নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃদায়

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪২

সাবের তার শরীরের সবটুকু শক্তি একত্র করে ব্রেক কষলো, কিন্তু দুর্ঘটনাটা এড়াতে পারল না। ছেলেটা ছিটকে কয়েক হাত দূরে রাস্তায় চিত হয়ে পড়ল, সাবের তাল হারিয়ে ভেসপা সহ পড়ল আরেক পাশে। সাবের উঠার চেষ্টা করছে, পারছে না-ভারী ভেসপাটা ডান পায়ের উপর পড়ে আছে। একটা টয়োটা গাড়ি থেকে এক লোক বেরিয়ে এসে ভেসপাটাকে দাঁড় করিয়ে দিল, দুই হাতে ভর দিয়ে সাবের উঠে দাঁড়াল। কয়েক জন মিলে চার হাত-পা ধরে ছেলেটাকে রাস্তার পাশে নিয়ে শুইয়ে দিচ্ছে-সাবের ভদ্রলোককে ধন্যবাদ দিয়ে ভেসপাটা ঠেলতে ঠেলতে সেদিকে গেল। এরি মধ্যে রাস্তার দু'পাশের গাড়ি গুলো দাঁড়িয়ে গেছে। ছেলেটার কাছে পৌছানোর আগেই কয়েক জন উৎসাহী যুবক ওকে ঘিরে ধরল, সাবের কিছু বুঝে উঠার আগেই ওকে কিল-ঘুসি মারতে লাগল, ভেসপাটা হাত ছাড়া হয়ে গেল।
--এই, লোকটাকে মারছিস কেন তোরা? ভরাট গলায় বিক্ষুদ্ধ জনতার পেছন থেকে এক জন বলে উঠল।
যুবকরা ওকে ছেড়ে দিয়ে আগন্তকের দিকে ফিরল, এক জন বললঃ
--মিজান ভাই, এই শালা আমাগো জামিলের ছোট ভাই হালিমরে এক্সিডেন্ট করছে, অবস্থা খুব খারাপ।
--তাই, চল দেখি।
সবাই ছেলেটাকে ঘিরে ভীড় করে আছে।
বেল-বটম প্যান্ট পরা লম্বা ছিপছিপে গড়নের মিজান চেঁচিয়ে উঠে,
--ওই, জায়গা খালি কর, বাতাস পাস হইতে দে।
মুহূর্তের মধ্যে সব ফাঁকা, একটা ছেলের কোলের উপর শুয়ে আছে বছর পাঁচ-ছয়েকের শ্যাম বর্ণের এক বালক, শরতের পড়ন্ত বিকেলের আভায় দূর থেকেও তার উঁচু নাকটা সাবেরের চোখে পড়ল।
বসা ছেলেটাকে উদ্দেশ্য করে মিজান,
--কাদের,কি অবস্থা?
--অবস্থাতে ঠিক বুঝতেছিনা, হাত-পা ছিল্লা গেছে।
হালিমের পাশে বসে মিজান ওর কপাল ছোঁয়া রেশমী চুল গুলোকে হাত দিয়ে আরো এলোমেলো করে দিয়ে নরম গলায়,
--কি রে বিচ্ছু, কি খবর?
হালিম ডান হাত দিয়ে বুকের বা দিকে হাত দিয়ে,
--ব্যথা।
মিজান ওর পকেটে হাত দিয়ে,
--এই তোর পকেটে কি, গুল্লি (মার্বেল) না?
হালিম সম্মতি সূচক মাথা নাড়ে।
--হু, বুঝছি।
সাথে সাথে হালিমের বয়সী তিন-চারটা ছেলে পাশ থেকে বলে উঠে,
--মিজান ভাই, এই গুল্লি গুলা আমরা রাস্তায় পাইছি।
--দে, বলে ওদের থেকে আট-দশটা মার্বেল মিজান হাতে নেয়।
দু’টা মার্বেল এখনও হালিমের পকেটে আছে।
মিজান দ্রুত হিসাব মিলায়, দশ-বারোটা মার্বেল পকেটে নিয়ে একটা বাচ্চা ছেলে রাস্তায় ভেসপার ধাক্কায় উপুড় হয়ে পড়লে বিপদের আশংকা থেকেই যায়।মিজান হালিমের দিকে তাকায়, ও মিজানের হাতের মার্বেল গুলোর দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে আছে। মিজান ওগুলো ওর পকেটে দিয়ে দেয়, একটা নির্মল হাসিতে ওর শিশু মুখটা ভরে উঠে।
--ওরে হাসপাতালে নিতে হইবো।ওই, তোরা একটি বেবী ট্যাক্সী ঠিক কইরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়া যা, আমি জামিলদের বাসায় খবর দিতাছি।
একটা বেবী ট্যাক্সী ছুটে চলে ডি এম সি-র দিকে হালিমকে নিয়ে আর সাবেরকে নিয়ে মিজান হাজির হয় হালিমদের বাসার সামনে। ওখানে তখন বেশ জটলা, সন্ধ্যা হয় হয়-খালাম্মার সামনে সাবেরকে নেওয়া হল।
বেশ একটু হৈ চৈ হচ্ছে, মিজান তার দরাজ গলায় চেঁচিয়ে ওঠেঃ
--ওই, সব চুপ।
তারপর খালাম্মাকে পুরো ঘটনাটা সংক্ষেপে বর্ণনা করে মিজান।
তারপর যোগ করল,
--উনার ভেসপাটা আমরা আটকায় রাখছি, আর উনারে ক্ষতিপূরণ দিতে হইবো।
ঘোমটার আড়াল থেকে মৃদু অথচ স্পষ্ট গলা ভেসে এলো,
--বাবা মিজান, তোমরা উনার ভেসপা উনাকে দিয়ে দাও, আমার কিছু লাগবে না।
খালাম্মার কথায় পাড়ার ছেলে-পেলে একটু মনঃক্ষুন্ন হলেও উনার কথা ফেলতে পারল না।
মিজান সাবেরকে বলল,
--খালাম্মা ভাল বইল্লা এইবারের মত বাইচ্চা গেলেন মিঞা। এইবার থেইক্কা সাবধানে চালায়েন।
আজান দিচ্ছে, খালাম্মা চলে গেলেন।
সবাই আস্তে আস্তে যে যার মত চলে গেল, সাবের ভেসপার পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল।

ল্যাম্প পোস্টের বাতি গুলো একে জ্বলে উঠছে, আলোর বিপরীতে দাঁড়ানোতে সাবেরের বিশাল ছায়া পড়েছে মাটিতে, মুখটা ঢেকে গেছে আলো-আঁধারিতে।হালিমের মা ছেলের অপেক্ষায় পর্দার আড়ালে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, ভেসপা ওয়ালা ছেলেটা এখনো কেন যাচ্ছে না, তা উনার মাথায় আসছে না।জামিলের বাবাকে দেখতে পেলেন উনি, অফিস থেকে ফিরছেন, সাথে জামিল-হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলছে। নিশ্চয়ই হালিমের কাহিনী।অফিসের নানা কাজের ঝামেলা থাকে, তাই একান্ত বাধ্য না হলে হেনা স্বামী মঈনকে জানান না। ভেসপা এবং সাবেরকে দেখে জামিলের উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়,
--আব্বা, আব্বা, এই লোকটা, এই লোকটা।
মঈন সাহেব দাঁড়িয়ে গেলেন,
--আপনার নাম?
--সাবের, আপনি হালিমের বাবা?
--হ্যা, এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে বাসায় আসুন।
তিন জন বাসায় এসে ঢুকল, অতিথিকে নাস্তা দিতে বলে উনি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। সাবের এমনিতেই খুব মিশুক, কিছুক্ষণের মধ্যেই জামিলের মাকে আপা, বাবাকে দুলাভাই বানিয়ে ফেলল।
--মঈন ভাই, আপনের আপত্তি না থাকলে আমার ভেসপায় করে হালিমকে দেখে আসতে পারি?
--না, মানে.. করে মঈন হেনার দিকে তাকায়।
--উনার সাথে ভেসপায় গেলে তাড়া-তাড়ি হবে, যান।
সাবের প্রবল বেগে মাথা নাড়িয়ে আপত্তি জানায়,
--আপা, আমি আপনার ছোট ভাইয়ের মত, আমাকে তুমি করে বলবেন।
--আচ্ছা, ঠিক আছে।
ওরা ভেসপা ষ্টার্ট দেওয়ার সাথে সাথে একটা বেবী ট্যাক্সী এসে থামে, কাদের নামে,তারপর দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে নামে হালিম।বাসায় ঢোকামাত্র হেনা ওকে কোলে করে ভিতরের ঘরে নিয়ে যায়। স্পর্শকাতর এই সময়ে আপনজন ছাড়া আর কারো থাকা ঠিক নয়, মঈন ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সাবের রওনা দেয় তার মেসের দিকে।

দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে হেনা অবাক হয়, এই সময় তো কারো আসার কথা নয়! বিকেলের এই সময়টায় দুই ভাই মাঠে খেলতে যায়, ওদের বাবা অফিস থেকে সাধারণত: ফেরেন রাতে। তাই উনি এই সময়টায় জানালার ধারে বসেন, সামনের রাস্তা দিয়ে লোকজনের আস-যাওয়া দেখেন, মাঠে ছেলেরা খেলায় মশগুল, আলো ঝরানো বিকেলটা কেমন ম্রিয়মান হতে হতে সন্ধ্যার আঁধারে হারিয়ে যায়।গতকাল হালিম হাতে-পায়ে ব্যথা পেয়ে আজ শান্ত-সুবোধ বালক হয়ে বাসায়, হেনা ওর পাশে বসে- ঠাকুমার ঝুলির গল্পের ঝাঁপি খুলে বসেন। তাই কিছুটা বিরক্ত হয়ে দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন,
--কে?
--আপা, আমি সাবের।
ঘোমটাটা একটু টেনে দিয়ে দরজা খুলে দেখেন দু’হাতে ফল-মূল নিয়ে হাসি-মুখে দাঁড়িয়ে সাবের।
--এসো, এত কিছু কেন আনতে গেলে?
সাবের ঘরে ঢুঁকে টেবিলের উপর ফল-মূল গুলো রেখে,
--আপা, হালিম কেমন আছে?
--ভাল, তবে একটু ব্যথা আছে, ওকে দেখবে চল।
সাবের একটা চেয়ার টেনে বসে, আপা ওর জন্য নাস্তা বানাতে যায়।
চেয়ে দেখে হালিমের দু’ই হাত ভরা মার্বেল।
--মার্বেল তোমার খুব পছন্দ?
--হ্যা, এগুলো দিয়ে রুমি,খোকন,কচিদের সাথে খেলি।
--কি ভাবে খেলো?
--মধ্যমা আঙুল দিয়ে মার্বেলটা ধরে, বিছানার উপর আর একটা মার্বেলকে সই করে- এই ভাবে আংটিস খেলি।
যে লাগাতে পারবে মার্বেল তার।
আর একটা আছে, ঠেক্কা-টোক্কা, ছয়টা মার্বেল হাতে নিয়ে বিছানার উপর ছড়িয়ে দেয়, সাবেরের দিকে ফিরে, --এই বার বলেন, কেনটাকে সই করব?
সাবের আঙুল দিয়ে দেখায়, হালিম তিন আঙুল দিয়ে একটা মার্বেল ধরে ওটার দিকে ছুঁড়ে দেয় –লাগাতে পারে না।
হালিমের মা নাস্তা টেবিলের উপর রেখে খাটের পায়ের দিকে বসেন,
--খাও ভাই, ওর সাথে গল্প করলে সারা বিকেলেও ফুরাবে না।
--খাই আপা, বলে এক কোয়া কমলা মুখে দেয়।
--হালিম, তুমি নাও।
ও একটু লাজুক মুখে মায়ের দিকে তাকায়।
--আচ্ছা, তোমাকেও দিচ্ছি, বলে উনি একটা প্লেটে হালিমকেও দিলেন।
এমনি আলাপচারিতায় কখন যে বিকেলটা পেরিয়ে গেছে, আজানের শব্দে সম্বিৎ ফেরে।
সাবের উঠার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে, হেনা ওকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয়।

দুর্ঘটনাটার পর থেকে হালিম বাইরে খেলার সাথীদের সাথে খুব একটা মিশছে না। আগে গোসল করানো ও দুপুরের খাওয়ার জন্য ওকে খুঁজে হয়রান হতে হতো,এখন ঘরেই থাকে।সাবের প্রায়ই বিকেলে আসে, সাথে একটা না একটা কিছু থাকবেই; উনি বেশ আপত্তি করেন, কিন্তু নতুন ছোট ভাইটার আবদারের কাছে হার মানেন।ওকে হালিমের ব্যাপারটা একদিন বললেন।
--হুম, চিন্তার কথা, কুছ পরোয়া নেই, আমি দেখছি।
বলেই,
--হালিম,হালিম করে ডাকতে থাকল।
পাশের ঘর থেকে ও ছুটে এলো,
--কি মামা?
--ভেসপায় চড়বি?
--সত্যি চড়াবে, বলে হালিম ওর গলা জড়িয়ে ধরে।
প্রথম দিন হালিম একাই ভেসপায় সারা বিকেল চক্কর দিল, এমনকি ওর ছয় বছরের বড় জামিলকেও ওঠার সুযোগ দিল না।সাবের সপ্তাহে দু’এক দিন আসে। তাই হালিমের খেলার সাথী- রুমি,খোকন,কচিদের কাছে এখন হালিমের খুব কদর; ভেসপায় চড়তে হলো তো ওর সম্মতি লাগবে-মামা বলে কথা।পাড়ার বাচ্চা ছেলেদের কাছে ‘সাবের মামা’ কিছু দিনের মধ্যেই খুব প্রিয় পাত্র হয়ে উঠলেন।

কর্মব্যস্ত সপ্তাহের শেষে রোববারটা মঈন খুব উপভোগ করে-পরিবারের সাথে সারা দিন কাটায়, কখনো কখনো আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে যায়। জামিল-হালিম বিকেলে মাঠে খেলতে যায় আর হেনার জানালার পাশের সংগী হয় মঈন,গল্পে-গল্পে সময় কেঁটে যায়।হেনার এখনকার গল্পের অধিকাংশ জুড়ে থাকে তার আদরের প্রিয় ছোট ভাই সাবের।হেনার মাধ্যমেই মঈন জানতে পারে- সাবেরের বাড়ি কুষ্টিয়া, বাবা স্কুল শিক্ষক, মা গৃহিণী, ছোট ভাইটা বাবার স্কুলেই পড়ে। বেতারে চাকুরি করে, মেসে থাকে।সাবেরের জন্য মঈনও কেমন যেন একটা টান অনুভব করে!তাই হেনাকে বলে,
--মেসে খেয়ে খেয়ে নিশ্চয়ই ওর পেটে চর পড়ে গেছে, আগামী রোববার ওকে দুপুরে খাওয়ার দাওয়াত দাও।
হেনার মুখটা হাসিতে ভরে উঠে,
--ঠিক আছে, তবে তোমাকে কিন্তু নিউমার্কেট থেকে ভাল ইলিশ মাছ কিনে দিতে হবে।
হেনার রান্না খুব স্বাদের, ইলিশের হালকা ঝোলের রান্নাটা তো অসাধারণ। কল্পনা করতেই মঈনের জিভে জল এসে যায়।
--তুমি একটা লিস্ট করে দিও, সব নিয়ে আসব।

সাবের আসলো বুধবারে, এ কটা দিন যেন হেনার কাটতেই চাচ্ছিল না। প্রথমে গররাজি হলেও একটু চাপাচাপি করতেই সাবের রোববারের দাওয়াতে রাজী হয়। হেনা ভাইয়ের জন্য অনেক পদের রান্না করল খুব যত্ন করে।সাবের আসল মিষ্টি নিয়ে।খেতে খেতে সাবের রাঁধুনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ।হেনার খাওয়ার টেবিলটা পাঁচ জনের হাসি-আনন্দে ভরে উঠল।
--ও আপা, তোমাকে তো বলাই হয়নি, আমার প্রোমোশন হয়েছে।
হেনা-মঈন দু’জনেই হাসতে হাসতে এক সাথে বলে উঠে,
--খুব ভাল খবর!
--কিন্তু পোস্টিং দিয়েছে, পশ্চিম-পাকিস্তানের করাচীতে।
মঈন উৎসাহ দেওয়ার ভঙ্গিতে,
--অসুবিধা কি, বিয়ে-শাদী করনি, কোন ঝামেলা নেই।কবে যাচ্ছ?
--দুই সপ্তাহ পর, আগামী সপ্তাহ অফিস করব, করাচী যাওয়ার সপ্তাহটা পুরা ছুটি কাটাব।
--বাড়ি যাবে না?
--হ্যা, রোববার দিন ফ্লাইট, বৃহস্পতি-শুক্র দেশের বাড়িতে কাটাব আর সোম-মঙ্গল তোমাদের সাথে।
হঠাৎ হেনা টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ে।
মঈন ওর হাত ধরে,
--উঠছ কেন?
--মাথাটা খুব ধরেছে, বলে হেনা রান্না ঘরের দিকে গেল হাত ধুতে।
মঈন একটু লজ্জিত হয়ে বলে,
--সাবের, তুমি কিছু মনে করো না, বোধ হয় ওর মাইগ্রেনের ব্যথাটা উঠেছে।
--না, না, মঈন ভাই আমি কিছু মনে করিনি।
সাবের তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে উঠে পড়ে।
একটা সুন্দর দুপুরের হঠাৎই যেন অপমৃত্যু হল।মঈন শোবার ঘরে ঢুকে দেখে হেনা পাশ ফিরে শুয়ে আছে।
বিছানার পাশে বসে হেনার কপালে হাত দিয়ে নীচু স্বরে বলে,
--ব্যথা করছে?
--না, বলে একটা অদম্য কান্নায় ওর শরীরটা কেঁপে কেঁপে উঠে।


সোমবার, সাবের ভেসপা থেকে নেমে দু’টো প্যাকেট হাতে করে হালিমদের বাসার দিকে হাটতে থাকে।
এক প্যাকেটে আপার জন্য কালো কাজ করা একটা সুন্দর শাল আর আরেক প্যাকেটে দু’ভাইয়ের জন্য খেলনা গাড়ি।বাসার গেটের কাছে এসে দেখে তালা, ভাবে ওরা কোথাও বেড়াতে গেছে।নীচে নেমে এসে হালিমের বন্ধু খোকনের সাথে দেখা।ওর থেকে জানতে পারল ওরা পাবনা গেছে আজ সকালেই।

রাস্তা ফাঁকা, তবুও সাবের আস্তে চালায়, হেনা আপাদের বাসাটা দূরে সরে যেতে থাকে। একটা দুর্ঘটনার দায় এড়াতে গিয়ে একদিন একটা ছেলে স্নেহের মায়ায় জড়িয়ে যায়, তারপর একটা উপহার দিয়ে সেই মায়ার দায় থেকে মুক্তি পেতে চায়, কিন্তু স্নেহের সে দায় সে এড়াতে পারে না!

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৫

শাহজাহান সুজন বলেছেন: চমৎকার একটা গল্প পড়লাম। পরের গল্পের জন্য শুভকামনা। আর 'ষ্ট্যান্ড' বানানটা 'স্ট্যান্ড' হবে।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ সুজন ভাই।
আপনার কথায় দারুণ ভাবে অনুপ্রাণিত!!!
ভাল থাকুন সব সময়!!!

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৩

জুন বলেছেন: একটা দুর্ঘটনার দায় এড়াতে গিয়ে একদিন একটা ছেলে স্নেহের মায়ায় জড়িয়ে যায়, তারপর একটা উপহার দিয়ে সেই মায়ার দায় থেকে মুক্তি পেতে চায়, কিন্তু স্নেহের সে দায় সে এড়াতে পারে না!
ভাললাগলো আপনার গল্পটি । স্নেহের দায় এড়ানো অসম্ভব ।
+

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
স্নেহের দায় এড়ানো অসম্ভব - আসলেই তাই।

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২

না মানুষী জমিন বলেছেন: ভালো লাগল

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০১

আজিজার বলেছেন: চমৎকার। সবাই যদি এমন হত

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২২

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আজিজ ভাই।
বাস্তব কিন্তু অনেক সময় কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়।

৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৬

রোদেলা বলেছেন: ্খুব গোছানো একটা গল্প পড়লাম।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৫০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভাল থাকুন সব সময়।

৬| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: পড়োবার জন্য সহজ সরল গল্প। ভালো হইছে শামসুল ভাই। ++

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ শতদ্রু ভাই।
অনেক অনেক শুভ কামনা।

৭| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১২

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার গল্প। খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ ভাই

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৩৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।
কষ্ট করে পড়া এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন সব সময়।

৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯

জুনজুন বলেছেন: ভালো লাগল ...সুন্দর গল্প।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ জুনজুন আপা।
ভাল থাকুন সব সময়।

৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
দ্রুত টেনেছেন ৷ঘটনার সাথে বর্ণনার আনুসঙ্গিক পরিবেশের বিস্তৃতি ভেবে দেখতে পারেন ৷বিশেষায়িত বয়স বা শব্দসংখ্যা নির্ধারিত বা শিশুতোষ বিবেচনা হলে লেখকের স্বাধীনতা ৷শুভেচ্ছা ৷

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর ভাই।
আমি ছাত্রাবস্থা থেকেই একটু অলস প্রকৃতির, সর্টকার্ট রাস্তাটা আমার বড়ই পছন্দ-সেই অভ্যাসটা এখনও রয়ে গেছে।
চেষ্টা করব বিস্তারিত লিখতে।
ভাল থাকুন সব সময়।

১০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩২

দীপংকর চন্দ বলেছেন: স্নেহ, মায়া, ভালোবাসার মতো বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া কঠিন ভীষণ মানুষের পক্ষে!!!

ভালো লাগা থাকছে ভাই। অনেক।

অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন।

অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ দীপংকর দা।
আমার সাহিত্যের লাইনে তেমন কোন পুঁজি নেই মানে লেখা-পড়া নেই, তাই আবেগটাকে সম্বল করে সময় পার করছি।
আপনার প্রতিও রইল অনিঃশেষ শুভকামনা।
ভাল থাকুন। সবসময়।

১১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:২৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: শামছুল ইসলাম ,



স্নেহের দায় এড়ানো বেশ কঠিন ।
ভালো লাগলো ছিমছাম গল্পটি ।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:১৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই।

আপনি কষ্ট করে গল্পটা পড়েছেন, এটাই আমার জন্য বিশাল ব্যাপার।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর গল্প। এগিয়েছে দ্রুত, তবে আবেগ গভীর।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আহসান ভাই মনোযোগী পাঠে ও বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: সুন্দর অনেক লেখা আজ কিছুটা পড়ে গেলাম

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।
সুন্দরের বন্দনায় প্রীত হইলাম ।
আপনার আগমনে এই গরীবালয় ধন্য হোক ।

ভাল থাকুন । সবসময় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.