নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশা আছে বলে এখনো স্বপ্ন দেখি, নিজেকে নির্মাণ করার চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত...

সাইন বোর্ড

সব কিছুর উর্ব্ধে উঠা যায় না, তবু মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়...

সাইন বোর্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রামীণ জীবন-যাত্রা ও অর্থনীতিতে করোনা তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৩


গ্রামে আসার পর মনে হলো, এখানে পৃথিবী মোটেই তার উজ্জ্বলতা হারায়নি । মানুষ খুব স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করছে । আগে্র মতই মানুষ হাটে যাচ্ছে, বাজারে যাচ্ছে, দোকানে সদাই করছে, দোকানদার আনন্দচিত্তে কাস্টমারের হাতে সদাই তুলে দিচ্ছে, কৃষক মাঠে যাচ্ছে, জমি চাষ করছে, ফসল ফলাচ্ছে, ঘরে তুলছে, ছেলেরা খেলা করছে, গ্রামের টাউট-বাটপার, দালালরা আগের মতই চা, পান, সিগারেটের দোকানে বসে পরচর্চা করছে, কার পুটকিতে বাঁশ দিয়ে দু-পয়সা কামানো যায় - তার ধান্দা করছে । কারোর মুখে কোন মাস্ক নেই, মনের ভেতর করোনার ভয় নেই । ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা থাকলেও করোনার কোন আলামত নেই, কোন পরীক্ষা নেই, কোন মৃত্যু নেই; সব স্বাভাবিক, সবাই নিরাপদ ।

এখানে কারো চাকুরী হারানোর ভয় নেইা, ছাঁটাই নেই, বিক্রির কমতি নেই, মার্কেটিং-এ সমস্যা নেই; কারো বেতন কমেনি, বাসাভাড়া, খাবার, হাত খরচে টান পড়েনি, কাউকে বাসা ছেড়ে কোথাও চলে যেতে হয়নি, খাদ্য-উৎপাদন ব্যাহত হয়নি । শুধু এখান থেকে যারা কাজের সুবাদে বাইরে (দেশের ভেতর অথবা বিদেশে) চলে গিয়েছে, তারা মাঝে মাঝে গ্রামে আসলে করোনায় নিজে বা অন্যদের ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ার গল্প করে । যারা এগুলো শোনে, তাদের বেশিরভাগই মজা পায়, কেউ কেউ একটু-আধটু হা-হুতাশও করে, অনেকের আবার কোন প্রতিকৃয়ায় নেই ।

বলাবাহুল্য, গ্রামের মানুষ এখন আর কারো খারাপ অবস্থার কথা শুনে কোন সহানুভূতি জানায় না, বরং মজা পায়, ভাবে শালার ঠিকই হয়েছে, উপরে উঠার ক্ষমতা হারিয়েছে, এবার আমার উপরে উঠার সুযোগ, আমি উপরে উঠে যাব, ও শালা চেয়ে চেয়ে দেখবে, সুযোগ পেলে হয়ত ক্ষতি করারও চেষ্টা করবে । করুক । গ্রামে পরশ্রীকাতরতা আগেও ছিল, এখন আরো বেশি হয়েছে, সেই সাথে দীর্ঘ অরাজনৈতিক চর্চা ভিলেজ পলিটিক্সকে আরো সমৃদ্ধ করেছে ।

এসব কিছুর পরও গ্রামের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও মানুষের জীবন-যাত্রার মান বেড়েছে । বেশ কিছু সংখ্যক মানুষ পরিশ্রম করতে শিখেছে, বাস্তবতা ইপলব্ধি করতে পেরেছে । যারা এতদিন ঘর থেকে বাহির হয়ে দূরে যেতে ভয় পেত, তারা অনেকেই বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কাজের জন্যে পাড়ি জমিয়েছে । এরা সবাই যে খুব ভাল কিছু করতে পেরেছে, তা নয় । তবে কমবেশি সবাই গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভুমিকা রেখে চলেছে । যার ফলে গ্রামের ভেতর ঘুরলে এখন আর কাঁচা ঘরবাড়ি চোখে পড়ে না; দু-তলা বাড়ির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে; যা গ্রামে এক সময় কল্পনাও করা যেত না ।

কৃষিক্ষেত্রেও বেশ চোখে পড়ার মত উন্নয়ন হয়েছে । এই বর্ষা ও শরৎ কালে এক সময় পাট ছাড়া আর অন্য কোন অর্থকরী ফসল ছিল না । অথচ এই সময় এখন পাটের পাশাপাশি আরো বেশ কিছু অর্থকরী ফসল হচ্ছে । কচু, কলা, পটল, শিম এগুলো আগে কমবেশি চাষ হলেও তা এমন পরিপাটি করে বানিজ্যিকভাবে কেউ চাষ করত না । তা ছাড়া আগের দিনে কৃষক এরকম দামও পেত না । এবার যেটা দেখলাম, তা হলো ঢাকা ও গ্রামের বাজারের মধ্যে কোন পণ্যের দামের পার্থক্য নেই । এটা খুবই আশার কথা যে, কৃষক জায়গায় বসেই তার উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পাচ্ছে ।

আর এ কারণেই বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিও আমাদের গ্রামের কৃষকের মুখের হাসি ম্লান করতে পারেনি এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতেও তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি । করোনা এখানে বই এ পড়া গল্পের মতো এসেছে । যেহেতু চোখের সামনে তেমন কোন আক্রান্ত ও মৃত্যু নেই, তাই কেউ তার নাট্যরুপও দেয়নি । জীবন চলছে জীবনের মত করে স্বাভাবিক গতিতে । তাতে করোনা কোন ভাটা ফেলতে পারেনি ।


দৌলতপুর, কুষ্টিয়া
তারিখঃ ৩০.০৮.২০২০

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: করোনা ব্যাপল প্রভাব ফেলেছে সমাজে।
বহু লোক চাকরি হারিয়েছে।
বহু লোকের ইনকাম কমে গেছে।
বাজারে আগুন।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৪

সাইন বোর্ড বলেছেন: আমি আমার গ্রামের কথা বলেছি, গ্রামে করোনার নুন্যতম কোন প্রভাবও পড়েনি ।

আর বাজারের আগুনটা গ্রামেও ছড়িয়েছে - এটা ঠিক; তবে সেটা নিত্যপণ্যের দাম, যেটা বন্যার কারণে হয়েছে ।

অসংখ্য ধন্যবাদ ।

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: দুই এক বার গ্রামের দিকে গিয়েছি করনা কালে। করনার কোনো প্রভাব আমারও চোখে পড়ে নি।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৪

সাইন বোর্ড বলেছেন: আমিও সেরকমই দেখেছি ।

অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


কুষ্টিয়ার অবস্হা এত ভালো? ঐদিকের মানুষ তো অনেকটা কলিকাতার দাদাদের মতো, নিজকে নিয়ে থাকে।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৭

সাইন বোর্ড বলেছেন: দাদা বলতে হিন্দুদেরকেই বোঝাই, তারা হয়ত ওরকমটাই আছে । কিন্তু ওভারঅল কুষ্টিয়ার মানুষের একটা সুনাম আছে ।

অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৯

স্থিতধী বলেছেন: কৃষক তাঁর জায়গাতেই উৎপাদিত পণ্যের কাঙ্খিত দাম পাচ্ছে জেনে ভালো লাগলো । কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মত কৃষক দের এমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন সারা বাংলাদেশে ছড়ালেই ভালো। করোনার ভাইরাসের থেকে সততার সাথে ভাগ্য উন্নয়নের চেষ্টার ভাইরাসটি আরো ছোয়াছে হোক সেটাই প্রত্যাশা।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৯

সাইন বোর্ড বলেছেন: আপনার আশাবাদ ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র । ভাল থাকুক বাংলাদেশের কৃষকেরা ।

অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।

৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৬

মা.হাসান বলেছেন: আপনি প্রায় এক মাস ব্লগে অনুপস্থিত। সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো।

আমাদের থানায় এ পর্যন্ত করোনায় ২ জন মারা গেছেন, এর মধ্যে এক জনের বয়েস ছিলো নব্বইয়ের বেশি। সঙ্গত কারনেই মানুষ করোনাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। কোনো সোসাল ডিসট্যান্সিঙ নেই, কোনো মাস্কের ব্যবহার নেই। যারা সবজি ফলায় তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ, সবজির দাম অনেক কমে গেছে। করোনার চেয়ে বরং বন্যা অনেক বেশি সমস্যা করছে, জমিতে ধান গাড়া যাচ্ছে না।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৬

সাইন বোর্ড বলেছেন: আমাদের থানায় এ পর্যন্ত একজন মাত্র ব্যক্তি মারা । তিনি থানার ওসি, বয়স চল্লিশের নিচে ।

প্রথমে গ্রামে গিয়ে সত্যিই আমি খুব অবাক হয়েছি যে, ওখানে কোন কিছুরই কোন পরিবর্তন নেই, সবকিছু আগের মতই চলছে । আর সবজির যে ব্যাপারটা, সেটা সব খানেই বন্যা নয়তো অতি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে । তবে দাম তেমন কম মনে হয়নি আমার কাছে ।

গ্রামে প্রায় একমাস থাকার কারণেই ব্লগে অনুপস্থিত ছিলাম । আপনি মনে রেখেছেন জেনে ভাল লাগল ।

অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.