-ওদিক তাকালো শেরান। কোথাও অন্যদের দেখতে পেলো না। হঠাৎ মেয়েটি চর্কির মত পাক খেয়ে ঘুরা শুরু করেছে। অতি দ্রুত দুই পাক দিতেই, মেয়েটির দু’পাশে তিনটি মেয়েকে দেখতে পেলো সে। মনে হলো হিরিয়ার দেহ থেকেই আলগা হয়ে বাকিরা বেরিয়ে এলো।

সেদিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো শেরান।


১৬ মার্চ,২০১৭, রাত ৮.৪৫

ডেরার বাইরে পুকুরের ধারে দাঁড়িয়ে আছে মাতুল আর সগির। এই জায়গাতেই খুনগুলো করে লাশের পায়ে পাথর বেঁধে পাশের পুকুরে ফেলে দেয় তারা।

‘ঐ, যাতো দেখে আয় কি হইসে।‘ সগিরকে বলে মাতুল।

পুকুরের পাশে বনের যে প্রান্তটা রয়েছে, সেদিক থেকে আওয়াজটা আসছে। বিপক্ষ দলের কেউ না তো? রামদাটা হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে সগির এগোয়। যেই হোক, তাদের গোপন ডেরার এতো কাছে চলে এসে ভুল করেছে। জীবিত ফিরে যাওয়া মুশকিল হবে ঐ ব্যাটার জন্যে।

ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকছে। আজ রাতটা কেমন যেন। আকাশটাও কেমন যেন মেঘলা। হ্লুদ চাঁদটাকে মাঝে মাঝে মেঘগুলো ঢেকে দিচ্ছে। এই অল্প আলোয় পথ চলা খুব কঠিন। তবু পা পা করে এগুচ্ছে সগির। একটু ঘুর পথে শব্দ লক্ষ্য করে এগোয় সে । ইচ্ছা পিছন থেকে আক্রমণ করার। ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে আস্তে আস্তে সামনে পা বাড়ায় সগির।

একটা বুনো গাছের ঝাড় হাত দিয়ে সামনে থেকে সরিয়ে এগুতে যাবে, হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে সে। ওটা কি? সবুজ আঠালো মানুষের দেহের মতো দেখতে একটি অবয়ব দাঁড়িয়ে আছে তার পথ জুড়ে। গা থেকে কেমন যেন মরা মানুষের গন্ধ বেরুচ্ছে। চোখগুলো লাল, ভাটার আগুনের মতো জ্বলছে।

কিছু বুঝে উঠার আগেই সগির দেখে সে শূণ্যে ঝুলছে। অথচ কোন কিছু তাকে ধরে নেই। শূণ্যে ঝুলে তার দেহ সেই ভয়ংকর ঐ অবয়বটির দিকে গিয়ে যাচ্ছে। গা মুচড়া-মুচড়ি করেও লাভ হচ্ছে না। ঐ অবস্থাতেই সগির দেখলো দানবটি হঠাৎ করে দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে। এক ভাগ মাটিতে তরল পদার্থের মতো গলে গেলো। তরল পদার্থটি তার দিকে এগিয়ে আসছে। শূণ্যে ঝুলে থেকে সগির বুঝতে পারলো তার মুখটি হা হয়ে যাচ্ছে। তার হা করা মুখ দিয়ে ঢুকে পড়তে থাকে ঘিনঘিনে তরল পদার্থটি। গলায় প্রচন্ড যন্ত্রণা নিয়ে গো গো করতে থাকে মাতুল ডাকাতের সাগরেদ।


‘এতো দেরী হইলো তোর আসতে? কেডা অমন কইরা ডাক দিছিলো?’ সগিরকে দেখে খেঁকিয়ে উঠে মাতুল। অন্ধকারে সে বুঝতে পারলো না সগিরের দেহ আগের চেয়ে কেমন যেন একটু লম্বা হয়ে গিয়েছে।

আস্তে আস্তে করে সগির মাতুলের পাশে এসে দাঁড়ায়। কোন কথা বলছে না। ধৈর্য হারিয়ে মাতুল কি যেন বলতে যাবে, হঠাৎ সগিরের চোখের দিকে তাকিয়ে ভয়ংকর ভাবে চমকে উঠে। ওরকম জ্বলছে কেন সগিরের চোখ দুটো! লাল চোখ দুটি থেকে যেন আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে।

সগির আচমকা গলা চেপে ধরে মাতুলের। তার হাতের প্রচণ্ড চাপে মুখ হা হয়ে যায় ডাকাত সর্দারের। সগিরের মুখ থেকে সেই অপার্থিব আঠালো পদার্থটি মাতুলের মুখে ঢুকে যায়। যন্ত্রনায় মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকে সে। কিছুক্ষণ পর নিথর হয়ে যায় তার দেহ। সেই নিথর দেহের দিকে এক হাতে কি যেন ইশারা করে সগির। এক ঝটকায় দাঁড়িয়ে যায় মাতুলের দেহ। চোখ খুলে তাকায়। তার চোখ দুটো থেকেও এখন লাল ভুতুড়ে আলো বেরুচ্ছে।

দু-জন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। কি যেন কথা দেওয়া-নেওয়া হয় ইশারার মাধ্যমে। তারপর দু’টি দেহই মেয়েদেরকে যে ঘরে রাখা হয়েছে সেদিকে এগিয়ে যায়।




১৬ মার্চ,২০১৭, রাত ৮.৫০

‘শেরান, শোনো, তোমাদের দেশের ভয়ংকর বিপদ। আমরা যে গুচ্ছগ্রহে থাকি, সেই গ্রহগুলোর একটি থেকে ভয়ংকর এক অপরাধীদল পালিয়েছে। তারা এখন তোমাদের এই গ্রহে ঢুকে পড়ে তোমাদের দেশেই আস্তানা গেড়েছে। তাদের পিছু নিতে গিয়েই আমরা এখানে এসে পড়েছি। এদের ধরতে তোমার সাহায্য খুব প্রয়োজন।‘ হিরিয়া বললো।

তাকে প্রয়োজন! খুব অবাক হয় শেরান।

সে একটু একলা প্রকৃতির মানুষ। এই ৩৮ বছর বয়েসেও এখনো বিয়ে করা হয়ে উঠেনি। এমন নয় যে তার টাকা-পয়সার সমস্যা। বাবা-মা’র রেখে যাওয়া সম্পদ আরো কয়েক পুরুষ খেতে পারবে, এমনকি যদি কোন চাকরীও না করে। ‘কি দরকার একটা বাড়তি ঝামেলা কাঁধে নেওয়ার’ এই ভেবে একলা থাকাকেই বেশি পছন্দ করে সে।

শখ বলতে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়ানো তার খুব পছন্দ। ইতিমধ্যে দেশের ৬৪ টি জেলা ঘোরা হয়ে গিয়েছে। ৪০টি দেশেও একবার করে ঘুরে এসেছে সে। মানুষের জীবন-যাত্রা গভীর মনোযোগে লক্ষ্য করে সে আনন্দ পায়। এ থেকে সে যা শিখে, তা কলেজের ছাত্রদের মাঝে বিলিয়ে দেয়। আজকালকার শিক্ষার্থীরা কেমন যেন! বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে জানতে কেন যেন খুব অনীহা। সারাদিন শুধু ফেইসবুক আর মোবাইল গেইমস-এ ডুবে থাকে। তবুও, নিজেকে উজাড় করে ছাত্রদের শেখাতে চেষ্টা করে শেরান।

সেই তাকেই কিনা খুঁজে বের করেছে সাহায্যের জন্যে!

‘হ্যাঁ, শেরান। তোমাকেই আমাদের প্রয়োজন। নির্ভীক, দৃঢ়চেতা, অভিজ্ঞ, কিন্তু একলা, এমন মানুষ তোমাদের দেশে খুবই কম। এজন্যেই তোমার কাছে এসেছি আমরা।‘

ভীনগ্রহী হলেও চার ত্রুণীই অপ্রুপ সুন্দরী, যেন ডানা-কাটা পরী। এরকম সুন্দরী রমণীর মুখে নিজের প্রশংসা শুনে লজ্জা পেলো শেরান।
এতোক্ষ্ণ অন্য মেয়েগুলো কোন কথা বলেনি। হঠাৎ সাম্রা নামের মেয়েটি কথা বলে উঠলো।

‘শোনো, এটা লজ্জা পাওয়ার সময় নয়। আমাদের হাতে বেশি সময় নেই। ভয়ংকর ঐ অপরাধীদল তোমাদের দেশের একদল সন্ত্রাসীদের সাথে এই একটু আগে মিশে গিয়েছে।‘

‘মিশে গিয়েছে! এর মানে কি!’ এবারে অবাক হয় শেরান।

‘হ্যাঁ, এই দেখো।‘

এই বলে হাতের যন্ত্রটার কোন এক বোতামে চাপা দেয় সাম্রা। তা থেকে চারকোণা একটা আলো বেরিয়ে এসে শেরানের সামনে ঝুলতে থাকে। তাতে দু’টো মানুষের অবয়ব ভেসে উঠে। মানুষ দু’টো মাতুল আর সগির। এরপর সুখের বাজারে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনাটা দেখতে পায় শেরান।

খুন হওয়া মেয়েটার জন্যে চোখ ভিজে উঠে তার। মাতুল আর সগিরের লাল ভাটার মতো চোখগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন ঘৃণা বোধ করে সে। হঠাৎ চোয়াল দু’টো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠে শেরানের। মনে মনে এই খুনের প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ করে।

‘বলো, আমাকে কি করতে হবে।‘ শেরান বলে উঠে।


১৬ মার্চ,২০১৭, সন্ধ্যা ৬.৫২


কান্নার রোল উঠেছে রূপগঞ্জের বর্তমান চেয়ারম্যান সাদিক সাহেবের ঘরে। আদরের মেয়েটাকে হারিয়ে পাগলের মতো হয়ে গেছেন তার স্ত্রী। সকাল থেকে কাঁদছেন তিনি। সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ির উঠোনে একটা চেয়ারে বসে রয়েছেন সাদিক সাহেব। সারাদিন অনেক খুঁজেছেন মেয়েকে। খবর পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গাতেই হানা দিয়েছে পুলিশ। তবুও কোন হদিস পাওয়া যায়নি চারটা মেয়ের।

লোকমুখে ইতিমধ্যে পুরো ঘটনা জানা হয়ে গেছে পুরো গ্রামের মানুষের। নতুন চেয়ারম্যান হলে কি হবে, সৎ এবং কর্মঠ মানুষ হিসেবে সাদিক সাহেবের অনেক নাম-ডাক। সেই গুণের বলেই গত তিনবারের অত্যাচারী চেয়ারম্যানের শত চোখ রাঙ্গানোকে কেয়ার না করে সাদিক সাহেবকে ভোট দিয়েছে গ্রামের মানুষ। উঠোনে তাই মানুষের উপচে পড়া ভীড়। সবাই সমবেদনা জানাতে এসেছে।

‘এইটা আগের চেয়ারম্যানের কারসাজী ছাড়া আর কিছু না। সব নোংরা কাজেই তার হাত।‘ গ্রামের এক মুরুব্বী বললেন। উপস্থিত অনেকেই তার কথায় সায় দিয়ে উঠলো।

‘এই, তোমরা চুপ করো।‘ তাদেরকে একটা ধমক দিলেন নতুন চেয়ারম্যান। তারপর মুরুব্বীর দিকে ফিরে বললেন-
‘দেখো, রহিম মিঞা, প্রমাণ ছাড়া কাউরে দোষ দেওন ঠিক না। অহন সময় ঠান্ডা মাথা নিয়া চিন্তা করনের।‘ এই বলে একটু থামলেন নতুন চেয়ারম্যান সাহেব। কি যেন একটা চিন্তা করলেন কিছুক্ষণ। তারপর বললেন-
‘তুমরা কইতাসো এইডা মাতুল ডাকাইতের কাজ। হের ডেরা কুন জায়গায় কেউ জানো কিসু?’

উপস্থিত মানুষদের মাঝে রূপগঞ্জ স্কুলের হ্যাডমাস্টার সাহেবও ছিলেন। তার মেয়েকেও অপহরণ করা হয়েছে। তিনি জানেন না ইতিমধ্যে ডাকাতদল তার মেয়েকে মেরে ফেলেছে।

তিনি বললেন- ‘কেউ তো সঠিক বলতে পারে না কোথায় তারা থাকে, তবে অনেকেই বলে, সুখের বাজারের জঙ্গলের ভিতর তাদের কয়েকবার দেখা গেছে।‘

‘তাইলে ঐদিকেই একবার খোঁজ নিতে হইবো। আমি ওদিকে চললাম। তোমরা কে কে যাইতে চাও আমার সাথে আসো।“

এই বলে চেয়ারম্যান সাহেব ঘরের ভিতর ঢুকে নিজের বন্দুকটা বের করে আনলেন। তারপর বাইরের দিকে রওনা হলেন। তার পিছু পিছু গ্রামের সব যুবকরা রওনা দিলো। বুড়োরাও বাদ গেলো না। বল্লম-সড়কি থেকে শুরু করে তীর-ধনুক, সবার হাতেই কিছু না কিছু ধরা।
মাইক্রোবাস, সিএনজি, মোটরসাইকেলে চড়ে নতুন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দুই-আড়াইশো মানুষের বিশাল বহরটি সুখের বাজারের দিকে রওনা হলো।


১৬ মার্চ,২০১৭, রাত ৯.১০

উড়ে চলেছে শেরান। তার গায়ে বায়ু ও পানি নিরোধক বিশেষ পোশাক। পিঠে লাগানো স্কুলব্যাগ সাইজের একটা অদ্ভুত যন্ত্র। এটার সাহায্যেই উড়তে পারছে সে। হাতেও ঘড়ির মতো একটা যন্ত্র। ঠিক হিরিয়ারটার মতো।

সবকিছুই ভীনগ্রহী ত্রুণীদের দেওয়া। রওনা দেবার আগে কিভাবে যন্ত্রগুলো চালাতে হয় তার উপর ছোটখাটো একটা টেনিংও হয়ে গেছে তার। সে এখন জানে কি ভয়ংকর অস্ত্র হতে পারে হাতে লাগানো যন্ত্রটি। এতে লাগানো লেজার দিয়ে ইচ্ছে করলে সে কয়েক মাইল জায়গা নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। এটা পিঠে লাগানো যন্ত্রটার কন্ট্রোল সেন্টারও বটে। হাত ঘড়ির সমান যন্ত্রটি দিয়ে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যোগাযোগ স্থাপন করা যায় মুহূর্তে। আরো অনেক কিছুই করা যায়, কিন্তু হাতে সময় নেই বলে তাকে এই কয়টি ফাংশনই শিখানো হয়েছে।

‘হিরিয়া, তোমরা কোথায়?’ মনে মনে কথাটা ভাবতেই, মাথার মাঝে হিরিয়া বলে উঠলো-
‘আমরা ওখানে পৌঁছে গেছি, শেরান। তুমিও আর এক মিনিট দশ সেকেন্ডের মাঝে পৌঁছে যাবে। প্রস্তুত হয়ে নাও।‘

হিরিয়ার শেখানো ফাংশনগুলো আরেকবার দেখে নিলো শেরান। অনেক দূরে নিচে আলো দেখা যাচ্ছে। ওটাই মনে হয় সুখের বাজার। প্রায় পৌঁছে গেছে সে। ভাগ্য ভালো আজ বৃষ্টি হচ্ছে না, যদিও আকাশে কিছুটা মেঘ করেছে।

তাদের প্ল্যান অনুযায়ী শেরান ডাকাতদের ডেরার ছাদে নামবে। এরপর, হাতের যন্ত্র দিয়ে চালা ফুটো করে মেয়েদের বের করে আনবে। আর হিরিয়ারা মাতুলদের উপর ভর করা পলাতক ভীনগ্রহী অপরাধীগুলোকে আক্রমন করে বন্দি করবে। খুবই সাঠামাঠা পরিকল্পনা হলেও খুব কাজের বলে মনে হয়েছে শেরানের।

কিন্তু, সে জানে না কি ভয়ংকর বিপদ অপেক্ষা করছে তাদের জন্যে।

১৬ মার্চ,২০১৭, রাত ৯.১২

রাইসাকে ধরে নিয়ে গেছে অনেকক্ষণ হয়েছে। এরপর থেকে কোন সাড়া-শব্দ পাচ্ছে না সামিয়া। হাত পিছমোড়া করে বাঁধা থাকায় ঠিক মত বসতেও পারছে না। পাশে তাকালো সে। সায়রা আর বাসবী এখনো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।

তাদের ধরে নিয়ে আসা হয়েছে দুপুরে। এরপর থেকে পেটে কিছু পড়েনি। ক্ষিধায় পেটটা মোচড় দিয়ে উঠে। হেসে ফেলে সামিয়া। এতো বিপদের মাঝেও ক্ষুধা পেয়েছে! আশ্চর্য!

কয়েকবার চেষ্টা করেছে হাতের বাঁধন খোলার। পারেনি, বরং রশিগুলো হাতে আরো এঁটে বসেছে। কান্না পাচ্ছে তার। বুঝতে পারছে আর রক্ষে নেই।

এই সময় দরজা খোলার আওয়াজ পায় সে। ঘরে আস্তে আস্তে প্রবেশ করে.........
ওটা কি! মানুষ! শিউরে উঠে সামিয়া। এরকম চোখ আগে দেখেনি। ডাকাতগুলোর চোখ থেকে যেন লাল আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে।
আতংকে চোখ বন্ধ করে ফেলে সামিয়া। ওদিকে ডাক ছেড়ে কেঁদে উঠে তার বান্ধবী দু’জন।

অশরীরী আত্মার মত পা ছেঁচড়ে ছেঁচরে তাদের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে মাতুল আর সগিরের দেহ। মুখে বীভৎস হাঁসি।

প্রথমে সামিয়াকে এক হাতে টেনে তুলে মাতুল। অন্য হাতে তার কাপড় ছিড়তে যাবে, এসময় ভয়ংকর একটা শব্দ হয় ছাদে। এসে পড়েছে শেরান। হাতে লাগানো যন্ত্রের সাহায্যে পুরো টিনের ছাদটিই উড়িয়ে দেয় সে। এরপর নেমে পড়ে ঘরের ভিতর, ঠিক মাতুলের পিছনে। ওদিকে ভোজবাজির মত ঘরে উদয় হয় হিরিয়া আর তার সঙ্গীনীরা।

তাদের দেখেই অপার্থিব একটা আওয়াজ বেরিয়ে আসে মাতুল আর সগিরের মুখ থেকে। তাদের পেটের চামড়া চিড়ে বেরিয়ে আসে ভীনগ্রহী পলাতক অপরাধীর তেলতেলে শরীরের দুই অংশ।

হিরিয়ার হাতের যন্ত্রটি হঠাৎ ফ্ল্যাশ করে উঠে। সাথে সাথে সেটা থেকে একটা গ্লাসের কিউব বের হয়ে তেলতেলে শরীরটিকে ঘিরে বন্দি করে ফেলে।

‘যাক, ওগুলোকে ধরতে পারলে শেষ পর্যন্ত।‘

হেসে বললো শেরান। আরো কি জানি বলতে যাবে, সে দেখতে পেলো পেছন থেকে কি যেন একটা ছুটে এসে হিরিয়াদের গায়ে পড়েছে। একটা আর্ত চিৎকার করা হিরিয়া আর সাম্রা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। সাথে সাথে জাইফা আর জখনাও।

ভীনগ্রহী চার তরুণীর লুটিয়ে পড়া দেহের পিছনে ওটা কি দেখা যাচ্ছে! ভীনগ্রহী অপরাধীদলের বাকি যে অর্ধেকটা বনে রয়ে গিয়েছিলো, সেটা এখন ডেরার দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।

অবস্থার হঠাৎ এই পরিবর্তনে হকচকিয়ে গিয়েছিলো শেরান। এবারে এক লাফে সে হিরিয়ার দেহের কাছে পৌঁছে যায়। সেখানে থেকে হাতে যন্ত্রের সাহায্যে লেজার ছুড়ে মারে ভীনগ্রহী প্রাণীটির দিকে। গায়ে রশ্মী লাগতেই মুহূর্তে দু ভাগ হয়ে যায় প্রাণীটির দেহ।

ভীনগ্রহের সন্ত্রাসীর এক ভাগ মাটিতে আছড়ে পড়ে নির্জীব হয়ে গেলো। আরেক ভাগ মাটিতে তরল পদার্থের রুপ নিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আবারো ফায়ার করে শেরান। তার হাতের যন্ত্র থেকে বের হওয়া মারাত্মক রশ্মি তরল পদার্থের গায়ে না লেগে দরজায় লাগে।

আর মাত্র কয়েক ফুট দূরে ভীনগ্রহী প্রাণীটি, নিজের পায়ে একটা হাতের চাপ অনুভব করে শেরান। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলো, তার আর তরল পদার্থের মাঝখানে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হিরিয়া! গা বেয়ে রক্ত বের হচ্ছে তার। সেটাকে উপেক্ষা করে নিজ গ্রহের অপরাধীর শরীর লক্ষ্য করে ঝাপ দেয় হিরিয়া। সাথে সাথে বাতাসে অদৃশ্য হয়ে যায় দু’জনের শরীর।

ঘরের মাঝে হঠাৎ একটা নিস্তব্ধতা নেমে আসে। কোথাও কোন আওয়াজ নেই। বাইরে শুধু ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ শোনা যাচ্ছে।
‘হিরিয়া, ওটাকে নিয়ে চলে গেছে আমাদের গ্রহে। ওখানেই ওগুলোর ব্যবস্থা হবে।‘

শেরানের পিছন থেকে হঠাৎ বলে উঠে জাইফা। কখন যে মেয়েগুলো উঠে দাঁড়িয়েছে উত্তেজনায় খেয়াল করেনি শেরান। তাকিয়ে দেখলো সাম্রার মৃত দেহ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে জখনা।

‘আমাদের যেতে হবে শেরান। ভালো থেকো। আর, এই যন্ত্রগুলো তুমি রেখে দাও। হাতের ঐ সুইচ টিপলেই ওগুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে। আবার যখন তোমার দরকার পড়বে, তখন সেগুলো আপনা থেকে তোমার কাছে চলে আসবে। আর পাশের ঐ সবুজ বড় সুইচটি টিপলে তুমি নিজেই অদৃশ্য হয়ে যেতে পারবে। এটা বেশি ব্যবহার করো না। কারণ, এতে অনেক বেশি এনার্জি ক্ষয় হয়।‘

বাইরে এসময়ে বেশ কোলাহলের শব্দ শোনা যায়। রূপগঞ্জের মানুষেরা এসে পড়েছে।

‘আমরা যাই। আবারো কোন এক সময় দেখা হবে।‘

শেরান কিছু বলার আগেই গ্লাসের কিউবে বন্দি ভীনগ্রহী অপরাধীদলের বাকি অংশ আর সাম্রার মৃতদেহটি নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় মেয়ে দুটো। ঘরে শুধু দাঁড়িয়ে থাকে শেরান, সামিয়া আর তার দুই বান্ধবী।

দরজায় এসময়ে আবির্ভূত হোন চেয়ারম্যান। তার দিকে অভয়ের একটা হাঁসি দেয় শেরান। তারপর, সবার চোখের সামনেই হাতের বোতামে চাপ দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সে। এখানে বেশি দেরী করলে আজ রাতের পূর্ণিমা দেখাটা মিস হয়ে যেতে পারে।


মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ!

একটানে পড়ে ফেললাম :)

অমা শেষ হয়ে গেল? ;)

++++

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২১

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: পুরোটা পড়ে ফেলেছেন! তাও একবারে! ওরে বাবা!!!

প্লাস ও কমেন্টে ধন্যবাদ নিরন্তর।

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ভয়াবহ!

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৭

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: সত্যিই তাই। শুভেচ্ছা।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি কি বাবার হোটেলে আছেন এখনো?

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৮

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: আরে! আপনি কোথা থেকে উদয় হোন মাঝে মাঝে!!! তাও এমন সব মজার কমেন্ট নিয়ে!!! :)

শুভেচ্ছা।

৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গল্পের সাথে সায়েন্স ফিকশন জাতীয় টপিক মিলানোতে পড়তে আরাম পাচ্ছিলাম না। শুরুটা যেভাবে করেছিলেন, সেভাবেই কন্টিনিউশন থাকলে ভালো হতো।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩০

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: সায়েন্স ফিকশন জাতীয় টপিক না রাখলে কেমন যেন খালি খালি লাগে। তাই, সুযোগ বুঝে রেখে দিলাম।

শুভেচ্ছা।

৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৯

শের শায়রী বলেছেন: ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩০

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.