নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্লিপওয়াকিং সাদমান

সর্বদাই রক্ষণাত্মক আমি। জোনাল ডিফেন্ডিং আর পাশ কাটিয়ে যাওয়া উইংপ্লেতে বিস্বাসী। না ফুটবল না, জীবনের কথাই বলছি। ফুটবলইই তো জীবন, তাই।

স্লিপওয়াকিং সাদমান

স্লিপওয়াকিং সাদমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাইকেল ওয়েইন!

১০ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৭:১৪

ফুটবল দুনিয়া বড়ই বৈচিত্র্যময়। আরো বৈচিত্র্যময় ইংলিশ ফুটবল। ইংল্যান্ড নামক দেশটা ফুটবল অনেক কিছুই দিয়েছে। তার তুলনায় পেয়েছে খুব কম, খুবই কম। আর সেইদিক দিয়ে ইংলিশ খেলোয়ারদের পাওনাটা কম খুবই কম। মনে হতেই পারে এইসব কথার সাথে এই পোস্টের কি সম্পর্ক। পোস্টের শেষে হয়তো বুঝাতে পারবেন আপনারা...



মাইকেল ওয়েন, ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগা খেলোয়ারদের মধ্যে একজন। বাবা টেরি ওয়েন ছেলের মধ্যে প্রতিভার ছায়া দেখতে পেয়ে ওয়েনকে ফুটবলার বানানোর স্বীদ্ধান্ত নেন। ডিসাইড এরিয়া প্রাইমারি স্কুলের অনুর্ধ-১১ দলে চান্স পান মাত্র ৮ বছর বয়সে, ৯ বছর বয়সে ক্যাপ্টেন হন আর দশ বছর বয়সে এক মৌসুমে ৯৭ গোল করে ইয়ান রাশের ২০ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন, যার সংখ্যা ছিল ৭২। মাত্র তিন বছরেই প্রয়াত গ্যারি স্পিডের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও ভাঙেন।পরে যখন আরেক এ্যাকাডেমি মোল্ড আলেকজেন্দ্রাতে যান, সেখানেও রেখে যান নিজের ছাপা। ২৪ ম্যাচে করেন ৩৪ গোল। ১২ বছর বয়সে যখন লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি ও আর্সেনাল থেকে অফার পান, তখন একটু হলেও গোলকধাঁধাঁয় পড়ে গিয়েছিলেন। তবে তত্‍কালীন লিভারপুল ইউথ ডেভেলপমেন্ট অফিসার ব্রাইয়ন কিড্ নিজ হাতে চিঠি লিখে তার আগ্রহের ব্যাপারটি ব্যাক্ত করেন, যা ওয়েনের মন ছুঁয়ে যায় এবং তিনি লিভারপুল এ্যাকাডেমিতে যোগ দেন। ১৪ বছর বয়সেই ২০ ম্যাচে ২৮ গোল করে অনূর্ধ ১৫ ও ১৬ দলের রেকর্ড ভাঙ্গেন।



তবে তা শুধুই শুরু ছিল, লিভারপুলে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেই বিশ্ববাসিকে পুরাই চমকে দেন। ১৭তম জন্মদিনে সাইন করেন সিনিয়র কন্ট্র্যাক্ট। তারপর ইংলিশ ফুটবলে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়, যা সহজেই ভুলার নয়। প্রথম মৌসুমেই ১৮ গোল করে যৌথভাবে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা, পরের মৌসুমেও একই কাহিনী, এবার জেতেন ব্যালন ডি'অর। ২০০২ সালে যখন তিনি ফর্মের তুঙ্গে, হঠাত্‍ ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তাকে মাদ্রিদে নিয়ে আসার ইচ্ছা ব্যাক্ত করেন। ২০০২-০৩ মৌসুমে অনেকটা তার ওপর ভর করেই লিভারপুল লিগে ৪র্থ স্থান অর্জন করে। লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফাই না করাটা ওয়েনের ক্লাবের থাকা নিয়ে সংশয় যাগায়। ২০০৩-০৪ মৌসুমে ক্লাবের খারাপ শুরুর পর যখন তিন মাসের ইন্জুরি কাটিয়ে যখন মাঠে ফেরেন তখন লিভারপুলের জন্য মৌসুম প্রায় শেষ, তবে পরের জেরারর্ড ও তার দারুন পারফরমেন্সে দল আবারো চতুর্থ স্থান অর্জন করে, আর তিনি করেন তার ১৫০ তম গোল। পরের মৌসুমে যখন কোচ হউলার বরখাস্ত হন, ওয়েনের ক্লাব ছাড়াটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। টানা ৭ মৌসুম লিভারপুলের সর্বোচ্চ গোলদাতা যখন ৮ মিলিওন পাউন্ডে মাদ্রিদের জন্য ক্লাব ছাড়েন, তখন তার গায়ে লিভারপুল লেজেন্ডের তকমাটা লেগে যায়। ২১৬ ম্যাচে মোট গোল দিয়েছেন ১১৮টি, লিভারপুলের হয়ে জিতেছেন একটি এফএ কাপ, দুটি লিগ কাপ, একটি কমিউনিটি শিল্ড, একটি উয়েফা, একটি উয়েফা কাপ। করেছেন বেশ কিছু অসাধারণ গোল, কাটিয়েছেন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় যা আর কখনোই ফিরে পান নি।



রিয়াল মাদ্রিদে যেয়েই যোগ দেন 'গ্যালাক্টিকোসে', যেখানে রোনাল্দো, রাউল, জিদান, ফিগো আর ডেভিড বেকহ্যাম ছিলেন। ১১ নম্বর জার্সিধারি এই স্ট্রাইকারের মৌসুমটি একেবারেই ভালো কাটেনি, শুরুর দিকটা ছিল একেবারেই বেঞ্চ বসে থাকা। মৌসুমে করেন ১৩ গোল, যা মিনিট ও গোলের অনুপাতে সর্বোচ্চ ছিল। তবে দুই ব্রাজিলিয়ান রবিনহো আর জুলিও বাপ্তিস্তার মতো হাই প্রোফাইল খেলোয়ার যখন মাদ্রিদে যোগ দেন, প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসাটা তখন সময়ের ব্যাপার ছিল। ৪১ ম্যাচ খেলে করেন ১৮ গোল, যার মাত্র ১৫টিতেই শুরু থেকে খেলতে পেরেছিলেন।



২০০৬ সালের বিশ্বকাপ তখন দাড়গড়ায়, আর প্রধানত সেই কারণেই নিউক্যাসলের ট্রান্সফার রেকর্ড ভেঙে ১৬.৮ মিলিওন পাউন্ডে যোগ দেন ক্লাবে। প্রি-সিজনের শুরুতেই পড়েন থাই ইন্জুরিতে, যা ২০০৫-০৬ মৌসুমের শুরুতে খেলতে বিরত রাখে। তবে পড়ে ওয়েস্ট হ্যামের বিরূদ্ধে 'পারফেক্ট হ্যাট্রিক' করে তার ফিরে আসার জানান দেন। ২০০৫ এর ৩১ ডিসেম্বর টটেনহ্যামের বিরূদ্ধে খেলাকালে ওয়েনের হাড় ভেঙে যায়, যা তার মৌসুমটাই শেষ করে দেয়। এই ইন্জুরিটা এতোটাই খারাপ ছিল যে ২০০৬ এর বিশ্বকাপ শেষের পড়েও তার ইফেক্ট থাকে। এই ইন্জুরির পর প্রথম ট্রেনিং এ আসেন ২০০৭ এর ফেব্রুয়ারিতে। তবে ২০০৬-০৭ মৌসুমের পড়ে ক্লাব তাকে ১০ মিলিওন পাউন্ডের আশেপাশে ছেড়ে দিতে রাজি হয়। কেউ না কিনলেও ওই মৌসুমেও সে দলে নিজের জায়গা হারায়। তারপর দফায় দফায় ইন্জুরির কারণে নিউক্যাসল আর কন্ট্র্যাক্ট রিনিউ করেনা। যার ফলে ফ্রি এজেন্টে পরের মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাকে সাইন করায়। এবারও সেই একই কাহিনি, শুধু দৃশ্যপট ভিন্ন। আবারো কয়েক ম্যাচে একটু-আধটু পারফরমেন্স, তারপর ইন্জুরির কারণে আবারো ছিটকে যাওয়া। ইউনাইটেডের তিন মৌসুম ঠিক একইভাবে কাটান। মাত্র ৩১ ম্যাচ খেলে করেন পাঁচ গোল। জেতেন একটি করে প্রিমিয়ার লিগ, লিগ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ড।



পরে আর কন্ট্র্যাক্ট রিনিউ করা হয়নি। এবার গন্তব্য স্টোক সিটি, আর এবারও হানা দেয় ইন্জুরি। মাত্র আটটি ম্যাচ খেলেও ক্যারিয়ারের ইতি টানেন এই ইংলিশ।



জাতীয় দলের হয়েও ছিলেন দারুন, ৮৯টি ম্যাচ খেলে করেন ৪০ গোল, যা তাকে ইংল্যান্ডের ৪র্থ সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসায়। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনি ১৯৯৮,২০০২ ও ২০০৬ বিশ্বকাপ এবং ২০০০ ও ২০০৪ ইউরো খেলেন।



মাইকেল ওয়েনের একটা চরম বৈশিষ্ট্য ছিল, হঠাত্‍ জোড়ে দৌড় দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে গোল দেওয়া। তার শুটিং পাওয়ার ছিল খুব দ্রুত, ভলিতে করা গোলগুলো ছিল দেখার মতো আর ফিনিশিং ততটাই নিঁখুত। সবাইকে কাটিয়ে ওয়ান-অন-ওয়ানে গোল করাটা ছিল তার স্টাইল, আর ফুটবলটা জীবন। তাহলে এতটা অসাধারণ ফুটবলারের ক্যারিয়ারের ফিনিশিংটা এতটা ..... ছিল কেন?



শূণ্যস্থানে 'প্যাথেটিক' ছাড়া অন্য কোনো শব্দ পেলাম না, তবে দিলামও না। কারণ একটাই, 'রেস্পেক্ট'!!!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:০৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। ওয়েনের মত ইংল্যান্ড ও বিশ্বকাপে ব্যর্থ ।মাইকেল ওয়েন দর্শকদের মন ঠিকই জয় করেছিলেন। ভাগ্য নামের ব্যাপারটি পক্ষে থাকলে ওয়েন হয়তো বিশ্বফুটবলে আরও ভাল অবস্থানে থাকতেন।

২| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:১৬

রাজিব বলেছেন: মাইকেল ওয়েন- এলেন, দেখলেন, জয় করলেন এবং শেষ হয়ে গেলেন। খুব অল্প বয়সে তার উত্থান এবং অনেক অল্প বয়সে তার প্রস্থান ইঞ্জুরির কারণে। সুন্দর লিখেছেন। আমি অবশ্য লিভারপুলের ভক্ত নই। ওয়েনের জন্য খারাপ লাগে যে এমন একটা সময়ে সে লিভারপুলের হাল ধরেছিল যখন ক্লাবটির জন্য বেস খারাপ সময়। ১৯৮৮ সালের পর মনে হয় লিভারপুল একবারও ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জিততে পারেনি। ওয়েনের উচিত ছিল স্পেনে না গিয়ে তখন ইংল্যান্ডের অন্য কোন ক্লাবে যাওয়া। আর খুব খেলা পাগল ছিল সে। তাই আমার সন্দেহ হয় যে কখনো কখনো হয়ত পুরো সুস্থ না হয়েই খেলায় ফিরে এসেছিল। ইনজুরি না হলে আরেক মেসি হতে পারত ওয়েন।

৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫

একক দিব্য বলেছেন: বস!!!

১০ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৮

স্লিপওয়াকিং সাদমান বলেছেন: #Team :D

৪| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৫০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮

এইচ তালুকদার বলেছেন: ব্রাজিলের বিপক্ষে ০২ বিশ্বকাপ তার গোলটা এখনও মনে পড়ে।
ঠিকই বলেছেন প্যাথেটিক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.