![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন ভাল মানুষ হওয়া আমার সবসময়ের লক্ষ্য। আমার ভাল লাগে নেটওয়ার্ক তৈরী করতে, লিখতে, বই পড়তে, ভ্রমণ করতে। ভাল লাগে প্রকৃতি, নিরবতা, জোসনা , নদী। ঘৃণা করি দূর্ণীতিবাজ, প্রতারক, মোনাফেককে। গঠনমূলক সমালোচনা পছন্দ করি।
মাঠে লড়াই, বাইরে বন্ধুত্ব! গত ২৫ এপ্রিল হয়ে গেল আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৫তম আসর । প্রতিবছর বিভিন্ন অঞ্চলের বলীরা লড়েন এই কুস্তি প্রতিযোগিতায়। এবার এসেছিলেন ১০৩ জন বলী। চ্যাম্পিয়ন হলেন রামুর দিদার বলী। (তথ্যটা টুকে রাখতে পারেন। বলা যায়না, সামনের কোন পরীক্ষাতে কমন পড়ে যেতে পারে.....হাহাহা!)
চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী লালদীঘির মাঠের বলীমঞ্চ ঘিরে মানুষ আর মানুষ। ক্ষণে ক্ষণে উল্লাসে ফেটে পড়ছে দর্শক। ভিড় ঠেলে খেলা দেখার সুযোগ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার বটে। এদিকে মাঠের ভিড় ছাপিয়ে মঞ্চের কাছে যেতে দেখা গেল বলীদের ভিড়! শ খানেক বলী ঠেলাঠেলি করছেন কার আগে কে মঞ্চে উঠবেন এই নিয়ে। সবার খালি গা। শক্তি সামর্থ্যেও কারও চেয়ে কেউ কম নন। এর মধ্যে ভিড়ের একেবারে শেষ ভাগে দাঁড়িয়ে আছেন দুই প্রৌঢ়। কেন দাঁড়িয়েছেন প্রশ্ন করতেই একসঙ্গে উত্তর, ‘আমরা বলী’। এই বয়সেও বলী ধরা? পেশি দেখিয়ে বললেন, ‘এখনো গায়ে যে শক্তি তাতে আরও কয়েক বছর খেলা চালিয়ে যেতে পারব।’ ভিড় ঠেলে রিংয়ে উঠতে পারবেন তো? এবারও আত্মবিশ্বাস, ‘অবশ্যই’।
এই দুই প্রৌঢ়ের একজন মোহাম্মদ শহীদ (৬২)। বলী ধরতে এসেছেন কুমিল্লা থেকে। আর অপরজন মোহাম্মদ হোসেন (৫৬)। তিনি এসেছেন কক্সবাজার থেকে। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল ভিড় ঠেলে এই দুজন ঠিকই রিংয়ে উঠে গেছেন। মল্লযুদ্ধে এক অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রায় পাঁচ মিনিট পর্যন্ত চলল লড়াই। শেষে মাটিতে পিঠ লাগল হোসেনের, হাত তুলে বিজয় উল্লাস করলেন শহীদ। কিন্তু এ কী? রিং থেকে নেমেই দুজন আবার একসঙ্গে। জানালেন, মাঠে লড়াই হলেও বলীখেলায় আসার মধ্যে দুজনের বন্ধুত্ব গত চার বছর ধরে। তবে মাঠে গেলে বন্ধুত্ব নেই।
হোসেন ও শহীদের মতো খেলেছেন আরও দুই প্রৌঢ় বলী মোহাম্মদ মফিজ (৫৫) ও খাজা আহম্মদ (৫৬)। এই দুজনও গত বেশ কয়েক বছর ধরে খেলছেন। এবার অনেকক্ষণ লড়ার পরও ফল না আসায় দুজনকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অবশ্য এই দুই বলী খেলা শেষে ঘোষণা দেন অবসরের। আগামী দিনে আর খেলা নয় আসবেন দর্শক হয়ে।
বলীমঞ্চের নিচে বেষ্টনীতে হাত ধরে ঘোরাঘুরি করছিল খালি গায়ের দুই কিশোর—সিটি করপোরেশন পাথরঘাটা বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ শাখাওয়াত আলম ও মিউনিসিপ্যাল মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র মো. সোহেল। তাদের কাছে গিয়ে কী ব্যাপার জিজ্ঞেস করতেই বলল, ‘আমাদের নাম এন্ট্রি করেছে। কিন্তু খেলতে দিচ্ছে না।’
এত অল্প বয়সে বলী খেলা, এ তো শক্তির লড়াই।
শাখাওয়াত বলল, ‘এখন থেকে যদি আমরা তৈরি না হই, তাহলে আগামী দিনে লড়ব কীভাবে?’
খেলতে না পারার দুঃখ দুই বন্ধুকে বেশ পুড়িয়েছে। মলিন চেহারায় অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করে শেষে আর রিংয়ে ওঠা হয়নি।
এদিকে লড়াই শেষে রিং থেকে মাঠে নেমে গা মুছে নিচ্ছিল সিটি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষার প্রথম বর্ষের ছাত্র মুনতাসীর মামুন। পাশে তার প্রতিদ্বন্দ্বী শামসুল আলম। এরা দুজন বন্ধু আবার সহপাঠীও। তাহলে কি রিংয়ে হলো পাতানো খেলা? মুনতাসীর বলল, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আছে এটা সত্য। কিন্তু রিংয়ে যখন উঠেছি তখন এসব ভুলে গেছি। চিন্তা ছিল কীভাবে জিতব। অবশ্য শামসুলকে হারিয়ে আমিই জিতেছি। এ জন্য ভালোও লাগছে।’
আর শামসুল, ‘আমার কাছে জেতার চেয়ে নিজেকে তৈরি করাটাই মূল লক্ষ্য। সামনে তো আরও দিন বাকি। লড়েই যাব।’ হেরেও মনোবল অটুট তার। হবেই তো, ব্রিটিশদের তাড়াতে শামসুল, মুনতাসীরদের মতো তরুণদের ওপর আস্থা রেখেছিলেন আবদুল জব্বার সওদাগর। সেই পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে এই প্রজন্মের তরুণেরাও। তারা মাঠের লড়াই মাঠেই শেষ করে। নিজেদের মধ্যে তা জিইয়ে রাখে না।
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১
শামীম আনসারী বলেছেন: ঠিক করা হল। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:০২
আমিনুর রহমান বলেছেন:
নিচের প্যারাটা দুই বার এসেছে ! ঠিক করে নিবেন।
মাঠের লড়াই মাঠেই শেষ করে। নিজেদের মধ্যে তা জিইয়ে রাখে না।