নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসামাজিক ব্যক্তিত্ব

শুভ ইমতিয়াজ

শুভ ইমতিয়াজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা এবং ব্যবহার

১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৫৮

কয়েকবছর আগের কথা কোনো কাজে সাভার থেকে নবীনগর যাচ্ছিলাম। তো সে জন্য একটা বাসে উঠলাম। বাস ভরাই ছিল। তবে একটা সিট খালি ছিল। একটু পেছনের দিকে। কিন্তু অনেকেই দাড়িয়ে ছিল। কেন দাড়িয়ে ছিল তা জানার ইচ্ছা তখন ছিল না। যাই হোক,আমি গিয়ে সিটটাতে বসলাম। আমার পাশে যে বসা ছিল উনি প্রতিবন্ধী ছিল। তার বয়স ১৮ কি ২০এর মাঝামাঝি হবে। তাকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল যে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। আর একটু গরীব তা তার পোষাক দেখে বোঝা যাচ্ছিল। তো এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। তাই বসতে কোনো কিছু বোধ হয় নি। তো তখন বাংলাদেশের সাথে কোনো এক টিমের খেলা ছিল। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে।
-ভাই,তুমি কোন টিম সাপোর্ট করো???
-মানে??(হঠ্যাৎ জিজ্ঞাসা করায় কিছুটা অপ্রস্তুত ছিলাম)
-মানে ক্রিকেট খেলায়।
-ও আচ্ছা। বাংলাদেশ।
-আমিও বাংলাদেশ সাপোর্ট করি।
-ও আচ্ছা।
-তোমার নাম কি???
-শুভ। তোমার???
-(কি এক নাম বলেছিল ঠিক মনে নেই)
আগেই বলে রাখা ভালো সে কথা বলতে গেলে তোতলায় আর হাতে আচার ছিল তার।
-খাবা???
-নারে ভাই। বাসা থেকে খেয়েই আসছি। তুমি খাও।
-কই যাও??
-নবীনগর। তুমি??
-বাইপাইল যাই।
-ও আচ্ছা।
-ভাই,একটা কথা বলি??
-বলো।
-তুমি জানো ওই লোকগুলা ওইখানে দাড়ায় আছে কেন?? এরা কেন আমার পাশে বসে নাই?
-হয়তো তারা সামনেই নামবে তাই।
-না ভাই,আমি গরীব। জামা কাপড় ময়লা আর তাদের চেয়ে আলাদা। তাই।
-আমার মনে হয় না। হয়তো তারা রেডিও কলোনী নামবে আর পেছনে বসলে নামতে দেরি হবে তাই হয়তো সামনে দাড়িয়েছে।
-সবাই মনে করে আমি কিছু বুঝি না। কিন্তু আমি সব বুঝি।
-না বোঝার কি আছে?? তুমিতো বেশ বড়। একা একাই কতদূর যাও।
-হুম। আমি নাহয় কম বুঝি,পড়ালেখা করি নাই,তোমাদের মত স্মার্ট না। তাই বলে কি আমার মন নেই? আমি কি মানুষ না?
-(বলার মত তখন কিছুই ছিল না। চুপ করে ছিলাম)
-জন্মের পর থেকেই আমি এমন। এইটা কি আমার দোষ?? আমি ব্যবসা করি। আমার ছোট একটা ভাই আছে। এই যে ছবি (পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে একটা ছবি দেখালো। ছবিতে একজন মহিলাও আছে। সম্ভবত এটা তার মা।) আমার ছোট ভাই স্কুলে যায়। ভালো রেজাল্ট করে। একদিন ও তোমাদের মত স্মার্ট হবে।
-অবশ্যই হবে।
-হুম। ধন্যবাদ।
-(কিছুই বলি নি। মাথা ঝাঁকালাম শুধু।)
কিছুক্ষন চুপ করে বসেছিলাম। সামনেই আমার গন্তব্য স্থল। এইবাস নবীনগর থেকে ঘুরে বাইপাইল যাবে। নামার আগে তাকে বললাম,ভালো মত যেও। সেও উত্তর দিল,তুমিও যেও। এরপর বাস থেকে নেমে পরলাম। ভাবলাম তার কথা। আমরা অনেকেই উচ্চশিক্ষা লাভ করে বড় বড় চাকরি করছি। আজ পর্যন্ত কোথাও দেখিনি যে লেখা আছে,প্রতিবন্ধীদের অবহেলা করুন। কি লাভ হয়েছে এসব শিক্ষার্জন করে?? শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করা আর সম্মানজনক চাকরি পাওয়া ছাড়া কোনো কাজেরই না। শুধুই মুখস্ত শিক্ষা। দুঃখের বিষয় কিছুই শিখতে পারলাম না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১:১১

শরীফ শাওন বলেছেন: খুব ভালো লিখেন আপনি

১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৩৪

শুভ ইমতিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:৩৫

মহা সমন্বয় বলেছেন: এটা লোক গরীব, ঠিকমত কথা বলতে পারে না তোতলায় আর তাই তার পাশে কেউ বসছে না, :-< এ কথা বিশ্বাস যোগ্য না।
(যদি তার শরীর থেকে দূর্গন্ধ বের হয় অথবা তার মুখ দিয়ে লালা পড়ে তাহলে ভিন্ন কথা )

হয়ত অন্য কোন করান আছে, অনেকেই গাদাগাদি করে পিছনের ছিটে বসতে চায় না, অথবা তারা সমনেই নমবে তাই হয়ত এমন হয়েছে।

১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৩৭

শুভ ইমতিয়াজ বলেছেন: আমি ঠিকমতো ব্যাপারটা উপস্থাপন করতে পারি নি। লোকটা প্রতিবন্ধী ছিল তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আর তিনি অদ্ভুত ভাবে খাচ্ছিলেন। মানে অনেকটা বাচ্চাদের মতো। ব্যবহার অনেকটা অটিস্টিকদের মতো ছিল। আর তারা কেন বসে নি সেটাও ঠিক বুঝতে পারি নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.