নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নীল শুভ্র

প্রকৃতিকে যখন খুব কাছ থেকে দেখি, মুগ্ধ হই তার শুদ্ধতায় । পেয়ে যাই স্বপ্ন দেখার প্রেরণা । একটি সুন্দর, জীবন্ত পৃথিবীর স্বপ্ন । পেয়ে যাই ঐ মানুষ গুলোকে, যারা জীবনের সুন্দরতম সত্যে মিশে গেছেন অবলীলায় । জানি না আর কতদূর । তবে জানি, এই পথের শেষে আমার স্বর্গ ।

স্বপ্নীল শুভ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টিদিন ! সাথে রবীন্দ্রনাথ...! আছো তোমরাও...

২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:৪৪

প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে । রাহাতের গায়ে একটা কালো রেইন কোর্ট জড়ানো । কারণটা খুব স্পষ্ট । আকাশ বেসম্ভব ক্ষুব্ধ ! বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে । তবে শব্দ হচ্ছে না ! যেন একটা চাপা ক্ষোভ ! চাপা অভিমান ! অনেকদিনের জমে থাকা দুঃখ আজ চেপে রাখা যাচ্ছে না !



সিড়ি ঘরের দরজায় দাড়িয়ে প্রথম মেঘের গর্জন শুনতে পায় রাহাত । ঢাকা শহরে গত দুইদিন যাবত ইলেক্ট্রিসিটি নেই । এটা নিয়ে অবশ্য কারো তেমন বিস্ময় আছে বলে মনে হয় না ।

রাস্তায় মানুষজন কম । সবাই কেমন জানি অলস হয়ে গেছে । কেমন জানি ঘুম ঘুম চোখে তাকায় ।



একটা ছবি ঘুরছে তার মাথায়...লণ্ঠন জ্বালিয়ে জানালার পাশে বসে থাকা দাড়িওয়ালা লোকটা মনে হয় রবীন্দ্রনাথ...! তার সামনে একটা খাতায় কয়েকটা লাইন একা পরে আছে...





“আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে



ভোরের আলো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে



বাদল প্রাতের উদাস পাখি উঠে ডাকি



বনের গোপন শাখে শাখে, পিছু ডাকে......”





কবিজী এগুলোর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না...! তার দৃষ্টি মেঘলা আকাশের দিকে...!



ততক্ষণে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে...! বছরের প্রথম বৃষ্টি !

মামা চা দেন একটা ।

বুড়ো দোকানি চা দিয়ে যায় । এখন শীল পড়ছে দেদারসে । বছরের প্রথম বৃষ্টিতে শীল পরবে এটা মোটামুটি শিওর । তাও ব্যাপারটা কেমন আজব মনে হয় । আকাশ থেকে যেন হীরার টুকরা গুলো ঝরে পড়ছে ! পড়েই আবার লজ্জায় গলে যাচ্ছে !



ভীষণ জোরে শব্দ হয় । বজ্রপাত ! রাহাত চমকে উঠে ! আকাশটা মনে হয় ঝুলে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে গেছে ! এখন ভেঙে পড়বে !

চোখের সামনে জ্বলজল করে কত মুখ...! কত সুন্দর কিছু মুখ...! তাদের কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি...! বলা হয়নি তোমাদের ভালোবাসি...!



রাহাত ভাবে ঐ ছেলেটার কথা...! আমাকে নিবে খেলায় ? এই প্রশ্ন শুনে যে বলেছিল...! হু নিবো...! ছেলেটার নাম এখন মনে পড়ছে না...!



তার একটা ভাই আছে...! যে বলেছিলো...! তুমি পারবে...! পেরেছে কিনা এটা যদিও সে জানে না...! তবে ভাইয়া বলেছে সে পারবে...!



আরও কত মুখ দেখা যায়...!



ছোট বেলায় বাবা মায়ের সাথে রিক্সায় চড়ার ঐ দৃশ্যটা হঠাৎ ভেসে উঠে...! সে বাবার কোলে বসা...! বাবা বলছেন...বাসায় গিয়েই হাতমুখ ধুয়ে নিবি , ভুল হয় না যেন...! এই কাজে তার ঘোর আপত্তি ছিল...!



দেখতে দেখতে চোখ ভিজে আসে...! বৃষ্টি আর জোছনা...! এই দুই জিনিস সে বেশিক্ষণ দেখতে পারে না...! পৃথিবীটা এত সুন্দর কেন !



বুড়ো দোকানীটা তার মনের কথা গুলো পড়ে ফেলছে না তো আবার...! তার আধা নষ্ট রেডিওটাতে বাজছে রবীন্দ্রসঙ্গীত...!





যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,

আমি বাইবো না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে,

চুকিয়ে দেবো বেচা কেনা ,

মিটিয়ে দেবো গো...

মিটিয়ে দেবো লেনা দেনা

বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটে...

তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে...

তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৮

অতঃপর জাহিদ বলেছেন: দারুণ লাগলো!

২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০

স্বপ্নীল শুভ্র বলেছেন: ধন্যবাদ জাহিদ ভাই...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.