![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......
২য় পর্বের লিংক:.
.
আমার সেই স্বপ্নকে আমার শাশুড়ি নানা কথায় কুঠারাঘাত করে। আমি ঘরে না থাকলে ছেলের সাথে আলাপ করে আর একটা সন্তান নিতে। আমি ঘরে ঢুকলে চুপ হয়ে যায়। ছেলেকে বুঝায়, বংশের বাতি দরকার। এই নিভু নিভু বাতি দিয়ে কাজ হবে না। প্রথম প্রথম ও মার কথায় পাত্তা দিতো না। এক কথা অনেকবার শুনলে মানুষের মন তা বিশ্বাস করতে শুরু করে। একদিন রাতে ও আমাকে আমাদের সংসারে আর একজন নতুন অতিথি আনার অনুরোধ করে। আমি চুপ করে থাকি। আস্তে করে বলি, “এই সংসারটাই চলে না, আবার আর একজন।” রাতের নিস্তব্ধতা আরও গাঢ় হয়ে আসে। সব চুপ। কোন উত্তর নেই।
.
অনেক কিছুরই কোন উত্তর নেই। ডাক্তারের ফিস দুই শ’ টাকা বাড়িয়েছে এই মাস থেকে। জিনিস পত্রের দাম নাকি বাড়তি। তাই ফিসও বাড়তি। কিন্তু কোন বাসা থেকে তো আমার বেতন বাড়ানোর কথায় কেউ রাজি হলো না। সাফ কথা, না পোষাইলে চইলা যাও।
.
আমার মতো অসহায় গরিবের যাওয়ার জায়গা কই! কবর ছাড়া! ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে সেখানে যাওয়ার ইচ্ছেটাও মরে যায়। পাঁচ বছর বয়স হলো শাহজাহানের। কিন্তু দেখলে তা মনে হয় না। তাই এবার ডাক্তার সাহেব ওকে প্রতিদিন সুজি খাওয়ানোর জন্য বলেছেন। আমি ওর জন্য সুজি রান্না করি। ওকে খাওয়াই। ও খেতে চায় না। শ্বশুরকেও একটু দেই। শাশুড়ি মিষ্টি পছন্দ করে না। তাই সুজি খায় না। শ্বশুর হাত চেটে চেটে খায় আর বলে, “বউমা, তোমার হাতের রান্না খুব ভালো।“
-“আব্বা, আর একটু দেই”
“না, না, থাক। আমার দাদু ভাইয়ের জন্য রেখে দাও।”
তাও আমি জোর করে দেই।
.
ঘরে বসে থেকে আর ভালো লাগে না। তাই শাশুড়ি আমাকে প্রায়ই রান্নার কাজে সাহা্য্য করে। সেদিন রাতে শ্বশুরের পেটটা একটু খারাপ করায় উনি রাতে কিছু খেলেন না। আজানের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। চারিদিকে তখনো অন্ধকার। রান্নাঘর থেকে একটা শব্দ আসছে। চোর আসলো নাতো? কী-ই বা আছে চুরি করার। হাড়ি-পাতিল চুরি করলেও তো আমাকে ওগুলো আবার কিনতে হবে। রান্নাঘরে গিয়ে দেখি আব্বা সুজি খাচ্ছে। আমাকে দেখে লজ্জা পায়। বলে, “বউমা, বুড়া বয়সে খিদা সহ্য করা যায় না।” মানুষটার জন্য আমার খুব মায়া হয়। শাশুড়িও ঘুম থেকে উঠে এসেছে। হঠাৎ দেখি উনি দুপা ছড়িয়ে মেঝেতে বসে বিলাপ শুরু করলেন,
“ও আমার আল্লাহ রে, আমার কি হবে রে। আমার সর্বনাশ হইয়া গ্যাছে।”
আমি উনার থেকে জানতে চাই কীসের সর্বনাশ। উনি ইনিয়ে বিনিয়ে যা বললেন, তার সারকথা এই, গতকাল রাতে সুজি বানানোর সময় উনি তাতে ইঁদুরের বিষ মিষিয়েছেন। শাহজাহান মরে গেলে উনি আবার দাদি হবেন।
আব্বার মুখ ভয়ে চুপসে গেল। উনি বমি করতে শুরু করলেন। ধরে ঘরে নিয়ে আসলাম। আমজাদেরও ঘুম ভেঙে গেছে। ঘটনাটা ওকে সংক্ষেপে বুঝিয়ে বললাম। আব্বাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য একটা সিএনজি ভাড়া করার জন্য ও দৌঁড়ে বের হলো। আব্বার খুব হেচকি ওঠছে। উনি ইশারায় নাতিকে দেখতে চাইলেন। হট্টগোলে ওরও ঘুম ভেঙে গেছে। ওর চেয়ারটায় ওকে বসালাম। আব্বা তার বউয়ের গায়ে হেলান দিয়ে বসে আছেন। অনেক কষ্টে শুধু বললেন, “দাদু ভাই, আমি চলে যাচ্ছি।“
আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে শাহজাহান ডেকে ওঠলো, “দাদা, দাদা।”
আমার সারা শরীরটা কেঁপে ওঠলো। আমার শাহজাহান ওর দাদাকে ডাকছে। আমি উঠে দাঁড়ালাম। কোথা থেকে যেন অসুরের শক্তি আমার শরীরে ভর করলো। আমি আব্বাকে কোলে তুলে দৌঁড়ে বাইরে এলাম। বিড়বিড় করে বললাম, “আব্বা, দাদা ডাক শোনার জন্য আপনাকে বাঁচতেই হবে।”
.
মো. শামছুল ইসলাম। .।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:৪১
শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
শেষটা যে খারাপ তা ভাবছেন কেন?
শাজাহানের দাদাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে উনার পেট ওয়াশ করে বিষটা বের করে ফেললেই তো উনি বেঁচে যাবেন।
আমি আশাবাদী।
২| ০১ লা মে, ২০১৯ রাত ১২:৫৪
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর!
০২ রা মে, ২০১৯ সকাল ৮:৪৪
শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদ ভাই।
৩| ০১ লা মে, ২০১৯ রাত ৩:৩৯
রডারিক বলেছেন: ভাই আবেগ আপ্লুত হয়ে গেলাম। দারুণ লিখেছেন।
০২ রা মে, ২০১৯ সকাল ৮:৪৬
শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ রডারিক ভাই।
আপনার আবেগকে ছুঁতে পেরে ভালো লাগছে।
৪| ০১ লা মে, ২০১৯ ভোর ৫:৫৭
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আপনার লেখার হাত অসাধারণ | আপনার স্কুলজীবন নিয়ে কবে লিখবেন ?
০২ রা মে, ২০১৯ সকাল ৮:৪৮
শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ বিশুদ্ধ দা।
আপনি আমার স্কুল জীবন নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
চেষ্টা করবো লিখতে।
৫| ০১ লা মে, ২০১৯ সকাল ১১:২৩
পবিত্র হোসাইন বলেছেন: জীবন যেখানে থেমে যায়,
স্বপ্ন সেখানে শুরু হয়।
স্বপ্ন যেখানে থেমে যায়,
জীবন সেখানে শুরু হয়।
০২ রা মে, ২০১৯ সকাল ৮:৪৯
শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ পবিত্র হোসাইন ভাই।
আপনার চমৎকার কবিতাটা মনে ধরেছে:
জীবন যেখানে থেমে যায়,
স্বপ্ন সেখানে শুরু হয়।
স্বপ্ন যেখানে থেমে যায়,
জীবন সেখানে শুরু হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:৩০
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: হোয়াট এ ট্র্যাজিক এন্ড ইট ওয়াজ।
![:(](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/css/images/emot-slices_15.gif)
জীবন কখনো গল্পকেও হার মানায়। এখানেই জীবনের স্বার্থকতা।
দুঃখ পেলাম