নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রমণ স্মৃতি-মালয়েশিয়া (বাংলাদেশী ভাইদের সাহচার্য)

৩০ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯


দি রয়্যাল বিনতাং দি কার্ভ হোটেল [সংগৃহীত]

গতদিন লিখেছিলাম "যাত্রা হলো শুরু", লিংক যাত্রা হলো শুরু, আজ বাংলাদেশী ভাইদের নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছে আছে।

পরিচিত-অপরিচিত,স্বনাম ধন্য অনেক লেখকের লেখায় পড়েছি, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশীরা কতটা বন্ধুবৎসল। পঠিত,অনুভূত সেই সব ঘটনার সাথে, সরাসরি সান্নিধ্যের রেশ অনেক, অনেক বেশী। প্রায় মাস খানেক হতে চললো, তার পরও চুয়াডাঙ্গার শাহীনের ম্লান,কাচু-মাচু মুখটা ভেসে উঠে। দি কার্ভ হোটেলের ৪১৫ নম্বর রুম থেকে বেরোলেই লম্বা সুপরিসর করিডোর,দু'পাশে রুম। রুম থেকে বেরিয়ে ডানে-বায়ে তাকাচ্ছি, নামাজের কেবলা কোন দিকে জানার জন্য।ডান দিকে একটা বড় সাদা ট্রলি চোখে পড়ল,তার মধ্যে কিছু সাদা বেড কভার,সিট-তার সামনের রুমের দরজাট ঈষৎ খোলা। রুম পরিষ্কারের কাজ চলছে, এগিয়ে গেলাম। ২০-২২ বছরের মাঝারি ঊচ্চতার হালকা গড়নের একটা ছেলে বেরিয়ে এলো, আমি ইংরেজীতে জিজ্ঞেস করলাম, পূর্ব-পশ্চিম কোন দিকে। বুঝতে পারছে না দেখে দু'হাত কানের লতি পর্যন্ত নিয়ে আবার ইংরেজীতেই বললাম। বুঝাতে পারছি না, আমার অজান্তেই মুখ দিয়ে বাংলা বেরিয়ে এলো, পূর্ব-পশ্চিম কোন দিকে। যুবক স্মিত হেসে আঙুল দিয়ে আমার পিছন দিকটা নির্দেশ করল। আমি ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরে আসছি, যুবক পরিষ্কার বাংলায় জানতে চাইলে আমি বাঙালি কী না? আজ (২৬ শে, এপ্রিল) সকালেই মালয়েশিয়া এসেছি, এ হোটেলেই থাকব সপ্তাহ খানেক। শুনে খুশী হয়ে জানাল ওর নাম শাহীন, বাড়ী চুয়াডাঙ্গা। পড়তে এসে এখন হোটেলে কাজ করছে। কেউ অভিযোগ করলে তৎক্ষণাৎ চাকরী শেষ। মনটা খারাপ হয়ে গেল। দোয়া করতে বললো। রুমে ফিরে নামাজ শেষ করে জায়নামাজে বসে ভাবছি, আমার ছেলের চেয়ে বছর চার-পাঁচেকের বড় একটা ছেলে মায়ের স্নেহের আচল ছেড়ে রঙিন ভবিষ্যতের আশায় বিদেশ-বিভুঁইয়ে মানবেতর-অসম্মানজনক একটা জীবন-যাপন করছে। কোন এক পল্লীর অচেনা-অজানা এক মায়ের জন্য চোখ দু'টো ভিজে উঠল। টেলিফোনটা বেজে উঠল, অনিচ্ছা সত্বেও উঠলাম- রুমি ভাই ফোন করেছে, একটু বেরোতে হবে, কিছু জরুরী কাজ আছে।

রেডি হয়ে দক্ষিনে জানালার কাছে গেলাম- হোটেলের সামনে দিয়ে সুপ্রশস্থ রাস্তা পশ্চিম থেকে পুবে বিস্তৃত, রাস্তার ওপারে IPC শপিং মল, চারি দিকে সুউচ্চ অট্টলিকা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পেটালিং জায়া, নীচের দিকে তাকাতেই চোখ আটকে গেল-নীল জলের সুইমিং পুলটা কড়া রোদ বুকে নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আমার সবেধন নীলমণি মোবাইলটা (নোকিয়া লুমিয়া ৫২৫) দিয়ে কয়েকটা ছবি তুললাম - মনটা ভাল হয়ে গেল।


হোটেলের বিপরীত দিকে-IPC শপিং মল[সংগৃহীত]


সুইমিং পুল[সংগৃহীত]

তিন জন খোশ গল্প করতে করতে হেটে রাস্তার ওপারে IPC শপিং মলটা একটু ঘুরলাম, ৩ টা সীম কিনলাম, হোটেলে ফেরার পথে তারিক রেস্টুরেন্টে খেতে ঢুকলাম। এই শহরে রুমি ভাইয়ের ২য় সফর, আগের বারও এখানে প্রায়ই খেত এবং এক বাঙালি ওয়েটারের সাথে পরিচয় হয়েছিল। এ বেলায় তার ডিউটি নেই, আর এক বাঙালি আমাদের দুপুরের খাবার পরিবেশনা করল। খেতে খেতে দিনের বাকী সময়টার একটা প্লান করা হলো: শাওন (খালেকী ভাইয়ের মামাত ভাই) আসছে ওর গাড়ী নিয়ে, KLCC (Kuala Lumpur City Center) যাব, ওখানে কার্জন ও শামীম থাকবে, সবাই মিলে শপিং মল গুলো চষে বেড়ানো আর জম্পেশ আড্ডা। কার্জন লিডসে নেটওয়ার্কিংয়ে ছিল, সেখান থেকেই আমাদের সাথে পরিচয়। ও মালয়েশিয়ায় ভাল একটা চাকরী নিয়ে এসেছে বেশ কয়েক বছর হলো। অবিবাহিত কার্জনের সাথে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া শামীমের সখ্যতা হয়ে যায়, ওরা একই ফ্লাটে থাকতে শুরু করে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জের হাওড়ের ছেলে কার্জনের জীবনে এসেছে বউ, আদরের ছোট কন্যা। তাই আলাদা বাসা কার্জনের। শামীমও লেখা-পড়ার পাঠ চুকিয়ে ব্যবসা করছে। শাওনও মালয়েশিয়ান ভাল এক ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে এখন ভাল চাকরী করছে, গাড়ীও কিনে ফেলেছে।

গতবার মালয়েশিয়া ভ্রমণের সময় কার্জন ও শামীম রুমি ভাইকে অনেক সময় দিয়েছিল, এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো শাওন।
অন-লাইনে হোটেল বুকিং, অগ্রিম কিছু পেমেন্ট এবং ২৬ থেকে ৩০, প্রায় প্রতিদিন অফিস শেষে ড্রাইভ করে কেএলসিসি থেকে পেটালিং জায়া আসা, তারপর শপিং করা, নিত্য নতুন রেস্টুরেন্টে নিত্য নতুন খাওয়া, তারপর আমাদের হোটেলে ড্রপ করে আবার কেএলসিসি ফিরে যাওয়া-মাত্র কয়েকটি লাইনে আমি শাওনের নিঃস্বার্থ কর্মকান্ড গুলোকে কি সুন্দর বেঁধে ফেলেছি!!! অথচ মনের মাঝে তার স্থান অসীম।

বুকিত বিনতাং--প্যাভিলিয়ন, লো ইয়াত প্লাজা,...স্বপ্নের সেই বিকেলটা শেষ হয়ে সন্ধ্যা নেমে রাতের কোলে ঢলে পড়েছে। মাঝ বয়েসী একটা লোকের মালয়েশিয়ার প্রথম দিনটা তরুণ কিছু ছেলের সাহচর্যে স্মৃতিতে জাগরূক রবে বহু কাল--- ব্লগের এই স্বপ্ল পরিসরে তাকে বাঁধতে চাওয়া বোকামি।তাই কিছু ছবি দিয়ে আজকের মত শেষ করছি।


বুকিত বিনতাং - উপর থেকে[সংগৃহীত]


বুকিত বিনতাং-প্যাভিলিয়ন শপিং মল[সংগৃহীত]

চলবে.......

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:০৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভাল লেগেছে ।

৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন, সব সময়।

২| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৪০

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ভালো লাগলো। চোখের সামনে ভাসে অনেককিছু। চলুক। :)

৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:০৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
চোখের সামনে কি ভাসে তাতো কইলেন না?
শুনার অপেক্ষায় রইলাম।

৩| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:১২

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: কেএলসিসি, বুকিত বিনতাং এইসব আরকি।

৩১ শে মে, ২০১৫ ভোর ৬:৪৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম।

৪| ৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:০৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রবাসে যারা আছেন, তাদের মানবেতর গল্প বলে শেষ করতে পারবেন না ভাই।। ভাল চাকুরী,বেতন সত্বেও মাঝে মাঝে নিজের প্রতিই ঘৃনা ধরে যায়।।

৩১ শে মে, ২০১৫ ভোর ৬:৫১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ হ্যাপী ভাই।
আপনি আমার চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ।
এক জীবনে সব পাওয়া হয়ে উঠে না।
না পাওয়ার সেই বেদনা গুলো ঝরুক আপনার লেখনীতে!!!
ভাল থাকুন।

৫| ৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫

জুন বলেছেন: অনেক ভালোলাগছে আপনার মালয়েশিয়া ভ্রমন নিয়ে গল্পের ছলে বলা কাহিনী পড়তে ।
আপনার চোখে বুকিত বিন্তাং দেখে মনে পরছে অনেক কিছু । লিখতে থাকুন আছি সাথে :)
সুন্দর লেখায়
+

৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার ভাললাগছে জেনে লেখায় আরও উৎসাহ পাচ্ছি।
দু'এক জন এখনো সাথে আছে দেখে মোটামুটি ভরসা পাচ্ছি।
যারা আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন, সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন।

৬| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: আপনার চোখ দিয়েই ঘুরে এলাম। দারুন ছবির সাথে দারুন বর্ননা।

৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:২৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ মাসুদ ভাই।
আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে।
শুভেচ্ছা রইল, ভাল থাকুন।

৭| ৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:০৮

অরকি৪৫ বলেছেন: আমিও মালায়শিয়া তে আসি, পরের বার এলে দেখা করবেন,, অভিনন্দন

০১ লা জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৫৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ অরকি ভাই।
আপনার আমন্ত্রণ সাদরে গ্রহণ করলাম।
ভাল থাকুন, সব সময়।

৮| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১:১২

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বাহুল্য তবুও জানতে চাইছি আমার লেখায় সবাই এতো বেদনা খুজে পায় কেন?? আর দশজনের মত আমিওতো শুধু লেখার জন্যই লিখে যাই...।তারপরও!! এমনকি আপনিও??

০১ লা জুন, ২০১৫ সকাল ৭:০৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনি যে মজা/আনন্দদায়ক কিছু লেখেন না, তা কিন্তু নয়। তবে বেদনা বিধূর লেখা গুলো মন ছুয়ে যায়। এটাই বোধ হয় মানুষের প্রকৃতি। কোন এক ইংরেজ কবি যেন বলেছেন: Our sweetest songs are those that tell of sadest thoughts.
ভাল থাকুন এবং লেখে যান, যখন যা ভাল লাগে।
আমি অবশ্যই আপনার লেখার এক জন ভক্ত।

৯| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

মোঃমোজাম হক বলেছেন: ভাল লাগলো।
তবে আপনি যখন নামাজের জন্য কিবলা খুজছেন,তখন বাংলাদেশী ছেলেটি আপনার ইংরেজি বুজলোনা।
আবার পরে বললেন সে ষ্টুডেন্ট ভিসায় এসে এই কাজে জড়িয়ে পড়েছে।
এখানেই আমার হতাশা সে কি এই সামান্য প্রশ্নটাও বুঝতে পারলনা?

লিখুন সাথে আছি

০২ রা জুন, ২০১৫ ভোর ৬:২৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ হক ভাই।
ছেলেটির বাড়ী চুয়াডাঙ্গায়, তাই ইংরেজীতে একটু দুর্বলতা থাকতে পারে। অথবা টেনশন, কখন চাকরীটা হারাই - তাকে স্বাভাবিক হতে দিচ্ছে না।
সাথে আছেন জেনে ভাল লাগছে।
ভাল থাকুন।

১০| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০২

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব ভালো লাগছে আপনার এ মালয়েশিয়া ভ্রমণ কাহিনী। আমিও মাস দুয়েক আগে মালয়েশিয়া ঘুরে এসেছি।বুকিত বিনতাং এ আমিও ছিলেম দু'রাত। আমার ভ্রমণটাও ভালোই ছিলো। হয়তো কোনদিন লিখেও ফেলতে পারি সে বৃত্তান্ত।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আহসান ভাই পাঠ ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

ভাল থাকুন। সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.