নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখি

এই বেশ ভালো আছি

সোহেল রনি

আমার হালের একটা বলদ চাই,এক খন্ড জমিন ও চাই।সেই জমিনে পাট জন্মায়,ফাসির একটা দড়িও চাই।

সোহেল রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কষ্টের কথা।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪

সবার জীবনেই সুখ দুঃখের কিছু ঘটনা থাকে।

কিছু গতানুগতিক কিছু ব্যাতিক্রমি,একটা দুঃখের স্মৃতি লিখতে বসলাম,গতানুগতিক না ব্যাতিক্রমি সেটার বিচার যারা পড়বেন তাদের হাতে রইল।



২০০১ সাল।

আমি ইন্টার ফাস্ট ইয়ারের ছাত্র।আমার বড় আপু সে বছর ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষার্থী ছিল।

নকল প্রতিরোধে সরকার তখন কঠোর অবস্থানে।তারই অংশ হিসেবে পরিক্ষার কেন্দ্র হল মাইগ্রেশন সিস্টেমে অর্থাৎ একই থানার দুইটা কলেজ একটা হবে অন্যটার কেন্দ্র।

কুষ্টিয়ার যে সাইডে আমাদের গ্রাম সেটা মোটামুটি উন্নত হলেও আপুর পরিক্ষার কেন্দ্রটা পড়ল এক অজো পাড়াগা্য়ের কলেজে।

ছেলে হলে সমস্যা ছিলোনা কোন ছাত্রাবাসে থেকে পরিক্ষা দিতে পারতো আবার যাতায়ত ব্যবস্থা বলতে ভ্যানগাড়ী,(হালের নসিমন ও ছিলনা) ভোর রাত্রে যাত্রা আরম্ভ করে পরিক্ষার আগে পৌছনো ছিল অসম্ভব।

এক্ষেত্রে সহজ উপায় ছিল ঐ এলাকায় নিকট কিংবা দুর সম্পর্কের কোন আত্বীয় খুজে বের করা আর পরিক্ষার দিনগুলো সেখানে আশ্রয় নেয়া।

আনন্যপায় হয়ে এক দুর সম্পর্কের এক আত্বীয় বাড়িতে আপু কে নি্য়ে উঠলাম।বিদ্যুৎ বিহিন গহিন গ্রামে শুরু হলো দাত কামড়ে থাকা।



প্রথম দুইটা পরীক্ষা ভালো ভাবে হলো তৃতীয় পরিক্ষার সময় নতুন করে আসন বিন্যাস হয়,এই নতুন আসন খুজতে গিয়ে বাধলো বিপত্তি,আপুর রোল নাম্বারের লাস্ট দুইটা ডিজিট ছিল ৬৭,নির্ধারিত আসনে গিয়ে দেখি ষন্ডা মার্কা এক ছেলে ঐ আসনে বসে আছে,আমি কনফার্ম হলাম এ্যাডমিড কার্ড দেখে না ঠিক আছে এটাই আপুর আসন,ছেলেটাকে বিনয়ের সাথে বললাম-ভাই আপনার রোল নম্বর কত? সে বলল ৭৩।এটাতো ৬৭ দয়া করে সামনে দ্যাখেন-কথাটা শেষ করা মাত্র ছেলটা আমাকে বেশ জোরে ধাক্কা দিয়ে বলল আমি এখানে বসলে তোর সমস্যা কি?

নিজের এলাকা না হলেও মাইর খেয়ে চুপ থাকার মত কাপুরুষ সেই বয়সে ও আমি ছিলামনা,প্রায়৬ফিট লম্বা প্লাস স্বাস্হ্য যথেষ্ট ভালো ছিল।

কলার চেপে ধরে দুটো দিতেই লোকজন এসে আলাদা করে দিলো।

পরিক্ষা আরম্ভ হলে আমরা কয়েকজন তাস পিটিয়ে সময় কাটাতাম।

সেদিন ও তাস খেলতে বসার প্রস্ততি নিচ্ছি এমন সময়অপরিচিত এক লোক এসে বলল-আপনাকে মামুন ভাই ডাকে।মামুন নামে ঐ এলাকার কাওকে চিনতামনা জাহোক লোকটাকে আনুসরন করে কিছুদুর যাবার পর একটা বাগান মত জা্য়গায় কয়েকজন যুবককে বেশ উত্তেজিত মনে হল,কাঠের চেয়ারে বসা ট্যারা লোকটাকে নেতা মনে হলো,মজার বিষয় হলো পরীক্ষা শুরুর আগে যার সাথে আমার সমস্যা হয়ে ছিল তাকে দেখলাম নেতার চেয়ার ধরে দাড়িয়ে আছে।

আমি আসামি-প্রশ্ন আরম্ভ হলো?

নেতা-নাম কি আপনার?

আমি-রনি।

নেতা-কি করেন?

আমি-লেখাপড়া করি।

নেতা-কোথায়?

আমি-কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজে।

নেতা-সারমিন(আপুর নাম) আপনার কি হয়।

আমি-বড় বোন।

নেতা-ও আচছা তুমি ছোট ভাই(আপনি থেকে তুমিতে),আগে বলবানা।জাহোক খোকনের সাথে তোমার কি হইছে?

আমি-সেটা আপনি তাকেই প্রশ্ন করেন।

নেতা-কার বাসা্য় উঠেছো?

আমি-আত্বীয়ের নাম বললাম।

নেতা-তোমার অনেক সাহস বোঝা জাচ্ছে,আমি কে জানো ?



ভিষন গর্বের সাথে সে ক্ষমতাসিন দলের ছাত্র সংগঠনের কলেজ সাখার সভাপতি এই পরিচ্য় দিল,পুরো কলেজ তার ইশারায় চলে।আমার হাত পা ভেঙে দেয়া তার কাছে ওয়ান টুর ব্যাপার,জেহেতু ছোট ভাই তাই কিছু বললাম না ব্লা....ব্লা....ব্লা....।

আপুর পরীক্ষা শেষ হলে আসল ব্যাপার টা বুঝলাম।

খোকন নামের ছেলেটা জে কিনা ঐ কলেজের সন্মান শ্রেণীর ছাত্র প্রথম দিন থেকেই টিজিং করছে,আমার সাথে যে সমস্যা হয়েছে ঐটা সেই টিজিং এরই ধারাবাহিকতাই।উদ্দেশ্য তার সাথে প্রেম করতে হবে-পড়া গায়ের বখে যাওয়া নষ্ট ছাত্র রাজনিতির এই সেনানি বুঝেনি যে আমার বোন পরীক্ষা দিতে ঐ কলেজে যায় প্রেম করতে না।

এরা ছিল বেশ বড় একটা গ্রুপ যারা এক এক জন এক একটা মেয়ে কে সিলেক্ট করে ডিসটার্ব করত।

এটা তাদের কাছে এক প্রকার খেলার মত ছিল কিন্ত আমাদের মর ভুক্তভুগীদের জন্য ব্যাপারটা ছিল চরম বিব্রত কর।পরিক্ষার সর্বশেষ প্রস্ততিতে সেটা একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে বাধ্য।

আজ এত বছর পরেও সেই কথাগুলো মনে পড়লে কেমন জানি কষ্ট লাগে।আমরা শুধু দাত কামড়ে অপেক্ষা করেছি পরীক্ষা শেষ হবার।

সব কিছুর পরেও আপুর রেজাল্ট বেশ ভালো হয়েছিল।

আজ এইচ,এস,সি পরীক্ষার রেজাল্টর দিন মনে পড়ল তাই শেয়ার করলাম।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.