![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাস্তার পাশে দাড়িয়ে নিলয় ভাবছে বাসায় যাবে কি না । বাসায় গিয়েই বা কি হবে ? একা একটা বাসায় থাকে । সারাদিন নিজেকে কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখলেও রাতটা কাটে বেশ একাকিত্বে । প্রতিদিন রাতে বাসায় গিয়ে পরিষ্কার হয়ে নিজে রান্না করে খায় । তারপর নিজেই প্লেট পরিষ্কার করে করে টিভি দেখে । নিজেকে সবসময় ব্যস্ত রেখে কিছু ভুলে থাকতে চায় । রাতে ঘুমাতেও পারে না । প্রতি রাতে একই স্বপ্ন তার ঘুম ভাঙায় । আজ একটু বিশ্রাম চায় নিলয় । সারারাত বাইরেই কাটাবে ।
অনেকক্ষণ ধরে হেটে নিলয় ক্লান্ত । একটু বিশ্রাম দরকার নিলয়ের । আপাতত দূরে একটা চায়ের দোকান তার উদ্দেশ্যে ।
-ব্যানসন হবে?
-হ
-একটা ব্যানসন আর এক কাপ চা দেন ।
দোকানে বসে আশেপাশে দেখে নিল । রাত আর দিনের চিত্রে কত পার্থক্য তা হয়তো খুজছে । জলন্ত সিগারেটের স্বাদও মনে হয় রাতের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে গেছে । এক হাতে আধা পোড়া সিগারেট আরেক হাতে এক কাপ চা । চা আর সিগারেট একসাথে টানছে । ভালোই লাগছে খারাপ না । তবে হাটতেই বেশী ভালো লেগেছিল । তাই চা সিগারেট শেষ করে আবার হাটা শুরু করলো । এবার সে লক্ষহীন । হাটতে প্রথমে খুব ভালো লাগলেও পরে আবার একাকিত্ব তার সঙ্গী হয় । কারো কথা খুব মনে পরছে ।
-কি ব্যাপার মিস্টার ? একা হাটতে খুব ভালো লাগছে?
-হুম ।
-মনে হচ্ছে চিনতে পারলে না?
-তোমার কথাই চিন্তা করছিলাম ।
-আমার কথা চিন্তা করছো নাকি আমার কথা ভোলার চেষ্টা করছো?
-ভুলে যাওয়ার চেষ্টাই করছিলাম তবে পারি না । প্রত্যেকটা স্মৃতির সাথে তুমি জুড়ে আছো ।
-বাহ । তা এতো রাতে বাসায় না গিয়ে বাইরে কি করছেন?
-হাটছি
-পকেটে নিশ্চয়ই সিগারেট ?
-হুম
-ছাড়তে পারো না?
-কিছু জিনিস চাইলেও ধরে রাখতে পারি না আর কিছু জিনিস চাইলেও ছাড়তে পারি না ।
-বুঝেছি
-কি?
-কিছু না । আজ রাতটা কত সুন্দর , তাই না?
-হুম
-আচ্ছা , তুমি শেষ কবে চাঁদটা দেখেছিলে?
-জানি না
-হুম । ওকে বেবী , এএখন বাসায় যাও । কেউ হয়তো চিন্তা করছে ।
- নাহ । চিন্তা করার মত কেউ নেই । তুমি যা ছিলে এখন তাও অনেক দূরে ।
-কে বলছে অনেক দূরে? এই দেখ আমি কত কাছে । তোমার সব খবর আমি রাখি ।
-আমার কি খবর রাখো?
-আমি জানি প্রতি রাতে স্বপ্নে কি দেখো ।
-কি দেখি?
-আমাকে । ওইদিন যদি রাগ করে না বের হতাম তাহলে আজ তোমার আরো কাছে থাকতাম ।
নিলয় চুপ করে হাটছে আর চোখ দিয়ে পানি পরছে । কেউ অপোলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে । হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠলো নিলয়ের । বের করে দেখলো এ্যালার্ম বাজছে । ঝাপসা করে কি যেন লেখা । চোখ মুছে দেখলো , বার্থডে মেঘ । মোবাইল পকেটে রেখে চোখ বন্ধ করে নিলয়,হ্যাপি বার্থ ডে মেঘ । এই বলে আরেক পকেট থেকে ডেইরিমিল্ক আর একটা লাল গোলাপ বের করে রাস্তায় রেখে দিল । কেউ যেন ওর কাধে হাত রাখলো । এইটা কার স্পর্শ বুঝতে পেরে নিলয় চুপচাপ বসেই রইল ।। এযে তার মেঘের স্পর্শ ।
©somewhere in net ltd.