নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহাকালের বিষাদ তরঙ্গ…

চিরন্তন মহাশূন্য

আমি মহাকাশ যাত্রী, পৃথিবীর সীমানাকে পায়ে চাপা দিয়ে যেতে চাই চিরন্তন মহাশূন্যে…

চিরন্তন মহাশূন্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবা হাড়ানোর যন্ত্রনাকে বুকে চেপেই ঈদের আনন্দ

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৮

এখন রাত ১২.৫০ মিনিট, বলা যায় গভীর রাত।
আসলে, এখন আমার লিখার কথা ছিল একটা মোলাট কৃত খাতার সাদা পেইজের উপর কালো কলমের আঁচড়ে। আমার ঘরটা এখন মর্গের মত কালো আঁধার ঘেরা চারপাশ। ইচ্ছা করছে না, লাইট জ্বালিয়ে এত আয়োজন করে কিছু লিখি তাই সেল ফোনের নোট প্যাডেই লিখা শুরু করলাম। আমি এখন পর্যন্ত জানিনা কি বিষয়ে লিখতে যাচ্ছি আমি। ও আচ্ছা বলতে ভূলেই তো গিয়েছি আজ ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হচ্ছে। ঈদুল আযহা মানেই গরু, খাসি কুরবানি করার এক হৈ হুল্লো ব্যাপার স্যাপার। এবারের ঈদটা আমার গত কয়েক বছরের তুলনায় একটু খারাপ সময়ের মধ্যে কাটলো। তবুও আমি খুশি, ভোর বেলায় এর্লাম বাজার আগেই ফ্রেন্ডের ফোন পেয়ে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিনের শুরু। প্রতিদিনের অভ্যাস ঘুম থেকে উঠেই আগে সেল ফোনটা হাতে নিয়ে ফেইসবুকে লগ অন করা নোটিফিকেশন চেক করা। আজও দিনের শুরুটা এমনই ছিল। ২০ মিনিটের মত ফেইসবুকিং করে ফ্রেশ হয়ে গোসল করে পরিপাটি হয়ে হাল্কা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলাম অনেক হাদিস থেকে জেনেছি ঈদ গাহে যাবার আগে মিষ্টি কিছু খাওয়া রাসুল (সাঃ) এর সুন্নত তারিকা। খাওয়া শেষে খেয়াল করলাম মা আমার প্বাশে জায়নামাজ গুছিয়ে দাড়িয়ে আছে মা'র মুখের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে জায়নামাজ টা হাতে নিলাম, খেয়াল করলাম মা'র চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি গড়িয়ে পরছে মা'র গালে পানি গুলা মুত্তার দানার মত চিকচিক করছে। মা'র সামনে দাঁড়িয়ে বললাম, কিছু বলবা…??
মা তার কান্নায় ভাঙ্গা গলা মিশিয়ে বলল, ঈদ গাহ থেকে ফেরার পথে তোমার বাবার কবরে গিয়ে একটু দোয়া করে এসো, তোমার বাবা কেমন আছে এটাও জেনে এসো। মা'কে কি বলল বুঝতে পারছিলাম না আমার বুক ভেঙ্গে যাচ্ছিলো শুধু " হ্যাঁ " সূচক মাথা নাড়িয়ে আমি তড়িঘড়ি করে মা'র সামনে থেকে চলে আসলাম। ঐ মুহূর্তে কথা বললে মা বুঝে যেত আমার ভেতরে কি হচ্ছে, আর আমি কষ্ট পাচ্ছি এটা বুঝতে পারলে মা আরো ভেঙ্গে পরত, তাই এইভাবে ফাঁকি দিয়ে মুহুর্তেই আর চোখের আঁড়াল হবার এই চেষ্টা আমার। আজ পাঁচটা বছর হলো প্রতি মুহুর্তে মা'কে এই ভাবে ফাঁকি দিয়ে চলছি, কখনো বাবার অভাব তাকে বুঝতে দেইনি। মা প্রতি নামাজের শেষে জায়নামাজে বসে বাবার জন্য এভাবে নিরবে কেঁদেই যাচ্ছে। মা কখনো শব্দ করে কান্না করেনা এমন কি মা'র ঘরের লাইট টাও অফ থাকে। আমি তার ছোট ছেলে, মা যতই অন্ধকার ঘরে লুকিয়ে কাঁদার চেষ্টা করুক না কেনো তার এই চেষ্টা প্রতিবারই ব্যার্থ হয়। আমি বাসায় থাকলে এ অবস্থায় মা'র জায়নামাজের পাশ্বে বসে তাকে শান্তনা দেই। কিন্তু, বিশ্বাস করুন আমার ভেতরে যে কি হচ্ছে আমি এটা মা'কে কখনোই বুঝতে দেই না।
আমি জানি, মা'ই আমার পৃথিবীতে সবচাইতে মূল্যবান সম্পদ।
বাবাকে হাড়ানোর যে কষ্ট, আসলে এটা লিখে বা বলে প্রকাশ করবার মত কোন ক্ষমতা আমার নেই।
তবে, মা'র কিছু হলে আমি বাঁচার ভরসা হাড়িয়ে ফেলি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.