![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিশাচর প্রানীরা দিনের বেলা কিছু দেখতে পাই না।তাদের কাছ থেকে আলো ঝলমলে দিনের অসাধারণ সৌন্দর্য গোপন রাখা হয়েছে।আচ্ছা আমাদের কাছ থেকে কি গোপন রাখা হয়েছে সেটি কি কেউ ভেবে দেখেছে?
বৃষ্টি হচ্ছে।রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি।
ভেবেছিলাম তুমুল বৃষ্টিতেও রিক্সা পাব।কিন্তু আধঘণ্টা হওয়ার পরও একটা সাইকেল পর্যন্ত দেখিনি।বাসা এখান থেকে বেশি দূরে নয়।পায়ে হেটে মাত্র বিশ মিনিটের রাস্তা।বৃষ্টিতে ভিজতে আমার অসুবিধা নেই।কিন্তু সাথে অফিসের কাগজপত্র থাকায় হয়েছে সমস্যা।
অনেকক্ষণ পর বৃষ্টি কিছুটা কমে এলো।তবে আকাশ এখনো মেঘলা।খুব শীঘ্রই আবার ঝুম করে নামবে।তাছাড়া রাত প্রায় এগারোটা বাজে।এতো রাতে এখানে থাকা নিরাপদ নয় বিধায় হাটা শুরু করলাম।তখনো জিরজির করে বৃষ্টি পড়ছিল।রাস্তার পাশের ড্রেনগুলো বৃষ্টির পানিতে পূর্ণ হয়ে কাদায় রাস্তাঘাট ভাসিয়ে দিয়েছে।পিচ্ছলে না পড়ার জন্য সাবধানে হাটতে হচ্ছিল।
কিছুদূর এগোনোর পর সামনে কিছু একটা দেখতে পেলাম।কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে।আরেকটু কাছে যেতেই দেখলাম এক বৃদ্ধ লোক।কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে রয়েছেন।দূর থেকে দেখে কুকুরের মতো মনে হচ্ছিল।এতো রাতে রাস্তার পাশে বৃষ্টির মধ্যে লোকটিকে এভাবে দেখে কিছুটা অবাক হলাম।টোকাইরাও এই বৃষ্টিতে রাস্তায় থাকেনা।তাছাড়া বৃদ্ধ লোকটিকে ভদ্র বলেই মনে হলো।উনার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।আমার উপস্থিতির জন্যই হোক বা অন্য কারণে বৃদ্ধ লোকটি আমার দিকে তাকালো।সেই চোখে আমি কোন অভাব দেখিনি।বরং গভীর দুঃখ আর হতাশার চাপ সেই চোখে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।নিশ্চয় তার ছেলেমেয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
'চাচা আপনি এই বৃষ্টিতে রাস্তায় কি করছন?' জিজ্ঞাস করতেই লোকটি গুঙিয়ে উঠলো।লোকটাকে ধরে দাঁড় করাতে চাইলাম।কিন্তু লোকটি মাথা নাড়িয়ে অস্বীকৃতি জানালো।
হঠাৎ ঘড়ির দিকে নজর গেলো।রাত বারোটা বাজতে চলেছে।একি?আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে।সবাই নিশ্চয় চিন্তা করছে।
বৃদ্ধ লোকটাকে ফেলে রেখে আমি হাটতে লাগলাম।দশমিনিট হাটার পর আবার দেখলাম সামনে কিছু একটা পড়ে আছে।কৌতূহলী হয়ে সামনে এগোতেই যা দেখলাম তাতে তৎক্ষণাৎ জমে গেলাম।আদিম ভয় শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে গেলো।কিছুক্ষণ আগে যে বৃদ্ধকে পেছনে দেখে এসেছি সেই একই বৃদ্ধ এখানে পড়ে আছে।চিৎকার করতে গিয়েও কোনমতে শান্ত হলাম।বৃদ্ধের দিকে তাকালাম।বৃদ্ধ লোকটিও আমাকে দেখতে পেয়েছে।তার চোখেও পরম বিস্ময়।সেই সাথে আতংক।লোকটি বসা অবস্থায় থেকে দাঁড়িয়ে গেল।কিছু বুঝার আগেই লোকটা ছুটতে শুরু করলো।দুএকবার পড়ে গিয়েও আবারো উঠে ছুটতে লাগলো।আমি সেদিকে তাকিয়ে রইলাম যতক্ষণ না লোকটি অন্ধকারে মিলিয়ে না যায়।
কিছুক্ষণ হতভম্ব অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকলাম।আমি ভেবেছিলাম লোকটা অশরীরী কেউ।তাই হয়তো দুবার দেখেছি লোকটাকে।কিন্তু অশরীরী হলে লোকটা ভয় পাবে কেন?মনে হচ্ছে আমি যেমন লোকটাকে দেখে ভয় পেয়েছি তেমনি বেচারা বৃদ্ধটাও আমায় দেখে ভয় পেয়েছে।আসলে হচ্ছেটা কি?
পেছনে পায়ের শব্দ শুনে চমকে উঠলাম।কেউ আসছে।তাকাতেই দেখলাম বৃদ্ধ লোকটি ছুটতে ছুটতে আমার দিকে আসছে।কিন্তু উনিতো সামনে ছুটছিলেন,আমার পেছনে আসলেন কি করে?বৃদ্ধ লোকটি আবার আমাকে দেখতেই প্রচন্ড চিৎকারে মাটিতে পড়ে ফিট হয়ে যায়।আমি হতবাক অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি।হঠাৎ মনে একটা সম্ভাবনা এলো?এমন কি হতে পারে আমরা একটি লুপের বা চক্রের ভেতর আছি।ফলে একই জায়গায় বার বার ফিরে আসছি।তাছাড়া তো এই ঘটনার কোন ব্যাখ্যা নেই।আমি উঠে দাঁড়িয়ে সামনে এগোতে লাগলাম।কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি বৃদ্ধলোকটি ফিট হয়ে আমার সামনে পড়ে আছে।বুঝলাম আমার অনুমান সঠিক।আমি একটা অনন্ত চক্রের মধ্যে বন্দি হয়ে গেছি।তাই বার বার ঘুরেফিরে একই জায়গায় আসছি।
কি করবো এখন বুঝতে পারছিনা।মাথা মনে হচ্ছে ঘুলিয়ে যাচ্ছে।পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে পারছিনা।শুধু জানি বাঁচতে হলে এই অভিশপ্ত চক্র থেকে বের হতে হবে।পাশে বৃদ্ধ লোকটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।সে ভেবেছে আমি কোন অশরীরী।তাকে এইজন্য অবশ্য দোষ দেয়া যায়না।আমিও তো ভাবছিলাম বৃদ্ধ লোকটা কোন অশরীরী।চক্র নিয়ে ভাবতে লাগলাম।যেভাবেই হোক এখান থেকে মুক্তি পেতে হবে।কোন একটা বইয়ে পড়েছিলাম একটি চক্রে সামান্য জিনিসের হেরফের হলে পুরো চক্র ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।চক্র হলো সম্পূর্ণ আবদ্ধ।যদি একটি চক্রে বাইরে থেকে একটা ধূলিকণাও প্রবেশ করে তবে পুরো চক্র ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।তেমনি ভাবে ভেতর থেকে যদি কিছু বাইরে চলে যায় তবে এটি ধ্বংস হয়ে যাবে।হঠাৎ চোখ পড়লো বৃদ্ধ লোকটার উপর।যদি কোন কারণে উনার শরীরে ভর কমে যায় তবে চক্রে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে এটি ধ্বংস হয়ে যাবে।কিন্তু এখানে তো আর জিম পাবোনা যে ওয়েট লিফটিং করে ভর কমাবো।তক্ষুনি মনে ভাবনা খেলে গেল একটি লোকের মৃত্যুর পর লোকটার ওজন বেশ কমে যায়।আমি যদি এই লোকটিকে মেরে ফেলি তবে এই চক্র ভেঙ্গে আমার পরিবারের কাছে ফিরে যাবার একটা সম্ভাবনা আছে।চিন্তাটা মাথায় আসতেই আমি উঠে বসলাম।ভেতরের সমস্ত জড়তা দূর করে পকেট থেকে রুমালটা বের করে হাতে নিয়ে এগিয়ে গেলাম বৃদ্ধের দিকে।চক্র ভাঙতে।
(সমাপ্ত)
২৮ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭
সিগন্যাস বলেছেন: বাহ বাহ দিনেদুপুরে আপনার মন্তব্য দেখে আমিও খুব আনন্দিত হলাম।আপনার গল্পের লিংক চেয়েছিলাম।দিয়েছেন নিশ্চয় এখনই যাচ্ছি।আর টাইপোগুলো ধরিয়ে নাদিলে মনঃক্ষুণ্ণ হবো
২| ২৮ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: বাহ!! ভৌতিক গল্প। গল্পের বর্ণনায় নতুনত্ব আছে। ভাল লেগেছে পড়ে। তবে টাইপিংয়ে কিছু মিসটেক আছে, এডিট করলে ঠিক হয়ে যাবে। আরেটি কথা লেখাগুলো প্যারা আকারে দিলে ভাল হয়। আর দাড়ি দেওয়ার পর একটা স্পেস দিয়ে লেখা শুরু করলে ভাল হয়।
প্রিয় ভাইয়ের গল্পে লাইক দিলাম। শুভ কামনা সব সময়ের জন্য।
২৮ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯
সিগন্যাস বলেছেন: আহ ভাইয়া পরপর দু গল্প পরেছেন।কিছু বলার নাই।আপনি জিনিয়াস।
ভূতের গল্প আমার প্রিয় জনরা।আমার সংগ্রহে থাকা বইগুলোর অধিকাংশ বই-ই হরর সাহিত্যের।মন্তব্যে ও প্লাসে খুবই অনপ্রানিত হলাম।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইলো।
৩| ২৮ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৩৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
ভয়াল সব প্লট! পৃথিবী কি এত ভয়াল?
২৮ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫১
সিগন্যাস বলেছেন: পৃথিবীর চারভাগের মাত্র একভাগে মানুষ বসবাস করে।বাকি তিনভাগ এখনো মানুষের পদচারণা মুক্ত।আপনার কি ধারণা বাকি তিনভাগে কি রয়েছে তাহলে?টাইম ম্যাগাজিনের সমীক্ষা অনুসারে প্রতি তিনজন আমেরিকানদের মধ্যে একজনের অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা হয়েছে।তাই বলা যায় পৃথিবী বেশ ভয়াল
৪| ২৯ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:০০
শামচুল হক বলেছেন: ভৌতিক কাহিনী খুব ভালো লাগল। ধন্যবাদ
২৯ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:১১
সিগন্যাস বলেছেন: শামচুল ভাই আরেকটা গল্প আছে সেটা পড়েন।
৫| ২৯ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:৫০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: দেখলাম ....
ফিরব এই লেখায়।
২৯ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭
সিগন্যাস বলেছেন: আচ্ছা আচ্ছা
অপেক্ষায় আছি
৬| ৩০ শে জুন, ২০১৮ রাত ১২:৪৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাপ রে মানুষ এত নিষ্ঠুর হয় !!!
বেশ আলদা ধরনের প্লট!!! লেখা অনেক ভালো লেগেছে।
৩০ শে জুন, ২০১৮ ভোর ৬:১৯
সিগন্যাস বলেছেন: হা হা ভৌতিক গল্প।নিষ্ঠুরতা তো একটে থাকবেই
হুঁ এই ধরনের প্লট আমি নিজেও আগে দেখিনি।আপনার মন্তব্যে সবসময় খুশি হয়।
৭| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
একটু অন্যরকম। ভাল।
গল্পের নাম লুপ কেন।
০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
সিগন্যাস বলেছেন: লুপ মানে হলো বার বার ঘটতে থাকা কোন কিছু আরকি।হ্যা মাইদুল ভাই আসলে এই ধরনের ঘটনা শুধু সায়েন্স ফিকশনে দেখানো হয়।তাই একটু অন্যরকম লাগছে
৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: অতিপ্রাকৃত গল্প হিসেবে ভালই হয়েছে। তবে, আপনি কি এর বাইরে কিছু লেখেন না?
দাঁড়ি, কমা, ইত্যাদি যতিচিহ্নের পরে স্পেস হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
জুন বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর একটি ভৌতিক গল্প সিগন্যাস । দিনদুপুরে খুব সাহসের সাথেই পড়লাম। নৈলে আমি যা ভীতু
কিছু টাইপো আছে ঠিক না করলে লেখাটির মানক্ষুন্ন হবে
+