নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......
হঠাৎ করেই মুঠো ফোনটা বেজে উঠলো।মুঠোফোনের প্রিয় রিংটিউনটা আর্তনাদের মত শোনায় আজকাল। মনে হয় কেউ যেন গলা টিপে ধরে আছে।আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেল।মুঠোফোনটা স্তব্ধ হয়ে পড়ে আছে, না কোন কল আসেনি।
রাত দুটা পয়ত্রিশ। অনেকরাত।তুমি হয়তো এখন ঘুমোচ্ছো। অনেকদিন হয়ে গেলো তোমার সাথে রাত জেগে কথা বলা হয়না। কিন্তু এমন একটা সময় ছিলো...
বলাবাহুল্য সেই সময়টা বড় বেশী 'ছেলেমানুষী' মনে হয়।
ড্রয়িং রুমের রং, বেডসীটের কালার,বাবুর নাম কত কিছুই না রাতের খোরাক হিসেবে কাজে লাগিয়েছি আমরা। তুমি অনেক বুঝতে শিখেছো আর আমি...আমি ক্রমশই বড় হচ্ছি। একটা রাত কথা না হলে আর আগের মতন বুকটা খাঁ খাঁ করে না, আচমকা মাঝরাতে আর ঘুম ভাঙ্গে না!
মিথ্যা বললাম কি? তবে আজ রাতে ঘুম ভাঙ্গলো কেন আমার!!
থাক্ সেই দ্বন্দে না-ই যায়। খুটিনাটি বিষয় নিয়ে রাত দুপুরে ঝগড়া করার কোন মানে হয় না।
তুমি বুঝতে শিখেছো আর আমি ক্রমশই বড় হচ্ছি। 'ছেলেমানুষী' সময় টা অন্যকারো জন্য পড়ে থাক।
মুঠোফোনে রিচার্জ করার জন্য এর ওর কাছে দেন দরবার করেছি.... একটা সময় ছিলো আসলে একটা সময় থাকে।
তোমাকে ভালবাসার সামান্য কথাটা বলতে গিয়ে দিস্তা দিস্তা কাগজ ক্ষয় করেছি....তুমি কপট রাগ দেখিয়েছো,
অভিমানের স্বরে বলেছো "সারারাত জেগে কি কর, পাগল নাকি?
আমি কিন্তু পাগলের সাথে থাকতে পারবো না! এতো বড় চিঠি কেউ লিখতে পারে!!"
তোমার কপট অভিমান চিঠির অক্ষরে প্রকাশ না পেলেও আমি ঠিকই বুঝতে পারতাম। ঐ ছেলেমানুষী সময়টা হয়তো অনেক কিছুই ধরতে পারতো।
মনে আছে তোমার এবং আমার কারোর ই কিন্তু ফোন ছিলো না। দুজনায় কথা বলতাম চুরি করে। ফোনের দোকান থেকে চুপিচুপি কথা বলা... বড় একটা এডভেঞ্জার। মনে হতো সবাই যেন বুঝতে পারছে।
হমম..অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে। জাহাজবাড়ির পিছে , লেকের ধারে মুঠোফোনে এফএম রেডিও, BanQ মোবাইলটা বেশ কাজ দিতো আমাদের।যখন তখন ছবি তোলা আর বাংলা রক মিউজিক।
তুমি রাগ করে বলতে কি সব শোনো? আস্তে আস্তে তোমার সব সয়ে গেলো... হয়তো বয়সটাই ওমন, সয়ে নিতে হয়! এখন তুমি অর্থহীন, শিরোনামহীন আর ব্ল্যাকের চরম ভক্ত!
আমার জন্য নয়, তুমি বুঝতে শিখেছো।
না বোঝার বয়সটা অন্য রকম... অনেক বেশী ছেলেমানুষী।
এখন আর জাহাজবাড়ি নেই। সেখানে গড়ে উঠেছে আধুনিক অট্টলিকা। তবুও ক্লাস পালিয়ে লেকের ধারে ডানপিটেরা এখনো প্রেম করে।
আমার প্যান্ট আমার হেয়ার কাট আমার শার্টের রং সবকিছুতেই তোমার তদারকি ছিল ।
তুমি অবশ্য ইদানীং অতো কিছু নিয়ে মাথা ঘামাও না।আসলে সবারই একটা নিজস্ব জগৎ আছে,
আমার...তোমার আর মুঠো ফোনের প্রিয় রিংটিউনটির।
গলাটা শুকিয়ে আসছে। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার অনেক সমস্যা।
তারপর তুমি পাশে নেই! বিছানার পাশে রাখা পানির বোতল টা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। বড্ড অগোছালো হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। আগেও ছিলাম , তুমি এসে জাতে এনেছিলে।
টাটকা একটা প্যাকেট সিগারেট থাকার কথা, দুটো খেয়েছিলাম...তোমার দেয়া লাইটার টা কোথায় রেখেছি এখন
হয়তো খুঁজে পাবোনা।লাইটার টা দিয়ে ছিলে কোন এক জন্মদিনে, দিয়ে বলেছিলে 'অপব্যাবহার করতে পারবা না !'
আমি সুন্দর ভাবে পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরিয়ে বললাম, "আচ্ছা ঠিক আছে!
আমি সিগারেট ছাড়া কোন কিছুই ধরাবো না।"
তুমি ঠোঁট থেকে সিগারেট ফেলে দিয়ে বললে, না! সিগারেটও না। মোমবাতি, আগরবাতি,কয়েল জ্বালাবা।
আমি এখন পর্যন্ত লাইটারের অপব্যবহার করে যাচ্ছি ।
সিগারেট ধরাতে ধরাতে ভাবি সময় দ্রুত পাল্টিয়ে যায়। পৃথিবীর সস্তা ভাবনা গুলো সিগারেট ধরালেই হয়তমাথায় আসে।
এখন রাত তিনটা। অনেক রাত। এমন একটা সময় ছিলো,
তুমি আচমকা ফোন দিতে।
কান্না জড়ানো কন্ঠে বলতে, "আমার খুব ভয় লাগছে। খারাপ একটা স্বপ্ন দেখেছি।
তুমি এতো রাতে জেগে কেন?"
আমি বলতাম, 'ভয় পেয়োনা।দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে।' আমার জেগে থাকার কারণটা তোমাকে কখনো বলেনি।
আমি বলিনি, মাঝরাতে দুঃস্বপ্ন দেখে আমিও অঘুমা।
অনেক কিছুই দাগ কেটে রাখে ছেলেমানুষী সময় টাকে।তোমার ঘন কালো ঢেউ খেলানো চুলে নিজেকে বিলীন করতে বাধ্য হয়েছি বহুবার। তোমার চিবুকের তিল, তোমার চোখ...খুন হই।তোমার হাতে স্পর্শ, মুঠোফোনে তোমার ঘুম ভাঙ্গানি আহবান...কতো কিছুই না অচেনা সময়ে পরে থাকে।
মুঠোফোনের আর্তনাদে ভাবনার ছেদ পড়ে। বেজে ওঠে আমার মুঠোফোনের প্রিয় রিংটিউনটি। ওপার থেকে সেই
চিরচেনা মানবীর মায়াবী কন্ঠস্বর,
"এতো রাতে কি কর? ঘুমাও নি?নিশ্চয় জেগে জেগে সিগারেট টানছো আর ধোঁয়ায়
ঘর অন্ধকার করে রাখছো? ঘর দোর নিশ্চয় অগোচালো?
জায়গার জিনিস জায়গায় রাখতে তো তোমার ধাঁতে সয় না।
রান্নাঘরের বাতিটা নিশ্চয় অফ করোনি?
তোমার কফি কালারের শার্ট কি ইস্ত্রি করা আছে? কাল
এসে আমাকে নিয়ে চলে যাও,
এখানে আমার একটুও ভালো লাগছে না।
স্বপ্ন দেখেছি বাবুর নাকটা বোঁচা হয়েছে!
খুব কান্না পাচ্ছে।"
লাইটার টা হাতড়ে খুঁজে আরেকটা সিগারেট জ্বালায়। বাইরে ঝিরিঝির বৃষ্টি পড়ছে। সোডিয়াম ল্যাম্পপোস্টের আলোয় চিকচিক করছে বৃষ্টিধারা। এই রাতের শহরে বৃষ্টির সাথে মাঝে মাঝে রূপকথা নেমে আসে।
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
রূপকথার সাথে বৃষ্টিও নামবে !
২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০৬
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
কল্পনায় ভ্রমণ করে লেখা? নাকি ঘটে যাওয়া অতীত?
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:২৪
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: অতীত ! বিগত। সত্য
৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:৩৬
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: লেখা ক্লাসি হয়েছে।
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:৩৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ গোফরান ভাই।
৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১১
আহমেদ জী এস বলেছেন: স্বপ্নবাজ সৌরভ ,
সবারই একটা সময় থাকে। সে সময়টা ছেলেমানুষী থেকে মানুষকে টেনে তুলে নিয়ে যায় অনেক বসন্ত পার করে বৃষ্টি সময়ের কাছে।
তখন বৃষ্টিতে মৌতাত জমে, ঝিরিঝিরি ঝরতে থাকে স্মৃতির কথামালা।
সুন্দর লিখেছেন।
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪১
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
ঝিরিঝিরি স্মৃতির কথামালা। দারুণ বলেছেন।
গতদিনটা পোষ্ট লিখেছি অনেক আগ্রহ নিয়ে। দুটো পোষ্ট নিয়ে খেটেছি । চেষ্টা করি প্রতিদিন লিখতে।
৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৬
জটিল ভাই বলেছেন:
বৃষ্টির পানি কান্না লুকাতে পারে, কিন্তু কোনো গল্পেই জ্বলন্ত সিগারেটগুলো নেভাতে পারেনা কেন?
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:১২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
সিগারেট ছেড়েদিয়েছি অনেক আগেই। ধন্যবাদ জটিল ভাই।
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর।
৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো লাগলো প্রেমিকার উদ্দেশ্যে প্রেমিকের কথাগুলো। কাব্যের ছোঁয়া আছে এই গদ্যে।
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:২০
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
বৌয়ের উদ্দেশ্যে। যে একসময় প্রেমিকা ছিলো।
ব্লগে আমি পরিচিত ছিলাম কবিতা দিয়ে। তাই লেখায় কবিতার ধাঁচ থেকে যায়।
৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:০৯
কামাল৮০ বলেছেন: গদ্যকবিতার আকারে লেখা খুবই সুন্দর হয়েছে।
০৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৩৪
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: অনেক খুশি হলাম আপনার মন্তব্যে। বালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ২:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: বৃষ্টি কোথায়!