![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার হালের একটা বলদ চাই,এক খন্ড জমিন ও চাই।সেই জমিনে পাট জন্মায়,ফাসির একটা দড়িও চাই।
২০শে ফেব্রুয়ারী ২০১২ সালে দুপুর ১ টার সময় এ পৃথিবীতে তোমার আগমন।
সন্তান জন্মের সময় যে সমস্ত হতভাগ্য স্বামী তার স্ত্রীর পাশে থাকতে পারেনা আমি তাদের ই একজন, ডাক্তারের নির্ধারিত দিনের দু সপ্তাহ আগেই তুমি পৃথিবীটা দেখার জন্য বড় ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলে, নতুন চাকরি আর শত ব্যাস্ততার মাঝে আমি সময় করে উঠতে পারিনি তোমার আম্মুর পাশে থাকার।
২২শে জানুয়ারির ঠিক ৮মাস আগে যখন তোমার আগমন বার্তা প্রকাশিত হল সেদিন যেন পৃথিবীর সব খুশি যেন আমাদের ছোট্ট ঘরটাতে আশ্রয় নিয়েছিলো।
যে স্বপ্ন নিয়ে ৩বছর আগে আমি আর তোমার আম্মু সংসার জীবন শুরু করেছিলাম তার পূর্ণতা পেতে যাচ্ছিল তোমার আগমনে।
কি নিদারুন কষ্টের মধ্য দিয়ে যে একজন নারির মাতৃত্ব পূর্ণতা পায় তার কিছুটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম সে সময়।
একটু একটু করে তুমি বেড়ে উঠসিলে মায়ের গর্ভে।প্রথম ৩মাস কোন খাবার সে মুখে দিতে পারতো না, এমন কি খবারের গন্ধ পেলেও বমি এসে পড়তো।
ডাক্তারের পরামর্শ মত ৬ মাস প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন করে ইনজেকশন নিতে হয়েছে।
তোমার আম্মু খুব বেশি লম্বা নয় আথচ তুমি খুব দ্রুত বড় হয়ে যাচ্ছিলে।
আনেক বেশি নড়াচড়া করতে প্রায়ই বুকের উপরের দিকে উঠে পড়তে তোমার আম্মুর নিঃশ্বাস নিতে তখন ভিষণ কষ্ট হত সে সময়। একদিন তো দম আটকে প্রায় মরেই গিয়েছিল।
আমি শুধু তার কষ্টের সময় পাশে থেকেছি,শান্তনা দিয়েছি,কখনো কখনো জেগে থেকেছি পুরো রাত।তোমার প্রবল নড়াচড়া আর লাথির যন্ত্রনায় যখন সে ঘুমাতে পারতো না তখন দু`জনেই জেগে থাকতাম আর তোমাকে নিয়ে ভবিষ্যৎ দিনলীপি সজাতাম।
ভালোবাসার মানুষের এই নিদারুন কষ্ট আমাকে খুব ব্যাথিত করতো, সব কিছুর জন্যে নিজেকে দায়ি মনে হতো সেটা তোমার মায়ের দৃষ্টি এড়ায়নি, আমার হাত ধরে সে প্রয়ই বলতো-জানো এই কষ্টের মাঝে এক আদ্ভুত রকম ভালো লাগা আছে যখন আমার সন্তানের মুখ দেখবো সেদিন সব কষ্ট ভুলে যাবো।
এত কষ্ট হতো তোমার আম্মু অথচ যেদিন সামান্য কম নড়তে,সে ব্যাকুল হয়ে আমাকে প্রশ্ন করতো-আমার বাবুটা এত কম নড়লো কেন আজ।
৬ মাস পরে আমরা জেনে গিয়েছিলাম তুমি ছেলে।আমরা একটা সন্তান চেয়েছিলাম বিধাতার কাছে তাই তুমি ছেলে কংবা মেয়ে সেটা খুবই গৌন ছিল আমাদের কাছে।এক মাত্র চাওয়া ছিল তোমার জন্ম গ্রহণ প্রক্রিয়াটা যেন কোন প্রকার জটিলতা ছাড়া শেষ হয়।
বিধাতা আমদের প্রতি সদয় ছিলেন।
এক সময় এ ঘর আলো হয়েছে তোমার আগমনে।তিব্র কান্নার শব্দে ভঙ্গ করে ছিলে সে দিনের অলস দুপুরের মৌনতা।
আজ যত বার তোমার মুখের দিকে চাই মনে হয় তোমাকে ছাড়া একটা দিন যেন অসম্ভব।
আনেক কিছু লিখতে ইচ্ছা করে তোমাকে, সময় করে উঠতে পারিনা।
পরিশেষে কিছু উপদেশ দেই বাবা।
যে মা তোমাকে এত কষ্ট করে জন্ম দিয়েছে মানুষ করছে, যে হাত তোমার বর্তমান আর ভবিষ্যৎ কে সুরক্ষিত করার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাদেরকে কখন ও কষ্ট দিওনা বাবা, যেদিন আনেক বয়স হয়ে যাবে বুড়ো হয়ে যাবো আমরা, সে দিন যে আদর আর স্নেহ দিয়ে তোমায় মানুষ করেছি তার সামান্য টুকু প্রতিদান হিসেবে চাওয়া কি খুব বেশি হয়ে যাবে বাবা?
যে হাত একটু একটু করে সবল হচ্ছে সে হাত তুমি মানুষের কল্যানে ব্যাবহার কোরো, আনেক দুরে থেকো নেশা থেকে যা জীবন থেকে জীবন কেড়ে নেয় তৈরি করে ঐশীদের।
তোমার দ্বিতীয় জন্মদিনে বাবার পক্ষ থেকে এই পোস্ট টি উপহার রইল তুমি বড় হয়ে দেখো।
১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৫২
সোহেল রনি বলেছেন: থ্যাঙ্কু।
২| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:১৮
ঝটিকা বলেছেন: আপনার আবেগগুলো বুঝতে পারছি। কারন আমিও যে ১১.৫ মাস বয়সের প্রথম বাচ্চার মা। লেখাটা খুব ভালো হয়েছে। আমার বাচ্চার জন্মের মাধ্যমে আমি আবার নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। সে আমাদের সাংসারিক জীবনের নানা জটিলতা নিরসনে প্রভাবকের মত কাজ করেছে এবং করছে। তাই আমার চাওয়া, আমার ছেলেটার একটু সুখের জন্য যদি সুদুর আমাজন জঞ্গলেও যেতে হয় তাই যাব।
১৮ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৫
সোহেল রনি বলেছেন: আপনার মন্তব্যটি খুব ভালো লাগলো।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: খুব ভাল লাগল ভাইয়া।