অতঃপর ভালোবাসা

০৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:০১

"আজ এত ব্যস্ত ছিলাম যে ও আজ দুপুরে খেলো কী না তার খোঁজ নেয়া হয়নি । এখন তো রাত সাড়ে এগারোটা , ও কী ঘুমিয়ে পড়েছে । না জানি কতটা রেগে আছে । "



গাড়ির গ্লাসে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে । তার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছিল নীল । হঠাত্ কনফেকশনারী দেখতেই গাড়ি থামালো ।
আইসক্রিম নিতে হবে । পাগলিটা নিশ্চয় অনেক রেগে আছে , আইসক্রিম ঘুষ দিয়ে ওর রাগ ভাঙ্গাতে হবে ।

বাসায় নক্ করতেই আবিষ্কার করল দরজাটা খোলা । তাই কোন কথা না বলেই সোজা ঢুকে পড়ল । চারিদিকটা স্তব্ধ হয়ে আছে রুমে লাইট জ্বালায়নি পাগলিটা । নিশ্চয়ই অভিমান করে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে ।

আইসক্রিম গুলো ফ্রিজে রেখে নীল তাদের বেড রুম এর দিকে গেল । সত্যি তাই ও আজ ঘুমিয়ে পড়েছে । নীল খাবারের জন্য ওকে ডাকল


_" মহারাণী ভিক্টোরিয়া জলদি উঠুন খাবার রেডি "

মাঝে মাঝে ও রেগে গেলে দুষ্টুমি করে মহারাণী ভিক্টোরিয়া বলে ডাকি ।
ও উত্তর এ বললো খাবেনা ।
নীলও নাছড়বান্দা বললাম "ওকে আমিও খাবোনা " বলেই ওর পাশে চুপটি করে শুয়ে পড়ল ।
হঠাত্ নীল এর ঘুম ভাঙ্গে । তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে দেখে বৃষ্টি ওর পাশে নেই । উঠে বসতেই দেখল বাহিরে অঝোড় ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে ।

"নিশ্চয় পাগলিটা এত রাতে ছাদে গেছে" বৃষ্টি নামের এই মেয়েটি বৃষ্টি দেখলেই পাগল হয়ে যায় , ভীজতে তাকে হবেই ।
নীল যখন ছাদে গিয়ে দেখলো ও ছাদের এক কোনায় চুপ করে দাড়িয়ে একা ভীজছে তখন নীল এর বুঝতে দেরি হলনা ওর মনটা আজ ভীষণ খারাপ । তাই দেড়ি না করে দৌড় দিয়ে গিয়ে আইসক্রিম আনল ।
গুটি গুটি পায়ে ওর খাছে এগিয়ে যেয়ে ওকে জড়িয়ে ধরতেই নীল বুঝতে পারে ও কাঁদছে । বৃষ্টির জলে যেন মিশে গেছে তার চোখের জল ।


_তুমি কাঁদছো ?
_কই না তো ।
_সরি আজ খুব ব্যস্ত ছিলাম তো , তাই......
_থাক না আমি তো রাগ করিনি ।
_ঠিক তো ?
_হুম
_চোখ বন্ধ করো ও ও ও ।
_কেন ?
_করোই না ।
_ওকে বাবা করছি ।

চোখ খুলতেই দেখল নীল আইসক্রিম হাতে দাড়িয়ে । নীল এর হাত থেকে আইসক্রিম নিয়েই খেতে শুরু করল বৃষ্টি ।


_ওমা আমার কই ?
_তোমার খেতে হবেনা ।
_আচ্ছা ! ওকে খাব না ।
_রাগ করলা ? আইসক্রিমটা অনেক মজার , খাবে ?
_খাব তবে আইসক্রিমটা নয় , তোমার ঐ ঠোঁটের কোণায় জমে থাকা ক্রিমটা ।


এরপর
বৃষ্টি ভেজা রাতে ওদের একান্ত কিছু মুহূর্ত সাক্ষী হয়ে রইল বৃষ্টির প্রতিটি স্নিগ্ধ ফোঁটা ।

০ টি +০/-০