নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ নীল কম্বল

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৮



১।
ব্যাটটা তাহসিনের খুব পছন্দ হয়েছে। কাল বিকেলেই এলিফেন্ট রোড থেকে মা-বাবার সাথে গিয়ে কিনে এনেছে। সপ্তম শ্রেণীতে বেশ ভাল ফলাফল করে অষ্টম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার পুরস্কার এই ব্যাট। বাবা সকালে অফিসে যাবার পরপরই তাহসিন নতুন ব্যাট আর বল নিয়ে খেলতে বেরিয়েছে। রিফাত-রিসাল দুই ভাই সহ বারো জনের ক্রিকেট পাগল কিশোরেরা দুই দলে ভাগ হয়ে অপরিসর কানাগলির মধ্যের রাস্তায় খেলায় মেতেছে। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত মূল রাস্তাটা ধরে কিছুটা পশ্চিমে এগিয়ে ডানে মোড় নিয়ে গলির মধ্যে ঢুঁকে সোজা উত্তরে গিয়ে রাস্তা শেষ,দু’পাশে পাঁচ-পাঁচ দশটা বাড়ি। তাহসিন খেলায় তেমন একটা পারদর্শী নয়, কিন্তু নিজের ব্যাটের কল্যাণে আজ ব্যাটিং-বোলিং দু’টোতেই ভালই সুযোগ পাচ্ছে। স্কুলেও ওর অবস্থাটা এরকমই, তাই স্কুলে ব্যাটটা নিয়ে যাওয়ার তাহসিনের খুব ইচ্ছা। কিন্তু ওর বাবা হাবিব সাহেবের আপত্তির কারণে আপাততঃ ব্যাটটা স্কুলে নেওয়া হচ্ছে না। এমনিতে হাবিব ছেলের কোন বিষয়ে না করেন না, কারণ তাহসিন এমন কোন কাজে এখনো জড়ায়নি যাতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তবে অনেক সময় মানুষ না চাইলেও অনেক অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে যায়। তাই একটু সাবধানতা। খেলাটা বেশ জমে উঠেছে এমন সময় বারান্দা থেকে তাহসিনের মা রেহনুমার ডাক,
-তাহসিন,তাহসিন।
উনি দোতালার বারান্দা থেকে ঘাড় ঘুরিয়ে উত্তর দিকে ছেলেকে খুঁজছেন, রিফাতকে পেছন থেকে দেখতে পাচ্ছেন, বল করার জন্য ছুটছে।
-এই রিফাত, এই রিফাত।
বল শেষ করে ফিরে রিফাত বারান্দায় তাহসিনের মাকে দেখে তাহসিনকে ডেকে দেয়।
তাহসিনের স্কুল দু’টো শাখায় বিভক্ত - প্রভাতি ও দিবা; ও দিবা শাখায় – ১২:৩০ থেকে ০৫:০০।
-আসছি মা,
বলে তাহসিন ব্যাট-বল নিয়ে স্কুলে যাবার জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও খেলায় ইতি টানে।

মাকে বলে-কয়ে কিছুদিনের মধ্যেই তাহসিন ব্যাট স্কুলে নিতে শুরু করল। টিফিন ফিরিয়ডে ওর সহপাঠী ওকে খেলায় নিচ্ছে। বেশ ভালই চলছে তাহসিনের দিনকাল। তবে প্রাইভেট পড়ার চাপটা এই বছর একটু বেশী। জে এস সি-তে A+ পাওয়ার জন্য অন্যান্য মায়ের মত তাহসিনের মাও স্কুলের ক্লাসের আগে-পরে বিভিন্ন শিক্ষকের বাসায় চরকির মত ঘুরছে।স্বাভাবিক ভাবেই খরচ বেড়ে যাওয়ায় রেহনুমা মাঝে মাঝে ছেলেকে নিতে ছুটির সময়টা আসে না, রিকশা ভাড়াটা সাশ্রয় হয়। এমনি আরও অনেক বুদ্ধি করে রেহনুমাকে সংসার চালাতে হয়। হাবিবের এসব নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই, বললে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে দেয়। বিকেল ০৫:৩০ হয়ে গেছে, এখনো তাহসিন স্কুল থেকে ফেরেনি, রেহনুমা একটু চিন্তিত হয়ে তাহসিনের সহপাঠী আইয়ানের মাকে মোবাইলে ফোন দেন। উনি ফোন ধরেন, কুশল বিনিময় করে আইয়ানের কথা জিজ্ঞেস করেন রেহনুমা। তাহসিনকে দেখেছে কিনা জানতে চায়। ওপাশ থেকে আইয়ানের মা বলেন,
- আপা, তাহসিন ওর ব্যাটের জন্য স্কাউটদের রুমের দিকে গেল, আর আমি আইয়ানকে নিয়ে উদ্ভাস কোচিংয়ে আসলাম।
- ওর ব্যাট কে নিয়েছিল জানেন?
- আপা, আইয়ানের সাথে কথা বলেন,
বলে উনি আইয়ানের কানে মোবাইলটা ধরেন।
আইয়ান খুব চঞ্চল স্বভাবের আর দ্রুত কথা বলে।
রেহনুমা অনেক কষ্টে আইয়ানের কথা থেকে বুঝতে পারল যে, ক্লাস নাইনের বড় ভাইরা খেলার জন্য টিফিন পিরিয়ডে তাহসিনের ব্যাটটা নিয়ে ছিল এবং যিনি নিয়েছিল উনি স্কাউট করেন।রেহনুমা দ্রুত স্কুলে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করেন এবং আইয়ানের মাকে জানান।
-আপা, আমরাও আসি?
কাউকে বিরক্ত করতে রেহনুমার ইচ্ছে করে না।কিন্তু এই সময়ে কেউ একজন সাথে থাকলে ভাল হয় বুঝতে পেরে সায় দেন।স্কুল গেটে তিনজন মিলিত হবেন বলে ঠিক করেন।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এই সময়টায় বিকেলে হাল্কা ঠান্ডার সাথে বসন্তের মৃদুমন্দ বাতাসে রিকশায় রেহনুমার একটু শীত শীত করে, তাড়াহুড়ায় শালটা গায়ে জড়ানো হয়নি, মনটা খুব অস্থির লাগে। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্কুল গেটে পৌছে আইয়ান আর ওর মাকে দেখে একটু স্বস্তি বোধ করেন। তিন জন মিলে স্কুল গেট পেরিয়ে স্কাউটদের দালানের দিকে পা চালায়। দূর থেকে তাহসিনকে দেখতে পেয়ে রেহনুমা হাফ ছেড়ে বাঁচে, যা দিনকাল পড়েছে! আইয়ান দৌড়ে সহপাঠী-বন্ধু তাহসিনের কাছে ছুটে গেল।আইয়ান হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞেস করে,
-কিরে,ব্যাট পাইছিস?
তাহসিনের কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। ও শুধু মাথা এদিক-ওদিক নেড়ে না সূচক জবাব দেয়।
-দেয় না কেন? ভাইয়াটা কোথায় লুকাইছে তোর ব্যাট?
তাহসিন ওর এই বন্ধুটার আন্তরিকতার জন্য যেমন খুব পছন্দ করে, আবার বাচালতার জন্য মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে। ও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে যায়। আইয়ান ডান হাত দিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরে, কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে বলে,
-মন খারাপ হইছে?
ব্যাট হারানোর চাপা ক্ষোভটা বন্ধুর কথায় কিছুটা কমে গেল।
তাহসিন মুখে কিছু বলতে পারল না, মনে মনে বলল,
-ধন্যবাদ বন্ধু!
ছেলের ফর্সা সুন্দর মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে, রেহনুমার মায়া হলো।নিজেকে খুব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেন, মৃদু কন্ঠে বললেন,
-এখানে কার জন্য অপেক্ষা করছ?
-ভাইয়ারা ভিতরে মিটিং করছে, তাই অপেক্ষা করছি।
-কতক্ষণ?
প্রায় পৌনে এক ঘন্টা হবে, কিন্তু মা রেগে যাবে বলে তাহসিন কমিয়ে বলে,
-বিশ মিনিট।
-চলো দেখি, ওদের মিটিং কত দূর,
বলে স্কাউটের পর্দা টাঙানো দরজার দিকে এগিয়ে যান, ছেলেকে তার ভাইয়াকে নাম ধরে ডাকতে বলেন।
তাহসিন কিছুটা ইতস্ততঃ করে ডাকে,
-রনি ভাই, রনি ভাই।
কোন সাড়া নেই, রেহনুমা ছেলের দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকালেন।
এবার তাহসিন একটু জোরে আবার ডাকে,
-রনি ভাই, রনি ভাই।
কিছুক্ষণ পরই বেটে একটা ছেলে বেরিয়ে আসল,তার পিছনে অপেক্ষাকৃত লম্বা আরও দু’জন।
দুই জন মার উপস্থিতিতে তাদের দুই সন্তানকে তাচ্ছিল্য ভরে রনি বললোঃ
-কি চাস তোরা?
তাহসিন বলে,
-ভাইয়া, আমার ব্যাটটা।
-ব্যাট তো আমি মাঠেই রেখে এসেছি, কার কাছে যেন দিলাম?

রেহনুমা বলে,
-বাবা, আর একবার মনে করার চেষ্টা করে দেখে তো কাকে দিয়েছিলে?
সবাই কিছুক্ষণ চুপ।
-না,অ্যান্টি মনে পড়ছে না।
রেহনুমা একটু ভাবেন, তারপর বলেন,
-ঠিক আছে বাবা, তোমার মনে পড়লে তাহসিনকে জানিও্।
ওরা ওখান থেকে চলে আসার জন্য পা বাড়ায়।
পিছন থেকে তিন বড় ভাইয়ার সম্মিলিত ব্যঙ্গাত্মক হাসি ওরা শুনতে পায়।

২।
ব্যাট হারানোর সেই ঘটনার পর থেকে তাহসিন ক্রিকেট খেলার প্রতি আগ্রহটা হারিয়ে ফেলে।অনুমতি নিয়ে বাবার ডেস্কটপ কম্পিউটারটা ব্যবহার করতে শুরু করে এবং কিছুদিনের মধ্যেই পারদর্শী হয়ে উঠে।অবসর সময়টা বেশ ভালো কেঁটে যায়।হঠাৎ একদিন হার্ড ডিস্কটা নষ্ট হয়ে যায়।বেশ অনেকদিন যাবত কম্পিউটারটা ওভাবেই পড়ে আছে।হাবিব অফিসের ল্যাপটপ ব্যবহার করায় ওটা আর মেরামত করা হচ্ছে না।তাই তাহসিনের চমৎকার ফেসবুক স্ট্যাটাস গুলো মিস করছে হাবিব।তাহসিনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হাবিবও ওর বন্ধু।মার কথাতেই তাহসিন বাবাকে রিকোয়োস্ট পাঠায়।তাহসিনের পোস্ট গুলো হাবিব পড়ে- ওকে, ওর ফেসবুক বন্ধুদের বুঝতে চেষ্টা করে;মাঝে মাঝে লাইকও দেয়।বাসায় ছেলের সাথে আগে ক্রিকেট ও রাজনীতি নিয়ে আলাপ হতো, এখন দু’টো নতুন বিষয় যোগ হয়েছে-বিতর্ক ও পরিবেশ।ওদের স্কুলের বিতর্ক দলে ও জায়গা করে নিয়েছে।বিতর্কের বিষয় নিয়ে পিতা-পুত্র প্রাণবন্ত আলোচনায় মেতে উঠে।পরিবেশ নিয়ে সোচ্চার বিভিন্ন সাইটের ব্যবহারকারী হিসাবে তাহসিন নিবন্ধিত হয়ে পরিবেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারে এবং বাবার সাথে তা ভাগাভাগি করে।অবশ্য বিতর্ক নিয়ে তাহসিন ওর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মামাত ভাই মাহদীর সাথেও প্রায়ই মেতে উঠে, মাহদী ওর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক করে।বিতর্ক করার সুবাদে মাহদীর ব্যাংকক যাওয়ার সুযোগ আসলো।ব্যাংকক যাওয়ার আগে এক বিকেলে তাহসিনদের বাসায় দেখা করতো আসল।তাহসিনকে বললো,
-তোর জন্য কি আনব?
কারো কাছ থেকে কিছু চাইতে তাহসিনের লজ্জা লাগে, ও হাসে।
-তোর কিছু লাগবে না?
চকলেট তাহসিনের খুব প্রিয়।
-চকলেট এনো।
-ফুপু, আপনার জন্য?
-তুই ছা্ত্র মানুষ,যখন চাকরি করবি,তখন দিস।তুই কি কিনবি?
-আব্বাকে রাজী করিয়েছি, একটা ল্যাপটপ কিনব।মনিটরটা নষ্ট,সিপিইউটা তাহসিনকে দিব।
তাহসিন খুশীতে লাফিয়ে উঠে চিৎকার করে,
-ভাইয়া, You are great!
রেহনুমা উঠে দাড়িয়ে রান্না ঘরের দিকে যেতে যেতে বলে,
-তোর জন্য নাস্তা করে নিয়ে আসি।
রান্না ঘরে যেয়ে সামনের উঁচু বাড়িটার ফাঁক দিয়ে এক চিলতে আকাশের দিকে তাকিয়ে রেহনুমা অন্যমনস্ক হয়ে যায়-কয়েকদিন আগে মোবাইলে কথায় কথায় নষ্ট কম্পিউটারটার কথা ভাবীকে বলেছিল।ভাবী নিশ্চয়ই ভাইকে বলে মাহদীর ল্যাপটপ কেনার জন্য রাজী করিয়েছে,কেননা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই মাহদী ল্যাপটপ চাচ্ছিল,ভাই রাজী হচ্ছিল না।বিয়ের পর থেকে ভাবী ওদের জন্য এমন অনেক কিছুই করেছে,একটা কৃতজ্ঞতা বোধ ওর মনটাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে, মামাত-ফুফাত দুই ভাইয়ের খোশ গল্প ওর কানে অস্পষ্ট শব্দ হয়ে বাজে।

৩।
কাঁধে ল্যাপটপের ব্যাগ ঝোলানো, দুই হাতে ফল-মূল,বিস্কুট,চানাচুরের প্যাকেট নিয়ে বাসার বেল চাপে হাবিব।
তাহসিনের গলা শুনতে পায়,
-কে?
-আমি।
তাহসিন দরজা খুলে সালাম দেয়,
-আসসালামুআলাইকুম।
-ওআলাইকুমুসসালাম, বলে হাবিব ঘরে ঢেঁকে।
রেহনুমা এগিয়ে এসে ওর হাত থেকে জিনিস গুলো নিতে নিতে বলে,
-কেনা-কাটা করতে গেলে তোমার তো হুশ থাকে না, এক গাঁদা কিনে নিয়ে আস।
স্ত্রীর কথায় কান না দিয়ে ল্যাপটপটা সোফায় রেখে এক গাল হাসি দিয়ে হাবিব বলে,
-একটা ভাল খবর আছে।
-কি?
-আমাদের কোম্পানি প্রোফিটের টাকাটা আজ সবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে।
ছেলের সামনে রেহনুমা টাকা-পয়সা নিয়ে আলোচনা করতে চায় না।তাই স্বামীকে তাড়া লাগায়,
-খুব ভাল খবর,মাগরিবের সময় চলে যাচ্ছে,তুমি কাপড়-চোপড় খুলে নামাজ পড়ে নাও।
তাহসিনের তর সইছিল না মাহদীর কথাটা বলার জন্য।
-বাবা,মাহদী ভাই এসেছিল দেখা করতে।
-তাই, ফ্লাইট কবে?
-আগামী বৃহস্পতিবার।ব্যাংকক থেকে ল্যাপটপ কিনবে আর আমাকে ভাইয়ার সিপিইউটা দিবে বলেছে।
-একেই বলে মামাত ভাই, আমাদের তেমন কোন মামাত ভাইটাইও ছিল না!
রেহনুমা বাপ-বেটার গল্পে ছেদ টানার জন্য ছেলেকে তাগাদা দেয়,
-তাহসিন,পড়ার টেবিলে যাও।

নামা্জ,নাস্তা সেরে চা খেতে খেতে হাবিব-রেহনুমা বেডরুমে গল্প করতে করতে টিভি দেখে, পাশের ঘরে তাহসিন পড়ে। এক সময়ের আড্ডাবাজ হাবিব অফিসের বাইরে যে টুকু সময় পায়,তা পরিবারের সাথেই কাঁটায়।অনেক টাকা উপার্জন করা হয়ে উঠেনি,টানা-পোড়নের সংসারে স্ত্রীকে সময় দিয়ে সম্পর্কটা দৃঢ় রাখতে চায়।লাখ তিনেক টাকা লভ্যাংশ হিসাবে এক সাথে পেয়ে রেহনুমাকে কিছু একটা দিতে ইচ্ছে করছে।তাই একটু ঘুরিয়ে বউয়ের কাছে কথাটা তোলে,
-কম্পিউটারের খরচটা যখন বেঁচেই গেল,তখন আরো কিছু টাকা যোগ করে তুমি কিছু কিন।
-দেখ অনেক কিছুই তো কিনতে ইচ্ছা হয় কিন্তু
হাবিব বউয়ের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলে,
-তুমি আর কিন্ত কিন্তু করো নাত,অত হিসাব করলে কিছু হয় না।
-তুমি তো বলেই খালাস,সংসারটা চালাতে হয় আমাকে।
বউয়ের এই এক কথায় হাবিব কুপোকাত হয়ে যায়।চুপচাপ মনমরা হয়ে বসে থাকে।রেহনুমার মায়া হয়,বলে
-ঠিক আছে,আগামী শুক্রবার সীমান্ত স্কয়ারে যাব।

তাহসিন লম্বায় ওর বাবাকেও ছাড়িয়ে গেছে,এক রিকশায় তিনজন উঠলে বেশ কষ্টই হয়।
তাই বিকেলে তাহসিন কাছেই ওর খালার বাসায় থেকে গেল, কলেজ পড়ুয়া মেহজাবীন আর মেডিকেল পড়ুয়া মীম-এর সাথে অনেকদিন পর আ্জ আড্ডা হবে।স্বামী-স্ত্রী দু’জন একটা রিকশা নিয়ে সীমান্ত স্কয়ারে পৌছাল।শুক্রবার ছুটির দিন বলে মার্কেটে বেশ ভীড়।স্বর্ণের দামটা এখন বেশ কম,তাই রেহনুমা একটা স্বর্ণের দোকানে ঢুঁকে।সাজানো হাতের বালা আর গলার লকেট গুলোয় চোখ বুলায়।বেশ দেখে শুনে এক জোড়া বালা আর একটা লকেটের ডিজাইন পছন্দ করে হাবিবকে দেখায়,সিম্পল ডিজাইনটা ওরও পছন্দ হয়।দরদাম করে এক লাখ টাকার বিল আসল,সেলসম্যান কিছু অ্যাডভান্স চাইল।রেহনুমা ওর ভাবীর সাথে প্রায়ই এই দোকানে আসে,সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে অ্যাডভান্স না নেওয়ার অনুরোধ করল সেলসম্যানকে।দুই সপ্তাহ পরে ডেলিভারির সময় পুরো টাকাটা দিতে হবে।
কোন তারিখ হাবিবের তেমন মনে থাকে না।তাই বালা-লকেট ডেলিভারির তারিখটা কোন একটা গুরুত্বপূর্ণ তারিখের সাথে মেলানোর চেষ্টা করল এবং বাড়ি-ভাড়া দেওয়ার তারিখের সাথে মিলে গেল।গত আট বছর ধরে এই ভাড়াবাড়িতে আছে, সাত তারিখের পরে কোন দিন ভাড়া দিয়েছিল বলে মনে করতে পারে না।
বিয়ের এত গুলো বছরেও রেহনুমাকে বিশেষ কিছুই দেওয়া হয়নি,তাই দেবার আনন্দে বিভোর হাবিবের দিনগুলো দ্রুতই পেরিয়ে তিন তারিখ এসে পড়ে।বাসা ভাড়া ও রেহনুমার উপহার বাবদ এটিএম বুথ থেকে কত তুলবে সন্ধ্যায় চা খেতে খেতে বউকে জিজ্ঞেস করে।
-ও হাবিব,তোমাকে তো কথাটা বলাই হয়নি।
-কি কথা,রেহনুমা।
-আমি বালা-লকেটের অর্ডারটা দোকানে গিয়ে বাতিল করে দিয়ে এসেছি।
হাবিব কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে।

৪।
পরিবেশ বিষয়ে তাহসিনের আগ্রহটা দিন দিন বেড়েছে।দু’তিনটা পরিবেশ উপর লেখা গল্পও পাঠিয়েছে পরিবেশ বিষয়ক সাইটে এবং পাঠাবার আগে বাবাকে দেখিয়েছে।এভাবেই স্কুল পেরিয়ে কলেজে এসে The Climate Reality Project আয়োজিত ভারতের নয়াদিল্লির প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করার জন্য অন-লাইনে আবেদন করে। অনুষ্ঠিত হবে ২২-২৪, ফেব্রুয়ারি ২০১৫,উদ্বোধন করবেন প্রাক্তন ডেমোক্রেট উপ-রাষ্ট্রপতি আল গোর,মূল প্রতিপাদ্য “নবায়নযোগ্য শক্তি”।পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বিষয়টা নিয়ে নেটে বেশ ঘাটাঘাটি করে তাহসিন অনেক কিছু জানতে পারল।একদিন ওর অন-লাইন আবেদনে সাড়া দিয়ে সংস্হাটি ওকে ইমেইল করল,আনন্দে ও আত্মহারা হল।তারপর পুরো মেইলটা ভাল করে পড়ে মনটা দমে গেল।ওরা শুধু হোটেলে অনুষ্ঠান চলাকালীন খরচ বহন করবে;থাকা-খাওয়া,প্লেন ভাড়া সব আমন্ত্রিত অতিথিকে বহন করতে হবে।শুধু তাই না,তাহসিন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় সাথে একজন অভিভাবক থাকতে হবে-মানে দ্বিগুন খরচ।আগামী পাঁচদিনের মধ্যে ওকে জবাব দিতে হবে মেইলের-ও যাবে কি না!ও রাজী হলে ওরা আমন্ত্রণ পত্র পাঠাবে। বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে যারা আমন্ত্রণ পেয়েছে,এমন অনেকের সাথে মেইলে ওর যোগাযোগ হলো।এমআইএসটি থেকে সদ্য পাশ করা সাদমান ভাইয়ের সাথে এই সূত্রেই পরিচয়,তারপর ফেইসবুকেও বন্ধুত্ব হলো।উনি আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত The Climate Reality Project-এর প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছিলেন।উনি তাহসিনকে নয়াদিল্লির অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহ যোগালেন।
সেদিন শুক্রবার দুপুরে খাওয়ার পর বাবা যথারীতি তাহসিনের ঘরের বিছানায় দিবা নিদ্রায় আচ্ছন্ন,বেডরুমে তাহসিন মাকে পুরো ব্যাপারটা আধা ঘন্টা যাবত বুঝাল।কলেজে প্রতি সপ্তাহে ক্লাস টেস্ট,খরচ সবকিছু চিন্তা করে রেহনুমা ছেলেকে মানা করে,ওর মন খারাপ হলেও মেনে নেয়।হাবিবকে ঘুম থেকে ডেকে রেহনুমা নয়াদিল্লির ব্যাপারটা খুলে বলল এবং নিজের মতামতটাও জানাল।কিছুক্ষণ চুপ থেকে হাবিব বলল,
-দেখ রেহনুমা,এরকম সুযোগ তো সবসময় আসে না।ওখানে গেলে ওর পড়ালেখার যে টুকু ক্ষতি হবে,সেটা ও পরে বেশী পরিশ্রম করে পুষিয়ে নিবে।
-ঠিক আছে,তোমার কথা মানলাম,কিন্তু দু’জনের সমস্ত খরচ তো কম নয়।
-হয়তো একসময় আমাদের অনেক টাকা হবে,কিন্তু এই ধরনের সুযোগ নাও আসতে পারে।
-ঠিক আছে,ও যাবে।কিন্তু তোমাকে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে ওর সাথে যেতে হবে।
-কেন?তুমি তো সারাদিন ওর সবকাজে ওকে সংগ দাও,ওর সাথে দিল্লি ঘুরে আস।
-আমি তাহসিনের থেকে জানতে পেরেছি,বাংলাদেশ থেকে যারা দিল্লির কনভেনশনে যাবার আমন্ত্রণ পেয়েছে, দু’একজন বাদে, সবাই ছেলে।সুতরাং তুমি গেলেই সুবিধা হবে।
মার জন্য তাহসিনের মনটাও যেন কেমন করে।মার হাত ধরে আব্দারের সুরে বলে,
-মা,চল না আমরা তিনজনই যাই।
হাবিব ছেলের কথায় সায় দিয়ে,
-উত্তম প্রস্তাব,খুব মজা হবে।
রেহনুমা হাবিবকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-দেখ হাবিব,তাহসিনের কলেজে,প্রাইভেট পড়ায় স্কুলের চেয়ে খরচ অনেক বেশী। তাছাড়া পাশ করার পর ওর ভর্তির জন্যও আমাদের হাতে কিছু টাকা থাকা দরকার।
তাহসিনও এই বয়সেই বুঝতে শিখেছে,নিষ্ঠুর বাস্তবতা অনেক আনন্দ ছিনিয়ে নেয়।

৫।
নয়াদিল্লির ভিসা ফর্ম জমা দেওয়া,ভিসার সাক্ষাতের জন্য হাজির হওয়া-সবকিছুতে এত জটিলতা ছিল যে হাবিব ভিসা পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিল।আর ১৯ শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যখন দু’জনের ভিসা হাতে পেল,ততক্ষণে সমস্ত ভারতীয় প্লেনের টিকিট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, শুক্র-শনি বারও বন্ধ,রবিবার সম্মেলন শুরু হবে।ভিসা পাওয়ার পরও যদি টিকিটের জন্য যাওয়াটা বাতিল হয়,এই আশংকায় হাবিবের মন খারাপ হয়ে যায়।টিকেট রিজার্ভেশন দেওয়া ছিল তাহসিনের খালাত ভাইয়ের এক বন্ধুর পরিচিত ট্রাভেল এজেন্সিতে,বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টার মধ্যে কনফার্ম করলে প্রতিটি টিকেটের মূল্য হতো ৩৫,০০০ টাকা।সন্ধ্যার পর সেই টিকেটের দাম চাচ্ছে ৫২,০০০ টাকা।দরদাম করে ৪৮,০০০ রফা হল- ১ম ধাক্কায় ৯৬,০০০ টাকা বেরিয়ে গেল।হাতে একদিন সময় রেখে ২১ তারিখ যাত্রা শুরু,২৫-২৬ ভারতের দর্শনীয় স্থান ঘোরাঘুরি,২৭ তারিখ গৃহে প্রত্যাবর্তন।

রেহনুমা ওদের সাথে যাচ্ছে না।তারপরও ওর আগ্রহের কমতি নেই।বান্ধবী,আত্মীয়-স্বজন যারা ভারত গিয়েছে,সবার কাছ থেকে খবর সংগ্রহ করে।রেহনুমার বোন-দুলাভাই বেশ কয়েকবার ভারত ঘুরে এসেছে এবং প্রতিবার ওদের জন্য কিছু না কিছু এনেছে।তাই উনাদের কথাতেই আগ্রার তাজমহল আর জয়পুর ঘুরে দেখার পরিকল্পনা করা হলো।রেহনুমা ওর বোনের কাছে জানতে চাইল,
-তোর জন্য কি আনবে?
-জয়পুরের কম্বল খুব সুন্দর,ওরা রাজাই বলে, পারলে হাবিবকে একটা আনতে বলিস।
-কি রংয়ের?
-লাল।
রেহনুমা তুলার ভারী লেপের চেয়ে পাতলা কম্বল পছন্দ করে। ওর ভাবীর বাসায় দেখেছিল, নীল রংয়ের পাতলা সুন্দর কম্বলটা ওর চোখের সামনে ভেসে উঠে, ভাবীর ছোট বোন আমেরিকা থেকে পাঠিয়েছিল। ঢাকায় বেশ কয়েকটা মার্কেটে খুঁজে দেখেছে, আছে কিন্তু ওর পছন্দ হয়নি।
রেহনুমার দীর্ঘ বিরতিতে মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে আপার অসহিষ্ণু কন্ঠ,
-কিরে, শুনতে পাচ্ছিস?
-হ্যাঁ, হাবিবকে তোদের জন্য একটা লাল কম্বল আনতে বলব।
কলিং বেলের শব্দে রেহনুমা বোনের সাথে কথা শেষ করে,
-আপা, কে যেন এসেছে, এখন রাখি।
দরজার কি হোল দিয়ে দেখল, হাবিব-তাহসিন, ওরা ওষুধের দোকান থেকে কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে গিয়েছিল দিল্লি ভ্রমণের জন্য। ও দরজা খুলে দেয়, জানায় আপা ফোন করেছিল।হাবিব বলে,
-কি কথা হল?
-একটা লাল কম্বল আনতে বলল জয়পুর থেকে।তুমি,তোমার ছেলে-দু’জনের সামনেই বলছি,যেন ভুল না হয়।
হাবিব বেশ খোশ মেজাজে আছে,দিল্লি যাবার আগেই বাদশাহী হাব-ভাব ওর উপর ভর করেছে।রেহনুমার সামনে মাথাটা একটু নুইয়ে হাত নাড়িয়ে হাবিব বলল,
-জ্বি মহারাণী, আপনার আদেশ শিরোধার্য।বান্দা হাজির, আপনার কিছু চাই?
-হয়েছে,তোমাকে আর ঢং করতে হবে না।
-ঠিক আছে,সিরিয়াসলি বলছি,কি চাও?
-নীল কম্বল।

৬।
অনেক সমস্যারই কিছু ইতিবাচক দিক থাকে।এই যেমন ভিসা জটিলতার কারণে হাবিব-তাহসিনের দিল্লিগামী অনেকের সাথে ভাল পরিচয় হয়ে গেছে।তাই দেশের বাইরে হাবিবের প্রথম যাত্রাটা কিছু তরুণের সান্নিধ্যে চমৎকার কাটল।দিল্লি এসে সবাই পুরনো দিল্লির পাহাড়গঞ্জের আশে-পাশের সস্তা হোটেলে উঠল,যদিও ওদের ক্লাইমেট প্রশিক্ষণ ভ্যেনু অভিজাত নতুন দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেলে।হোটেলে পৌছে ব্যাগ রেখে বাইরে এসে হাবিব-তাহসিন দু’টো সীম কিনে,ফোন করে ঢাকায় রেহনুমার সাথে কথা বলে ওরা দু’জন।অযথা কেনা-কাটা করে টাকা নষ্ট না করার জন্য হাবিবকে অনুরোধ করে রেহনুমা।সব শুনে তাহসিন বাবাকে বলে,
-বাবা,মার জন্য অবশ্যই ভাল কিছু কিনতে হবে।
হাবিবও মনে মনে তাই ঠিক করে রেখেছিল।
-ঠিক আছে বাবা।
ভাবে,মার প্রতি ছেলের এই ভালবাসা যেন অটুট থাকে।
দুপুরের খাওয়া সারতে বিকেল হয়ে গেল।হোটেলের লবিতে বসে বাপ-বেটা ভাবছে কোথায় যাওয়া যায়?এমন সময় মফিজ হাজির,এই হোটেলেই উঠেছে,আগামীকালের ক্লাইমেট প্রশিক্ষণে সেও আমন্ত্রিত।ঢাকা বিমান বন্দরেই পরিচয় হয়েছে,মহাখালী আইসিডিডিআরবিতে আছে।ওদের অভিপ্রায় জানতে পেরে বলল,
-চলেন লাল কেল্লা দেখে আসি?
মফিজ কয়েক বছর দিল্লি ছিল,তাই এই শহর ওর নখদর্পণে,হিন্দিটাও চমৎকার বলে।
লাল কেল্লায় যেয়ে ওরা তিনজন ছবি তোলে,ঘুরে বেড়ায়-হাবিবের খুব ভাল লাগে।লাল কেল্লার ইতিহাস নিয়ে লাইট এন্ড সাউন্ড শো হয় সন্ধ্যার পর হবে।হাতে অনেকটা সময় থাকায় মফিজ ওদের নিয়ে যায় দিল্লি জামে মসজিদে।খুলনা বাগেরহাটের ছেলে মফিজ স্মৃতিচারণ করে, অনেক দিন সন্ধ্যার পর এর প্রাঙ্গণে চিৎ হয়ে শুয়ে তারায় ভরা আকাশ দেখেছে।হাবিব ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থাকে,বিদেশ বিভূঁইয়ে নিঃসঙ্গ এক তরুণের বেদনার ছবিটা কল্পনা করতে চেষ্টা করে।
ফিরে এসে লাল কেল্লার উন্মুক্ত প্রান্তরে আলো আঁধারি আর জলদ গম্ভীর কন্ঠের অপূর্ব সমাহারে হাবিব যেন হারিয়ে যায় মুঘল ইতিহাসের সেই দিন গুলোতে-সম্রাট শাহজাহান যমুনার তীরে ১৬৩৮ সালে দুর্গের গোড়াপত্তন করেন এবং গৌরবোজ্জল অধ্যায়ের সূচনা করেন।পরিশেষে তারই বংশের শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরকে এই দুর্গে ১৮৫৮ সালে ইংরেজরা অপমানজনক বিচারের মাধ্যমে বার্মায় নির্বাসন দেন।তারপর কত বন্ধুর পথ পরিক্রমায় জওহর লাল নেহরু এখানে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করে সেই অপমানের যবনিকা টানেন।শো শেষে বেরিয়ে দেখে তখনও কয়েকটা শালের দোকান খোলা।মফিজ ওর বোনের জন্য একটা শাল কিনল।হাবিবেরও একটা শাল পছন্দ হলো রেহনুমার জন্য,তাহসিনের সম্মতিতে হাবিবও কিনল।
পরদিন সকাল সাতটায় ওরা তিনজন রওনা হলো হোটেলের উদ্দেশ্যে,অনুষ্ঠান শুরু হবে আটটায়।সিএনজি থেকে নেমে হাবিব ভাড়া মিটিয়ে দেয়।মফিজ ম্যানিব্যাগ বের করে ভাড়া শেয়ার করে।হাবিব নিতে চায়না
কিন্তু ওর জোরাজুরিতে শেষে নেয়।ওর মনোভাবটা হাবিব বুঝতে পারে,কারো কাছে ঋণী থাকতে চায় না।
হোটেলের ভিতরে প্রবেশ করে হাবিবের খুবই ভাল লাগল।নানা বয়সের নানা দেশের নারী-পুরুষের উচ্ছল পদচারণায় হোটেলটাকেই ওর জীবন্ত মনে হলো।বিভিন্ন ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সবাই আলাপে মশগুল,তাহসিনকেও একটা জটলায় দেখল।হাবিব চা শেষ করে উৎসবমুখর অনুষ্ঠানটাকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পিছনে ফেলে বাইরে বেরিয়ে আসে।
রেহনুমাকে একটা ফোন করে তাহসিনের কথা জানায়।একটা সিএনজি ঠিক করে কুতুব মিনার,হুমায়ুনস টম্ব,ঈশা খাঁ টম্ব ঘুরে দেখার জন্য।মোবাইলের চার্জের চিন্তা মাথায় রেখে ছবি তুললো,রেহনুমাকে দেখাবে।ওর অভাবটা এই একা ঘুরে বেড়ানোর সময় আরো বেশী করে মনে হয়।
মেট্রোরেল,বাস যাতায়াতের জন্য দ্রুত ও সস্তা।হাবিব-তাহসিন দু’জনেই মেট্রোরেলের টিকিট কিনেছে।তাহসিন সারাদিন কাটায় ক্লাইমেট প্রশিক্ষণে আর সন্ধ্যার পর ভাইয়াদের সাথে দিল্লির দর্শনীয় স্থান,মার্কেটে ঘুরে বেড়ায়।হাবিব মেট্রো,বাসে চড়ে আকসার ধাম মন্দির,ইন্ডিয়া গেট,ন্যাশনাল মিউজিয়াম নিউ দিল্লি ঘুরে ঘুরে দেখল,ছবি তুলল।
আগ্রা ও জয়পুর যাওয়ার জন্য হাবিব দু’জনের জন্য পর পর দু’দিনের সিট বুকিং দিল একটা ট্রাভেল এজেন্সিতে -দুই জায়গাতেই সকাল ছ’টায় গাড়ি ছাড়বে।জয়পুরের ভাড়ার টাকাটা আগ্রা থেকে ফেরার পর দিতে চেয়েছিল কিন্তু এজেন্সির লোকটা রাজী হয়নি।কারণ আগ্রা থেকে ফিরতে বেশ রাত হবে এবং তখন এজেন্সিও বন্ধ থাকবে।
আগ্রা ভ্রমণের বাসটা দেখে হাবিবের মনটা খারাপ হয়ে গেল,ভাঙ্গাচোরা ঢাকার লোকাল বাসের মত,অতচ ওকে ভলভো এসি বাসের ছবি দেখিয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নিয়েছে।কিন্তু বাসে উঠে আবার মনটা ভাল হয়ে গেল,ক্লাইমেট রিয়েলিটি প্রোজেক্টের দশজনের একটা দলও এই বাসের যাত্রী,দেশের বাইরে দেশের মানুষের মুখ কত যে প্রিয়!বাসে প্রায় চল্লিশ জন যাত্রী, এত গুলো লোককে সামাল দিতে বুঁড়ো গাইডকে যথেষ্ট বেগ পেতে হল।যে তাজমহল স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মুগল সম্রাট শাহজাহান ২০ হাজার শ্রমিকের ২২ বছরে পরিশ্রমে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন,তাড়াহুড়ো করে গাইড তা শেষ করলেন মাত্র এক ঘন্টায়।হাবিবের তৃপ্তি মেটে না, কিন্তু রেহনুমার জন্য দু’টো শাড়ি কিনতে পেরে বেশ ভাল লাগল।অবশ্য তাহসিনের এত খুঁটিয়ে দেখার ফুরসত নেই,ওরা এ যুগের ছেলে,অনিন্দ্য সুন্দর তাজমহলের সাথে তোলা ছবি গুলো কখন ফেসবুকে আপলোড করবে সেই উত্তেজনায় অস্থির।
আকবরের নির্মিত আগ্রা ফোর্ট থেকে তাজমহলকে দূর থেকে চোখের জলে চেয়ে চেয়ে দেখেছেন পুত্র আওরঙ্গজেবের হাতে বন্দী শাহজাহান জীবনের শেষ ক’টা বছর। উজ্জল-উচ্ছল লাল দুর্গের সেই দালানের সবকিছু ছাপিয়ে কোন এক কুঠিরিতে বন্দী শাহজাহানের অসহায়ত্ব হাবিবকে ব্যথিত করে।তাহসিন খুব খুশী,হাবিবের হাতে ক্যামেরাটা দিয়ে,
-বাবা,বেশী করে ছবি তোল,এখানে ছবি দারুন আসবে।
আগ্রা ফোর্ট দেখা শেষে গাইড ওদের নিয়ে গেল স্যুভেনির শপে।হাবিব-তাহসিন আত্মীয়দের কথা চিন্তা করে আগ্রার তাজমহলের প্রতিকৃতি কিনল দশটা-ওরা সুন্দর করে প্যাকিং করে দিল।
দিল্লির হোটেলে ফিরতে ফিরতে রাত দু’টো।মোবাইলে পাঁচটায় অ্যালার্ম দিয়ে শুয়ে পড়ল,যদি ঘুম না ভাঙ্গে জয়পুর যাওয়া হবে না,নীল কম্বল কেনা হবে না।
আ্গ্রার মত জয়পুরের গাড়ি দেখেও হাবিব হতাশ হলো।তবে এটা দশজনের একটা মাইক্রোবাস এবং ওদের দু’জনের সিটটা সামনে।কয়েক ঘন্টা মাইক্রো ছুটিয়ে ওরা জয়পুর পৌছাল।
রাজপুতানার গোলাপী শহর জয়পুর খুব ভাল লাগলো হাবিব-তাহসিনের।সাহসী রাজপুতদের অনেক কীর্তির দেখা পেল সিটি প্যালেসে,সেই সাথে জমকালো রাজপ্রাসাদ।সিটি প্যালেস থেকে মানসিংয়ের যন্তর-মন্তর,একজন রাজার বিজ্ঞানের প্রতি অসীম আগ্রহের কথা চিন্তা করে বাপ-বেটার খুব ভাল লাগল।
পাহাড়ের উপর আম্বর দুর্গে যাওয়ার জন্য ওরা মাইক্রো রেখে ভাড়া করা জিপে উঠল।যেতে যেতে হাতির পিঠে কিছু মানুষও দেখল।
কার পার্কিংয়ে জিপ থামল,সবাই নামার পর চালক জিপের নাম্বারটা সবাইকে স্মরণ রাখতে বলল,কারণ হলুদ রংয়ের একই রকম আরো অনেক গুলো জিপ পার্কিংয়ে,ভুল জিপে উঠলে ফেরার গাড়ি মিস করে যাত্রা ভন্ডুল হতে পারে।হাবিব মোবাইলে জিপের নাম্বার প্লেটের ছবি তুলে নিল।
সাইট ভ্রমণ শেষে গাইড ওদের নিয়ে গেল একটা মার্কেটে।সবাই যার যার পছন্দ মত কেনাকাটা করছে।হাবিব একটা শাড়ি কিনল রেহনুমার জন্য।কম্বলের ষ্টলে এসে হাবিব-তাহসিন কম্বল দেখাতে বলল,ওরা বেশ কয়েকটা দেখাল। একটা নীল কম্বল আর একটা লাল কম্বল ওদের পছন্দ হলো।কিন্তু এত বিশাল সাইজ নিবে কি করে।তাই হাবিব সেলসম্যানকে বলল,
-পছন্দ তো হয়েছে,কিন্তু এত বড় ঢাকায় নেব কি করে?
লোকটা একটা কম্বল চেপে ভাঁজ করে ওকে দেখাল।বাহ,বেশ ছোট হয়ে গেছে।
সেলসম্যান লাল-নীল দু’টো কম্বলই ছুঁড়ে দূরের কাউন্টারে দিল প্যাকিংয়ের জন্য।কিছুক্ষণ পর একজন এসে কম্বল দু’টোর বিল হাবিবকে দিল,আর একজন খবরের কাগজে পুরোপুরি মোড়া একটি প্যাকেট তাহসিনের হাতে দিল।হাবিব লোকটাকে অনুরোধ করল একটা বড় ব্যাগ দিতে যাতে কম্বলের প্যাকেট এবং শাড়িটা এক সাথে নিতে পারে।লোকটার দেওয়া ব্যাগে জিনিস দু’টো ভরল।তারপর বিল পরিশোধ করে ওরা বেরিয়ে আসল।
মাইক্রোতে এসে হাবিব ওর সিটের পাশে ব্যাগটা রাখল।সবাই উঠার পর মাইক্রো স্টার্ট দিয়ে চারিদিকে জলবেষ্টিত রাজপুতদের প্রমোদ ভবন জলমহলের কাছাকাছি এসে থামল।কাছ থেকে দেখার জন্য সবাই নামল।কিন্তু তাহসিন নামতে চাইল না,ব্যাগের দিকে ইংগিত করে হাবিবকে বলল,
-তুমি যাও,আমি আছি।
মার প্রিয় নীল কম্বলটা তাহসিন চোখের আড়াল করতে চাইছে না।

৭।
নিরাপদে ঢাকায় ফিরে হাবিব-তাহসিন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে,রেহনুমাও খুশী।ঘন্টা খানেক বিশ্রাম নিয়ে ওরা তিনজন স্যুটকেস খুলে।আগ্রার তাজমহল দেখে রেহনুমা খুব খুশী হয়,আত্মীয়দের কাছে ওর অনেক ঋণ,কিছুটা লাঘব হবে।তিন তিনটা শাড়ি ওর জন্য আনায় খুশী।কিন্তু এর চেয়ে ভাল শাড়ি ভারতে পাওয়া যায়,এই ভেবে একটু মন খারাপ।তবে শালটা রেহনুমার বেশ পছন্দ হয়।রেহনুমা হাবিবকে জিজ্ঞেস করে,
-কম্বল কেননি?
-ওই স্যুটকেসটা খোল।
রেহনুমা দ্বিতীয়টা খোলে।মোড়ানো কাগজটা ছিঁড়ে ফেলে-একটা নীল কম্বল বেরিয়ে আসে।
রেহনুমার চোখ দু’টো হেসে উঠে,তার পর ছড়িয়ে পড়ে ওর সুন্দর মুখে ।
বিছানায় বালিশে কাত হয়ে শুয়ে নীল কম্বল গায়ে দিয়ে হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করে,
-কেমন লাগছে?
বাপ-বেটা সমস্বরে বলে উঠে,
-খুব সুন্দর।
-আগামী শীতে আমি এটা গায়ে দেব,আমার অনেক দিনের শখ নীল কম্বল।
হাবিব কথার পিঠে কথা বলে,
-আর তোমার আপার শখ লাল কম্বল।
-আপারটা কই?
হাবিব বলে,
-লাল-নীল দু’টোই তো এক সাথে প্যাক করে দিল।
তারপর তিনজন তন্নতন্ন করে লাল কম্বলটা খোঁজে,কিন্তু কোথাও নেই।
রাগে-দুঃখে রেহনুমার ফর্সা মুখটা লাল হয়ে উঠে,রাগতঃ স্বরে বলে,
-তোমাদের বাপ-বেটাকে কোন কিছু আনতে বলাই আমার ভুল হয়েছে।
হাবিব-তাহসিন বজ্রাহতের মত বসে থাকে,একটা ছোট্ট ঘটনা ভ্রমণের সমস্ত আনন্দ চুঁষে নেয়,যেমন কালি চুঁষে নেয় সাদা কাগজকে।
নিজেকে সামলানোর জন্য রেহনুমা ওয়াশরুমে যায়।কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে নীল কম্বলটা ভাঁজ করে হাবিবকে দিয়ে ওর আপার বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
সেদিন রাতে তিনজনই না খেয়ে ঘুমাতে যায়।
কিন্তু কেউ কি দু’চোখের পাতা এক করতে পেরেছিল?

মন্তব্য ৪৯ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৪৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৯

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: বুঝলাম না শেষটা। একটা গল্পের শেষ এরকম হতে পারেনা।

মোটামুটি লাগলো।
হাবিব ও রেহনুমা যেহেতু বাবা-মা, তাই নামগুলোর সাথে টাইটেলটা থাকলে ভাল হত। তাহসীনের সাথে তাদেরও অল্প বয়সী মনে হচ্ছিলো।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও মন্তব্যে।

নীল কম্বলটা হারানোর কষ্টটা যে তিনজনকেই ব্যথিত করেছিল, সেটাই বলতে চেয়েছি শেষে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:০৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার প্রশ্নের উত্তরে আরো একটু যোগ করতে চাইঃ
লাল ও নীল, দু'টা কম্বল কেনা হয়েছিল, কিন্তু বিক্রেতা লাল কম্বলটা মেরে দিয়েছিল।
তাই নীল কম্বলটা রেহনুমা তার বোনকে দিয়ে দেয়।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকবেন। সবসময়।

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪২

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: সাবলীল বর্ণনায় সুন্দর গল্প।বেশ ভালো লেগেছে+++

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮

জুন বলেছেন: আপনার গল্পটি যেন বাস্তব ঘটনার বর্ননা ,সেই সাথে পারিবারিক মনস্তত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন দারুন ভাবে । রেহনুমা আর হাবিব প্রায় সংসারেই আছে । অনেক বিশ্বাস অনেক ভালোবাসা আবার মুহুর্তেই তা ভেঙ্গে যায় অবিশ্বাসের তীক্ষ বাণে ।
তবে নীল কম্বল এর ছবিটা অসম্ভব ভালোলাগলো শামসুল ইসলাম ।
অনেক অনেক বছর আগে সংসার জীবনের প্রথম দিকে এমনি টানাটানির সময় আমার কর্তা কিছু এরিয়ারের টাকা পেয়ে আমার অনেক দিনের অপুর্ন শখের একটি বিদেশী হ্যান্ড ব্যগ কিনে দিয়েছিল । কত যে দ্বিধা দ্বন্দের মাঝে সেটা পছন্দ করেছিলাম তাই ভাবি এখন।
+

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৯

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ মনোযোগী পাঠে ও অত্যন্ত উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

আপনার সংবেদনশীল মনের পরিচয় পেয়ে এই সামান্য আমি অভিভূত - নিশ্চল বসে আছি অনেকক্ষণ।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।


৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ছুঁয়ে যাওয়া গল্প শামসুল ভাই। অনেক ভালোলাগা রইলো। :)

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ শতদ্রু ভাই পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক সুন্দর মন্তব্যে।

আপনার ভালোলেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৯

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: এমন একটা নীল কম্বল পেলে মন্দ হয়না।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও মন্তব্যে।

হা-হা-হা, বেশ বলেছেন।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পড়লাম গল্পটা।
কিন্তু হাবিব- রেহনুমার সম্পর্কটা গল্পে যেভাবে দেখানো হয়েছে সে হিসেবে লাল কম্বলের জন্য ফিনিশিং এর এক্সপ্রেশন এমনটা যেন ঠিক জুতসই লাগলো না।
শুভকামনা আপনার জন্য

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৯

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও মন্তব্যে।

আপনার কথায় যুক্তি আছে, যে রেহনুমা বালা-লকেটের অর্ডার বাতিল করে সে কেন একটা নীল কম্বলের জন্য এতটা আবেগী?
বালা-লকেটের অর্ডারটা রেহনুমা সংসারের কথা চিন্তা করে নিজের সিদ্ধান্তে বাদ দিয়ে ছিল, প্রকারান্তরে নীল কম্বলটা তার খুব শখের একটা জিনিস ছিলো। সে জানত, তার বঞ্চিত জীবনের অনেক দিনের একটা চাওয়া পূরণ হতে যাচ্ছে নিশ্চিত। এই পরম প্রাপ্তিটা যখন হাবিবের খামখেয়ালিপনার জন্য বিফলে গেল, তখন সে নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি। মানুষের মন বড় জটিল বিষয়, এর গতি-প্রকৃতি সবসময় সরলরেখায় চলে না, চললে সব পুরুষ/নারী সব নারী/পুরুষকে সুন্দরভাবে ম্যানেজ করে ফেলত-- ঝগড়াঝাটি, বিচ্ছেদের আর প্রশ্ন আসত না।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৩

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর গল্প। খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২২

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।
আপনার ভাল লাগাটুকু হোক আমার লেখনীর অনুপ্রেরণা।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: দারুণ পারিবারিক গল্প । রেহনুমার আর নীল কম্বল গায়ে দেয়া হলো না ।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।
এটা ছোট গল্প, তাই
//রেহনুমার আর নীল কম্বল গায়ে দেয়া হলো না ।//
উপন্যাস হলো হাবিব হয়ত সেই অভাবটা পূরণ করত।

৯| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আপনার লেখার হাত আসলেই সুন্দর।। আগের গল্পটির মতই এটাও মন ছুয়ে যাওয়া।। পুরোপুরই পারিবারিক দ্বন্ধের বাস্তবতায়।।
লেখক আর পাঠকের ভাবনা বরাবরই ভিন্ন।। লেখক লেখে এক ভেবে আর পাঠক তাকে নেয় নিজ মানসিকতায়।। দুটো মিলে গেলেই লেখকের স্বার্থকতা।।
আমি বোদ্ধা নই,তবু লিখলাম আমারই কথা।।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ সচেতনহ্যাপী ভাই পাঠে ও বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যে।

আপনার কথা গুলো খুব ভাল লেগেছেঃ

//লেখক আর পাঠকের ভাবনা বরাবরই ভিন্ন।। লেখক লেখে এক ভেবে আর পাঠক তাকে নেয় নিজ মানসিকতায়।। দুটো মিলে গেলেই লেখকের স্বার্থকতা।।//

প্রচেষ্টা থাকবে পাঠকের ভাবনার সাথে এক হয়ে যেতে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১০| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২১

দর্পণ বলেছেন: পরিবার ও সুখ দুঃখের খেলা।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও সুন্দর মন্তব্যে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

আপনার কবিতাটা (আমি আমার অগ্রজের কথা) পড়ছিলাম, বেশ কয়েকবার পড়লাম।
অনুভূতিটা এতই ব্যাপক যে কি ভাবে তা প্রকাশ করব, এখনো ভেবে উঠতে পারছি না।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

দর্পণ বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও সুন্দর মন্তব্যে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

আপনার কবিতাটা (আমি আমার অগ্রজের কথা) পড়ছিলাম, বেশ কয়েকবার পড়লাম।
অনুভূতিটা এতই ব্যাপক যে কি ভাবে তা প্রকাশ করব, এখনো ভেবে উঠতে পারছি না।

ভাল থাকুন। সবসময়।

অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই। কিছু কিছু অনুভুতির প্রকাশ বড় কঠিন হয়ে পড়ে।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন:
//কিছু কিছু অনুভুতির প্রকাশ বড় কঠিন হয়ে পড়ে।// -- সহমত মহান কবি।

অনেক অনেক ভাল থাকুন।

১২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: দীর্ঘ গল্প। অপ্রোয়জনীয় বর্ণনায় ঠাসা। এই যেমন প্লেনে ওঠার আগে টাকা পয়সার হিসাব নিকাশের অনুপূঙ্খ বর্ণনা, ইন্ডিয়ায় ঘোরা এবং তার সাথে ইতিহাসের বয়ান। ক্লান্তিকর। ফিনিশিংটাও অদ্ভুত!

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠে ও মন্তব্যে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৩

মানবী বলেছেন: লাল কম্বল সরিয়ে ফেলার কাজটা দোকানীর ছিলো কিনা নিশ্চিত হতে পারছিনা!

আপনার গদ্য লেখার হাত চমৎকার! সুন্দর গল্পের জন্য ধন্যবাদ শামছুল ইসলাম।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ মানবী পাঠে ও বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যে।

লাল কম্বলটা যে দোকানী সরিয়ে ছিল, এ ব্যাপারে হাবিব নিশ্চিত।
কারণ ওরা দু'টা কম্বলই এক সাথে প্যাক করে হাবিবকে দিয়েছিল কিন্তু বাইরে থেকে কম্বলের কোন অংশই দৃশ্যমান ছিল না।
তারা সেদিন রাতে হোটেলে থেকে পরদিন ঢাকা ফেরে।

অন্য কেউ (হোটেল বা এয়ার পোর্টে) পরে সরালে প্যাকিংটা অক্ষত থাকত না।

আপনার মন্তব্যে উৎসাহ পেলাম।

আমার এই লেখালেখি আসলে অনেকটাই মনের তাগিদে এবং কিছুটা আমার ছেলের জন্য।

প্রতিটা গল্প পোস্টের আগে ওকে দেখাই, ওর মতামত নেই, সংশোধন করি, তারপর পোস্ট করি।

আমি কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি, তাও জিজ্ঞেস করে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।



১৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: শেষ টা ছুয়ে যাওয়ার মত।
আসলে যেটার প্রতি প্রত্যাশা বেশী থাকে , তা পুরণ না হলে মেনে নেওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
আপনার গল্প এ দিকটা বিশেষভাবে দেখিয়ে দিয়ে গেল।
ভাল থাকবেন শামছুল ভাই ।
আপনার পাঠক ছেলেকেও শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলাম ।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই পাঠে, চুলচেরা বিশ্লেষণে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

আপনি গল্পের মূল সুরটা খুব সুন্দর করে বলেছেনঃ
//আসলে যেটার প্রতি প্রত্যাশা বেশী থাকে , তা পুরণ না হলে মেনে নেওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। //

১৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৯

তুষার কাব্য বলেছেন: চমৎকার লাগল গল্প । বিশেষ করে শেষ টা অসাধারণ ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগছে।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: মধ্যবিত্ত পরিবারের চমৎকার মনস্তাত্ত্বিক উপাখ্যান, ছোট ছোট ঘটনা উপমায় তুলে এনেছেন। +++

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:৩০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ বোকা ভাই পাঠে ও বিশ্লেষণ মূলক মন্তব্যে।

আপনার ভাল লাগায় উৎসাহিত হলাম।

বিজয়ের শুভেচ্ছা।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৭| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৮

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: এমন চমৎকার গল্পটি আমার নজর এড়িয়ে গেল কী ভাবে!!! :-<
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাই!!

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৯

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

আপনার নজরে পড়েনি কিন্তু কারো কারো নেক নজরে পড়েছিল।

তারা নিপুণ সার্জনের মত গল্পটাকে এমন কাঁটা-ছেঁড়া করেছেন যে, তার বিভৎস রূপ দেখে আমিই আঁতকে উঠেছি।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৮| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৫

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: খুব চমৎকার গল্প। ছোট ছোট অপ্রাপ্তিও মানুষের মনে অনেকসময় গভীর দাগ ফেলতে পারে।

হাবিব-তাহসিন বজ্রাহতের মত বসে থাকে,একটা ছোট্ট ঘটনা ভ্রমণের সমস্ত আনন্দ চুঁষে নেয়,যেমন কালি চুঁষে নেয় সাদা কাগজকে। এই লাইনটা মন ছুঁয়ে যাবার মতো।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠে ও উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যে।

আপনার মন ছুঁয়ে যাওয়া বাক্যটা আমারও খুব প্রিয়।

ভাল থাকুন। সবসময়।

১৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৮

রোদেলা বলেছেন: াপনার গল্প আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম,এবার মন দিয়ে পরলাম।কোথাও খেই হারাইনি,ভালোই এগুচ্ছিল।কিন্তু শেষটায় এসে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে ফেললাম।ঠিক বুঝতে পারলাম না। গল্প আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম,এবার মন দিয়ে পরলাম।কোথাও খেই হারাইনি,ভালোই এগুচ্ছিল।কিন্তু শেষটায় এসে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে ফেললাম।ঠিক বুঝতে পারলাম না।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার কথায় নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছেঃ
//আপনার গল্প আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম,এবার মন দিয়ে পরলাম।//

শেষটা হয়ত আমি ঠিকমত বুঝাতে পারিনি, মানুষ তো, অনেক রকম সীমাবদ্ধতা আছে - তবে আন্তরিকতার বোধ হয় কমতি ছিল না।

নীল কম্বলটা রেহনুমার খুব কাঙ্খিত ছিল, কিন্তু হাবিব লাল-নীল দু'টা কম্বল কিনলেও লাল কম্বলটা মিসিং হয়।
বোনের কাছে অনেক ঋণের কথা ভেবে রেহনুমা নীল কম্বলটা তার বোনকে দিয়ে দেয়।

একটা অপ্রাপ্তির বেদনায় পরিবারটা বেদনায় লীন হয়।

জানিনা কতটুকু বোঝাতে পারলাম, তবে পাঠকের কৌতুহল মেটানোর জন্য আমি সদা সচেষ্ট আছি, থাকব।

ভাল থাকুন। সবসময়।

২০| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৫

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
জনাব শামছুল,
আপনার গল্প পড়লাম। হ্যাঁ! গল্পের শেষে এসে ঠিক সে আলাপটি দিতে পারে নি, যা পাঠক প্রত্যাশা করে গল্প পড়তে পড়তে। গল্পে উদ্দীপনা নেই। চট করে মাথায় কামড় দিয়ে বসবে। কিন্তু তার চোখে মুখে ভিড় করে আছে কতক অভিমান, সংসার-বন্ধনের কিছু অমূল্য কিস্তি। গল্পের চাইতেও আমাকে মুগ্ধ করেছে, গল্পকারের ভাবনা।

আপনি নিয়মিত লিখুন। নীল কম্বলের অভাব পাঠক আমাদের বুঝতে দিন ...

আপনাকে ধন্যবাদ।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১২

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ অন্ধবিন্দু মনোযোগী পাঠ ও বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যে।

আমি আমার চারপাশে যা দেখি, তাই সহজ ভাষায় বলে যাই। আপনার মন্তব্যে তারই খোঁজ পেলামঃ
//কিন্তু তার চোখে মুখে ভিড় করে আছে কতক অভিমান, সংসার-বন্ধনের কিছু অমূল্য কিস্তি। গল্পের চাইতেও আমাকে মুগ্ধ করেছে, গল্পকারের ভাবনা। //

কোন চমক দিয়ে আমি পাঠককে চমকে দিতে চাই না, চিরচেনা সমাজের ছবিটা নির্মোহ ভাবে এঁকে যেতে চাই।

অত্যন্ত উৎসাহ বোধ করছি, মাত্রাটা ভাষায় বোঝাতে পারব নাঃ
//আপনি নিয়মিত লিখুন। নীল কম্বলের অভাব পাঠক আমাদের বুঝতে দিন ...//

তবে কাজের চাপে সময় করতে পারছি না, তাই লেখায় সাময়িক বিরতি।

ভাল থাকুন। সবসময়।

২১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২০

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৮ ---- আপনার এই পোষ্ট প্রকাশের সময়কাল!!
এরপরে উড়তে উড়তে কোথায় চলে গেলেন????

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আজ নিজের ব্লগের পরিসংখ্যানে দেখলাম 'অদেখা মন্তব্য(১)', একটু অবাকই হলাম- কারো মন্তব্য তো আমি প্রতি উত্তর না দিয়ে ফেলে রাখি না ! এত দেরিতে প্রতি উত্তর দেওয়ার জন্য আন্তরিক লজ্জিত।

হা--হা--হা-- বেশ বলেছেনঃ
//এরপরে উড়তে উড়তে কোথায় চলে গেলেন????//

পাখী হলে কোথাও কোন দ্বীপে হয়ত উড়ে যেতাম, কিন্তু মানুষ শৃঙ্খলিত জীব - স্নেহ,ভালবাসা,চাকরি - এই বৃত্তে বাঁধা। চাইলেই পছন্দের কাজটা করা যায় না, অপছন্দের কাজ দিয়েই যে পেট ভরে - তাই খুব ছকে বাঁধা জীবন যাপন করছি। দোয়া করেন, পছন্দের কাজটার জন্য যেন একটু সময় বের করতে পারি।

আপনার মন্তব্যটা পড়ে, খুব ভাল লাগছে।

আপনার পোস্টও মনে হয় অনেকদিন দেখছি না ?

ভাল থাকুন। সবসময়।

২২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭

বিজন রয় বলেছেন: অসাম।
++

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ বিজন রয় পাঠে ও প্রেরণামূলক মন্তব্যে ।

ভাল থাকুন। সবসময়্

২৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০১

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: ফাল্গুনের শুভেচ্ছা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনাকেও ফাগুনের শুভেচ্ছা।

আপনার স্মরণ বেলায় আমিও আছি যেন খুব ভাল লাগছে।

ভাল থাকুন। সবসময়-কবিতাকে সঙ্গী করে।

২৪| ১৩ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: তাহসিন মুখে কিছু বলতে পারল না, মনে মনে বলল, -ধন্যবাদ বন্ধু! - চমৎকার! আবেগ ভারাক্রান্ত মনে আমিও বহুদিন এরকম করে বহুজনকে বলেছি। আমার বিশ্বাস, আপনিও।
টানা পোড়েনের সংসারে মানুষের কত চাওয়া পাওয়া অপূর্ণ থেকে যায়! কিছু কিছু প্রাপ্তি নাগালের মধ্যে এসেও অধরাই থেকে যায়।
৩ আর ৬ নং মন্তব্যের উত্তর দুটো ভালো লেগেছে। লাইক দিলাম। মূল লেখাটাও ভাল লেগেছে। ওটাতেও লাইক।

১৩ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৪৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই মনোযোগী পাঠ ও বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যে।

//তাহসিন মুখে কিছু বলতে পারল না, মনে মনে বলল, -ধন্যবাদ বন্ধু! - চমৎকার! আবেগ ভারাক্রান্ত মনে আমিও বহুদিন এরকম করে বহুজনকে বলেছি। আমার বিশ্বাস, আপনিও।// -- আপনি লেখক, তাই একজন লেখকের লেখার সাথে তার ব্যক্তি জীবনের সম্পর্কটা সুন্দর বের করে নিয়ে আসতে পারেন।

এত দীর্ঘ একটা গল্প, এত দিন পর, আপনি এত মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন এবং তা আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুবই আনন্দিত আমি।আপনার লাইক পেয়ে আরও ভাল লাগছে।

৩ ও ৬ নং উত্তর দু'টো আবার পড়ে আসলাম - আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা সত্যি অসাধারণ।

ভাল থাকুন। সবসময়।



আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.