নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি দাওয়াত ও কিছু ঘটনা

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫

.
(কোন রকম কল্পনার আশ্রয় না নিয়ে, যা ঘটছে বা ঘটেছে, তাই নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হলো। শুধু নাম গুলো বদলে দিলাম। জীবনের সহজ বয়ান – এই আমার গল্প লেখার রসদ।)
.
দাওয়াতটা পাওয়ার পর থেকেই আমি একটু দো টানায় আছি। ফেসবুকের জমানায় বসবাস। তাই ফেসবুকে ই দাওয়াতটা পেলাম মেসেঞ্জারে। অনেকেই সাড়া দিচ্ছে দাওয়াতে। আমি কাউকে চিনি, কাউকে চিনি না। এইচএসসি পাশ করার পর অনেকের সাথেই আর দেখা হয়নি। সেই কলেজ জীবনের বন্ধুদের নিয়ে এই ফেসবুক গ্রুপ। গ্রুপে একজনকে খুব তৎপর মনে হলো। আমি তার ফেসবুক ওয়ালে গিয়ে তার ছবিগুলো দেখলাম। কিন্তু তাকে চিনতে পারলাম না। বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলাম, ভদ্রলোক গ্রহণ করলেন। বন্ধু তালিকায় ফারুক নামে একজন যোগ হলো ।
.
আমি নিজের মনেই একটু হাসলাম, কলেজ জীবনের বন্ধুকে এখন আর ছেলেটা বলার অবকাশ নেই। এখন আমরা সবাই ভদ্রলোক, আংকেল। মেসেঞ্জারের মাধ্যমে পরিচিতি বাড়ছে। একজন দাঁড়িওয়ালা ভদ্রলোকের সাথে দেখছি ফারুকের বেশ কথাবার্তা চলছে। কোন যেন দাঁড়িওয়ালা ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগলো। ওর প্রোফাইলে গিয়ে ছবিগুলো দেখলাম। বন্ধুত্বের আহ্বান জানিয়ে পর দিন সাড়া পেলাম।
.
যা ভেবে ছিলাম তাই, ও তোহা। ওর সাথে আমার একটা স্মৃতি আছে, কলেজ জীবনের। নিজেকে স্বাধীন এবং বড় ভাবার সেই সময়টায় আমিও একটু অন্য রকম হতে চেয়ে ছিলাম। বাস ভাড়া ও টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সিগারেটে টান দেই। বন্ধুদের সাথে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেই। একদিন আড্ডার মধ্যেই সিদ্ধান্ত হলো সিনেমা দেখতে যেতে হবে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে। যে কথা সেই কাজ। কয়েকজন মিলে হাজির হয়ে গেলাম সিনেমা হলে। ছবিটার নাম আজ আর মনে নেই, তবে ইংলিশ ছবি ছিল। ছবির শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত বাজছে। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে। কেউ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বসে পড়েছে। আমিও বসে পড়লাম। অন্ধকার হলে পাশের সিটে দেখি তোহা তখনো দাঁড়িয়ে। ও স্থির দীপ্ত কণ্ঠে বলছে, I feel proud!. আমি বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালাম, অন্যান্য বন্ধুরা ও ওঠে দাঁড়ালো। সবাই বসে, আমরা ক’জন কলেজ বন্ধু জাতীয় সঙ্গীত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে রইলাম।
.
তোহার সাথে ফখরুলের বেশ ভাল বন্ধুত্ব তখন। ফখরুলের কাছ থেকে শুনেছিলাম তোহার কথা। তোহাদের বাড়ি যশোহর। ওর বাবা একাত্তরে আওয়ামী-লীগের একজন বড় নেতা ছিলেন। সামনে থেকে যশোহরের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন। উনাকে পাক-হানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। স্বাধীনতা এসেছে, উনি আসেননি। ওর ভিতরের আবেগটার প্রতি একটা শ্রদ্ধাবোধ সবসময় অনুভব করেছি, আজ ও করি।
.
অফিস থেকে ফেরার পথে মেসেঞ্জারে ওর ফোন পেলাম। ওর স্ত্রী ও তিন মেয়ের কুশল জানলাম। আমারটা ও জানালাম। ওর মার কথা জিজ্ঞেস করলাম। উনি এখনো বেঁচে আছেন। ভালো ই আছেন। তোহার বড় ভাইয়ের সাথে থাকেন উত্তরায়, ৭৩ বছর চলছে। আমি হিসেব করি, একাত্তরে মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সে উনি স্বামীকে হারান। তারপর এই দীর্ঘ সময়টা পার করে দিয়েছেন সন্তানদের লালন-পালন করে মানুষ করার কাজে। নিজেকে নিয়ে ভাবেন নি। আমাদের দেশে মায়েদের এই রকম ত্যাগের বহু ঘটনা ঘটেছে, ঘটছে। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে বাঙলার মায়েদের স্মরণ করি।
.
তোহা দাওয়াতে যাচ্ছে না। কারণ জিজ্ঞেস করতে ও বললো, ও এখন পাঞ্জাবী-পায়জামা পরিধান করে, সার্ট-প্যান্ট পরা ছেড়ে দিয়েছে। ওখানে দাওয়াত খাওয়ার ও ড্রেস কোড আছে। আমি জীবনে কখনো সেখানে যাই নি। তোহার কথাই বিশ্বাস করলাম এবং মর্মাহত হলাম। আমি ও যাবো না ভাবছি।
.
এদিকে ফারুক ওর ফেসবুক ওয়ালে বিভিন্ন জিনিস পোস্ট করছে। সাদা-কালো একটা গ্রুপ ছবি একদিন পোস্ট করলো। ছবিটা ঢাকা শহরের কোন এক স্টুডিও তো তোলা। অধিকাংশ তরুণের মাথায় টুপি। আমাদের গ্রুপের অনেকেই আছে। প্রায় সবাইকেই চিনতে পারলাম। ফারুকের বিভিন্ন পোস্ট দেখে মনে হলো, ধনী হলেও, লোক হিসেবে বেশ মানবিক। তাই অনেকের সাথে আমিও একদিন মেসেঞ্জারে ওর দাওয়াতে ‘কবুল’ বলে দিলাম। কিন্তু মুশকিল হলো, যে দাওয়াত দিয়েছে, তাঁর সাথে তখনো পরিচয় হয়নি।
.
চলবে..
মো. শামছুল ইসলাম
৯ এপ্রিল ২০১৯

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:২৩

করুণাধারা বলেছেন: আগ্রহ নিয়ে পড়লাম, ভালো হচ্ছে গল্পটা। কিন্তু একটা সমস্যা আছে, প্রথমে শুরু করছেন তৃতীয় পুরুষ (জামান), তারপর হয়ে গেল প্রথম পুরুষ (আমি)।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:৫৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: প্রথম পুরুষে লেখার চেষ্টা করছি। ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: লিখা ভালই আগাচ্ছে। তবে প্রথম পুরুষ ও তৃতীয় পুরুষে একটু দ্বন্দে পড়ে গেছি।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:৫৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আনু ভাই। গল্পটা ভালো লাগছে জেনে পরবর্তী পর্ব লেখার আগ্রহ পাচ্ছি। দ্বন্দটার নিরসন করছি।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:৫৬

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ রাজিব ভাই।

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৪

জুন বলেছেন: অনেকদিন পর আসলেন মনে হলো। গল্পটা আমার কাছেও একটু জটিল মনে হলো যা সহ ব্লগার করুনাধারা উল্লেখ করেছে। প্লটটি বেশ ইন্টারেস্টিং কারন আমার হাসবেন্ডও কিছুদিন আগে তার স্কুল বন্ধুদের সাথে বহু বছর পরে যুক্ত হয়েছে ফেসবুকের কল্যানে। সপ্তাহখানেক আগে সেও একটা মিনি গেটটুগেদার করে আসলো।
সাথে আছি শামসুল হক।
শুভেচ্ছা ঝোড়ো সন্ধ্যার ।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: উত্তম পুরুষে লেখার চেষ্টা করছি। বিদগ্ধ পাঠকরা মনোযোগ দিয়ে গল্প পড়েছেন ভেবে ভালো লাগছে। তাঁদের সুচিন্তিত মতামত আমাকে আরো ভালো গল্প লিখতে সাহায্য করবে।
আপনার উনার গেটটুগেদারের গল্প শুনতে ইচ্ছে করছে।
আপনি সাথে আছেন জেনে ঝোড়ো সন্ধ্যাতেও ভরসা পাচ্ছি।
ঝোড়ো সন্ধ্যার শুভেচ্ছা।

৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:২৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর প্লট নিয়ে গল্পটি তার সক্রিয়তা বজায় না রাখলেও গল্পটি যে জীবনের কোন একবাকের কথন ভাল না লেগে যাবে কোথায়। সাথেই আছি। পরের পর্বে নিশ্চয় মোড় সেটিং সবি ঠিক থাকবে।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই।

চেষ্টা থাকবে পাঠকের তৃপ্তি মেটানোর।

৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৪২

আহমেদ জী এস বলেছেন: শামছুল ইসলাম,




ঠিক যে কথাটি বলতে চেয়েছি হবহু তা-ই দেখি সহব্লগার করুণাধারা আগেই লিখে ফেলেছেন।

স্কুল কলেজের পুরোনো বন্ধুদের সাথে একত্র হওয়াটা বেশ উত্তেজনা কর। এখনও আমরা ক'জন এভাবে একত্রিত হই। তখন আমরা আর প্রবীন থাকিনে, স্কুলের দিনগুলোতে ফিরে যাই। স্কুল জীবনে যে সব ভালগার শব্দে এক একজনকে ডাকতুম , সেভাবেই ডাকি এখনও। কথাবার্তাতেও সেই দিনের ভাষা। সবাই যেন এক হরিহর আত্মা।

চলছে ... চলুক...............

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই।

স্কুল আর কলেজ দু'টো ভিন্ন সময়ের ভিন্ন পরিবেশের জগত। স্কুলের তুই-তুকারি, আন্তরিকতা, কলেজে অনেকটাই অনুপস্থিত। তবুও যেটুকু পাওয়া যায় আন্তরিকতার এই দুর্মূল্যের বাজারে, তাই বা কম কি!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.