![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সে অনেক আগের কথা। কথাটা আগের হলেও স্মৃতিটা পুরোনো হয় নি। সে ছিল আমার প্রথম ভালোবাসা। প্রথম ভালোবাসার দিনগুলোতে কখন বাস্তবতাটাকে নিয়ে ভাবার সময় পাওয়া যায় না। সে আর্টসের ছিল আর আমি সাইন্সের খুব ভাবুক টাইপের মানুষ ছিলাম। সবকিছুতে সাইন্স খুজে বেড়াতাম। ভালোবাসার প্রথমদিনগুলোর কোনো এক রাতে সে জিজ্ঞাসা করেছিল।
-তোমার কাছে চাঁদ কেমন লাগে?
-চাঁদ চাঁদের মতোই লাগে। চাঁদ আবার কেমন লাগবে?
-আচ্ছা জানো,চাঁদের বুড়ি নাকি এক সময় আমাদের মতো রাতে প্রেম করতো।
-ধুর,চাঁদের বুড়ি নিয়ে এখনো আছো?? চাঁদেতো অক্সিজেনই নেই। তাহলে চাঁদে বুড়ি থাকবে কিভাবে?
-আরে আছে তো। সে বুড়ি নাকি তাকে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু এখন সে একা খুব। তার এখন কেমন লাগতে পারে?
-আম্মম্মম,জানি না।
-কেন জানো না?? এইটাতো কমন সেন্স। সে এখন রাতে একাই থাকে।
-হেহ,বিনা অক্সিজেনে কারো বেঁচে থাকা অসম্ভব এইটা কমন সেন্স। জানো??
-তুমি না একটুও রোমান্টিক না।
-আমি রোমান্টিক না হলে তুমি আমার সাথে প্রেম করো কিভাবে??
-জানি না
-আচ্ছা,মানলাম চাঁদের বুড়ি সত্য। তাহলে চাঁদের বুড়া কোথায়??
-সেটাইতো। কিন্তু চাঁদের সেই বুড়ি নাকি তাকে অনেক ভালোবাসতো।
-তাই নাকি? তুমি আমাকে কেমন ভালোবাসো??
-চাঁদের বুড়ির চেয়ে বেশি।
-তাহলে আজ থেকে তুমিই আমার চাঁদের বুড়ি।
এরপর থেকে তাকে চাঁদের বুড়ি বলে ডাকতাম। ঠিক চাঁদের মতোই রাতে তার সাথে দেখা হতো। কোনো রাতে যখন রাতে চাঁদ উঠতো না দেখা যেত সেই রাত ২টা বা ৩টার সময় ফোন দিয়ে চাঁদ দেখাতো। যেখানে সে চাঁদ দেখে মুগ্ধ হয় সেখানে আমি ভাবি চাঁদের অন্ধকার সাইডের কথা। সেখানে কি থাকতে পারে। যেখানে রাতে সে তারা দিয়ে ছবি আঁকতো সেখানে আমি তারা দিয়ে আলোর সমীকরণ আঁকতাম। তার আর আমার চিন্তাভাবনা আকাশ পাতাল পার্থক্য থাকলেও আমরা একই ছিলাম। কিন্তু বাস্তবতা নিয়ে কখনো ভাবি নি।
প্রতি শুক্রবারে আমরা ঘুরতে যেতাম কোথাও না কোথাও। সপ্তাহের একটা দিনই ছিল আমার জন্য রিলিফ। আর সেও উন্মুখ হয়ে থাকতো শুক্রবারের আশায়। এক শুক্রবার বৃষ্টি হচ্ছিল। তবুও সে দেখা করবে। এদিকে আমার জ্বরের কথা সে জানতো না। তার মন খারাপ হবে ভেবে জানাই নি। কিন্তু তবুও বৃষ্টিতে ভিজেও তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সেদিন সে খুব রাগ করেছিল। বলেছিল,আজকে এই শরীর নিয়ে কেন আসছো? আমি উত্তর দিয়েছিলাম,আগামী শুক্রবার পর্যন্ত তোমাকে না দেখে থাকা আমি সহ্য করতে পারতাম না। সেদিন সে সারা বিকেল আমার কাঁধে মাথা রেখে বসে ছিল। তাকে বারবার করে বলেছিলাম যে আমার জ্বরের ভাইরাস তার শরীরে যেতে পারে। সে একবারো শুনে নি। সে বিকেলেরই কথা। শেষ পর্যায়ে সে জিজ্ঞাসা করেছিল,আমি যদি কোনো এক শুক্রবার হতে দেখা করে বন্ধ করে দেই তাহলে তোমার কি হবে?
হয়তো বাস্তবতাটাকে সে তুলে ধরতে চাইছে। সে প্রশ্নের উত্তর আমি আর দিতে পারি নি। শুধু এক পলক তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সত্যিই এক শুক্রবার হতে আর তার সাথে দেখা হয় না। তাকে আর চাঁদের বুড়ি বলে ডাকতে পারি নি। সে আজ অন্য কারো সাথে বসে চাঁদ দেখছে। আর আমি সেই চাঁদের বুড়া হয়ে চাঁদের বুড়িকে খুজছি। এখন আর সমীকরণ মাথায় আসে না। মাথায় শুধু চাঁদের বুড়ি। শুনেছি এখন নাকি সে আমাকে ছাড়া খুব ভালো আছে। কিন্তু সে কি একবারও আমার আর্তনাদ শুনেছে? নাহ,শুনেনি। শুনাতেও চাই না। শুধু এতোটুকুই তাকে জানাতে চাই,যেখানে আছে সে,যার সাথেই আছে তারা যেন ভালো থাকে। আমার চাঁদের বুড়ি কখনোই একা থাকবে না। কারণ সে অনেক সুন্দর। সে আসলেই সুখটাই ডিজার্ভ করে। আমাকে না।
২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২৪
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ইশ! কষ্ট! প্রেমের বেদনার রং কি সবচেয়ে নীল হয়? কে জানে!
সহজ, সরল, সাবলীল ভাষায় লেখাটা পড়তে ভালো লাগল। ডায়েরির মতো ছিল লেখাটা, নিজেই নিজেকে বলা যেন!
প্রথম ভালোবাসার কষ্ট পরবর্তী ভালোবাসা এসে ভুলিয়ে দেবে সেই কামনা করছি যেতে যেতে!
ভালো থাকুন!
২২ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৬
শুভ ইমতিয়াজ বলেছেন: দেখা যাক। ধন্যবাদ ☺
৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৩০
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন:
মন খারাপ করা লেখা।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১২
চাঁদগাজী বলেছেন:
করুণ