নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাঠ প্রতিক্রিয়া; ময়ূর সিংহাসনের সম্রাটেরা - মোস্তাক শরীফ; প্রকাশক - বাতিঘর

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:১৭

হিমুকে চেনে না বাংলাদেশে এমন লোক খুঁজে পাওয়া ভার। হুমায়ূন আহমেদের কল্পিত চরিত্র, হলুদ পাঞ্জাবী পড়া হিমু, অসংখ্য যুবকের অতি চেনা এক চরিত্র। আমি আজ অন্য এক হিমুর কথা বলবো, তার সাথেও একজন হুমায়ুনের পরোক্ষ সম্পর্ক আছে। আমি দিল্লির মুগল বাদশাহ হুমায়ুনের কথা বলছি। তিনি হঠাৎ পা হড়কে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে বালক আকবরকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেন। আর সেই কঠিন পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে তোলেন হিমু। হিমু সুর বংশের ধ্বংসস্তুপ থেকে মাথা তুলে দাঁড়ানো এক অসম সাহসী ও সুদক্ষ রণনীতির বীর যোদ্ধার নাম; যিনি বালক আকবরের সিংহাসনের জন্য হুমকি হয়ে ওঠেন।
.
মুগল সম্রাটদের ইতিহাসের সাথে পরিচিত হতে আমাকে সাহায্য করেছেন লেখক মোস্তাক শরীফ। উনার লেখা "ময়ূর সিংহাসনের সম্রাটেরা" আমাকে নিয়ে গেছে আমার কৈশোরে। বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও ইতিহাসের প্রতি আমার ছিল দুর্নিবার আকর্ষণ। "পাক ভারতের ইতিহাস" নামে একটা বই ছিল, সেটা আশির দশকে এসএসসির মানবিকের ছাত্রদের ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত ছিল। আমি বইটা কতবার শেষ করেছি মনে নেই। তারপর বিএ ক্লাসের "ইসলামের ইতিহাস" বইটাও আমি পড়ে ফেলে ছিলাম। মানুষকে জানার, ইতিহাসকে জানার, অদম্য স্পৃহা থেকে আমার নিজের পাঠ্য বইয়ের বাইরে এই যে অধ্যয়ন, তা এক সময় কোথায় যেন হারিয়ে যায়। ধন্যবাদ মোস্তাক শরীফকে আমার সেই স্পৃহাটাকে আবার জাগিয়ে তোলার জন্য।
.
শের শাহর বংশের দুই বংশধর - সিকান্দর শাহ ও আদিল শাহ সক্রিয় ছিল যথাক্রমে পাঞ্জাবে ও বিহারে। আদিল শাহর সেনাপতি ছিল হেমচন্দ্র তথা হিমু। তিনি নিম্নবর্ণের হিন্দু ছিলেন। তিনি ঘোড়ায় চড়তে পারতেন না, কখনো তরবারি বহন করেন নি। পারিবারিক প্রতিপত্তিহীন, সাধারণ চেহারা ও শারীরিক গঠনের অধিকারী এই সেনাপতি কেমন করে এতো সফল ছিল, তা আমাকে বিস্মিত করেছে। মোগলদের এতো প্রতিপত্তি, শৌর্যবীর্য - সব কিছু ছাপিয়ে আমাকে অভিভূত করেছে হিমু। তার এই সাফল্যের পিছনের ছিল তার ক্ষুরধার বুদ্ধি ও সমর কৌশল । কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস। যুদ্ধক্ষেত্রে বৈরাম খার ( বালক আকবরের অভিভাবক) মুগল বাহিনী যখন পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে, তখন একটা তীর এসে বিদ্ধ হয় হাতিতে আসীন হিমুর চোখে।
.
তারপর সবটাই আকবরের বেড়া ওঠার সুদীর্ঘ ইতিহাস।
.
হিমুর বেড়ে ওঠা:
দিল্লির কাছে আলওয়ার এলাকায় একজন সব্জিবিক্রেতা হিসেবে জীবন শুরু করে হিমু। শের শাহর পুত্র ইসলাম শাহ দিল্লি বাজারে তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করেন তাকে। পরে তার গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান করেন হিমুকে। পরবর্তী সুর শাসক সম্রাট আদিল শাহর অদক্ষতার সুযোগ নিয়ে হিমু ধীরে ধীরে সাম্রাজ্যের অঘোষিত শাসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এভাবে তিনি বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হন। এতো সাফল্য লাভের পরও তিনি ছিলেন খুবই বিনয়ী; যাতে আদিল শাহ তাকে সন্দেহ না করে। তিনি বীর যোদ্ধা না হলেও সেনাধ্যক্ষ হিসেবে ছিলেন দক্ষ। আদিল শাহর পক্ষে তিনি বাইশটিরও বেশি যুদ্ধ জয় করেন। তিনি আদিল শাহকে পরামর্শ দেন মুগলদের আক্রমণ করতে। কারণ তখন মুগল সম্রাট আকবর বালক, আগ্রার মসনদে তার অবস্থানও দুর্বল। মোটামুটি সহজেই দিল্লি ও আগ্রা জয়ের পর 'রাজা বিক্রমাদিত্য' উপাধি ধারণ করেন হিমু।
.
১৫৫৬ সালে ৫ নভেম্বর পানিপথ প্রান্তরে মুখোমুখি হয় হিমু ও মুগল বাহিনী । ১৫২৬ সালে বাবর যে বংশের সূচনা করে গিয়েছিল, আকবর তার জয়যাত্রা অব্যাহত রাখল।
.
হিমুকে নিয়ে আরো অনেক কিছু জানতে ইচ্ছে করছে। তাঁকে নিয়ে একটা ঐতিহাসিক উপন্যাস কেউ কি একদিন লিখবে?.
.

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: বইটি পড়ার আগ্রহ জাগলো।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।

বইটা গল্পের মতো করে লেখা। তাই পড়তে কষ্ট হয় না, আনন্দ হয়।

আপনার আগ্রহ জাগাতে পেরে ভালো লাগছে।

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৭

অজ্ঞ বালক বলেছেন: সুন্দর রিভিউ। লেখা হইবো কোনো একদিন। ইদানীং আবার ঐতিহাসিক থিমের উপন্যাস খুব যাইতাছে। কেউ না কেউ লেইখা ফালাইবো।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।

ঠিক বলিয়াছেন, ঐতিহাসিক উপন্যাস পাবলিক গপ গপ করিয়া গলধকরণ করিতেছে। কেহ একজন লিখিয়া বাজার মাত করিয়া ফেলিবে।

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: ভালো রিভিউ লিখেছেন। এটা পড়ে যে কারো বইটা পড়ার আগ্রহ জমবে।
ইতিহাসের অনেক কিছূই আমাদের আজানা। সমস্যা হচ্ছে, আমরা তা থেকে কমই শিক্ষা গ্রহণ করি।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ সায়েমুজ্জামান ভাই।

বইটা পড়ার জন্য আপনি আগ্রহী হয়েছেন জেনে ভালো লাগছে।

ইতিহাসের অনেক কিছূই আমাদের আজানা। সমস্যা হচ্ছে, আমরা তা থেকে কমই শিক্ষা গ্রহণ করি। - আপনার সাথে একমত।

৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৩৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শুভ কামনা

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ ভাই।

শুভকামনা ।

৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:২৪

নীল আকাশ বলেছেন: রিভিউ ভালো লিখেছেন। বইটা পড়তে ইচ্ছে করছে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৪৫

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ।

বইমেলা থেকে সংগ্রহ করতে পারেন বা রকমারি ডট কম থেকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.