![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গেটে দাড়িয়ে আছে কোর্ট টাই পরা এক যুবক তার পায়ে জুতা নেই। গেট দিয়ে বাসায় ঢুকছে তানিজা আর তানিজার মা, ঢুকার সময় চোখ পরলো তানিজার জিজ্ঞেশ করলো আপনার পায়ে জুতা নেই কেন? উত্তরে আগুন্তুক রহস্যময় উত্তর দেয় আমি জুতা আবিষ্কারের আগের মানুষতো তাই। তুমি আমাকে এক জোরা জুতা দিবে? তানিজা বলে আব্বুর অনেক জুতা আছে আপনাকে এক জোরা জুতা দিব। সাথে সাথে তানিসার গালে তার মায়ের ঠাস মানে একটা থাপ্পড়। বাসার ভিতিরে চলে গেল তারা দুজন।
গেটের বাইরে দাড়িয়ে আছে আগুন্তুক। একে একে কৌতুহলী জনতার ভীর বারতে থাকলো। একে একে ২৫/৩০ জন লোক জমে গেলো। তাদের মধ্যে আছে একজন ক্যাডার প্রকৃতির নাম আলম। আগুন্তুক কে জিজ্ঞেশ করছে এই বাসার সামনে কি অনেক্ষন দাড়িয়ে আছেন কেন? উত্তরে আগুন্তক বলে এই বাসার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এক জোরা জুতা দিবে বলেছে এখনো দিচ্ছেনা তাই দাড়িয়ে আছি। আলম সাহেব আগুন্তুকের খালি পায়ের দিকে তাকালেন, মনে হচ্ছে তিনি মর্মাহত। আলম সাহেব বলে জুতা দিবে বলে দিবেনা এটাতো হতে পারেনা। ক্ষুব্ধ গলায় বললেন অবশ্যয় জুতা দিতে হবে। আলমা সাহেব মাথার বাবড়ি চুলে একটা বড় ধরনের একটা ঝাঁকি দিয়ে জনতার উদ্দেস্যে তেজী গলায় বললেন দেখুন কি অবিচার। একটা লোক খালি পায়ে দাড়িয়ে আছে তাকে জুতা দিচ্ছেনা। কৌতুহলী জনতা জুতা দিচ্ছেনা শুনে মর্মাহত হল। তারা এক সাথে বলে উঠলো জুতা দিতে হবে, জুতা না দিয়ে পার পাওয়া যাবে না।
আধা ঘণ্টার মধ্যে এক দেড়শ’র মত লোক জমে গেল। গলির রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। জনতার মধ্যে একদলকে মনে হচ্ছে জঙ্গি ভাবাপন্ন। তারা কিছুক্ষণ পরপর হুঙ্কার দিচ্ছে জুতা দে জুতা দে না হয় বাড়ি জ্বালাইয়া দিমু। এর মধ্যে অনেক ঝামেলা করে একটা প্রাইভেট কার ঢুকেছে। ড্রাইভার কয়েকবার হর্ন দিতেই জঙ্গি ভাবাপন্ন গ্রুপ ক্ষেপে গেল। প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। ড্রাইভার দরজা খুলে পালাতে যাচ্ছিল। ধাওয়া দিয়ে তাকে ধরে মেরে আধ মরা করে জ্বলন্ত গাড়ির পাশে শুইয়ে রাখা হল।
আলম সাহেব পরিশ্রিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্ষুদ্র ভাষণ দিলেন-
বিসমিল্লাহের রহমানের রাহিম। আল্লাহ্পাক বলেছেন, মা সাবেরিনা। অর্থাৎ ধৈর্য ধারন করুন। আমি নিজেই ঐ বাড়িতে যাচ্ছি। তাদেরকে অতি ভদ্রভাবে জুতা দিতে বলবো। তাদেরকে অতি ভদ্রভাবে জুতা দিতে বলব, যদি জুতা না দেয় তাহলে আমরা হার্ড লাইনে যাবো। আমরা দাবী আদায় করেই ছাড়বো ইনশাল্লাহ।
এর মধ্যে লাল রঙের একটি গাড়ি গলির মোরে দেখা গেল। জনতা ধর ধর করে ছুটে গেল। ড্রাইভার অতি বুদ্ধিমান, গাড়ি ঘুরিয়ে নিমিষেই পালিয়ে গেল।
তিন জোরা জুতা পাওয়া গেল এর মধ্যে একজোড়া পায়ে ভালো ফিটিং হল। আগুন্তুক জোতা পরে গলি থেকে বের হয়ে গেল। আগুন্তুকের ধারনা ঘটনা আরো অনেক দূর গড়াবে। একটা ইয়েলো ক্যাব কব্জা করা হয়েছে, আগুন ধরানোর চেষ্টা চলছে। জাগ্রত জনতা আসেপাসের বেস কয়েকটা বাড়ির দরজা ধাক্কাচ্ছে আর স্লোগান দিচ্ছে জুতা দে জুতা দে।
গলি থেকে বের হওয়ার মুখে দেখি পুলিশ ও র্যা বের গাড়ি গলিতে ঢুকছে। এই দুই গাড়ির পেছনে ভোঁ ভোঁ করে এম্বুলেন্সও ঢুকছে।
পরদিন সকালে দুই হাতকরা বাঁধা অবস্থায় আলম সাহেবের ছবি ছাপা হল। হেডলাইন “দুর্ধর্ষ জুতা সন্ত্রাসী আলম আটক।“
সন্ত্রাসী আলমকে আটক করা করা হয়েছে। সে তার দলবল নিয়ে জুতা সংগ্রহে নেমেছিল। প্রথমে সে ভদ্র ভাষায় জুতা চাইতো। জুতা না দিলে বা দিতে দেরি হলে তার দল শুরু করত তাণ্ডব। তার দলের হাতে দুটি প্রাইভেট কার ভুস্মীভুত হয়েছে। প্রাইভেট কারের আরোহীরা নিজেদের পায়ের জুতা খুলে দিতে রাজি না হওয়ায় এই কাণ্ড।
সন্ত্রাসী আলমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, সে মুখ খুলছেনা। বার বার বলছে নসিব সবই নসিব। ঘটনায় নসিব নামধারী কেউ যুক্ত কিনা তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনেকের ধারনা জুতা সংগ্রহের সাথে জুতা বিক্রেতাদের হাত আছে। তারা জুতার ক্রিত্তিম সঙ্কট তৈরির চেষ্টায় আছে।
বাংলাদেশ পাদুকা বিক্রেতা সমিতির সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভদ্র ভাষায় প্রতিবেদকের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু করেন। এক পর্যায়ে বলে উঠেন ...পুত তুরে আমু জুতা খিলায়া দিমু। প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন ব্যাবহার আসা করা যায় না।
আমরা বিষয়টার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
©somewhere in net ltd.