নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে \"আমার কবিতা নামে\" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন

আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চেরাগ আলী ও তান্ত্রিক - ভৌতিক গল্প ( ৩য় পর্ব )

০৫ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭



১ম পর্বের জন্য এখানে ক্লক করুণ

২য় পর্বের জন্য এখানে ক্লিক করুণ

চার

শ্মশানের ভেতরটা বড্ড বেশি নীরব । চারিদিকে গুমট এক পরিবেশ বিরাজ করছে ।
সাধারণত এ ধরনের জায়গায় এলে ঝিঝি পোকাদের কান ঝিম করা এক ধরনের শব্দ শোনা যায় । সে রকম কোন শব্দ নেই । গাছে গাছে পাখ,পাখালির কুঞ্জন নেই । গাছের পাতাগুলোও যেন অজানা কারণে নিস্তেজ হয়ে আছে । বাতাসের শত বিলাপেও তাদের ঘুম ভাংছে না ।

হেটে কিছুটা ভেতরে যেতেই নদীর চর ঘেঁষে বিশাল এক বট গাছের তলায় ভাঙ্গা একটা মন্দির চোখে পরলো । আশ্চর্য! বাহির থেকে বোঝাই যায় না যে, এখানে একটা এতো প্রাচীন মন্দির আছে । কালের বিবর্তনে মন্দিরের শরীর থেকে ইট সুরকি খসে পরলেও ছাদসহ অনেকটা অংশ এখনো অক্ষত আছে । মন্দিরের জরাজীর্ণ,কংকালসার শরীরটাকে চারপাশ থেকে বট গাছের শিকড়গুলো সাপের মতো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। দেখেই অজানা কোন আশঙ্কায় শরীর ছমছম করে উঠে ।

মন্দিরে ঠিক মাঝখানে ফুট তিনেক উঁচু চ্যাপ্টা নাক,চওড়া মুখ, আর ইয়া বড় কপালের বিদঘুটে এক মূর্তি রাখা । মূর্তিটির কপালের উপর ঘষে ঘষে সিঁদুরের প্রলেপ থাকায় সেটাকে আরো ভয়ংকর লাগছে। আর একটু কাছে যেতেই চোখে পরল, মূর্তির গলা থেকে নাভি পর্যন্ত নেমে গেছে কালশিটে এক রক্তের ধারা । শুকিয়ে যাবার পরেও তাতে কিছু শুকনো পাতা লেগে রয়েছে । একটি হাত কোমরের সমান উচ্চতায় সামনের দিকে বাড়িয়ে রেখে অন্য হাতটি আশীর্বাদ করার ভঙ্গিতে সামনের দিকে তুল মূর্তিটি ভয়ানক চোখে তাকিয়ে আছে । জীবিত পশুর মতো জ্যান্ত নিস্পলক সে দু'টি চোখ । দেখলেই শরীরে কাটা দিয়ে উঠে ।

খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মূর্তিটিকে দেখতে দেখতে হঠাৎ আমার কাছে মনে হলো, মূর্তিটি যেন জীবিত। এ শুধু মাটি আর পাথরের তৈরি অসার কোন বস্তু নয় । সকলের অজান্তেই এর ভেতর লুকিয়ে রয়েছে প্রাণ । নিষ্প্রভ অথচ জ্যান্ত দুটো চোখের ভীবৎস দৃষ্টিতে মূর্তিটিও যেন অবাক হয়ে আমাকে দেখছে । এমন ভয়াল দর্শন মূর্তি আমি আগে কখনো দেখিনি । অজানা এক আতংকে পুরো শরীর রি রি করে উঠল । হঠাৎ করেই যেন শরীরের রক্ত হিম হয়ে এলো । ভয়ে দু'কদম পিছিয়ে এলাম ।

আমাকে মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, চিনু নামের লোকটা ডান পাশের একটা কড়াই গাছ থেকে মরা ডাল ভাংতে ভাংতে বলল, এই শোন ছোকরা, মাটিতে কুড়িয়ে পাওয়া ডাল দিয়ে কিন্তু পূজা হবে না । গাছ থেকে শুকনো ডাল ভেঙ্গে নিতে হবে,বুঝেছিস?

চিনু'র কথা তখন আমার কানে দিয়ে ঢুকছিল না। বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছি মূর্তিটির দিকে । দু'কদম পিছিয়ে এলেও মূর্তিটির উপর থেকে কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছি না । মনে হচ্ছিল, অপার্থিব কোন নেশার ঝালে সে আমাকে জড়িয়ে ফেলছে । আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ঠায় দাড়িয়ে রইলাম ।

কোন উত্তর না পেয়ে চিনু আমার পেছনে এসে, কাঁধে জোরে একটা ঝাঁকি দিয়ে বলল,কি দেখিস? তারপর মূর্তিটির দিকে তাকিয়ে বলল, ওটা হচ্ছে বাবা ঠাকুরের মূর্তি । এরপর সামান্য সময়ের জন্য হাত দু'টো নমস্কার করার ভঙ্গিতে জোর করে একটা হাতে চুমু খেয়ে হাতটা কপালে ছুঁইয়ে ফিসফিস করে বলল, এখানেই আজ পূজা হবে । প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তির তৃতীয় তিথিতে পূজা হয় । একশ একটা প্রজাতির প্রাণী বলি করলে তবেই বাবা ঠাকুর খুশি হয়ে জেগে উঠেন । আজ ও বলি হবে …তুই নিজের চোখে দেখবি সব । তারপর অকারণেই নোংরা দাঁতগুলো বের করে ধূর্ত শেয়ালের মতো খেঁকখেঁক করে হেসে উঠলো ।

মন্দিরের সামনের অংশে মূর্তিটি বরাবর পশু বলি দেবার একটি মঞ্চ তৈরি করে রাখা। । গাছের দুটো গুড়ি দু'পাশে মাটিতে পুতে আড়াআড়ি ভাবে দুটো ভারী তক্তা দিয়ে গলা আটকাবার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে । তক্তা দুটোর মধ্যখানে পশু গলা আটকে রাখার জন্য সামান্য করে ফাঁক করে করে কাটা । সেটার মাঝে বলির পশুর গলাটা আটকে রেখে খিলান দিয়ে দিলেই পশুটির ঠায় দাড়িয়ে থাকা ছাড়া আর নড়াচড়া করতে পারে না । গলার নিচ ও উপর থেকে শক্ত কাঠের তক্তা দুটো আটকে থাকে । এরপর সামনে থেকে ধারালো কোন অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলেই , শরীর থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে যাবার কথা । কি বীভৎস ! মনে মনে প্রবোধ গুনলাম । একবার মনে হলো, এ আমি কাদের চক্ররে পড়লাম! এরা আমার কোন ক্ষতি করবে না তো?

চিনু আবার বলল, শোন ছোড়া, বাবা ঠাকুরের কাছে যা চাইবি তাই পাবি । কিন্তু বিনিময়ে তোকেও বাবা ঠাকুরকে কিছু না কিছু দিতে হবে । বাবার ঠাকুর যেমন দেয় তেমন নেয় । তবে কোন মৃত কোন কিছু তিনি নেন না ।

তারপর নিজের বুকে টোকা দিয়ে বলল, আমাকে দেখছিস না, আমি আমার এই চোখটা বাবা ঠাকুরকে দিয়েছি । যতো বড় ত্যাগ,ততো বড় প্রাপ্তি বুঝেছিস । বলে সে হাসতে লাগলো । চিনু তার ডান হাতটা নিজের বা চোখের সামনে নিয়ে সেটাকে দেখিয়ে গর্ব করার ভঙ্গিতে বলল।

বিনিময়ে পেয়েছেন কিছু? আমি ক্ষীণ স্বরে জনতে চাইলাম্‌ ।
পাইনি আবার? এক্কেবারে সাথে সাথে কাজ । নির্বংশ করে দিয়েছি শক্রকে । ধ্বংস করে দিয়েছি । আহ! তাতে যে কি সুখ, কি শান্তি । প্রতিশোধ না নিলে তুই কখনো সেটা বুঝবিনা ।

অন্যের ক্ষতিসাধন করে মানুষ এতোটা তৃপ্তি পায় কি করে! আমি ভেবে পেলাম না । লোকটার মাথায় নিশ্চয় সমস্যা আছে ।

আমি দ্রুত চিনুর সামনে থেকে সরে গিয়ে হাতের নাগালে পাওয়া যায় এমন গাছ থেকে শুকনো ডাল ভাংতে লাগলাম । সব গাছে শুননো ডাল নেই। আবার কোন কোন গাছে প্রচুর শুকনো ডাল আছে কিন্তু সেগুলো খুব উঁচুতে হওয়ায় হাত দিয়ে নাগাল না পাওয়ার জন্য পারতে পারছিলাম না । তাই ছোট গাছের সন্ধানে হাটতে হাটতে শ্মশানের শেষ মাথায় নদীর কিনারায় চলে এলাম । কত অজানা রহস্যের সাক্ষী হয়ে নীরবে বয়ে চলেছে বিষ খালী নদী । এদিকে নদীর গভীরতা খুব একটা বেশি নয় । অনেকটা দূর পর্যন্ত চরের শুকনো অংশ দেখা যাচ্ছে । পড়ন্ত বিকেলে কিছু লাল কাঁকড়া ছোটাছুটি করছে চরের শুকনো বিলিতে । বহু দুর দিয়ে পাল তুলে কয়েকটা নৌকা চলে যাচ্ছে । একবার মনে হলো , হয়তো এ নৌকোগুলোর মধ্যে কোন একটা আমাদের ।

ঘণ্টা খানেকের মধ্যে অনেক মরা,শুকনো ডাল সংগ্রহ করে ফেললাম । যখন ফিরে যাবার কথা ভাবছিলাম, এমন সময় হঠাৎ খসখস শব্দে চমকে উঠলাম । মনে হলো পেছন দিক থেকে এলো শব্দটা । পর মুহূর্তেই মনে হলে বা পাশ দিয়ে কেউ যেনো দৌড়ে চলে গেল । কিন্তু তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেলাম না । বড় বড় গাছের ছায়ায় শ্মশানের ভেতরটা অন্ধকার হয়ে আসছে । শেয়াল বা গেছো বাঘ টাগ নয় তো ? ভয়ে শরীর ছম ছম করে উঠলো ।

আমি এমনিতে ভীতু নই। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে বহু রাত একা একা নির্জন স্থানে, তিন রাস্তার মাথায়, জঙ্গলে এমন কি শ্মশানে ও রাত কাটিয়েছি । কখনো ভয় পাইনি। কিন্তু আজ কেন যেনো অল্পতেই ভয় পেয়ে যাচ্ছি । চমকে উঠছি ।

কাউকে দেখতে না পেয়ে চোখের ভুল ভেবে মন থেকে সব ঝেরে ফেলে আবার ডাল ভাঙ্গার জন্য যেই না একটা শুকনো ডালটাতে হাত দিয়েছি ওমনি পেছন থেকে আবার সেই খসখসে শব্দটা হলো । এবার শব্দটা হলো খুব কাছ থেকে । আমি সঙ্গে সঙ্গে চমকে পেছনে তাকালাম । কিন্তু না । পেছনে কেউ নেই । কিছুই দেখতে পেলাম না । চারিদিকটা যেনো আরো বেশি নির্জন হলো। গুপ্ত ঘাতকের মতো গুটিসুটি পায়ে সন্ধ্যা নেমে আসছে । অন্ধকারের কালো চাদর একটু একটু করে চারপাশটাকে জড়িয়ে নিচ্ছে তার দু'বাহুতে ।

চিনুর উদ্দেশ্যে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম । কিন্তু কোথায় চিনু ? কেউ নেই পেছনে । ভয় পেয়ে বসলো আমাকে । মনে হলো, চারপাশ থেকে অসংখ্য চোখ ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । ভয় হচ্ছে এমন একটি জিনিস , একবার কারো ভেতর ঢুকে গেলে সেটা অযুত নিযুত হারে বাড়তে থাকে । আমার ষষ্ট ইন্দ্রিয় যেনো আমাকে বলছিল ফিরে যেতে । আমি ফিরে যাবার জন্য হাটতে লাগলাম, আর ওমনিই দেখতে পেলাম, নদীর চর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা ছাতিম গাছটার নীচে সেই মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে ।

আমরা এতক্ষণ, মন্ত্র মুগ্ধের মতো চেরাগ আলী'র গল্প শুনছিলাম । হঠাৎ করে তার এই প্রশ্নে আমাদের মনো সংযোগে বাধা পরায় আমরা কিছুটা বিরক্ত হলেও সেটা বুঝতে দিলাম না । উত্তর দেবো কি । সকলে তখন চরম উত্তেজনায় কাঁপছি । কোন রকম মাথা নেড়ে ঝন্টু বলল, না, দেখিনি ।

চেরাগ আলী বললেন, ছাতিম,অসম্ভব সুন্দর একটি গাছ । অনেক গল্প আছে এই গাছ নিয়ে। বর্ষার পানি পেয়ে গাছটা যেন ফুলে ফুলে হাসছিল । মেয়েটির কোলে তখনো সেই কুকুর ছানাটি । একটু চমকে গেলেও পরোক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে কোন কারণ ছাড়াই আমি মেয়েটির এগিয়ে যেতে লাগলাম। মেয়েটি যেন আমায় চুম্বকের মতো আমাকে টানছিল । যতোই কাছাকাছি যাচ্ছিলাম ততোই মিষ্টি একটা ফুলের গন্ধ পাচ্ছিলাম।

হাসি হাসি মুখ করে সস্নেহ মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে । হালকা লম্বাটে মুখমণ্ডলে টানা টানা আয়ত দুটি চোখ। পেছনে খোলা ঘন কালো কোঁকড়ানো একরাশ কেশ। সন্ধ্যার মৃদু আলোয় অদ্ভুত এক সৌন্দর্য খেলা করছিল মেয়েটির চারপাশ ঘিরে । আমি মুগ্ধ হয়ে সেই রূপ দেখতে দেখতে তার দিকে এগুতে লাগলাম ।

আমার বয়স তখন চৌদ্দ কি পনেরো । নারী পুরুষের সম্পর্কের অনেক কিছুই বুঝে চলে এসেছে । কাম, বাসনা অনুভব না করলেও অদ্ভুত এক অসুস্থিতে আড়ষ্ট হয়ে রইলাম । আর একটু কাছে যেতেই মেয়েটির ঘুরে তান্ত্রিক যেদিকে আছে তার উল্টো দিকে হাটতে শুরু করলো । আমি জবুথবু হয়ে দাঁড়িয় ভাবছিলাম কি করবো । ঠিক সে সময় চিনু এসে কানের কাছে ফিসফিস করে জিঙ্গাসা করলো, ওদিকে কি দেখিস ?

আমি চমকে পেছন ফিরে চিনুকে দেখে আঙুল দিয়ে মেয়েটিকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, উনি কে?

চিনু আমার আঙুল অনুসরণ করে তাকিয়ে বলল, উনি ! উনিটা আবার কে ? কার কথা বলছিল ।

ওই যে উনি । আমি আবার মেয়েটিকে দেখিয়ে বললাম । মেয়েটি তখন বেশ কিছুটা দূরে একটা ঝোপের কাছে পৌঁছে পেছন ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
হাত উঁচু করে মেয়েটিকে দেখালাম ।

চিনু কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না । ভাল চোখটা ডান হাত দিয়ে কচলে বড় বড় করে তাকিয়ে মেয়েটিকে খুঁজতে লাগলো ।

আমি তখনো মেয়েটি স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম । চিনু দেখছে না দেখে অবাক হলাম । মেয়েটি তখন একটি আঙুল ঠোটের সামনে নিয়ে ইশারায় আমাকে কিছু বলতে নিষেধ করলো । আমি তার আগা মাথা কিছুই বুঝলাম না । শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম ।

ওই ছেমড়া , মেয়ে ! এইখানে মাইয়া আসবো কোথা থেইক্কা ? কি না কি দেখেছিস । চল চল .. বলেই চিনু আমার হাত ধরে টানতে লাগলো । আমি চিনুর সাথে যেতে যেতে পেছন ফিরে দেখি ঘন ঝোপ ঝাড় লতা গুল্মের আড়ালে মেয়েটি তখন মিলিয়ে গেছে । ঠিক সে সময় দূরে কোথাও একটা শেয়াল ডেকে উঠলো । আমি চিনুর পেছন পেছন দ্রুত পা চালালাম ।

পাঁচ

রাত্রি নেমে আসতেই শ্মশানটি লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠলো । কোথা থেকে যে এতো লোক এক সন্ধ্যার মধ্যে এসে জড়ো হয়েছে তা এক বিস্ময় । নানা কিসিমের সাধু, সন্ন্যাসী চেলা চামুন্ডা টাইপের নারী, পুরুষ দলে দলে এসে জমায়েত হতে লাগলো ।

আশে পাশে যাদেরকে দেখছি তারা অধিকাংশ ই বিকলাঙ্গ । কারো হাত নেই । কারো পা নেই । কারো একটি চোখ নেই তো কারো দু'টো চোখ নেই । চিনু আগেই এদের সম্পর্কে আমাকে বলেছে । এরা সবাই ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বাবা ঠাকুরকে নিজেদের শরীরে অংশ উৎসর্গ করছে ।

চারিদিক উৎসব উৎসব ভাব। সবার মধ্যে খুব ব্যস্ততা । যাদের হাতে কোন কাজ নেই, তারা ঝোপঝাড়ের সামনে বসে গাজার কলকিতে দম দিচ্ছে । নয়তো তাড়ি, ভাং এ মজে আছে।

এরই মধ্যে ঝাড়পোঁছ দিয়ে পুরো মন্দিরের সামনের অংশটা পরিষ্কার করা হয়েছে । গাছের উঁচু কাণ্ডে বেশ কিছু মশাল জ্বালিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে । সেগুলোর আলোয় শাসানটি পুরোপুরি আলোকিত না হলেও অন্ধকার অনেকটাই কেটে গেছে।

গরু, ছাগল, হাস, মুরগী, নানা কিসিমের পাখি বড় বড় বাঁশের খাচায় করে এনে জড়ো করা হয়েছে । সেগুলো রাখা হয়েছে মন্দিরের বা পাশে বলির বেদিটার কাছে কাপড় দিয়ে ঘেরা অংশে। জায়গায় জায়গায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে নানা রকমের ফল,ফলাদি ।

কাঠ কুড়িয়ে আনার পর থেকে তান্ত্রিক'কে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। লোকটা যে গাছটার নিচে হেলান দিয়ে শুয়ে ছিলো সেদিকে যেতেই দেখতে পেলাম , গাছটাকে কালো কাপড় দিয়ে গোল করে ঘিরে একটা ডেরা তৈরি করা হয়েছে । ডেরায় প্রবেশ পথে প্রকাণ্ড মাথার একটা লোক হাতে লাঠি নিয়ে বসে আছে । লোকটার পা দুটো কোমরের নীচ থেকে কাটা । কাউকে ডেরার ঢুকতে দিচ্ছে না ।

আমি এগিয়ে যেতেই লোকটা বলল, বাবা এখন পূজার আয়োজন করছে । এখন ভেতরে কারো যাবার যাবার অনুমতি নেই। তুমি পরে এসো । দরকার হলে বাবা ডেকে নেবে ।

আমি কিছু না বলে, অন্যদিকে হাটতে লাগলাম ।

বাম পাশের একটা জায়গায় বড় বড় ডেকচিতে রান্নার আয়োজন চলছে । কোমরে গামছা বেঁধে এক দল নারী, পুরুষ নানান পদ রান্নার আয়োজন করছে । কেউ তরকারী কুটছে । কেউ মসলা বাটছে । সে এক বিশাল আয়োজন । আমি সেসব দেখতে দেখতে আপন মনে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম । দীর্ঘ সময় ওদের সাথে থাকতে থাকতে আমার ভয়টা অনেকাংশেই কমে গেছে । কৌতূহলী মন নিয়ে সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম ।

একটা বিষয় আমাকে বেশ অবাক করলো, এদের কাউকেই আমি চিনি না । কোনদিন দেখিনি । কিন্তু তবুও যেদিক দিয়েই হাঁটছিলাম সকলে আমাকে বেশ সমীহ করছিলো । বয়সে ছোট হবার পরেও দু হাত তুলে প্রণাম করছিল । কেউ কেউ এসে পা জড়িয়ে ধরছিলো । প্রতি উত্তরে আমিও দু'হাত তুলে জবাব দিচ্ছিলাম । মনে মনে ভাবলাম এরা সকলে হয়তো জেনে গেছে, তান্ত্রিক বাবা আমাকে নিয়ে এসেছে তাই হয়তো একটু আলাদা খাতির, যত্ন করছে । হায়! তখন কি জানতাম একটু পরেই কি ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে আমার জন্য ।

হাটতে হাটতে মন্দিরের কাছে এসে দেখি মন্দির চত্বরটা ইতিমধ্যে ঘষে মেজে পরিষ্কার পরি ছন্ন করে ফেলা হয়েছে। চারিদিক ঝকঝক তকতক করছে । কোথাও এক ফোটা ধুলো ময়লা নেই । দুপুরে দেখা সেই মন্দিরের সাথে এ মন্দিরের যেনো কোন মিলই নেই ।

মন্দিরের ভেতরের দেয়ালে একটা মশাল জ্বলছে । সে আলোয় মন্দিরের ভেতরটা আলোকিত হলে উঠায় মূর্তিটাকে এখন আরো বেশি জীবন্ত ও ভয়ংকর লাগছে। বটগাছের শিকড়গুলোতে লাল ফিতে বেধে দেওয়ায় সেগুলো বাতাসে সাপের মতো হেলে দুলে বাতাসে ভাসছে ।

মূর্তিটির পায়ের কাছে কালো রং এর একটি কুলার উপর কয়েকটা লাল টকটকে জবা ফুল রাখা। তার পাশে সদ্য ছিঁড়ে আনা কিছু দূর্বা ঘাস । অন্য পাশে সামান্য হলুদ আর সিঁদুর রাখা । ফুলগুলো দেখে মনে হচ্ছে, এই মাত্র ছিঁড়ে আনা হয়েছে । দু'টো মাটির সরা'য় কিছু নারিকেলের ছোবা দিয়ে ধুপ জ্বালানো হয়েছে । তা থেকে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠা ধোয়া মন্দিরটি ঘিরে এক ধরনের কুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে । সে কুয়াশায় মূর্তিটা যেন একটু একটু করে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ।

মন্দিরের পাশে দু'জন ঢাকি মৃদু আওয়াজে ঢাক বাজাচ্ছে । তার তালে তালে মন্দিরের সামনে উপস্থিত কয়েকজন মাথা নাড়ছে । এসব দেখতে দেখতে চোখ গেলো বলি দেবার বেদিটার পাশে সদ্য তৈরি করা পশুর ডেরার দিকে । ঠাসাঠাসি করে একপাল পশু বেঁধে রাখা হয়েছে ।

হুট করে চিনু এসে দাঁড়ালো আমার পাশে । আমাকে পশুগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল, গুনে গুনে একশাটা আছে । বলি দিতে হবে একশ,একটা । বলো তো সেই একটা কই ?

আমি কিছু বললাম না । কিন্তু মনটা হঠাৎ বিষণ্ণ হয়ে গেল । আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে চিনু বলল, চল হে ছোকরা তান্ত্রিক বাবা তোকে ডাকছে , বলেই সে আর অপেক্ষা করলো না। হো হো করে হাসতে হাসতে চলে গেলো ।

তান্ত্রিকের কাছে পৌঁছে দেখি তার সারা শরীর ঘামে ভিজে কাপড় শরীরের সঙ্গে লেপটে আছে । মশালের নিচে বসে থাকা এই তান্ত্রিক যেনো দিনের দেখা সেই তান্ত্রিক নন । অন্য কেউ । এই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লোকটা আমূল বদলে গেছে ।
আমাকে আসতে দেখে হাত নেড়ে কাছে ডাকল ।
আমি কাছে যেতে বলল, বোস এখানে ।
আমি বসতেই তান্ত্রিক তার সামনে রাখা একটি বাটি থেকে এক মুঠো সিঁদুর নিয়ে আমার উপর ছুড়ে মারলেন । সাথে সাথে চারিদিকে উলু ধ্বনি শুরু হয়ে গেলো । আমাদের গ্রামে হিন্দু বাড়িগুলোতে দেখেছি, শুধু মেয়েরা উলু ধ্বর্নি দেয় । কিন্তু এখানে নারী, পুরুষ সবাই মিলে এক সাথে উলু ধ্বনি দিয়ে উঠলো । ভয়ে,আতংকে আমার ভেতরটা মুচড়ে উঠলো ।

উলু ধ্বনির শব্দ মিলিয়ে যেতেই তান্ত্রিক একটা ছুরি দিয়ে নিজের বাম হাতের বুড়ো আঙুলটা এক পোঁচে কেটে ফেললেন । ফিনকি দিয়ে বের হয়ে এলো রক্ত । আমার মনে হলো উঠে দৌড় মেরে পালিয়ে যাই । তান্ত্রিক সেটা বুঝতে পেরে কাটা আঙুলের ঝরতে থাকা রক্ত আমার কপালে ঘষতে ঘষতে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলল, ভয় পাস নে । ভয়ের কিছু নাই । ভয় পেলে কিছুই মেলে না । আবার চারিদিকে উলু ধ্বনি উঠলো ।
এ বার তান্ত্রীক তার সামনে রাখা একটা মাটির পেয়ালাটা এগিয়ে দিয়ে বললেন, নে খেয়ে নে । সব ভয় , সব ঢর চলে যাবে ।

আমি বিনা বাক্যে তান্ত্রিকের হাত থেকে পেয়ালাটা নিয়ে পানীয়টা গিলে ফেললাম । তিতা স্বাদযুক্ত উষ্ণ সে পানিয় পেটে পরতেই যেন শরীরটা গরম হয়ে উঠলো । পেয়ালাটা রাখতেই তান্ত্রিক আবার সেটা ভরে দিয়ে বলল নে, নে খেয়ে নে । সব ভয় চলে যাবে …….

এরপর তান্ত্রিক তার পাশে বসা এক নারীর দিকে তাকিয়ে বলল, শালিনী তুই নিয়ে যা ওকে । গোসল দিয়ে তৈরি করে মন্দিরে নিয়ে আয় ।
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, যা প্রস্তুত হয়ে নে । আজ রাতেই শুরু হবে তোর অন্য জীবন ।

শালিনী নামের মহিলাটি তান্ত্রিকের পাশে স্তূপ করে রাখা কাপড়ের বান্ডিল থেকে দু'টুকরো কালো কাপড় নিয়ে আমার হাত ধরে বলল, চল। আমি বিনা বাক্যে তার সাথে চলতে লাগলাম । সে আমাকে তান্ত্রিকের ডেরার পেছনে কাপড় দিয়ে তৈরি করা অন্য একটা ডেরার ভেতর নিয়ে গেল । এ টুকুই হাটতেই আমার পা টলে যাচ্ছিলো । মাথা ঝিম ঝিম করছে । কান দিয়ে যেনো গরম বাষ্প বের হচ্ছে । দু তিন বার মাথা ঝাড়া দিয়ে ঠিক মতো হাটতে চাইলাম কিন্তু পারলাম না । উপুড় হয়ে পরে গেলাম ।

হাসতে হাসতে শালিনী তখন আমার হাত ধরে বলল, কি রে নেশা চড়ে গেছে বুঝি ? আমাকে ধরে হাট । ঢেরার ভেতরে নিয়ে শালিনী টান দিয়ে আমার পোশাক খুলে ফেললো । তারপর একটা হাড়ি থেকে তৈলাক্ত একটা পদার্থ বের করে আমার শরীরে মাখতে লাগলো । আমি বাধা দেবার চেষ্টা করেও পারলাম না । ধীরে ধীরে শরীরটা অসম্ভব গরম হয়ে উঠলো । মনে হচ্ছিল আমার শরীরে আগুন জ্বেলে দেওয়া হয়েছে । যন্ত্রণায় ছটফট করতে লাগলাম । আমরা ছটফটানি দেখে ও না দেখার ভান করে আরো কিছুক্ষণ শরীরে তৈলাক্ত পদার্থটি মেখে হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল নদীর কাছে । নদী কাছে নিয়ে যেতেই আমি নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম । নদীর ঠাণ্ডা জলে শরীরের জ্বলনি কিছুটা কমে এলো । শালিনী ও আমার পেছন পেছনে পানিতে নেমে এসে শরীর ঢোলে দিতে লাগলো ।

এবার আর বুঝতে দেরি হলো না যে, আমাকে নেশা জাতীয় পানিয় পান করানো হয়েছে । মাথা স্থির রাখতে পারছি না । গুছিয়ে কথা বলতে পারছি না । তবুও তোতলাতে তোতলাতে , কোন রকম বললাম, এসব কি করছো তোমরা ? কি মেখেছো তুমি আমার শরীরে, কেন মেখেছো ?

শালিনী কোন উত্তর দিলো না । বাম হাত দিয়ে আমার ডান বাহুটি শক্ত করে ধরে শরীর ঢলতে ঢলতে বলল, কেন এসেছিস এখানে মরতে? এখন মর । মরার জন্য তৈরি করছি তোকে ।
আমি পাল্টা বললাম বললাম, তুই মর । আমি মরতে নয়, যাদু মন্ত্র শিখতে এসেছি । তান্ত্রিক বলেছে, আমাকে দীক্ষা দিয়ে শিষ্য করে নেবে । সব শেখাবে আমায় ।
কচু শেখাবে, বাচতে চাইলে ভাগ এখান থেকে ।
আমি বললাম, তুই ভাগ ।

আমি যাদু না শিখে কোঁথাও যাবো না । কোঁথাও না ।

শালিনী আরও কিছু বলতে চাইছিল । কিন্তু এমন সময় চিনু এসে হাফ দিলো -ওই শালিনী আর কতক্ষণ রে? বাবা তৈরি হয়ে মন্দিরে গেছেন ।

শালিনী কোন উত্তর না দিয়ে আমাকে নদী থেকে তুলে এনে কালো রং একটি কাপড় শরীরে জড়িয়ে দিয়ে অন্য কাপড়টা কাঁধের উপর ঝুলিয়ে দিতে দিতে খুন ক্ষীণ স্বরে বলল, পালা এখান থেকে ............. আমি কিছু বলতে,গিয়েও চুপ করে গেলাম ।

ভেজা শরীরে নদী তীরের ঠাণ্ডা বাতাস লাগায় শরীরটা মুহূর্তে যেন শীতল হয়ে এলো । জ্বালা পোড়াটা কমে গেছে । মাথাটাও ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে আসছে। শালিনী কথাটা বুকের মধ্যে গিয়ে লাগলো। ভাবতে লাগলাম, কেন ও আমাকে পালাতে বলল। কেন বলল..............

চিনুর দিকে তাকিয়ে দেখি সে উলঙ্গ হয়ে নদীর পানিতে ঝাপ দিলো ।

শালিনী আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে চলেছে । ভেবে ছিলাম মন্দিরে নিয়ে যাবে কিন্তু তা না সে আমাকে যেখান থেকে নিয়ে এসেছিলো সেই ডেরায় নিয়ে ঢুকল । তারপর গামছা দিয়ে শরীর মুছে কপাল, ঘাড়ে মুঠো মুঠো সিঁদুর ঘষে দিতে লাগল । আমি বাধা দিতে গিয়েও পারলাম না । শরীর থেকে সব শক্তি যেনো কর্পূরের মতো উড়ে গেছে । আমি শালিনীর কানের কাছে, মুখ নিয়ে বললাম, কেন পালাতে বললে,কেন বললে ।

শালিনী কোন জবাব না দিয়ে নানা রকম মিষ্টান্ন দিয়ে সাজানো একটা পিতলের থালা এগিয়ে দিয়ে বলল, খেয়ে নাও।

আমার নেশাটা ততোক্ষণে অনেকটা কমে এসেছে । সারাদিন অভুক্ত থাকার খিধে ও পেয়েছিল বেশ । তাই এটা সেটা ভাবতে ভাবতে গোগ্রাসে খেতে লাগলাম ।

চলবে ..........

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১:২০

জুল ভার্ন বলেছেন: প্রতিটা পর্বের নিচে 'আগের পর্ব' লিংক দেওয়া উচিত- যাতে কেউ আগের পর্ব সহজেই পড়তে পারেন।

০৫ ই জুন, ২০২২ দুপুর ১:২৬

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: শুরুতেই লিংক থাকছে তো । ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য ।

২| ০৫ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল লেখা। কোনো ভান বা ভনিতা নেই। পড়াে আরাম পাওয়া যায়।

০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:১২

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধনবাদ । শুভ কামনা রইলো, ভাল থাকবেন ।

৩| ০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৫৮

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: অনেক বড় লেখা; পড়তে গিয়ে বাদ দিলাম। সময় পেলে পরে পড়বো।

০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৩৮

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: অবশ্যই । বড় লেখা পড়তে আমার ও বিরক্ত লাগে । সময় পেলে পড়বেন । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

৪| ০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৪২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অনলাইনে বসে এতো বড় পোস্ট পড়তে ইচ্ছে করে না আমার।
বড় পোস্টের কারণে সম্ভবতো পাঠাক হারাবেন আপনি।
শুভকামনা রইলো।

০৬ ই জুন, ২০২২ সকাল ৯:৫৭

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য । উপন্যাস পড়তে বসে যদি কেউ চটি গল্প আশা করে তবে তো ভাই তাদের জন্য এ লেখা নয় । আমরা সবাই ব্যস্ত যার সময় থাকবে , ভাল লাগবে সে পড়বে অন্যরা এড়িয়ে যাবে এটাই তো নিয়ম । এছাড়া যাদের সময় নাই , এমন পাঠক দরকার কি ? নিজের জন্য লিখি বিন্দাস থাকি । শুভ কামনা ভাল থাকুন ..।

৫| ০৫ ই জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৩

গেঁয়ো ভূত বলেছেন:


ভালো লেগেছে, মোটামোটি নেশা ধরে গেছে, পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
টুকটাক কিছু বানান ভুল আছে ঠিক করে দিয়েন।

০৬ ই জুন, ২০২২ সকাল ১০:০৩

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: আহা ! মন ভরে আপনার গেলো মন্তব্য পড়ে । ভূত বলেই হয়তো এতোটা ভাল মন্তব্য করতে পারলেন । অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য । ভাল থাকুন ভূত সমাজে ।

৬| ০৬ ই জুন, ২০২২ দুপুর ২:২৬

অপু তানভীর বলেছেন: এই পর্বের শুরুতেই মনে হয়েছিলো যে কাহিনী কোন দিকে যাচ্ছে, কেন চেরাগ আলীকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে । শেষে এসে সেই ধারনাটা সঠিক পথেই ছিল বুঝতে পারলাম । এখন পরের পর্বে যাওয়ার আগে আরেকটা প্রেডিকশন মনে মনে করে নিলাম, কিভাবে চেরাগ রক্ষা পাবে এখান থেকে ! দেখা যাক সেটা মিলে কিনা !

লেখায় প্লাস আগেই দিয়েছি !

০৬ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৪৮

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: গল্পটা ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম । আর পিডিকশন মিলে গেছে দেখেও ভাল লাগলো । পাঠকের জায়গায় বসে দেখলাম, গল্প পড়ে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছিলো পরবর্তীতে কি হবে । বলতে হয়, লেখক কৌসুলি নন । অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্যে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.