নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসামাজিক ব্যক্তিত্ব

শুভ ইমতিয়াজ

শুভ ইমতিয়াজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

টাকা এবং সততা

২৬ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:১৩

মধ্যবিত্ত আর গরীব পরিবারে সুখ জিনিসটা ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে। হয়তো কিছু মুহুর্তের জন্য সুখ হাতে ধরা দিলেও তা ক্ষণস্থায়ী। এদিকে যারা আমির, সমাজের ভাষায় সম্মানীয় লোক তাদের সুখের অভাব হয় না। কয়েকদিন আগে এক লোকের সাথে পরিচয়। খুব কম সময়ে উনি খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে যায় আমার। তার মতে আমি নাকি সমাজের অন্যান্য মুখোশধারী লোক না। আমি নাকি যথেষ্ট নীতিবান। আমি নিজেও জানতাম না। যাই হোক,তাকে বড়ভাই বলেই সম্বোধন করি। তার বাবা চাকরিজীবী ছিলেন। তার আয়ে সংসার ভালোই যাচ্ছিলো। তো ধীরে ধীরে যখন তার বার্ধক্য আসে তখন সেই বড়ভাই বড় হয়ে যান। সে তার বাবার কাছ থেকে একটা জিনিসই শিখেছে। সেটা হচ্ছে নীতি। সুখে থাকার নীতি। লোকে বলে টাকায় সুখ কেনা যায় না। বড়লোকের ঘরে সুখ না থাকলেও গরীবের ঘরে সুখ পাওয়া যায়। সেদিন সে বড়ভাই জিজ্ঞাসা করলো,শুভ,তোর কি মনে হয়? সুখ কি কেনা যায়? আমি চিন্তায় পরে গেলাম। লোকের মুখে শুনেছি টাকায় সুখ কেনা যায় না। তাই কোনোরকমে উত্তর দিলাম,না ভাই,টাকায় সুখ কেনা যাবে না। এইটা আত্ত্বিক ব্যাপার।
উনি চুপ। একটু পর একজন লোক গাড়ি নিয়ে আসলো। তাকে দেখিয়ে সে বড়ভাই জিজ্ঞাসা করলো,দেখতো,লোকটা কি সুখী? আমি যথারীতি স্ক্যান করলাম তাকে। শার্ট ইন করা, ভুড়ি আল্লাহর রহমতে ভালোই। মুখে একটা হাসি। চোখে সানগ্লাস আর হাতে আইফোন। আমি উত্তর দিলাম,জানি না ভাই। মনেতো হয় সুখি। আবার নাও হতে পারে। লোক দেখানো হাসিও হতে পারে। বড়ভাই বললো,আমাকে দেখে বল আমি সুখী কিনা। তার দিকে তাকালাম। শুকনা একটা শরীর,চোখের নিচে কালো দাগ,মুখে হাসি নেই। আমি উত্তর দিলাম, দেখে মনে হয় না। তিনি বললো,আমার বাবা ছোটবেলা থেকে আমাকে একটা উপদেশই দিয়েছে, মানুষ হতে। সেই মানুষ হওয়ার চেষ্টায়ই আছি। কিন্তু বাস্তবতা এতো সহজ না যতটা বলা যায়। যখন সমাজে চলি তখন বাবার অনুপ্রেরণায় কখনো কাওকে ধোকা দেয়ার কথা চিন্তা করি না। কিন্তু আমার সামনে অনেক মানুষ ধোঁকাবাজি করে আজ সমাজের উপরে বাস করে। আর আমি নিচে। চাইলেও আমি তাদের দিকে আঙ্গুল তুলতে পারি না। কারণ আমি দূর্বল। এমন কেনরে শুভ?
আমি নিরুত্তর। রাতে যখন বাড়িতে ফিরি তখন দেখি সেই ভুঁড়িওয়ালা লোকটা তার পরিবারের সাথে আনন্দে এক টেবিলে বসে খাচ্ছে। আর একজন সৎ লোক মাথায় এক গাদা চিন্তা নিয়ে ঠিকমতো খেতেও পারছে না। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন থেকেই বলছি। আমার বাবা সারাজীবন সততার সাথে চলে আজ রিটায়ার্ড প্রাপ্ত সরকারী চাকরিজীবী। সারাজীবন চাকরি করে একটা দোতলা বাড়ি করেছেন। অথচ তার বাড়ির পাশেই তার অফিসের নিচু র‍্যাংকের একজন ৫ তলা বাড়ি করে বসে আছেন। টাকার অভাবে ছোট ছেলেকে প্রাইভেট কোনো ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করাতে পারেন নি। আর তার ছেলেও সৎ পথে চলে মেডিকেলের প্রশ্ন না নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভালো মার্ক থাকা সত্বেও ভর্তি হতে পারে নি। বাবা হয়তো রাতে চিন্তায় ঘুমাতে পারে না। ছেলেরো যে রাতে ঘুম হয় না। এই কি সততার সুখ? আজ ভুরি ভুরি টাকা খরচ করে বাবা মা তাদের ছেলেদের ভালো ভার্সিটিতে পড়াচ্ছে। ভবিষ্যত এঁকে রাখছে। টাকা দিয়ে চাকরিও হাসিল করবে। এদিকে সুখের জন্য যারা পরিশ্রম করবে তারা টাকার কাছে ঠিকই হেরে যাবে। তাহলে কে জিতে গেল? টাকা না সততা?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২০

অরুনি মায়া অনু বলেছেন: খুব কঠিন প্রশ্ন।
তবুও আমাদের চেষ্টা থাকিবে সততাকে পুঁজি করে টাকার বৃদ্ধি করা।

২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪৪

শুভ ইমতিয়াজ বলেছেন: বর্তমান সমাজে সততার ঠাই খুবই কম। খোজ নিয়ে দেখতে পারবেন সৎ ব্যক্তিরা পদে পদে পদদলিত হচ্ছে। তবুও সততাটাকেই পুজি করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.